জেনারেল রাইটিং :- এক দুঃখী মানুষের জীবন।

in আমার বাংলা ব্লগlast year
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো এক দুঃখী মানুষের জীবন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

আপনারা নিশ্চয় টাইটেল পড়ে বুঝতে পেরেছেন আজকে আমি কেমন একটা মানুষের সাথে আপনাদের পরিচয় করে দিতে যাচ্ছি। আমি আজকে যার জীবন খানি আপনাদের সামনে তুলে ধরব তিনি হলেন আমাদের বাড়ির পাশের একটা ফুফু।যদিও আমার রক্তের কেউ নয় তারপরও সে বাড়ির পাশে প্রতিবেশী। আর প্রতিবেশীর হক পালন করা আমাদের কর্তব্য। আর পিতার নাম ছিল মোহাম্মদ নিয়ামত আলী। মায়ের নাম হাজরা খাতুন। তারা দুই বোন এবং এক ভাই। নিতান্তই তারা অনেক অনেক গরিব মানুষ। ভাই বিয়ে করে তাদের কাছ থেকে অনেক দূরে থাকে। তার বাবা সন-সম্পদে কিছুই নেই। থাকার মধ্যে শুধু বাড়ি বান্দা ভিটা টুকু আছে। দুই বোনের মধ্যে ছোট বোনটা বিয়ে হয়ে গেছে। ইনার বিয়ে হয়ে গেছিলো। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে একটু পাগলি বলে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। যে মানুষটা সম্পর্কে আমি আপনাদের সামনে কথা বলছি তার নাম হলো মুর্শিদা।


কে মানুষ হয়েছে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে। বাবা মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা নিচে নিতো। মা লোকের বাড়িতে কাজ করতো। তারা বড় হওয়ার পর করে তাদের বাবাকে হারিয়ে ফেলেন। অনেক কষ্ট করে তাদের তিন সন্তানকে মানুষ করে তার মা। বলতে গেলে বলায় যেতে পারে যে তার মাও কিন্তু আধা পাগল। যেকোনো মানুষ থেকে পাগলী বলে সম্মত করে। পাগলী হলেও সে তার নিজের কষ্ট পরিশ্রমে দিয়ে তার তিন সন্তানকে মানুষ করেছে। বড় করে তুলেছে এবং তাদেরকে কোনো না কোনো কাজে যোগান দেয়ার মত সেই তৈরি করেছে। আমি তাদের অন্যজনের কথা বলবো না আমি আজকে শুধু আপনাদের সামনে মুর্শিদা খাতুন এর কথা। স্বামী নেই কোন সন্তানও নেই। কতটা কষ্ট থাকে একটা মেয়ের জীবনে যার স্বামী নেই সন্তান নেই। বাড়ির আশেপাশে মানুষের মুখ চেয়ে থাকে মেয়েটা। এক বেলা খেতে পারে আরেক বেলা অনাহারে থাকে। এভাবেই তার জীবন কাটতে থাকে। অনেকের কাছে প্রশ্ন থাকে সে তাহলে কি করে জীবন চালায়। তার জীবন চালানোর জন্য একমাত্র আবল মন হলো একটি ছাগল।


জি, হা একটা ছাগল। মুরশিদা খাতুন এর একটা ছাগল ছিল। ছাগলটি অবশ্যই মেয়ে ছাগল। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে একটি ছাগল কিভাবে তার জীবনে চলার জন্য কিভাবে যথেষ্ট। আসলে আপনারা যেন অবাক হবেন যে ছাগলটি ছিল তার চার থেকে পাঁচটা করে প্রত্যেক বার বাচ্চা হতো। এর মধ্যে তিনটা হোক বা দুইটা হোক খাসি ছাগল এবং এ ছাগল হতো। সে ছাগলগুলোকে ৬ থেকে ৭ মাস পর পর সবগুলো বিক্রি করে দিত। আর সেখান থেকে যে টাকা পেত সে টাকা দিস তার নিজের জীবনকে অতিবাহিত করতো। যদিও এই টাকা দিয়ে তার সংসার চলতো না বা তার এটাই যথেষ্ট ছিল না। তারপরও সে কারো কাছ থেকে হাত পেতে কোন টাকা নিতো না। আমরা বাড়ির পাশে থেকে যতটুকু পারি তাকে দেখার চেষ্টা করি। এই মুরশিদা খাতুন কতটুকু ভালো মানুষ আপনার একটু চিন্তা করেন, আপনি তার কাছ থেকে যদি কোন কিছু চায় চেয়ে থাকেন যদি তার কাছে থাকেন নির্ধিতে আপনাকে দিয়ে দিবে। তাইতো অনেকেই বলে থেকে গরিব মানুষ হলে মানুষের মন বড় হয়ে থাকে এমন মানুষের অভাব নেই।


এইতো কিছুদিন আগে হঠাৎ করে মুরশিদা খাতুন এর যে বড় মেয়ে ছাগলটা ছিল সেটা মারা যায়। আমি অবশ্য ওর মধ্যে বাসায় ছিলাম না। হঠাৎ করে একদিন আর সাথে দেখা আমি ওনাকে বললাম ফুফু তুমি, তোমার ছাগলে একটা খাসির বাচ্চা আমাকে দিবে। এই কথা বলার সাথে সাথে তিনি হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। আমাকে বলছে বাপ আমার ছাগলটা মারা গেছে। এটা জানার পরে সত্যি আমার অনেক খারাপ লেগেছিল। কারণ আমি তো জানতাম যে তার বেঁচে থাকার মধ্যে এই ছাগল ছেলে একমাত্র সম্বল। তবে তবে মেয়ে ছাগলটা মারা গেল সে রেখে গিয়েছিল একটা ছোট খাসির বাচ্চা। তিনি সবসময় সেই খাসির বাচ্চাটাকে নিজের সাথে করে নিয়ে যায়। অবাক হবেন কোন জায়গায় তাকে ছাড়া থাকেন না। আর এই অবলম্বন করে সে এখন বেঁচে আছি। এখন তাকে আবার কোন মানুষের কাছে হাত পেতে কোন কিছু নিতে হয়। অতি কষ্টে তার প্রত্যেকটা জীবন অতিবাহিত হচ্ছে।


পৃথিবীতে এমন মুর্শিদা খাতুন এর অভাব নেই। কারো হাজার হাজার কোটি টাকা রয়েছে আবার কেউ এক মুঠো ভাতের জন্য সারাদিন পরিশ্রম করেও তাও সেই ভাতটুকু জোটে না। সমাজের যদি নিয়ম নীতি থাকতো তাহলে সবাই মিলেমিশে বসবাস করতে পারত। সবাই কম বেশি কিছু না কিছু খেতেও পারতো।


আজ এই পর্যন্ত, সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। সকলের জন্য আমার পক্ষ থেকে রইলো দোয়া ও ভালোবাসা। আল্লাহ হাফেজ।

👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর ভাবে আপনাদের বাড়ির পাশের মুরশিদা খাতুনের গল্প লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে আপনার লেখা গল্পটি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। আসলে ছাগলের বাচ্চা গুলো থেকে কিন্তু সে এখন বেশ সাবলম্বী হয়েছে। কিন্তু প্রথমের দিকে অসহায় একজন মানুষ ছিল খুবই গরীব মানুষের কাছে প্রায় সময় হাত পাততো। কিন্তু মানুষটি অনেক ভালো মনের এবং বড় মনের মানুষ ছিল। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আসলে ভাগ্নে এখনই সে অনেকটা হতদরিদ্র হয়ে গেছে। কারণ তার যে বড় ছাগলটা ছিল সেটা মারা যাওয়ার পরে তার এখন মাত্র ছোট্ট একটা ছাগলে বাচ্চা ছাড়া আর কিছুই নেই।

 last year 

ভাইয়া আজকে আপনি খুবই দুঃখজনক একটি গল্প মাঝে মাঝে শেয়ার করেছেন। লেখাটি পড়ে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। আপনি সত্যি বলেছেন গরিব মানুষের মন আসলেই বড় হয়। হয়তো তাদের দেয়ার কিছু নেই কিন্তু যতটুকু আছে ততটুকু দিয়েই মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদেরকে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

কোন মানুষ যদি কোন গরিবের ঘরে আসে তাহলে ওই গরিব ব্যক্তি চেষ্টা করে সর্বাত্মক যেন তাকে যেকোনোভাবে খুশি রাখতে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

জ্বি ভাই কথা সত্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59824.84
ETH 2666.86
USDT 1.00
SBD 2.48