জেনারেল রাইটিং:- পাপের সম্পদ নিজের খাতায় শূন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago (edited)
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো সরলতা নিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে যাবেন না,তাহলে নিজেই ধোঁকায় পড়বেন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


IMG_20231005_085859-removebg-preview.png

Source


আজকে আমি আপনাদের মাঝে চরম বাস্তব সত্য একটি ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছে। আমরা পৃথিবীতে এসেছে নিজেদের ভোগের জন্য আসলে কি তাই? বিষয়টা এখন ঠিক তেমনি দাঁড়িয়ে গেছে। মানুষ নিজের অর্থ সম্পদ বাড়ানোর জন্য এমন কোন পাপ নেই, যে সেই কাজটি মানুষ করছে না। অন্যের সম্পদ জোর করে কেড়ে নেওয়া, সুদ ঘুষ,চুরি ডাকাতি বিভিন্ন ধরনের পথ অবলম্বন করে মানুষ সম্পদের পাহাড় তৈরি করছে। অথচ এই সম্পদ যখন সে তৈরি করছে তখন সে কি একবারও ভেবে দেখেছে এই সম্পদ আদৌও ভক্ষণ করতে পারবে কিনা। একজন মানুষ প্রতিষ্ঠিত হতে হলে তাকে কমছে কম নিজের বয়সে চল্লিশটা বছর পার করতে হয়। এই বয়সে যখন সে অটল সম্পদের মালিক হয়ে যায় তখন ওই সম্পদ কি তার আদর্শ ভাবে কাজে লাগে? তখন এইসব সম্পদ গুলো তার স্ত্রীর সন্তানেরা ভোগ করে থাকে। তাই জীবনের শেষ সময়ে হিসাব করতে গেলে দেখা যায় পাপের সম্পদ গুলো নিজের খাতায় একেবারে শূন্য হয়ে পড়েছে। আজকে আপনাদের সামনে নিজের ঘটনাটি বল তুলে ধরব এই ঘটনাটি বাস্তব ঘটেছে আমাদের গ্রামের পাশে একটি গ্রামে। আশা করি মোটামুটি শুনে আপনাদের ভালো লাগবে।


আমাদের দেশের প্রত্যেকটা জায়গায় জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ঠিক এমন একটি বিরোদ্ধ হয়েছিলআমাদের গ্রামের পাশে একটি গ্রাম গ্রামটির নাম ষোলটাকা টাকা। ওই গ্রামের দুইটা পরিবার নিয়ে অনেকদিন যাবত বিরোধ চলছিল। এক পরিবারের মধ্যে একজন ব্যক্তি ছিল নাম তার কালাম। তিনি ছিলেন ওই গ্রামের মেম্বার। অনেকদিন যাবত তাদের মধ্যে এই বিরোধ চললেও খুব একটা কেউ মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে না। আর এভাবে চলতে থেকে বছরের পর বছর। হঠাৎ করে ওই মেম্বার একদিন মোটরসাইকেলে করে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের বিরোধী পার্টি ছিল যারা তারা তার মাথায় বাঁশ মেরে তাকে মেরে ফেলে। যদিও লোকটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত নিয়েছিল কিন্তু তার আগে সে মৃত্যুবরণ করে। তার এই মৃত্যুতে মেম্বারের বাড়ির যেসব জনগোষ্ঠী ছিল তারা উত্তাপ হয়ে ওঠে। তার মৃত্যুর সমস্ত কার্য শেষ করার পরে, তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এরাও চারদিক থেকে চাঙ্গা দিয়ে উঠে এবং বিপক্ষ পার্টিকে মারার জন্য এরা খুঁজে বেড়ায়। যারা এই মেম্বার সাহেবকে হত্যা করেছিল তারা সবাই পলাতক। পুলিশ আসে তাদের নামে কেস হয় কিন্তু কোন কিছুতেই কিছুই হয় না। প্রকাশ্যে হত্যা করে পুলিশ তাদেরকে ধরে নিয়ে যায় অথচ কিছুদিন পরেই তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘুরে বেড়াই এই বিষয়টির বিপক্ষ দল কখনোই মেনে নিতে পারে নাই তাই তারা রক্তের বদলে রক্ত চাই এমন হোলি খেলায় মেতে ওঠে।


মেম্বারের গোষ্ঠী যেসব লোকজন ছিল তারা কোনভাবেই তাদের বিরোধী লোকদেরকে মারতে পারে নাই। পুলিশ তাকে ছেড়ে দিলেও তারা ছিল নিরুদ্দেশ। অর্থাৎ তারা সবাই পালিয়ে থাকতো। আপনারা হয়তো সবাই জানেন আমাদের এই এলাকাতে প্রচুর পরিমাণে মাছের চাষ হয়। যে গোষ্ঠীর লোকজন হত্যা করেছিল তাদের প্রচুর পরিমাণ পুকুরে মাছ ছিল। যেহেতু তারা পলাতক সে তো তাদের পুকুর গুলো পড়েছিল। তাই মেম্বার এর বংশ যেসব মানুষজন ছিল তারা তাদের পুকুরের মাছ গুলো সব বিক্রি করতো কোন কিছুতেই তাদের কিছু করার ছিল না। কয়েক কোটি টাকার মাছ এভাবেই বিক্রি করেছে এবং তাদের নিজেদের পুকুরে ঢেলেছে। তাদের মধ্যে একজন ১০ বিঘা জলকারী একটা পুকুর লিজ নিয়েছিল সেই পুকুরে এত পরিমাণ মাছ ঢেলেছে যে সে নিজেই জানে না এই পুকুরে কি পরিমাণ মাছ রয়েছে। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য এক ব্যক্তি কায়দা করে পুকুরটি নিজের করে নেয়। যে ব্যক্তি পুকুরটা লেজ নিয়েছিল সে অনেক কষ্ট পায় কারণ যে ব্যক্তি নিয়ে ছিল সে তাদের নিজেরই লোক। তাই তাকে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে পুকুরটি দিয়ে দেয়। অথচ সর্বশেষে দেখা যায় যে ব্যক্তি পরবর্তীতে পুকুরটির নেয় ওই ব্যক্তি এই তিন লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১৮ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করে। এই ব্যক্তি পাপের মধ্য দিয়ে সম্পদ বৃদ্ধি করেছে কিন্তু তার নিজের খাতায় শেষের দিকে দেখা গেল শূন্য।


এক গোষ্ঠী খুন করে পলাতক আর এক গোষ্ঠী তাদের মাছ লিজের পুকুরে দিয়ে অন্যকে বড়লোক করল। যারা পলাতক ছিল তাদের মধ্যে এক ব্যক্তির যেকোন ভাবে সৌদি আরবে চলে যায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো একজন খুনি কিভাবে দেশের বাইরে চলে যায় এই বিষয়টি শুধু বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব। ভাগ্যে নির্মম পরিহাস খুব বেশি দিন সে সৌদি আরবে থাকতে পারে নাই। বছর না গড়াতে এসে পরকালে পাড়ি দেয়। এই ব্যক্তির অর্থ সম্পাদনে ছিল। আমরা জেনেছিলাম এই ব্যক্তি যেসব অর্থ সম্পদ ছিল তার বেশিরভাগই ছিল চুরির সম্পদ। সে একজনকে খুন করল পরবর্তীতে সে নিজেই মৃত্যুবরণ করল তাহলে তার সম্পদ গুলোর কি হলো, সম্পদ গুলো অন্যরা খেল দিনশেষে তার নিজের খাতায় শূন্য পুড়ে থাকলো। তারা এখনো তাদের সেই খুনের ঘটনা নিয়ে যে পুলিশের কাছে কেস চলছে তার কোন সমাধান করতে পারে নাই। আদরের সমাধান হবে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। তাদের মধ্যে আর এক ব্যক্তি ছিল কয়েক কোটি টাকার সম্পদ আমরা শুনেছি এ ব্যক্তিও নাকি তার সম্পদে হারাম পথে উপায় করেছিল। এই একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার কোটি টাকা সম্পদ হয়ে গেছে শূন্য টাকা। সে আবার তা নিজের জায়গায় ফিরে এসেছে। এই ব্যক্তি যদি মারা যে তো আর এই খুনের ঘটনা যদি না ঘটতো তাহলে নিশ্চয়ই তার সম্পদ গুলো তার সন্তান এবং তার পরিবার ভোগ করতে। আর এই ব্যক্তির মৃত্যুতে সে সম্পদের পাহাড় গড়ে উঠে যেত কিন্তু তার নিজের খাতায় কি থাকতো অবশ্যই শূন্য থাকতো।


বর্তমানে এমন ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা অসৎ পথে অর্থ ইনকাম করে। জায়গা জমি ব্যাংক ব্যালেন্স ঘরবাড়ি কানাডার বেগম পাড়ার মত জায়গাতেও তারা ঘর জমি কিনে বিন্দাস জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু এই লোকগুলো একবারও ভেবে দেখেনা আজকে যদি সে মৃত্যুবরণ করে তাহলে, এসব সম্পদ গুলো কে ভক্ষণ করবে আর সে কতটুকু এই সম্পদ নিয়ে যাবে। মানুষের মধ্যে যদি এই মূল্যবোধটা থাকত তাহলে সে কখনোই পাপ কাজে লিপ্ত হতো না। তাই আমি বা আমরা বা আমাদের উচিত সম্পদের পাহাড় গড়ার আগে একটু খেয়াল করতে হবে যে এই সম্পদ আদৌ আমার জন্য, নাকি পাপের সম্পদ করে আমি আমার নিজের খাতায় শূন্য রেখে যাচ্ছি? কোন ব্যক্তি যদি এমন চিন্তাভাবনা করে চলে তাহলে অবশ্যই সে পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখবে।


ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।


👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 
 10 months ago 

আসলে ভাইয়া পাপের ফল কখনো ভালো হয় না। পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে সম্পদ দরকার তবে অন্যের সম্পদ চুরি করে নয় মানে অসৎ পথে নয়। সত্যিই তো মারা গেলে সব পরে থাকবে শুধু পাপ টুকু আমরা সাথে নিয়ে যাব।আর এতো ধন সম্পদ আমাদের সাথে কিছুই যাবে না। তাই আমাদের সবারই উচিত সৎ পথে থেকে উপার্জন করা। ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

সত্যি আপু আমাদের বেঁচে থাকার জন্য সম্পদ প্রয়োজন।কিন্তুু সেই সম্পদটা অবশ্যই হতে হবে সৎ পথের। তা না হলে পরকালে জবাবদিহিতা করতে হবে।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

গ্রামে এমন ঘটনাগুলো দেখা যায়। তবে সামান্য জমিজমার বিষয় নিয়ে মেম্বারকে এভাবে মেরে ফেলাও ঠিক হয়নি। তবে অসাধুপায়ে কোন সম্পদ পেলে সেটা বেশিক্ষণ থাকে না। দিনশেষে প্রাপ্তির খাতাটা শূন্যই থেকে যায়। এজন্য আমাদের যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা উচিত এবং সেটা যেন হালাল উপায়েই হয়।

 10 months ago 

আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন ভাই যতটুকু হবে হালাল পথেই হবে। আর হালাল পথে ইনকাম করলে তার মধ্যে বরকত থাকে। খুবই সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপনি ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আসলে অন্যের সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে কখনো সুখী থাকা যায় না। অনেক মানুষ আছেন টাকার লোভে অন্যজনকে খুন করে ফেলেন। অন্যের জীবনকে ধ্বংস করে ফেলেন। এতে করে সত্যি কোন লাভ হয় না। যদিও সাময়িকভাবে শান্তি পাওয়া যায়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় পাপের সম্পদ আসলেই খাতায় শূন্য। অনেক সুন্দর একটি শিক্ষনীয় পোস্ট ছিল ভালো লেগেছে পড়ে।

 10 months ago 

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।

 10 months ago 

ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন,মানুষকে প্রতিষ্ঠিত হতে হতে প্রায় চল্লিশ ছর সময় লাগে। আর অসৎ উপায়ে যে টাকাগুলো উপার্জন করে সে টাকা নিজের কাজে আসে না। পাপ করে এত সম্পদ জুড়ানোর পর অবশেষে নিজের কিছুই থাকেনা। আপনি একটি শিক্ষামূলক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

প্রতিটা মানুষের চল্লিশ বছর পরে আর তার অর্থ লাগে না তার নিজের জন্য। তখন তার যা থাকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। সুতরাং স্বল্প এই জীবনে দুর্নীতি করে টাকা ইনকাম করে বড়লোক হওয়ার কোন মানে হয় না। ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্য করেছেন।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59934.86
ETH 2666.82
USDT 1.00
SBD 2.45