শেষ নোট || না-গল্প না- কবিতা ।। বিদায় প্রেম... ( 10% reserved for shy-fox )
মনটা ভালো নেই জানো সুলগ্না ! এইভাবে আমাদের সম্পর্কটা ভেঙে যাবে, সত্যিই ভাবিনি কোনদিন। তিল তিল করে ভালোবাসা, ধৈর্য্য, বিশ্বাস দিয়ে স্থাপন করা এই সম্পর্কের ভিত্তি এভাবে নড়ে যাবে, সত্যিই কোনদিন কল্পনাও করিনি
অবশ্য এটাকে সম্পর্ক বলা ঠিক হবে কি না জানি না।জানি, কোন আন্তরিক ভালোবাসার টান তোমার আমার প্রতি তখনও ছিলনা এখনো নেই। বন্ধুত্ব নামের যেই সুক্ষ সুতোয় বাঁধা ছিল সেতুটি! তাও আজ বিচ্ছিন্ন হয়েছে চিরতরে। এটাও জানি একতরফা ভাবেই ভালবাসা দিয়ে আকড়ে ধরতে চেয়েছি তোমাকে বারবার, পারিনি আর আজ শেষপর্যন্তও পারলাম না।
চিরতরে শেষ হয়ে গেছে আমাদের মধ্যের সমস্ত সম্পর্ক। সেই রাতের পর রাত জেগে চলা আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে আড্ডা, তোমায় এক ঝলক চোখের দেখা দেখার জন্য, একটু কথা বলার জন্য তোমার টিউশনের বাইরে ছুটির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা! সবটাই হয়ত শেষ হয়ে গেল! হয়ত বা হয়নি জানিনা।
সত্যি বলতে কি কিছুই জানিনা আমি..সব কিছু, কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে আমার। কেমন একটা শূন্যতা ক্রমশ গ্রাস করছে ধীরে ধীরে আমার মন মস্তিস্ক। নিউরোন নিউরোনে ছড়িয়ে পরছে ব্যার্থতার গ্লানি একটা জমাট বাঁধা দুঃখ যেন ক্রমশ মোচড় দিয়ে উঠছে বুকের ভেতর থেকে। আমার কি কান্না পাচ্ছে? হয়ত! কিন্তু কাঁদবনা। একদম কাঁদবোনা।শুনেছি ছেলেদের কাঁদতে নেই...কেন জানিনা মরতেও ইচ্ছা করছেনা! মরব না! বেঁচে থাকব এই আশা নিয়ে যে তুমি আবার কথা বলবে আমার সাথে। কারন ভালোবাসি তোমাকে সত্যি ভালোবাসি তোমাকে। তাই তো বার বার ভুলে যাই কোন স্থানে প্রয়োজনের চাইতে বেশি গুরুত্ব দিলে, সে স্থানে তোমার গুরুত্ব কমে যায়। ততটুকুই গুরুত্ব দেওয়া উচিত , যতটা দরকার। অন্যথায় দুঃখ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। তাই আমার এই শেষ নোটে তোমার প্রতি আমার এই ভালোবাসার কবিতা উৎসর্গ করলাম।
তোমাকে ভালোবাসি।
আজ বড়ো 'অচেনা' হলেও আমি তোমাকে ভালোবাসি!
শান্ত ভোরের আদ্র আলো-আঁধারেও আমি
তোমাকে ভালোবাসি
মন খারাপের শ্রান্ত বিকেলেও যেন
তোমাকে ভালোবাসি
রাত ঘুমহীন ঘর একলা একলা বিছানা মন একলা,
তখনও তুমি হ্যা তোমাকেই ভালোবাসি
ঘুমিয়ে পড়েও স্বপ্ন-সাগরে সেই, তোমাকেই ভালোবাসি!!
ব্যস্ত দিনের খানিক বিরামে তোমাকেই ভালোবাসি,
অলস সময় থাকল সাক্ষী তোমাকেই ভালোবাসি।।
গেরুয়া -সবুজ তীক্ষ্ণ বিভেদেও তোমাকেই ভালোবাসি,
ভালোবাসতে চাই বলেই তোমাকে ভালোবাসি।
বিশ্বাস মাঝে এসেছে আঘাত বহু তবু তোমাকেই ভালোবাসি!
জানি রুক্ষ মরুর ধূর্ত মরীচিকা সম তুমি
জানি! কাছে যেতে চাইলে দূরে সরে যাবে তুমি।
সেই তুমিই আজ বড় অচেনা আমার কাছে
তোমার করা অবহেলার স্মৃতি আজও মনের গভীরে বাচেঁ।
এত যন্ত্রনা তবু এতদিন ভাঙিনি আমি,
তবে আর মনে হয় পারব না টিকে থাকতে,
ভাঙতে আমাকে হবেই, মোক্ষম আঘাত করেছ যে আজ।
তবে ভেঙে গিয়ে নতুন করে গড়ব নিজেকে,
তোমার তুচ্ছ অবহেলা আর ছুতে পারবেনা আমাকে,
কেন জানো?
আঘাত আঘাত অবহেলা সরিয়েও আমি যে সেই
তোমাকেই ভালোবাসি!
চারিদিকটা বড্ড নিস্তব্ধ। না কেউ কথা বলছে না এমনটা নয়... সবাই দিব্বি কথা বলছে,চিৎকার করছে। রাগারাগি করছে, মা বাবা তুমুল জোড়ে দরজা ধাক্কাচ্ছে। ডাকাডাকি করছে। সবটা আমার কানেও ঢুকছে, কিন্তু তবুও আমার চারপাশটা কেন জানিনা ভয়ঙ্কর রকম নিস্তব্ধ হয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে।মানে এত নিস্তব্ধতা যা মাঝরাতের শব্দহীনতাকেও হার মানায়..
তবে এই নিস্তব্ধতাটা একা আসলে হয়ত খুব বেশি যন্ত্রণা হত না, কিন্তু এই নিস্তব্ধতা! সাথে বয়ে নিয়ে এসেছে এক ভয়ানক একাকিত্ব ও যন্ত্রণা অথচ আমার আশেপাশে তো লোকের অভাব নেই। তবে কেন?
তবে কেন? ধীরে ধীরে এক চরম একাকিত্ব গ্রাস করছে আমাকে... চারিদিকে দিনের আলো অথচ কোন এক অভেদ্য অতল অন্ধকারে ক্রমশ যেন তলিয়ে, আরও তলিয়ে যাচ্ছি আমি।
চারিদিকে খোলা বাতাস হু হু করছে অথচ তারা আমাতে প্রবেশ করতে পারছেনা কোনমতেই, কোন এক অদৃশ্য প্রাচীরে ধাক্কা খেয়ে তারা এই জড়সম হাওয়াতে পাক খেয়ে ঝুলতে থাকা দেহ থেকে ক্রমশ দুরে সরে যাচ্ছে। এক অদৃশ্য হাত ক্রমশ বুকের ওপর চেপে বসছে। প্রবল আক্রোশে দেহ থেকে শেষ প্রাণবায়ুর অংশটুকু যেন নিঙরে নিতে চায় কেউ। আমি প্রাণপনে চিৎকার করি কিন্তু মুখ থেকে একটা আওয়াজও বের হয় না বলা ভালো বের হতে পারে না। ক্রমশ চোখের সামনে অন্ধকার নেমে আসতে থাকে, ধীরে ধীরে চারিদিক গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে যায়। হঠাৎ সেই অন্ধকার ভেদ করে বাবা-মায়ের মুখটা ভেসে ওঠে স্পষ্টভাবে, মুখের দিকে তাকিয়ে মনটা অনুতাপে ভরে যায়।আমার যন্ত্রনাক্লিষ্ট মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠেও যেন আবার মিলিয়েও যায়! এবার ভেসে উঠতে থাকে আরেকটি মুখ, একটা মেয়ে! যেন দাড়িয়ে আছে এক কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে, মেয়েটার মুখটা বড্ড চেনা আমার। তবে মেয়েটা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে নেই, এতক্ষণে মেয়েটার পাশে দাড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে দেখতে পাওয়া যায়। খুশি মনে গল্প করছে দুই জনে...আমি একবার হাত তুলে ডাকতে চাই, কিন্তু পারিনা। দড়িটা একেবারে এঁটে বসেছে গলাতে.. এবার সবটা একেবারে অন্ধকার হয়ে যায়। আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা আমি। অধিক চাপে চোখ ফেটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে গাল দিয়ে.. জিভটা অর্ধেকটা বেরিয়ে এসেছে। মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে একটা অস্ফুট আর্তনাদ!
ক্রমশ একটু চিলিক দিয়ে নড়ে ওঠে গলার ওপরের দিকটা । স্পন্দন ক্রমশ নিম্নমুখী হতে থাকে। একটু একটু করে ক্রমশ এক অতল অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকি।তারপরে আর মনে নেই, যখন চোখ খুলল তখন আমার নিথর দেহটা শোওয়ানো বাঁশের মাচাতে। বাবা মা মাথা খুড়ে খুড়ে কাঁদছে. দুই বার মা বলে, বাবা বলে ডাকলামও.. কিন্তু কেউ শুনতে পেলনা। বুঝলাম এটাই তাহলে সেই মৃত্যু! মরোনোত্তর অবস্থা..একেই কি বলে, ডেস্টিনি টু দ্য ডেস্টিনেশন!
তুমি চিন্তা কোরোনা তোমাকে ক্লিন চিট দিয়েই গেলাম। আমার মৃত্যু সংক্রান্ত কোন পুলিশি ঝামেলাতে তুমি আক্রান্ত হবে না। তুমি মুক্ত। বিদায় তোমায়।
বড্ড ভালো লেখেন আপনি। কথার মাঝেই কি তালমিল ছন্দ একদম পার্ফেক্ট। তবে লেখাটি পড়ে মনে হল কিছু একটা না পাওয়ার আক্ষেপ আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। আপনার শুলোগ্না আপনার না হোক সে না হয় ভালো থাকুক অন্যের ঘরে।
থাঙ্কিউ দাদা। ভালো লিখি কিনা জানি না তবে ঐ আর কি, কি বোর্ডে টাইপ করে যায়। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।