" জুমাবি ৫০ বছর পূর্তি মিলন মেলা অনুষ্ঠান -২০২২, পর্ব- ৩।১০ % প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য । by @tuhin002

আমার পাশে যে লোকটিকে দেখতে পাচ্ছেন এর নাম মুস্তাফিজুর রহমান। এ আমার হাই স্কুল লাইফের বন্ধু। এই একমাত্র বন্ধু ছিল,যে সব থেকে নিকটতম বন্ধু। যার কাছে এমন কোন কথা নেই যে শেয়ার করা যায় না। বন্ধু কাকে বলে তার সাথে না বেড়ালে আমি কখনো বুঝতে পারতাম না।তার বাড়ি শহড়াবাড়িয়া । আমরা দুইজনে কমার্সের ছাত্র ছিলাম। আমরা হাইস্কুলে থাকতে যেমন একসাথে বেড়িয়েছি, এই জীবনে এসেও আমরা অনেক সময় কাজের জন্য দেখা করতে পারি না তারপরও মাঝে সাঝে একে অপরের কাছে ফোন দিয়ে দেখা করার জন্য আসতে বলি। এবং প্রায় প্রায় আমরা দেখা করে থাকি। ঐদিন জুমাবি অনুষ্ঠানে আমরা দুজন একত্রিত হয়ে অনেক কাজের পাশাপাশি অনেক ঘোরাঘুরি করেছিলাম।

এখানে আপনারা যেটা দেখছেন তা ওই দিনে আমরা যে অনুষ্ঠান করেছিলাম ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ।আমাদের যতটুকু সাধ্য ছিল ততটুকু চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য।মঞ্চের সামনে কিছু টেবিল ছিল এবং টেবিল এর সামনে ভিন্ন ধরনের কিছু ফুল দিয়ে আমরা সাজানোর চেষ্টা করেছি। দিনশেষে আমরা সফল হয়েছি। মাইক থাকার কারণে আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন মাইকের মেশিন সহ সাউন্ড বক্স অনেক গুলো সাউন্ড বক্স ও আমরা এনেছিলাম এই অনুষ্ঠানের জন্য।

এখানে আপনারা যে ব্যক্তিকে দেখতে পারছেন ইনি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক।জিনার নাম মোঃ খায়বার হোসেন টু। আসলে উনাকে টু বলার কারণ হলো, আমাদের স্কুলের দুইটা এই একই নামের স্যার ছিল।বয়সের কারণে উনি খাইবার টু পরিচিত ছিল আমাদের স্কুলে। তিনি আমাদের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। যখন আমরা সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি তখন ওই শ্রেণিতে একটি পড়া ছিল ওই পড়া নাম হল প্যাসকেলের সূত্র। এই প্যাসকেলের সূত্র নিয়ে কাহিনী শেষ থাকতো না।যে ব্যাচ সেভেনে পড়ুক না কেন তার অন্য পড়া হোক বা না হোক তার এই প্যাসকালের সূত্র এ টু জেড হতে হবেই। আর যদি না হয় তাহলে মাইরের শেষ নেই। উনার কথা হল এই প্যাসকালের সূত্র প্রত্যেকটা স্টুডেন্টকে ঠোঁটের আগায় রাখতে হবে। সত্যি আমাদের স্যার কে নিয়ে আমরা খুব গর্ববোধ করি। উনি খুবই একজন ভালো মনের শিক্ষক। উনি আজ পর্যন্ত আমাদের সাথে যে ব্যবহার করে এমনিতেই চোখে জল চলে আসে। সালাম জানাই আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষককে। আল্লাহ যেন উনাকে সুস্থ রাখেন।

আমাদের অনুষ্ঠানে আমরা বসার জন্য অনেকগুলো জায়গা রেখেছিলাম। অবশ্যই জায়গা গুলোকে দুই ভাগে বিভক্ত করছিলাম। একটি ভাগে মহিলারা বসবে আর অন্য ভাগে পুরুষেরা বসবে।আমাদের স্কুলের ছাত্রীদের পাশাপাশি যত মেয়েরা আমাদের এই স্কুলে পড়াশোনা করেছে আজ ৫০ বছর ধরে সবাই আমাদের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। আমাদের এ অনুষ্ঠানে বিকেল বেলার দিকে যদিও গান-বাজনা আয়োজন ছিল, তাই বাইরে থেকে অনেক মহিলারাও আমাদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল। আমরা চেষ্টা করেছি অনেকটা জাকজমক ভাবে অনুষ্ঠানটি সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য।

পূর্ব সাইডে যেমন মহিলাদের জন্য আমরা আসন ব্যবস্থা করেছিলাম, ঠিক তেমনি পশ্চিম সাইডে পুরুষের জন্য আমরা আসন ব্যবস্থা রেখেছিলাম। দলে দলে গ্রামের পুরুষ মানুষ সহ বাইরের বহু পুরুষ মানুষ আমাদের এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য ছুটে এসেছিল। আসলে আমাদের গ্রামকে একটি আইডল গ্রাম হিসেবে আমরা বলে থাকি। শুধু আমরাই নয় আমাদের আশপাশে গ্রামের লোক সবাই জানে এই গ্রামের লোকজন অনেক শিক্ষিত এবং এদের ব্যবহার অনেক ভালো। এরা কোন অনুষ্ঠান যদি করে থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই রুচিশীল হয়ে থাকে। আর এর জন্য আমাদের অনুষ্ঠানের বাঁধভাঙ্গা মানুষের ঢল নামে যার প্রমাণ আপনারা এই ছবির মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছেন। আমাদের এই অনুষ্ঠানে অনেক লোকের আগমনে আমাদের অনুষ্ঠানটি সার্থক হয়েছিল।

এই ফটোগ্রাফিতে আপনারা যে ব্যক্তিকে দেখতে পারছেন এই ব্যক্তির পরিচয় আমি পরবর্তীতে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। ইনার ব্যক্তিগত জীবন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আপনাদের সামনে আমি তুলে ধরব। আজকে শুধু জাস্ট ছবিটা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি তবুও তার সম্পূর্ণ ছবিটি আপনাদের কাছ থেকে লুকায়িত রাখলাম। ইনি আমাদের সারা গাংনী থানার গর্ব। কিভাবে একটা হতদরিদ্র পরিবার থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হওয়া যায় সেই গল্পটি আপনাদের সামনে তুলে ধরব আগামীতে।

আমি তুহিন ব্লগ।আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।আমার মাতৃভাষা বাংলা।আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি।এই ব্লগে কাজ করার মধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়।আমি পাশাপাশি একটি ব্যবসা করি।এ ছাড়া আমার একটি বাগান আছে। এবং বারে থাকে।আমি ছবি আঁকতে পছন্দ করি।মাছের চাষ আমার প্রধান পেশা।এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।।