ক্রিয়েটিভ রাইটিং // ভৌতিক গল্প :- প্রতাপগড়ের বৌরানী :- ২য় পর্ব।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো একটি গল্প , আর এই গল্পের নাম ভৌতিক গল্প:- প্রতাপগড়ের বৌরানী :- ২য় পর্ব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
পশ্চিমের আকাশে লাল কমলার মিশ্রণে গোধূলির আকাশ খুবই সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়ে গেছে। আর আমি এইখানে এই বিশাল রাজপ্রাসাদের একটি ঘরের কোণে একাকী বসে গোধূলির আকাশ দেখছি। আমি কখন থেকে একা বসে আছি, কেউ নববধূর একবার খোজটি নিতেও আসলো না। এমনকি এক গ্লাস জল দিতেও কেউ আসেনি। মামা বাড়ি থাকাকালীন মামির কৃপায় খেয়ে থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু জল না খেয়ে থাকাটা অসম্ভব প্রায়। জলের তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে আর কিছুক্ষণ জল না পেলে জলের অভাবেই মারা যাবো। এভাবে আর থাকতে না পেরে ভাবতেছি কাউকে ডাকবো। ঠিক তখনই ঘরে দরজার করা নিয়ে ভেতরে এলেন আমার সেই পিসি শাশুড়ি। ইনি আমার সামনে এসে বেশ কণ্ঠে বললো,শোনো বৌমা আমাদের বাড়ির একটা রেওয়াজ আছে। বাড়ির নতুন বউকে দেখতে হলে তার হাতে কিছু দিতে হয়। তাই তোমাকে এটা দিলাম, যত্নে রেখে দিও।
আমি বিয়ের পরে বুঝতে পেরেছিলাম আমার উপরে আমার পিসি শাশুড়ি খুব একটা প্রসন্ন নয়। তিনি আমার থেকে চোখ ফিরিয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কাজের মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলল, বামন বউ হাঁ করে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে না থেকে ভাতের থালাটা টেবিলে গিয়ে রাখো। তার কথায় কলের পুতুলের মত কাজের মেয়েটি ভাতের থালা আমার সামনের একটি টেবিলে রেখে দিল। এই হচ্ছে তোর দোষ বামন বউ। যখন যে কাজটা বলবো সেটা করে হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকবে। কি বলেছি মনে নাই তোর। ভাতের থালাটা নামিয়ে যখন হয়ে গেছে যা বাকি জিনিসগুলো নিয়ে আয়। মহিলাটি আমার পিসি শাশুড়ির কথা শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল বাকি জিনিসগুলো আনার জন্য। কাজের মেয়েটি চলে যেতেই পিসি শাশুড়ি আমার পাশে এসে বসলেন। আমার চিবু কে হাত রেখে ঝাঁকি দিয়ে বলল। শোনো নতুন বউ বেশি কৌতুহল দেখিও না কোন বিষয়ে। রাত্রে যদি বাইরে কোন শব্দ পাও, তবুও দরজা খুলে সেই শব্দের উদ্বোধন করতে যেও না। একটা কথা স্পষ্ট শুনে রাখো বৌমা, এই বাড়িতেই থাকতে গেলে কৌতুহল কম করে থাকবে। মেয়েদের বাপু কোন বিষয়ে কৌতুহল দেখানো ভালো নয়। আমার পিসি শাশুড়ির বলে যাওয়া কথাগুলো আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। এই বাড়িতে ঢুকেই আমার সন্দেহে দানা বিধেছিল মনে। তারপর আবার পিসি শাশুড়ির এমন কথা। আমার সন্দেহ আরো বেড়ে গেল। কি আছে এই রাজবাড়ির মধ্যে? এই রহস্য আমাকে উদ্বোধন করাই লাগবে।
কাজের মেয়েটি হঠাৎ চলে আসে আমার চিন্তার বিচ্ছেদ ঘটলো। কাজের মেয়েটি খাবারে নেই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে দেখে, পিসি শাশুড়ি ধমকেশ্বরে বলে উঠলো :আ মোলো জা,,, এমন হা করে তাকিয়ে আছিস কেন? যা ঘর থেকে বের হ,নিজের কাজে যা। উনার এমন কথায় আমি যতটা হতভম্ব হলাম কাজের মেয়েটি তার থেকে দ্বিগুণ ভয় পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। কাজের মেয়েটি চলে যাওয়ার পর আবার আমার পিসি শাশুড়ি আমার দিকে তাকিয়ে হুমকির শুরে পড়ে গেল, শোনো বৌমা, তুমি রূপসী, সুন্দরী। এটা অজ পাড়াগা। এখানে থাকতে হলে সাবধানে থাকতে হবে। ঘরের বাইরে বেশি না যাওয়াই ভালো। আর কৌতুহলটা দমিয়ে রেখো। আমার কথার খেলাপ হলে কিন্তু বিপদে পড়বে। এই কথা বলে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। বিয়ের পর প্রথমে বাড়িতে আসার পরপরই বুঝতে পেরেছিলাম এই বাড়িতে কিছু না কিছু লুকিয়ে আছে। এখন মনে হচ্ছে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে নয়, কোন অজানা এক অন্ধকার পাতালপুরীর প্রেতলোকে চলে এসেছি। সাদা চোখে দেখলে সবকিছু ঠিক, কিন্তু অন্তরের চোখ দিয়ে দেখলে বোঝা যাবে এই বাড়িতে ভয়ংকর কিছু লুকিয়ে আছে। বাড়ি প্রতিটি জিনিসই যেন অস্বাভাবিক।
এইবারে সব থেকে অস্বাভাবিক যিনি তিনি হলেন আমার পিসি শাশুড়ি। ওনার চোখের দিকে তাকালে কেমন শরীর হিম হয়ে আসে। কখনো দেখে মনে হয় এ যেন কোনো মানুষ নয়, অশরীরী আত্মা। চোখের মনি দুটি বড় অদ্ভুত, ঠিক বাড়ির সামনের এবং স্নান ঘরে রাখা মূর্তি দুটির মতো। দেখে মনে হয় মৃত মানুষ। যাইহোক এত কিছু না ভাবলেও চলবে এখন।সবেমাত্র কয়েক ঘন্টা হল আমি বাড়িতে এসেছি। ভাবার জন্য এখনো অনেক সময় আছে। কাল থেকে তাই না খাওয়া আমি, তার আগে পেট পুজো সেরে নি। তারপর না হয় এই বাড়ির রহস্য নিয়ে ভাবা যাবে। চলবে.....।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1707756385461825896?t=qOSpKBPI-ZiqegOqB9ME4w&s=19
প্রতাপগড়ের বৌরানী দ্বিতীয় পর্বটি পড়েও বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলেই পিসি শাশুড়ির কথাগুলো শুনে কেমন যেন একটা খটকা লাগছিল। যাইহোক গল্পটা পড়ে কিছুটা বুঝতে পারলাম। বাকি অংশ পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে রইলাম। আশা করছি দ্রুত বাকি অংশটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন ।
এই গল্পের মধ্যে বেশকিছু রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। যেগুলো আমি আস্তে আস্তে প্রতিটা পর্বে শেয়ার করবো। ধন্যবাদ আপু আমার এই গল্পটি পড়ার জন্য।
ভৌতিক গল্পগুলো পড়ার মাঝে আলাদা একটা মজা পাওয়া যায়।যদিও সময়ের অভাবে আপনার লেখা গল্পের প্রথম পর্ব পড়া হয় নি।তবুও চোখ বুলিয়ে আসলাম,ভাইয়া পিসি শাশুড়ি নতুন শাশুড়িকে কি উপহার দিয়েছিল? আসলেই পিসি শাশুড়িটা রহস্যের মতো,পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু এগুলো সব আস্তে আস্তে আপনাদের সামনে আমি তুলে ধরবোো ইনশাআল্লাহ। আপনার প্রশ্নের উত্তর সামনে পোষ্টের মধ্যে জানতে পারবেন।
ভুতুড়ে গল্পটা বেশ দারুণ জমিয়ে তুলেছেন তুহিন ভাই। মনে হচ্ছে আরো বেশ কয়েকটা পর্ব হবে এই গল্পের। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়ভথাকলাম কিন্তু ভাইয়া। জলদি জলদি শেয়ার কইরেন বাকি পর্ব গুলোও।
এই ভুতুড়ে গল্পের এখনো অনেক কিছু বাকি রয়েছে আপু। চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতি সপ্তাহে আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য। আর এই গল্পটি এখনো খুব মজার মজার কিছু ঘটনা রয়েছে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।