গল্প || সত্যিকারের ভালোবাসা শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি । আসলে গল্প মানেই আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা । যেই ঘটনা গুলো এক একটি গল্প আকারে আমাদের কাছে এসে ধরা দেয় ।আসলে প্রতিটি গল্প আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা। আজ আমি যে গল্পটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব সেটি মূলত একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা । আশা করছি আপনাদের কাছে গল্পটি ভালো লাগবে । তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন চলে যাই মূল গল্পে।
সত্যিকারের ভালোবাসা শেষ পর্ব
হৃদয়ের বাবা মা কে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে ----
এদিকে হৃদয়ও বিষয়টি জানতে পারে যে তার বাবা-মাকে পুলিশ ধরে নিয়ে মারধর করেছে । তারপরও সে ফিরে আসে না।এভাবে তার বাবা-মাকে এক মাসের মতো জেলখানায় আটকে রাখে। ওদিকে হৃদয়ের কোন খোঁজ নেই ।এভাবে দীর্ঘদিন যেতে যেতে পুলিশ এক সময় হৃদয়ের বাবা মাকে ছেড়ে দেয় । তখন হৃদয়ের মা বাড়িতে এসে প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলে আর খুব কান্নাকাটি করে বলতে থাকে ছেলেটা আমার কি করলো? এখনো আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের মাইরের ব্যথা আছে। এখন আমি নিজের সংসারের কাজটুকু ভালোমতো করতে পারছি না ।এই বয়সে এরকম মারধর সহ্য করার ক্ষমতা কি আমার আছে?
তারপর দীর্ঘদিন এভাবে খুঁজে খুঁজে না পেয়ে মেয়েটির বাবা এখান থেকে চলে যায় ।তারপর হৃদয় মেয়েটিকে নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে ওঠে। হৃদয়ের মা-বাবা তাকে জায়গা দিতে চায় না। কিন্তু একমাত্র ছেলে বলে কথা পরবর্তীতে আর না করতে পারে না। ছেলে এবং ছেলের বউকে মেনে নেয় ।এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে ।ওদিকে মেয়েটিও ছিল ধনী পরিবারের মেয়ে ।হৃদয় দের সংসারে খাপ খাইয়ে নিতে তার বেশ কষ্ট হয়। কারণ হৃদয়রা ভালো-ভালো খাবার মেয়েটিকে দিতে পারেনা । যার কারণে মেয়েটি কয়েক দিনেই বেশ শুকিয়ে যায়।
তারপরেও মেয়েটি হৃদয়কে ছেড়ে যেতে চায় না। মেয়েটি হৃদয়কে সত্যি কারের ভালোবাসে।এরই মধ্যে আবারও মেয়েটির মা-বাবা হৃদয়ের শহরে এসে আবারো তাদের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই হৃদয় বিষয়টি জানতে পেরে বউকে নিয়ে আবারো পালিয়ে যায়। এভাবে আবারও লুকোচুরি খেলার পর অবশেষে মেয়েটির মা বাবা হার মেনে আবারো ফিরে যায়। এভাবে মাসের পর মাস যেতে যেতে মেয়েটির একটা সময় আঠারো বছর পার হয়ে যায় ।তখন তারা ঠিক করে এখন আর পালিয়ে বেড়াবো না ।এখন পুলিশ আমাদের ধরলে আমরা বলতে পারব আমার আঠারো বছর পূর্ণ হয়েছে আমি আমার বাবা-মার কাছে ফিরে যাবো না।
এভাবেই তারা সিদ্ধান্ত নেয় ।তারপর মেয়েটির বাবা-মা এসে মেয়েটিকে ধরে নিয়ে যায় ।ধরে নিয়ে গেলে বেশ কিছুদিন আটকে রাখে ।কিন্তু মেয়েটি আবারও পালিয়ে হৃদয়ের কাছে চলে আসে। আবারও তার বাবা-মা তাকে ধরতে গেলে সে যেতে চায় না ।তারপর মেয়েটিকে জোর করে ডিভোর্স দেওয়াতে নিয়ে যায়। কিন্তু মেয়েটি কোর্টে যেয়ে বলতে থাকে আমার আঠারো বছর পূর্ণ হয়েছে এখন আমি আমার স্বামীর সঙ্গেই থাকবো ।আমার মামা বাবা আমাকে জোর করে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য করছে ।পরবর্তীতে কোর্ট মেয়ের পক্ষে রায় দেয় ।তারপর মেয়েটির বাবা-মা নিরুপায় হয়ে মেয়েটিকে ছেড়ে চলে যায়।
এভাবেই সত্যি কারের ভালোবাসার জয় হয়। তারপর হৃদয় ছোট্ট একটি দোকানে কর্মচারীর কাজ নেয়।মেয়েটির যদিও কষ্ট হতে থাকে তাদের সঙ্গে থাকতে তার পরেও ভালোবাসার খাতিরে মেয়েটি সব সহ্য করে সবকিছু মেনে নেয় ।তারপর তারা বেশ ভালোভাবেই তাদের জীবন কাটাতে থাকে। তার শাশুড়ি তাকে কিছুই করতে দেয় না সব কাজ সে নিজেই করে। মেয়েটিকে কলেজে ভর্তি করায়। একটা সময় এসে দেখা যায় হৃদয় ও তার বউ মা-বাবার থেকে আলাদা হয়ে আলাদা বাসা নিয়ে থাকে ।আসলে যে বাবা মা ছেলের জন্য এত মারধর সহ্য করল সে বাবা-মাকে ছেড়েই আবার বউকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করে ।আসলে এটাই নিয়তি। যাইহোক তারপরেও তারা ভালো আছে এটাই বড় কথা।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৪০ |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
হৃদয়ের জন্য হৃদয়ের মা বাবাকে এতো অত্যাচার সহ্য করতে হলো,এটা জেনে খুব খারাপ লাগলো। মেয়েটির মা বাবার প্রচুর ধৈর্য্য, এটা বলতেই হয়। আমি তো ভেবেছিলাম একসময় মেনে নিবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোর্টের রায় মেয়ের পক্ষে আসাতে তারা মেয়েটিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তবে মেয়েটি আসলেই হৃদয়কে খুব ভালোবাসে। নয়তো এতো বাঁধা অতিক্রম করে এবং এতো কষ্ট করে হৃদয়ের সংসারে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। প্রকৃত ভালোবাসার জয় হলে আনন্দের সীমা থাকে না। তবে হৃদয় তার বউকে নিয়ে আলাদা হয়ে গিয়েছে, এই ব্যাপারটা ভালো লাগেনি আমার কাছে। যাইহোক আশা করি পরবর্তীতে নতুন কোনো গল্প নিয়ে হাজির হবেন আমাদের মাঝে।
ভাইয়া মনোযোগ সহকারে আমার গল্পটি পড়ে দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন শুভকামনা রইল।
গল্পটার শেষের দিকে এসে বেশি কষ্ট লাগলো, মা বাবাকে ছেড়ে হৃদয়ের একা বাসা নিয়ে থাকাটা আমার কাছে একটুও পছন্দ হয়নি। যদিও বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটছে। আসলে বিবেকের কাছে প্রশ্ন করলেই বোঝা যায় এটা কতটা নিম্নমানের দায়িত্বহীন কাজ।
হ্যাঁ ভাইয়া এই ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে তারপরেও কিছু করার নেই ।এটাই নিয়তি মেনে নিতে হবে ।ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সত্ত্বেও মেয়েটার হৃদয়কে ছেড়ে দেয়নি। এবং কি হৃদয়ও তাকে তার বাবা মায়ের কাছে দিয়ে আসেনি। তারা নিজেদের ভালোবাসাটাকে অনেক বড় করে দেখেছে এবং সব পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে হলেও একসাথে থাকছে। তাদের ভালোবাসার জয় হয়েছে এটা দেখে অনেক ভালো লাগলো। অনেক ভালো লেগেছে সম্পূর্ণটা পড়তে। আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই গল্পটা পর্বের মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য এত সুন্দর করে।
ভাইয়া গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সব সময় ।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।