গল্প || ভুল সিদ্ধান্ত শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

আসসালামু আলাইকুম


আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।



সবাইকে মহান বিজয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। আশা করছি আজকের দিনটি সবার অনেক অনেক ভালো গিয়েছে। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি।আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।


heart-1809653_1280.jpg

source

গল্প || ভুল সিদ্ধান্ত শেষ পর্ব


একদিন হৃদয় নিলাকে খুব মারধর করে। যার কারণে নিলা হৃদয়কে ছেড়ে তার নিজের বাড়িতে চলে যায় ।তারপর থেকে----

তারপর নীলা তার বাবার বাড়িতে থাকতে লাগল। এভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর নীলা হৃদয় কে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।একদিন হৃদয় তাদের বাড়িতে এসে হাজির হয়ে যায় ।নীলার বাবা ও ভাই হৃদয় কে মারতে গেলে হৃদয় বলে আমি আমার বউকে নিতে এসেছি আপনারা বাধা দেওয়ার কে। তখন নীলা এসে বলে আমি তোমাকে চিনি না। আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়েছি।তোমার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। নীলার এই কথাগুলো বলতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল তার পরেও তার কিছু করার ছিল না ।কেননা সে তার বাবা কে কথা দিয়েছে ।কিন্তু সে হৃদয়কে বেশ ভালোবাসতো।


এভাবে বেশ কিছু দিন গেলে হৃদয় অনেক চেষ্টা করে নীলাকে নেবার জন্য ।কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হয় না। নীলা তার বাবা-মায়ের কথার বিরুদ্ধে যায় না ।তাই সে শত চেষ্টা করেও নীলাকে নিতে পারেনা। নীলার কাছে এসে হাতজোড় করে মাফ চায় ।অনেক কান্নাকাটি করে বলে আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারছি না ।প্লিজ তুমি আমাকে মাফ করে দাও। আমি আর কোনদিন তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করব না ।সত্যি আমি পাল্টে গিয়েছি।


আসলেই হৃদয়ের অনেক পরিবর্তন হয়েছিল। নীলা যখন তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে তখন সে তার পুরো ভুল বুঝতে পারে। যার কারণে সে পরিবর্তিত হতে থাকে।কিন্তু তারপরেও কোন কাজ হয় না। একদিন নীলার বাবা মা নীলার জন্য একটি ভালো ছেলে দেখে বিয়ে ঠিক করে ।নিলাকে তারা জিজ্ঞাসা করে সে বিয়েতে রাজি কিনা ।তখন নিলা প্রথমে বিয়ে করতে চায় না ।তারপর বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে যায়। এদিকে নীলার বিয়ের কথা শুনে হৃদয় পাগলের মত ছুটে আসে। তারপরেও কোন কাজ হয় না।


নীলাও কিছু বলতে সাহস পায় না যেহেতু তাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। আর বাবা মা কে সে কথা দিয়েছে তাদের কথার বাইরে যাবে না।তাদের কে আর কষ্ট দিবে না।হৃদয় নীলাকে অনেক কিছু বলে আসলে তুমি আমাকে কখনো ভালবাসনি। কিন্তু আমি তোমাকে সত্যি ভালবেসেছি ।তাই তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না ।তোমার আমার প্রতি কোন ভালোবাসাই ছিল না ।তাই এত সহজেই বিয়ে করতে পারছ। নিলা শুধু কাঁদতে থাকে আর কিছু বলে না। কারণ সে তার বাবা-মাকে আর দ্বিতীয়বার কষ্ট দিতে চায় না।


তারপর এভাবে কিছুদিন পর নীলার বিয়ে হয়ে যায়। নীলার যার সঙ্গে বিয়ে হয় ছেলেটা ভীষণ ভালো, সে সবকিছু জেনে নীলা কে বিয়ে করে। কারন নীলা দেখতে অনেক রূপবতী ছিল। নীলাকে দেখে তার ভালো লেগেছিল। নীলা তাকে তার জীবনের সব কথা বলে। তখন ছেলেটি বলে আমি তোমার অতীত জানি। আমাকে কিছু বলতে হবে না। তারপর নীলা ছেলেটির ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে আস্তে আস্তে ছেলেটিকে ভালবাসতে লাগলো এবং অতীতের সব কথা ভুলে নতুন করে সংসার শুরু করতে লাগলো। ওদিকে হৃদয় তার ভুলের জন্য নীলাকে হারিয়ে পস্তাতে লাগলো ।



আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ফটোগ্রাফার:@wahidasuma
ডিভাইস:OPPO Reno8 T

🔚ধন্যবাদ🔚

@wahidasuma

আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।

VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

logo.gif

Sort:  
 7 months ago 

আমার মনে হয় নীলা ঠিকই করেছে। শুধু ‍শুধু নিজেকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে কি লাভ? হৃদয় কে ভালোবেসে নীলা জীবনে কিছুই পেত না। আমার মনে হয় হৃদয় নীলাকে পেয়ে গেলে নাও বদলাতে পারতো। আর নীলা তো এখন ভালোই আছে। ভালো একজন স্বামী পেয়েছে। সব মিলিয়ে আপনার আজকের গল্পটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

 7 months ago 

হ্যাঁ আপু এরকম পরিস্থিতিতে আসলে এরকমই করা উচিত। না হলে সারা জীবন পস্তাতে হয় ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 7 months ago 

ভালোবাসার মানুষ কাছে থাকলে তার মূল্য বোঝা যায় না। যখনই দূরে চলে যায় তখনই তার মূল্য বুঝতে পারে মানুষ। হৃদয়ের ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটি হয়েছিল। নিলা কাছে থাকাতে তাকে মারধর করত, কিন্তু চলে যাওয়াতে সে বুঝতে পেরেছিল। নিলা ভালো করেছে হৃদয় কে ছেড়ে দিয়ে এসে। আবেগের কাছে বাধা পড়ে থাকলে তাকে সারা জীবন কষ্ট পেতে হতো। তার বাবা-মার কথামতো ছেলেকে বিয়ে করে অনেক সুখে থাকতে পারছি এখন। ভালো লাগলো আপু আপনার গল্পটি পড়ে।

 7 months ago 

হ্যাঁ আপু নীলা তার বাবা মায়ের কথা শুনে ছিল বলেই পরবর্তী জীবন তার সুখের হয়েছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।ভালো থাকবেন।

 7 months ago 

কথায় আছে দাঁত থাকতে দাঁতের মূল্য দিতে পারে না। তেমনি হৃদয়ের কাছে যখন নীলা তখন হৃদয় তার উপর অত্যাচার করত এবং তার মূল্য বুঝতো না। আমার তো মনে হচ্ছে নীলা একেবারে ঠিক কাজ করেছে। এরকম ভাবে জীবন না চালিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করাই ভালো। সে খুবই ভালো একটা ছেলে পেয়েছে পরবর্তীতে। যে ছেলে তার অতীত জেনে তারপরে তাকে বিয়ে করেছে। হৃদয়ে সবশেষে নিজের ভুল বুঝতে পারলেও, নীলাকে আর পেল না তার আগের ভুলের জন্যই। আপনি অনেক সুন্দর করে গল্পটা লিখেছেন যেটা আমার খুব ভালো লেগেছে।

 7 months ago 

আসলে আপু এরকম পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে জীবনটা শুধরে যায় ।আর নীলা যদি তা না করে ওখানে থেকে যেত তাহলে তার জীবনটা দুঃখেরই থেকে যেত ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 7 months ago 

সেজন্যই বলে বাঙালি দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দেয় না। নীলাকে অকারণে অনেক মারধর করেছিলো হৃদয় এবং আজ সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে হৃদয়। নীলা হৃদয়কে ডিভোর্স দিয়ে এবং আবারও বিয়ে করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে প্রতিটি মানুষের জন্য পরিবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নীলার পরিবার তার পাশে ছিলো বলে সবকিছু সম্ভব হয়েছে। আশা করি নীলা এবার খুব সুখী হবে। নীলার জন্য শুভকামনা রইল।

 7 months ago 

আসলে ভাইয়া নীলা তার বাবা মায়ের কথা শুনে পরবর্তীতে আবার বিয়ে করে যার কারণে সে সুখী হতে পেরেছে ।তা না হলে তো দুঃখের জীবনই বয়ে বেড়াতে হত। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 57297.27
ETH 3101.41
USDT 1.00
SBD 2.41