কোলাহলহীন ঢাকার স্বপ্ন

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রতিবছর ঈদের সময়টাতে মজার একটা ঘটনা ঘটে। ঢাকা শহর যেটা বিশ্বের অন্যতম জনবহুল একটা শহর। সেই শহরটা হঠাৎ করে ফাঁকা হয়ে যায়। এই শহরের রাস্তাঘাট গুলো হঠাৎ করে জন মানব শূন্য হয়ে যায়। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। অবশ্য এটা খুব বেশিদিন থাকে না। সরকারি ছুটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে ঢাকা শহর আবার তার পুরনো রূপে ফিরে যায়। আমার বহুদিনের ইচ্ছা ঈদের পরের দিনটা ঢাকায় কাটানোর। যদিও এখনো সেটা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু প্রতিবারই নিউজ চ্যানেল গুলো মারফত ফাঁকা ঢাকার এই দৃশ্যগুলি দেখতে পাই। ঢাকার রাস্তাগুলোর এই ছবিগুলো যখন সামনে দেখি তখন মনে হয় ঢাকা শহর যদি সবসময় এমন থাকতো তাহলে কতোই না ভালো হোতো। আমরা যারা ঢাকার বাইরে থাকি তারা পারতো পক্ষে ঢাকায় যেতে চাই না। কারণ ঢাকার প্রচণ্ড জনাকীর্ণ পরিবেশ আর রাস্তার বাজে অবস্থা। সব সময় রাস্তাতে জ্যাম লেগেই থাকে। এই কারণে আমরা ঢাকা শহরকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলি।

IMG_20240314_115800.jpg

কিন্তু বাদ বাকি মানুষ যারা ঢাকায় থাকে তাদের তো ঢাকায় না গিয়ে উপায় নেই। কারণ চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা সবকিছু জন্য আপনাকে ঢাকা যেতেই হবে। ঢাকা শহরকে ধীরে ধীরে এমন বানিয়ে ফেলা হয়েছে যে সেখানে না গিয়ে আপনি আপনার সমস্ত চাহিদা পূরণ করতে পারবেন না। অথচ ঈদের পরের এই ছবিগুলো দেখলে মনে হয় ঢাকাকে যদি আবার এমন করে ফেলা যেতো। তাহলে কতোই না ভালো হোতো। তখন হয়তো আমরা ঢাকায় ঘুরতে যেতে পারতাম। সেখানে গিয়ে কয়েকটা দিন সুন্দর সময় কাটাতে পারতাম। কিন্তু আমাদের দেশের জনপ্রতিনিধিদের নির্বুদ্ধিতার কারণে আর দেশপ্রেম হীনতার কারণে ঢাকা শহরটাকে দিন দিন জঞ্জালে পরিণত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সরকারি ডিপার্টমেন্টের হেড অফিস ঢাকায়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত অফিসগুলো ঢাকায় অবস্থিত। দেশের সবচাইতে ভালো সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত হাসপাতাল গুলি ঢাকায় অবস্থিত। শিক্ষার ক্ষেত্রেও সেই একই অবস্থা। আবার এই ঢাকা শহরের ভেতরেই রয়েছে অসংখ্য গার্মেন্টস। অথচ ঢাকাতে যদি ডিসেন্ট্রালাইজ করা যেতো তাহলে ঢাকা শহরটা কিছুটা ভারমুক্ত হোতো।


ধরুন সরকার সিদ্ধান্ত নিলো ঢাকা শহরের ভেতরে কোন গার্মেন্টস থাকবে না। এই একটা সিদ্ধান্তেই ঢাকা শহর থেকে এক ঝটকায় পঞ্চাশ লাখের বেশি লোক সরে যেতো। সেই গার্মেন্টসগুলোকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জায়গা বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। সরকার যদি কঠোরভাবে এই বিষয়টা করার চেষ্টা করে তাহলে অসম্ভব কিছুই না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন এই ব্যবসা গুলির সাথে জড়িত। যার ফলে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ইচ্ছা সরকার মোটেও নেই। যারা ঢাকা শহরে একবার জেকে বসেছে তাদের আর ঢাকা থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা নেই। যার ফলে দিন দিন এই শহরটা মৃত্যু কুপে পরিণত হচ্ছে। ঢাকার পানি দূষিত হয়ে গিয়েছে, ঢাকার বাতাস অত্যন্ত দূষিত। ঢাকায় সবুজের তেমন কোনো ছোঁয়া নেই। পুরো ঢাকা শহরটা একটা কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। এই শহরটাকে যদি আমরা বাঁচাতে চাই তাহলে কিছু সিদ্ধান্ত এখনই নিতে হবে। না হলে হয়তো আর কখনোই নেয়া হবে না। তার আগেই হয়তো ঢাকা শহরটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। আপনারা যদি আমার মতো এমনটা মনে করেন তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90

---|---

স্থান | ঢাকা


ধন্যবাদ

Sort:  
 3 months ago 

ঈদের সময় ঢাকা গেলে বেশ স্বস্তি পাওয়া যায়।কারণ নিরিবিলি একটি শহর পাওয়া যায়।গ্রামের লোকজন সব ঢাকা থেকে বাড়িতে গিয়ে ঈদ করে।আপনি ঠিক বললেন এই ঢাকা শহরে যদি গার্মেন্টস গুলো সরিয়ে নেওয়া যেত তাহলে শহর টা প্রাণ ফিরে পেত সহজেই।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 57567.29
ETH 2568.29
USDT 1.00
SBD 2.50