ক্রিয়েটিভ রাইটিং :- বুঝতে না পেরে নিজের ক্ষতি।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো,বুঝতে না পেরে নিজের ক্ষতি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
আমাদের দেশ বাংলাদেশ। নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে নদী-নালা খাল বিল জলাশয় পুকুর রয়েছে। আর এতগুলো এসব আছে বলেই আমাদের দেশে মাছের অভাব নেই। আর তাই আমাদেরকে মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয়। আর বাঙ্গালী মাছ খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে। আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে ভিন্ন জাতের মাছ পাওয়া যায়। খালে বিলে পাওয়া যায় পুটি টেংরা টাকি মাগুর মাছ আরো বিভিন্ন ধরনের প্রজাতির মাছ খালেবিলে পাওয়া যায়। বর্তমানে আমাদের দেশের মানুষ প্রচুর পরিমাণে মাছের চাষ করে থাকেন। চাষযোগ্য মাসের মধ্যে রয়েছে রুই কাতলা সিলভার মনোসেক্স, কাপ মৃগেল ইত্যাদি বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করে থাকে। আর এইসব মাছ চাষ করার সময় অনেকটা সময়ের ব্যাপার রয়েছে এবং খরচ হয়ে থাকে। এই মাছ চাষ করার সময় কখন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনাও ঘটে যায় বুঝে বা না বুঝে। তেমনি একটা ঘটনা ঘটেছে না বুঝেই নিজের ক্ষতি হয়ে গেছে।
আমাদের পাড়াপড়শি চাচা। নাম জয়নাল হোসেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করে থাকেন। তবে বেশিরভাগ সময়ে তিনি ছোট রেনুপোনা চাষ করেন। এখান থেকে তিনি যথেষ্ট লাভবান হন। এইতো বেশ কিছুদিন আগে উপরে সাড়েপাশে কচুরিপানা বিভিন্ন জাতের ঘাস ছিল। আমি মাছের খাবার দিতে গিয়ে দেখতাম যে, কয়েকটা শ্রমিক নিয়ে তার পুকুর গুলো পরিষ্কার করছেন। পুকুরে চারপাশ পরিষ্কার করার পরে। যেসব ঘাস গুলো ছিল ওই গুলো পুকুরে চার কোনায় চাপা দিয়ে রেখেছিল। এভাবে কয়েকদিন যেতে লাগলো। ওই সবগুলো পচানি দেয়ার কারণে আস্তে আস্তে পুকুরে পানি কালো হতে লাগলো। এরপরও তিনি খুব একটা অস্বাভাবিক মনে করেননি কারণ এগুলো দিলে পুকুরের পানির রং একটু পরিবর্তন হয়ে থাকে। আমিও প্রতিদিনের নাই মাছের খাবার দিতে যাই এবং ওই পুকুরের দিকে তাকিয়ে থাকি। সাদা মাছের সাথে সাথে ওই পুকুরে কিছু পাঙ্গাসের চাষ করেন তিনি। আমি লক্ষ্য করে দেখি তিনি প্রতিদিনই প্রায় পাঙ্গাসের খাবার দেন। তার কয়েকদিন পরে দেখি তারই ছোট ভাগ্নে পুকুরের মধ্যে নেমেছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে পুকুরে নামছিস। সে আমাকে বলো ভাই কিছু মাছ মারা যাচ্ছে। আমি লক্ষ্য করে দেখি অনেকগুলো মাছ পুকুরের মধ্যে টাওয়ারে বেড়াচ্ছে। ঐদিন বেশ কিছু মাছও উঠায় নিয়ে গেল পুকুর থেকে।
এভাবে কয়েক দিন অল্প অল্প করে কিছু মাছ মরতে থাকলো। তার কিছুদিন পরেই দেখি পুকুরে চারিপাশে মাছ মরে সব ভেসে গেছে। ঐদিনও আমি সকালে খাবার দেয়ার জন্য আসছিলাম। এই বিষয়টা দেখে আমি থেমে গেলাম। দেখলাম ওই চাচা এবং চাচার বোনের ছেলে দুজনে পুকুরের মধ্যে নেমেছে। চারি পাশে অনেক গুলো মাছ তুলে রেখেছে এবং তারা দুইজনে দুটি গামলাই মাছ চলছে। আমি এর আগেই বলেছি তিনি ছোট রেনু কোন চাষ করে থাকেন আর এই রেনুপোনা চাষগুলো অনেক লাভজনক। যদিও রেনুপনা চাষ করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তিনি যেসব ঘাসগুলো পচানি দিয়েছিলেন তিনি ভাবছিলেন এইগুলো থাকলে মাছের খাবার হবে আসলে এটা মাছের প্রাকৃতিক খুবই ভালো একটি খাবার। কিন্তু তিনি নিজের ভালো করতে গিয়ে একটু ভুলের জন্যই সবকিছু উল্টো হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে প্রায় বিশ হাজার টাকার উপরে তার ক্ষতি হয়েছে। আসলে আমরা সবাই গরিব চাষী বিশ হাজার টাকা ক্ষতি হওয়া মানেও নিজের অনেকটাই ক্ষতির মুখে পড়ে দেওয়া। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ দেখলাম তারা সবাই তারা দুইজন মিলে পুকুরে আনাচে-কানে সে যেসব মরা মাছগুলো ছিল সেগুলো উপরে তুলে রাখছে আর যেগুলো নেওয়ার মতো সেগুলো তারা ঘামলাই রেখে দিচ্ছে। অবশ্য তার পুকুরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তিনি না বুঝেই এই ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি ভেবেছিলেন এগুলো করলে হয়তোবা পুকুরের মাছের খাবার তৈরি হবে এবং প্রাকৃতিক খাবার গুলো খেয়ে তার মাছগুলো অনেকটা বড় হবে। কিন্তু সেটা না হয়ে তার হিত বিপরীত হয়েছে এবং তিনি অনেকটাই লসের সম্মুখীন হয়েছে।
আপনারা এই ফটোগ্রাফিতে যে লোকটাকে দেখতে পারছেন এই পুকুরটা হচ্ছে তিনার। আসলে আমাদের গ্রামের মানুষ গুলো সবাই পুকুরের উপর নির্ভরশীল। সাত থেকে আট হাজার এর উপরে বেশি পুকুর রয়েছে আমাদের গ্রামে। সারা বছরে পুকুরে মাছ চাষ করে যে টাকা হয় সেটা দে আমাদের গ্রামের মানুষের আশি শতাংশ লোকের সংসার চলে। এই চাচাও তার ব্যতিক্রম নয় কিন্তু তার সামান্য না বুঝে একটু ভুলের জন্য অনেক গুলো ক্ষতি হয়ে গেছে। চাষিরা এমনই হয় তাদের চাষ যোগ্য যে কোন কাজে লাভ লস থাকে। তাদের জীবন সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই চলে।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | জুগির গোফা,গাংনী মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনার প্রতিবেশী চাচার জন্য সত্যি অনেক খারাপ লাগছে। তিনি অনেকটা লসের সম্মুখীন হলেন। হয়তো একটু ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে। মাছগুলো মরে গেছে দেখে সত্যিই খারাপ লাগলো। তবে কি আর করার লাভ লস সবকিছু মেনে নিতেই হবে।
এটা ঠিক বলেছেন কোন কিছু করতে গেলে লাভ লোকসান হবেই। তবে এই লোকসানটা ওনার একটু ভুলের জন্যই হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
https://twitter.com/ABashar45/status/1686207364557680640?t=2DDWvwbStproMAPMQgb_CA&s=19
আসলে মাছ চাষের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আর ছোট মাছগুলো চাষ করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হয়। তাছাড়াও তিনি ঘাস জমিয়ে রেখে সেগুলো পঁচিয়েছেন তাইতো পানিটা বিষাক্ত হয়ে গেছে। যাই হোক লোকটির ক্ষতি হয়েছে এবং প্রার্থনা করি তিনি ক্ষতি পুষিয়ে উঠুন।
ভাই আপনি একেবারে যথার্থ বলেছেন, ঘাস গুলো পঁচে পানিটা বিষাক্ত হওয়ার কারণেই কিন্তুু উনার মাছের এত বড় ক্ষতি হয়েছে। চমৎকার ভাবে মন্তব্য করেছেন ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।
সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই বুঝেশুনে কাজ করা উচিত উনি হয়তো অনেক দিনের অভিজ্ঞতা সেজন্যই ভেবেছিলেন যে কচুরিপানাগুলো দিয়ে মাছে খাবারের কাজ হবে। কিন্তু আসলে ওনার জন্য খুব দুঃখকর একটি ঘটনা ঘটে গেল। উল্টো মাছগুলো সব মরে গেল। প্রাকৃতিকভাবে মাছ বড় করতে গিয়ে এই বিপত্তিটা ঘটলো। খুব খারাপ লাগলো ঘটনাটি শুনে।
আসলে আপু কখনো কখনো বড় চাষিরাও বা বড় ব্যবসিকরা নিজেদের অল্প ভুলে অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে যায়।
ভাই আপনার পাড়া পড়শী চাচার পুকুরের মাছগুলো এভাবে নষ্ট হওয়াতে আমার কাছেও খুবই খারাপ লাগছে। কচুরিপানা গুলো ওভাবে রেখে দেয়ার কারণে হয়তো পুকুরে পানি নষ্ট হয়ে মাছগুলো মারা গিয়েছে। তবে হয়তো আপনার চাচা ভুলেও বুঝতে পারেননি এই কচুরিপানার জন্যই তার এত বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। আপনার চাচা যেন এই ক্ষয়ক্ষতি সামলিয়ে উঠতে পারে এই প্রত্যাশা করছি।
আসলে ভাই প্রতি বছরই পুকুর পরিষ্কার করার পরে কচুরি পানা গুলো পুকুরে কোনায় আমাদের অনেক পুকুরের মালিক আছে যারা রেখে দেয়। হয়তোবা তার কপাল খারাপ ছিল তাই এমন হয়েছে।
আসলে মামা পুকুরে ছোট মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে আমাদের সকলের সতর্ক হওয়া উচিত। পুকুরে যখন ছোট মাছ দেওয়া হয় তখন পুকুরের চারিপাশ গুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। আসলে পুকুরের চারিপাশের ঘাস গুলো পানিতে পঁচে পানি বিষাক্ত হয়ে হয়তো মাছগুলো মারা গিয়েছে।আসলে যে কোন কৃষকেরই ক্ষতি হলে বেশ খারাপ লাগে।
ঠিকই বলেছ, ছোট মাছ তৈরি করতে হলে অবশ্যই পুকুরের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে তা না হলে পানির বিষাক্ত হয়ে মাছ মারা যায়।
খুব সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন আপনি আসলে এটা পঁচা ঘাসের কারণে হলো। মাছের লাভ করতে যেয়ে ক্ষতি হয়ে গেলো। ঘাস পঁচার কারণে ঘাসের মধ্যে একটি অক্সিজেন তৈরি হয় যেটা মাছ সহ্য করতে পারে না। এই পঁচা গাসের কারণে আজ অনেক ক্ষতির সম্মুখীন।
আসলে আপু মাছ তো অক্সিজেন থাকলে মরে না। এটার কারণে পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। অক্সিজেন যদি বেশি থাকে তাহলে মাছ আরো ভালো থাকে।
আপনার চাচার এভাবে মাছগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়া আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছে। আসলে আপনার চাচার অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। উনি ভেবেছিল কচুরিপানাগুলো মাছের খাবার হবে কিন্তু তা উল্টো হয়ে গেল। এবং মাছের আরো ক্ষতি হলো। দোয়া করি যাতে উনি উনার ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারে।
আসলে সব সময় ভাগ্য সহায় হয় না।এটা থেকে উনি লাভবান হবেন কিন্তু কচুরিপানা গুলো বিষাক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে উনি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
কয়েকদিন আগে এই সমস্যাটা আমার পুকুরেও হয়েছিল। পুকুর পরিষ্কার করার পরে যখন সেই জিনিসগুলো পুকুরের মধ্যেই রেখে দিয়েছিলাম মাছ ভাসতে শুরু করে দিয়েছিল। আমার ভাগ্য ভাল ছিল আমার পুকুরে তেমন কোন মাছ মারা গিয়েছিল না। জয়নাল চাচার তাহলে তো অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
হুম জয়নাল চাচার অনেক গুলো মাছ মারা গেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রুই মাছের পোন গুলো মরে। কারণ রুই মাছের পোনা গুলো প্রায় ৬০০ টাকা কেজি।