আমার ভয়ংকর ভাবনা চিন্তা । ভাবা যায় !! ( 10% বেনিফিশারি লাজুক খ্যাক্সের জন্য বরাদ্দ )

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

image.png

source

আশা করি সবাই ভালো আছেন, আমি নেই যদিও, ওমিক্রন ইনফেকটেড হয়ে শরীর গলা এবং ফ্যামিলি সবার চাপ শুরু হয়ে গেছে। যায় হোক প্রশ্ন হচ্ছে ২০২২ সালের শুরুতেই টার্গেট নিয়েছিলাম আর যায় হয়ে যাক না কেন আমার বাঙলা ব্লগে ২০২২ সালে প্রতিদিন মানে গোটা বছরে ৩৬৫ টা পোস্ট করবো। এখন সমস্যা হচ্ছে টার্গেট তো নিয়েছি কিন্তু লিখবো কি জানি না, সে অর্থে দেখতে গেলে আমি লেখক তো নৈ, কবিতা গল্প বা রান্না কোনটাই পারি না। বেজায় মুস্কিলে পড়েছি। করোনাকালে বিছানায় শুয়ে শুয়ে গভীর ভাবে ভাবছিলাম। গভীর থেকে গভীর তর লেবেলেও চলে গেছি ভেবে ভেবে কিন্তু কোন সলিউশন পায়নি।
মানে ভাবতে পারবেন না আমার অবস্থা, ভেবে ভেবে ভাবা যখন দু কুড়ি দশ তখনও কোন সদুত্তর নেই। মাথার চুল ছিড়ছি, হাতের নখ খাচ্ছি, পায়ের গুলো মাটিতে ঘষে ঘষে প্রায় প্রাগৈতিহাসিক যুগের বানিয়ে ফেলেছি কিন্তু হাতে শুধুই পেনসিল। লিখবো কি কিছুতেই ভেবে পাচ্ছি না।
একবার তো ভাবলাম লিখি মানব সমাজের ইতিহাসে আমার অবদান কি আছে, অনেক ভেবে যেটা বুঝলাম তা হোল আসলেই আমার কোন অবদান নেই, মা - বাবার আছে কারণ তারা বিয়ে ফিয়ের সময় বেশ কিছু মানুষ জনকে খাইয়েছিল। কিন্তু আমার নেই। তারপর ভাবলাম লিখি প্রেম করার উপকারিতা। কিন্তু তাতেও সমস্যা, এই প্রসঙ্গে লিখতে গেলে মিনিমাম ক্রাইটেতিয়া হিসেবে অন্তত একটা প্রেম থাকা খুবই জরুরি। আর এই ফিল্ডে আমি হচ্ছি মরুভুমি এবং কাঁটা গাছের সমান সমান। কাজেই বিখ্যাত দুনিয়া কাঁপানো প্রেম পত্র লিখে যে সমাজের ভালো কিছু না হোক বাচ্ছা বাচ্চা ভাই বোন গুলোকে প্রেম করতে উদ্বুদ্ধ করবো সে গুড়েও বালি।
পাক্কা দুদিন ভেবেও সলিউসন পায়নি, প্রেম আমার জন্য নয়। সমাজে ভালো কাজও কিছু করিনি। একবার তো ভাবলাম যায় মোদিকে একটা চিঠি লিখি, দিয়ে নীচে আমার ফোন নাম্বারটা দিয়ে দেব। তাতে যদি ভদ্রলোক ফোণ করে সোজা বলে দেব দেখ বস অনেক নাটক হয়েছে এবার নগদ কোটি খানেক স্টিমের ব্যাবস্থা করে দিন। কিন্তু অনেক ভেবেও ভদ্রলোকের ঠিকানা পেলাম না, আসলে চিঠিটা আমি লিখতাম কিন্তু ঠিকানার অভাবে লেখা হলো না।
তারপর তো ভাবলাম লিখি রান্না কি করে করতে হয়। অনেক ভেবে আগুন, জল, পাত্র এবং সবজি এই চারটি জিনিষ এবং খানিকটা মশলা এই পাঁচটা জিনিষের সন্ধান পেলাম কিন্তু মেইন যেটা মানে রন্ধন প্রনালী সেটা আমার জন্য মায়া ইনকা সভ্যতার থেকেও কঠিন জিনিষ। আমি জীবনে গরম জল্, চা এবং ডিমসেদ্দ ছাড়া আর সেরকম কিছু পারি বা করেছি বলে মনে পড়লো না। এদিকে দিনও পেরিয়ে যাচ্ছে, স্টিমিটে না লিখলে হবে না, কিন্তু কি লিখবো বুঝতে পারছি না।
একবার তো ভাবলাম বিগ ব্যাং নিয়ে লিখি। তাতে বিজ্ঞান ইতিহাস আঁতলেমো ইত্যাদি সব থাকবে, এদিক সেদিক থেকে গুগল করে খানিকটা জ্ঞানও পেয়ে যাব কিন্তু তারপর মনে হল কি লাভ বিজ্ঞানী দের পেটে লাথ মেরে। তারা তাদের কাজ করুক, আমি বরং আমার কাজ করি।

ভাবলাম তো আমার কাজ কিন্তু কাজটা কি মানে লিখবো কি সেটাই আর খুঁজে পাই না, বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম বাবা কি লেখা যায় তো বাবা খ্যাঁক করে হেসে দিল, ভাবখানা এমন যে তুই আর কি লিখবি, যদি স্কুল কলেজে লিখতিস তাহলে আজকে একটা ভালো চাকরী করতিস, সেটাও তো করিস নি। তোর দ্বারা হবে না। ইন্সাল্টের লেবেলটা বুঝতে পারছেন।। নিজের বাপ অবধি পাত্তা দিচ্ছে না, তো লোকের মেয়ে কেন পাত্তা দেবে।

মনের দুঃখে ভাবলাম তাহলে লিখি স্টিমিট ইউজ করবেন না। কিন্তু ভেবে দেখলাম ওটা লিখলে শুধু ক্যালানি না, সাথে হাত মুখ ফেটে যাবার চান্সও প্রায় আঠারো আনা। দিয়ে ভাবলাম তাহলে জোকস লিখি। তারপর মনে হল এমনিতেই যা লোক হাসাচ্ছি জীবনে তাতে জোকস লিখে লোক হাসানোর থেকে না লেখাই ভালো।

কবিতা গল্প সাহিত্য রাজনীতি কিছুই পারি না, যেটা পারি সেটা হল ঘুমোতে। এই ব্যাপারে আমার ক্ষমতা একদম ওয়ার্ল্ড ক্লাস লেবেলের, যে কোন স্থানে পরিস্থিতিতে আমাকে শুধু একবার বলুন যে ঘুমো। ব্যাস স্থান, কাল পাত্র বালিশ বিছানা কিছুই লাগবে না, দিব্যি ফুরফুরিয়ে, গাঁক গাঁক করে, শসব্দে, নিঃশব্দে ইত্যাদি হাজারো ডিজাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতে পারি আমি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ঘুমোচ্ছি এটা লিখবো কি করে। আর লিখলেও সেটা মনের মত হবে না, কারণ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে লেখা যায় না। বা লিখতে লিখতেও ঘুমিয়ে পড়া যায় না।

ইত্যাদি হাজারো চিন্তা করে করে যখন মাথা প্রায় পাগল পারা, তখন বুদ্ধি এলো মাথায়। অনেকটা আর্কিমিডিসের ইউরেকা টাইপ বা নিউটনের আপেল টাইপ বলতে পারেন। ভাবলাম অনেক হয়েছে যেটা ভাবলাম সেটাই লিখি। তারপর দেখা যাবে। দিয়ে ভাবনা চিন্তা করে এইযে এতদুর লিখলাম এটাকেই বেশ গুছিয়ে প্রথম থেকে আবার লিখলাম। দিয়ে দেখলাম মন্দ হয়নি, যদিও খুব যে ভালোও হয়েছে এমনও নয় তবে দিব্যি একটা লেখা লেখা গন্ধ আসছে, অবশ্য ক্যাটাগরি হিসেবে কি দেব সেটা কেউ জানে না, আমিও জানি না, কারণ এইসব লেখাতে সাবজেক্ট বলে কিছু থাকে না। অনেক ভেবে চিন্তে নাম দিলাম খেড়োর খাতা। যা মনে হবে লিখবো। যদি মনে হয় লিখবো যে আমার চাঁদে জমি আছে সেটাই লিখবো। আমার খাতা, আমার কলম, আমার সবকিছুই আমি চাঁদে কেমন নেপচুনেও জমি আছে লিখতে পারি। আর লিখলেও কেই বা দেখতে যাচ্ছে সত্যি আছে কিনা। যায় হোক অনেক ভেবে চিন্তে দিয়ে লিখে ফেললাম আমার চাঁদে দুবিঘা জমি আছে ।

বেশ ভাল্লাগছে এখন লেখার পর। নিজেকে কেমন যেন লেখক লেখক মনে হচ্ছে। অনেকটা সাহিত্যিক টাইপ ফিলও আসছে। দেখা যাক জনতা কি বলে।

ভাবা শেষ। ভাবছি সেটার ছবি নেই, কেউ তুলে দেয়নি তাই গুগল বাবাজীর থেকেই নিলাম। কেমন ভেবেছি জানাবেন।

Sort:  
Loading...
 3 years ago 

দারুন দাদা দারুন, আপনি খুব চমৎকার লিখতে পারেন। আমি ভেবেছিলাম মাঝখানের দিকে মজাদার কিছু হবে। কিন্তু পুরোটা জুড়েই ছিল আপনার চিন্তা ভাবনার বিষয় গুলো, আপনার উপস্থাপন দেখেই মূলত পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার আগ্রহ হয়েছে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা চেষ্টা করলে আপনি যথেষ্ট ভালো পরিমাণ কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন।

 3 years ago 

অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট লিখেছেন হইয়া। অনেকগুলো বিবরণ তুলে ধরেছেন আপনার পোস্টে। ভাইয়া আমি আপনার সার্বিক সুস্থতা কামনা করছি। আমি আশা করি মহান আল্লাহতালা আপনাকে অতি দ্রুত আরোগ্য দান করবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58004.44
ETH 2579.54
USDT 1.00
SBD 2.40