ক্রিয়েটিভ রাইটিং :- পিতামাতার চাওয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ, শেষ পর্ব
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো একটি গল্প , আর এই গল্পের নাম পিতামাতার চাওয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ? আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষ আশা করে স্বপ্ন দেখে। কথায় বলে আশায় বাঁচে চাষা। মানুষের চাওয়া পাওয়া শেষ নেই। যে যত পায় সে যত চায়। মানুষের চাওয়া পাওয়ার মধ্যে অনেক গুলো রং রয়েছে। মানুষেরই চাওয়া পাওয়ার মাঝে কিছু চাওয়া পাওয়াটা সারা জীবন চাওয়া পাওয়ার মধ্যেই রয়ে যায়। আবার এই চাপার মধ্যে কিছু সার্থক হয় বা সফল হয়। আমি পিতা এবং সন্তানের চাওয়া পাওয়ার মধ্যে কিছু পার্থক্য কথা বলব আপনাদের মাঝে। আমার জীবনে বাস্তব কিছু অভিজ্ঞতা এই সম্পর্ক রয়েছে। যে সম্পর্কের কথা না বললেই নয়। এইগুলোকে আমি একত্রে একটা টাইটেল হিসাবে দিয়েছি নিজের চাওয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ। চেষ্টা করব আমি শেষ পর্বে এখানে বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলনের কিছু কথা তুলে ধরতে যেটা আমাদের ভালো লাগবে।
বর্তমান সমাজে অনেকের বাবা রয়েছে যারা অল্প শিক্ষিত। সে সময় মানুষ অর্থের হওয়া বেশি হবে তারা লেখাপড়া করতে পারেনি তবুও তারা চেষ্টা করেছে নিজেকে শিক্ষিত হওয়ার। আর সেই শিক্ষিত বর্তমান সমাজের শিক্ষিতর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। যাহোক তারা শিক্ষিত হতে পারেনি বলে সমাজের বুকে তারা মাত্র উঁচু করে দাঁড়াতে পারে নাই বলে তারা তাদের সন্তানকে নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো স্বপ্ন দেখে। তাদের স্বপ্ন দেখাটা ভুল না তাদের স্বপ্ন দেখাটা অবশ্যই ঠিক রয়েছে। কারণ প্রত্যেকটা বাবা-মা চায় তার সন্তান যেন মাথা উঁচু করে সমাজের বুকে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু কথা হল নিজে যে স্বপ্ন বুকে লালন করছে সেই স্বপ্ন সন্তানকে দিয়ে তো পুরোন নাও হতে পারে। আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা আমার নিজের বাবা তার নিজের স্বপ্নটাকে পূরণ করার জন্য আমাকে যথেষ্ট সাহায্য সহযোগিতা এবং যথেষ্ট আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছে। কিন্তু কথা হলো সে যেটা চায় আমি তো সেটা চাইতাম না। অর্থাৎ সে চাই আমার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুক। আর আমি চাইতাম বেশি শিক্ষিত না হয়ে অল্প শিক্ষিত হয়ে কিছু একটা চাকরি সহজভাবে পাওয়া যায় সে ধরনের কিছু করার চেষ্টা করতাম।
এখানে দুইজনের চাওয়াটা দুই রকম কিন্তু কাজ একই। আমি চাইতাম যে অল্প পড়াশোনা করে একটা চাকরি নেওয়ার জন্য। ঠিক যেমন আমার ইচ্ছা ছিল কৃষি ডিপ্লোমায় পড়া। চার বছরে কোর্স কমপ্লিট করে একটা জব নেয়া যায়। বাবার ইচ্ছা ছিল ঢাকা ইউনিভার্সিটি তে পড়া। আসলে সেখানে তো সবাই নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী চান্স পায়না। আর এই পথটা ছিল অনেকটা ট্রাপ। এখানে দীর্ঘ সময় পড়াশোনা করার পরে চাকরি পেতে হবে। প্রত্যেকটা মানুষের মুখ্য উদ্দেশ্য কিন্তু টাকা ইনকাম করা। যদি আমি অল্প পরিমাণ পড়াশোনা করে বা যে কোন একটা সাইট থেকে পড়াশোনা করে যদি আমি প্রতিষ্ঠিত হয়ে টাকা ইনকাম করতে পারি তাহলে আমার এত কিছু করার তো দরকার নেই। অনেক সময় বাবা মারা এই কথাটা বুঝতে পারে না। বোধগম্য হয় যেন আমার সন্তান উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। তাদের এই ধারণা তাদের এই চাপ সন্তানের উপরে যখন প্রভাব পড়ে তখন ওই সন্তান কোন কিছুই করতে পারে না। যারা এ প্রভাবটা নিতে পারে হয়তো বা তারা অনেক কিছু অর্জন করতে পারে আর যারা পারেনা তারা তাদের নিজের জীবনকে ধ্বংস করে যায়।
পিতা-মাতার এই চাপ যারা নিতে পারেনা অর্থাৎ পরবর্তীতে যারা কোন কিছুই করতে পারে না তখন ওই পিতা-মাতা বুঝতে পারে তারা ভুল করেছে। কারন আমার সন্তান যদি যেকোনো কিছু করে যদি কোন জব করতে পারে অর্থাৎ টাকা ইনকাম করতে পারে সেটাই তো তাদের জন্য ভালো। কারণ বয়স যখন বেড়ে যায় তখন পিতা-মাতার সবকিছু সন্তানের উপর নির্ভর করতে বসে। আর ওই সন্তান যখন কোন কিছু করতে পারে না তখন তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই ধরনের ঘটনাগুলো অহরহ ঘটে চলছে সমাজের বুকে। ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব প্রত্যেকটা বাবা-মার উচিত তার সন্তান কি চায় তার সন্তান কেমন করে মানুষ হতে চায়। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে তারা এমন কিছু যেন না করে যা যেটা তাদের জীবনের জন্য ক্ষতিকর। অর্থাৎ এখানে নেশা গান বাজনা যেসব জিনিসগুলো খারাপের দিকে যায় সেগুলোকে লক্ষ্য রাখতে হবে তারা যেন সেদিকে না পড়ে। আর মানুষ হওয়ার জন্য ভবিষ্যতে চাকরি পাওয়ার জন্য ওই ছেলে যে স্বপ্ন ভিতরে বাস্তবায়ন করে রেখেছে সেইটাই সামনে আনতে হবে। তাহলে দেখবেন একদিকে আপনি যেমন ভালো থাকবেন আপনার সন্তান ও তেমন মানুষের মত মানুষের সমাজের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
আপনার চাওয়া পাওয়াটা যদি সন্তানের ভবিষ্যৎ মনে করেন তাহলে হয়তোবা দেখবেন একটা লটারি হয়ে যাবে এখানে। হয় আপনার সন্তান মাথা উঁচু করে বাঁচবে না হয় আপনার সন্তান একেবারেই তলা নিতে পড়ে যাবে। তাই আমার ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে আমি বলব প্রত্যেকটা বাবা-মার উচিত সন্তান কি চায় সন্তানের কি ইচ্ছা সেটাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এবং সেটাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য বাবা মাকে তার পেছনে শ্রম দিতে হবে। তাহলে দেখবেন ওই সন্তান একদিন অনেক দূর এগিয়ে যাবে এবং আপনাদের বৃদ্ধ বয়সে পাশে থাকবে ভালোবেসে। মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে যেমন ছোট শিশু হয়ে যায়। আর ছোট শিশুকে বাবা মাঝে হবে লালন-পালন করে ঠিক তেমনভাবে লালন-পালন করবে আপনার সন্তান।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1756504726206832945?t=5A2sNWy31LJ0ElMuLXIgcQ&s=19
পিতা-মাতার চাওয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ এটার আগের পর্ব না পড়লেও, শেষ পর্বটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। প্রত্যেকটা বাবা-মা চায় যেন নিজের সন্তান ভালো কিছু করতে পারে, আর মানুষের মত মানুষ হতে পারে। সন্তানদেরকে মানুষের মত মানুষ করতে পারলেই বৃদ্ধ বয়সে বাবা মায়ের খেয়াল রাখবে। আপনি আজকে অনেক সুন্দর করে এই লেখাটা লিখেছেন, যেটা আমার অনেক ভালো লেগেছে।
সত্যি আপু মা বাবা বৃদ্ধ সময়ে সবথেকে বেশি নির্ভর করে সন্তানের উপর। তাই একজন সৎ নির্ভীক সন্তানই পারে বাবা-মাকে শেষ বয়সে তাদের পাশে দাঁড়াতে। তাদেরকে লালন পালন করতে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
পিতা মাতা সন্তানের ভালোর জন্য সবকিছুই করে ছোট থেকে। সন্তানকে ভালো রাখার চেষ্টা করে এবং মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। অনেক সন্তান মানুষের মতো মানুষ হয় আবার অনেক সন্তান হয় না। বাবা-মা চায় যেন তাদের সন্তান ভালো কিছু করে। আর নিজের ফ্যামিলিটাকে ভালোভাবে রাখে বিশেষ করে বাবা মাকে। বাবা মায়ের অনেক ইচ্ছা থাকে নিজের সন্তানকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন থাকে। বাবা মায়ের স্বপ্নের মত করে যদি সন্তান বেড়ে ওঠে তাহলে তারা বেশি খুশি হয়।
প্রত্যেকটা সন্তান যেমন তার পিতামাতার প্রতি কিছু প্রত্যাশা করে ঠিক তেমনি পিতা-মাতা সন্তানের প্রতি কিছু আশা রাখে। এর মধ্যে দিয়ে সন্তানের পিতা-মাতার আদল তৈরি হয়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
অনেক ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে এই সুন্দর পোস্টটি পড়ে। আসলে পিতা মাতা সব সময় তার সন্তানদের ভালোর জন্য অনেক কিছুই করে থাকে৷ তারা সবসময় তাদের সন্তানদের সে কাজটি করে যা করলে ভালো হবে৷ তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের একজন শিক্ষক আমাদেরকে সবসময় বলতেন যে, সব পশুপাখি জন্ম নেওয়ার পর তারা সেই পশু পাখি হিসেবে বিবেচিত হয়৷ তবে মানুষ জন্ম নেওয়ার পর তা মানুষ হিসেবে বিবেচিত হয় না৷ তাকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হয়৷ এই মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার মূল হোতা হয়ে থাকে আমাদের পিতা-মাতা৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে সুন্দর পোস্টটি পড়ে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷
প্রত্যেকটা মানুষ জন্মের পরে যে মানুষ হবে এটা বড় কথা নয়। মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা দরকার হয় না। মানুষের মত মানুষ হলে তার চরিত্র গঠন ভালো হতে হয়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার এই গল্পের পূর্বের পর্বগুলো পড়া হয়নি যদিও আমার তবুও গতদিনের আড্ডায় আপনার আলোচনা শুনে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি।আসলেই বাবা-মায়ের চাপিয়ে দেওয়া বোঝা সন্তানের জন্য সুন্দর হয় না, তাদের স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে চলাটাই বুদ্ধির কাজ।আপনি বিস্তারিতভাবে সুন্দর বর্ননা দিয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।