পিতৃহারা সন্তানের গল্প। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )। by tuhin002
"আসসালামু আলাইকুম"
আমি @tuhin002
from Bangladesh
২ অগ্রহায়ণ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
১৭ নভেম্বর ২০২২ খ্রিস্টাব্দ ।
আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম,"আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর রহমতে ভাল আছি। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
পিতৃহারা সন্তানের গল্প |
---|
আজকে আমি আপনাদের সামনে পিতৃহারা একটা সন্তানের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছে। আসলে আমি এ ধরনের অনেক ছেলেদের দেখে থাকি এদের জীবনটা অনেক সময় যাযাবর জীবন থাকে।এর গ্রামের বাসা চাঁদপুর।এর বয়স যখন ৪ বছর তখন ওর বাবা মারা যায়। সংসারে আয় রোজগারের জন্য মা ছাড়া আর কেউ নেই। ছোট সন্তান রেখে বাবা যখন মারা যায় তখন ওই সন্তানের এতিম হয়ে যায়। তার মা এই সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। এদের জমিজমা টাকা পয়সা তেমন নেই অল্প। একটু জমি আছে যেখানে ঘর বেঁধে বসবাস করার জন্য। মাঠের জমিতে ধান আবাদ করার মত সব মিলে করুন অবস্থা। অভাবে কঠিন জীবন যখন পার করছে তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে যতটুকু পারে এই দিয়ে তাদের সংসার চলতে থাকে। এই ছেলেটি যখন বড় হয় অর্থাৎ যখন এর সাত বছরে পদার্পণ হয় তখন সে একটা দোকানে কাজ নেয়। সেখানে তারা তিন বেলা খেতে দেয় এবং সাথে কিছু টাকা পয়সা দেয়। এই নিয়ে তাদের সংসার চলতে থাকে। কিন্তু এভাবে তো অভাব যায় না এক বেলা খেতে পারলে আর এক বেলা খাওয়ার মত কোন চাল ঘরে থাকে না সব মিলিয়ে অনেক খারাপ।এভাবে চলতে থাকে ঠিক তখন তার এক মামা তাকে বলে আমার দোকান আছে তুই আমার দোকানে থাক। প্রথমের দিকে ছোট মানুষ আসতে চায় না পরে ওকে নিয়ে আসে।দোকানে সে অল্প কিছু কাজ কাম করতে থাকে এভাবে বছরে পর বছর কেটে যায়। এখন ওর বয়স ১২। যথেষ্ট তার বুদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে ভালো দিক তার হাতের কাজ। অনেক সুন্দর কাজ খুব কম সময়ের মধ্যে এসে করে ফেলতে পারে এটা তার অনেক ভালো গুণ। তার গুণ দেখে তার মামা তাকে বলে তুমি এভাবে চালিয়ে যাও, একসময় অনেক বড় হতে পারবে। ছেলেটার অনেক চেষ্টা আছে কারণ বাবা নেই সংসারের অভাবের যন্ত্রণা সে খুব ভালো মতোই বুঝতে পারে। তাই সবকিছু মেনে নিয়ে টুকটাক করে সে কাজ করতে থাকে।
গত কয়েকদিন আগে ভাবলাম ওই ছেলেটার দোকানে যায় দেখি ও কি করছে। আপনাদের তো বলা হয়নি এই ছেলেটির নাম বাশার। যখন ওর মামা এখানে নিয়ে আসে তখন ওর শরীরের দিকে তাকানো যেত না। ওর মামাকে অনেক ধন্যবাদ যে এমন একটা এতিম ছেলে তার কাছে এনে ভালো একটা কাজ দিয়েছে।সেখানে কাজ করে এখন অনেক ভালো আছে। সামনে কোন একটা দিন তার মামার সাথে আপনাদেরকে আমি পরিচয় করিয়ে দেবো। বর্তমানে এই দোকানের যে মালিক ওনার নাম ইসমাইল হোসেন সিরাজী। যাই হোক দোকানে গেলাম গিয়ে থাকে ভাগ্নে বলেই ডাকি আমরা, বললাম মামা কেমন আছো? বলো যে মামা ভালো। বললাম মামা তুমি কি করছ তখনো? বলে মামা বড় ভাজবো আমি লক্ষ্য করে দেখি সে বড়া ভাজার জন্য ময়দা নিচ্ছে আমি আরো লক্ষ্য করে দেখি বড়া ভাজার জন্য অনেক বড় একটা কড়াই তেল ঢেলে গরম করছে। আমি তাকে বললাম মামা তাহলে একটু বড়া দেওয়া যাবে? তখন ও বলল মামা আপনি একটু বসেন আমি ভেজে আপনাকে দিচ্ছি। যাই হোক প্রায় আধা-ঘন্টা ধরে বসে আছি এরপরে বড়া ভেজে সে আমাকে কিছু বড়া দিল। বড়া গুলো খেতে বেশ ভালই লাগছিল। আমি আগেই বলেছি ছেলেটার হাতের কাজ অনেক ভালো। বাজার সামগ্রী গুলো দেখে বুঝতে পারছিলাম যাই হোক বসে তার সাথে একটু কথা বললাম আর বড়া ভাজা খেলাম। তার মায়ের খোঁজ খবর নিলাম বললাম ভাগ্নে তোমার মা কেমন আছে? তার কথা শুনে বুঝতে পারলাম তারা অনেকটা সচ্চল জীবন যাপন করছে এখন। এক বেলা খেতে পারলে অন্য বেলা খেতে পারে নাই সেই ছেলেটা তার নিজের পরিশ্রমের ছোট্ট একটা ছেলে এখন তার পরিবার ন্যূনতম হলেও কিছুটা সচল জীবন যাপন করছে।
বড় ভাজা খেতে খেতে একটু খেয়াল করে দেখি একটা ডেকজি তে কি যেন একটা আছে।আমি তোকে জিজ্ঞাসা করলাম মামা এর ভিতরে কি আছে? তখন ছেলেটা মুচকি হেসে বলল মামা এর ভিতরে তো মজা। আমি তাকে বললাম কি মজা মামা? যে আমাকে না দিয়ে তুমি বিক্রি করছো?তখন সে আমাকে বলে মামা এর ভেতরে চটপটে আছে এই চটপটি খেতে আমার বেশ ভালো লাগে। তখন আমি তাকে বললাম তাহলে আমাকে এক বাটি চটপটি দাও তাহলে। তুমি আমাকে একবাটি চটপটি দাও চটপটি টা বানানোর প্রসেসিং টা দেখে বুঝতে পারলাম চটপটিটা খেতে অনেক সুস্বাদু হবে। তবে আমি তাকে বললাম একটু বেশি বেশি বিট লবণ এবং কাঁচামরিচ দিয়ে তখন ও আমাকে বলে মামা সবই দিতে পারছি কিন্তু ডিম দেয়ার দরকার ছিল কিন্তু সেটা ফুরিয়ে গেছে।আমি বললাম সমস্যা নেই তুমি যেভাবে দিবা সেটাই অনেক ভালো হবে বুঝতে পারছি। যাইহোক সে অনেক যত্ন করে আমাকে একবাটি চটপটি দিল।
আমি ওখানে বসে বড়া ভাজা এবং চটপটি খাচ্ছিলাম। ঠিক ঐ সময় কিছু ছেলে বলে আমাকে একটু চটপটি দাও তো। আমি তখন বললাম মামা পিচ্চি বাচ্চা এসেছে ওদেরকে চটপটি দাও।ওরা ছিল স্কুলের ছাত্র। একটা ছেলে পিঠের দিকে ব্যাগ ছিল। আমি বললাম তুমি কি কোথাও প্রাইভেট পড়তে এসেছো? তখন ও বলল জি ভাইয়া আমি একটা ভাইয়ের কাছে প্রাইভেট পড়তে এসেছি। আমি বললাম পড়াশোনা শেষ হয়ে গেছে? সে তখন বলল জি ভাইয়া পড়া শেষ হয়ে গেছে। এখন এই ভাইয়ের দোকানে এক বাটি চটপটি খেয়ে আমরা বাড়িতে চলে যাব। এ ছোট বাচ্চাদের সাথে অনেকক্ষণ কথা বললাম। বেশ চতুর ছেলে। আসলে এখনকার ছেলেরা অনেক বোঝাে এদের সাথে কথা বলে পেরে দাওয়া অনেক মুশকিল। যাইহোক অনেকক্ষণ ওদের সাথে কথা বলে উভয় আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম।তাকে দেখে মনে হলো তার দোকানে যথেষ্ট ভালো বেচাকেনা হয়। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম প্রত্যেকটা দিন তুমি কত টাকা করে ইনকাম করো মামা? সে আমাকে বলল মামা খরচ করছে সব বাদ দিয়ে দিন এক হাজার টাকা করে আমার ইনকাম হয়।আমি বললাম বাহ অনেক ভালো তো মামা এভাবে চালিয়ে যাও অনেক বড় হবে তুমি।কিছুক্ষণ পরে বললাম মামা আজকে থাকো আবার তোমার সাথে দেখা হবে। এই বলে ভাগ্নের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি।আল্লাহ হাফেজ।
আজ এই পর্যন্ত।সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ
device | poco M2 |
---|---|
Location | https://w3w.co/notes.revelations.teaming |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি তুহিন ব্লগ।আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।আমার মাতৃভাষা বাংলা।আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি।এই ব্লগে কাজ করার মধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়।আমি পাশাপাশি একটি ব্যবসা করি।এ ছাড়া আমার একটি বাগান আছে। এবং বাগানে অনেক ফল ও সবজির চাষ করে থাকে।আমি ছবি আঁকতে পছন্দ করি।মাছের চাষ আমার প্রধান পেশা।এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
পিতৃহারা সন্তানের গল্পটি পড়ে বুঝতে পারলাম অনেক কিছু। সত্যি আমাদের সমাজে এরকম অনেক মানুষ আছে যেগুলো দিনে এনে দিনে খায়। তারা অনেক কষ্টে জীবন যাপন করে। এই ছেলেটির মামার কথা শুনে অনেক খুশি হলাম। সে এই এতিম ছেলেটিকে সাহায্য করেছে। এরকম ভালো মানুষ আমাদের সমাজে খুবই কম রয়েছে। অনেকে আছে এরকম ছেলেদের দেখতে পারেনা যাদের পিতা-মাতা নেই। দোয়া করি যেন এই ছেলেটি অনেক বড় হতে পারে। খুবই ভালো ছিল আপনার গল্পটি।
আমাদের দেশে এতিমদের আর কয়জনে দেখে ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।