"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-২৩//আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি।steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো........
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন। আমি @tuhin002 বাংলাদেশ থেকে বলছি (২৭-০৯-২০২২)

আসলামু আলাইকুম স্ট্রিম বন্ধু গন আশা করি আপনারা অনেক ভালো আছেন । আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @tuhin002 আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি, "আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি"।আমার স্কুল জীবনে কেটে যাওয়া প্রত্যেকটি মুহূর্ত ছিল অনেক মধুর। তারপর ও সেই মধুর মুহূর্ত গুলোর মাঝে কিছু তিক্ততা স্মৃতিময় জীবন থেকে যায়। সবার জীবনেই স্কুল জীবনের অনেক স্মৃতি এখনো স্মৃতির পাতায় রয়ে আছে । আমরা চাইলেও সেই সময় গুলো কখনো ফিরে পাবো না। সেই স্মৃতিগুলো কখনো আমাদের জীবনে ফিরে আসবে না। তবে মাঝে মাঝে আমাদের জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যেই ঘটনা গুলো সারা জীবন মনে থেকে যায়। যেগুলো কখনো ভুলবার নয়।আমি তাই আজকে আমার স্কুল জীবনের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি।...........

IMG_20220927_165208.jpg

প্রথমে আমি শেয়ার করতে যাচ্ছি, প্রাইমারি পড়াকালীন আমার একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। আমি তখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। আমাদের একজন আদর্শবান শিক্ষক ছিল নাম আয়ুইব আলী। আমাদের এই শিক্ষককে দেখে ভয় করত না এমন কোন ছাত্র-ছাত্রী ছিল না । তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক মারধোর করতেন। তবে তিনি এটা আমাদের ভালোর জন্যই করতেন।একদিন আমাদের এক বড় ভাই, সে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। স্যারের সাথে বেয়াদবি করছিলো বলে, তাকে বেত দিয়ে পায়ে গোড়ালি থেকে পিঠ পর্যন্ত এত মারছিল যে তার সারা শরিলে ক্ষত তৈরি হয়ে গেছিল। তার মার দেখে আমাদের শরীরের লোম গুলো সব খাড়া হয়ে গেছিল। শিক্ষকের আরেকটা বৈশিষ্ট্য ছিল সেটা হলো, তিনি একটি ক্লাসে বা শ্রেণীতে ক্লাস নিতেন এবং কিছু সময় পরে আবার অন্য ক্লাসে যেতেন। যদি দেখতেন ছেলেরা গোলমাল করতেছে, পিছনে দিকে গিয়ে নড়ি দিয়ে মাথায় বাড়ি মারতেন।যদিও তিনি আমাদের ভালোর জন্য করতেন। তার পরও তার এই কর্মকাণ্ড গুলো আমার তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি।

IMG_20220927_165326.jpg

আমি যখন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, তখন আমার এক শিক্ষক আমাকে বিনা অপরাধে অনেক মারধোর করছিল। আমি স্যার কে বলেছিলাম, স্যার আমি এ দোষ করিনি। দোষটা ছিল, আমি নাকি গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। মারধোর করার প্রায় একঘন্টা পরে দেখি ওই স্যার আমার কাছে এসে বলল, তুহিন শুনে যাও। স্যারের কন্ঠ ছিল অনেক নরম। আমি এসে বললাম বলেন স্যার,কিছু বলবেন? তখন বলল আমি তোমাকে বিনা অপরাধে মেরেছি, তুমি কিছু মনে করো না বাবা। স্যারকে বললাম, স্যার আমি আপনাকে বারবার বলেছিলাম যে, আমি গ্লাসটি ভাঙ্গি নাই।যাইহোক এটা ছিল আমার অতি তিক্ত অভিজ্ঞতা যে, দোষ না করেও মার খেয়েছি।

IMG_20220927_170306.jpg

আমি প্রাইমারি লেবেল শেষ করার পরে যখন আমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই অর্থাৎ তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি।তখন সপ্তম ক্লাসের বড় ভাইয়েরা বলতো যে, তোরা এখন নতুন তো, তোরা কোন কিছু বুঝতে পারছিস না, আগে সপ্তম শ্রেণীতে উঠো তখন বুঝতে পারবি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় সব থেকে মারমুখী শিক্ষক ছিলেন তার নাম ছিল খাইবার আলী মাস্টার। সবার মুখে শুনতাম তিন ছাত্র-ছাত্রী দের মারধর করেন। তো আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম যে ভাই কেন মারে, তখন তিনি বললেন আগে সপ্তম শ্রেণীতে ওঠো সবকিছু বুঝতে পারবি।পরে বছরে আমরা সপ্তম শ্রেণীতে উঠলাম। আমাদের ওই স্যার বিজ্ঞান ক্লাস নিতেন।স্যার বলল আজকে তোদের প্যাসকেলের সূত্র পড়া থাকবে এক এই পড়ায় একটা শব্দ যদি ভুল হয় তাহলে বুঝতে পারবি তো আমরা মোটামুটি বরাবর আধো-আধো করে মুখস্ত করে করলাম। এবার পরের দিন ক্লাসে স্যার আমাদেরকে পড়া ধরতে আরম্ভ করলো। পড়ায় যদি একটা অক্ষর বাদ হচ্ছে তাহলে ছড়ি দিয়ে এত মার মারছে যে ছেলেরা সব হাউ মাউ করে কেঁদে উঠছে। আমরা শ্রেণীতে প্রায় ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিলাম। এমন কেউ ছিলো না যে স্যারের বেতের আঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। ক্লাস শেষ হওয়ার পরে, আমাদের বড় ভাইয়েরা এসে বলল কিরে, তোদের আমি বলেছিলাম না আগে সপ্তম শ্রেণীতে ওঠো পরে বুঝতে পারবি। সত্যি বলছি ভাই এরকম অভিজ্ঞতা আমার কখনো হয়নি, যে সামান্য একটা পড়ার জন্য এতো মারে। ওই স্যারের কথা হল এই বিজ্ঞান বইতে কোন পড়া না হোক, কিন্তু এই প্যাসকেলের সূত্র একটা অক্ষর ভুল ভুল হবেনা।

IMG_20220927_170136.jpg

আরেকটি আমার জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমি তখন নবম শ্রেণীতে পড়ি। শারীরিক শিক্ষক ছিলেন। তিনার নাম ছিল মোহাম্মদ আলী। একদিন তিনি আমাদের ক্লাস নিতে এসেছেন, হঠাৎ করে ছেলে-মেয়েরাও হাসাহাসি করছে। স্যার বারবার আমাদের থামতে বলছে।আমরা কথা শুনছি না। হঠাৎ রেগেমেগে ছেলেদের সবাইকে মারধর করলো।কিছুক্ষণ পরে মেয়েরা পুনরায় হাসাহাসি করছিল।তাদের কিছুই বলছে না। আমরা একটু হাসলাম আবারো এসে আমাদের মারধর করছে। আমার অনেক রাগ হলো আমি আমার শিক্ষকে বললাম আপনি বারবার আমাদের মারধর করছেন,ওদের কিছু বলছেন না। তখন বললাম তা নয় কিন্তু একই দোষে আপনি আমাদের মারধর করছেন।ওদেরকে কিছু বলছেন না। এটা তো ঠিক না। এ কথা শোনার পরে,দৌড়ে এসে আমাকে ধুপ ধাপ করে পিঠের উপরে পাঁচ-সাতটা কিল বসিয়ে দিল।ক্লাস ত্যাগ করে চলে যাব, তখন স্যার আমাকে বলছে তুই এখানে বসে থাকবি।আমি বললাম আমি বসবো না। স্যার আবারো বললো না তুই বসে থাকবি।আমি বললাম আমি বসবো না ক্লাস করব না। আমার এই কথা শোনা মাত্র আবার দৌড়ে এসে মারধর করলো।আমার মার দেখে বন্ধ বান্ধবিরা সবাই এক প্রকার কেঁদে ফেলছিল। আমি রাগ করে বের হয়ে বাড়িতে চলে আসি।এটা ছিল আমার জীবনে সব থেকে বড় তিক্ত অভিজ্ঞতা। দোষ করলাম সবাই, মা-র বেশি খেলাম আমি একলা।

"আমার বাংলা ব্লগ" মানেই ভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজক। আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে ।

👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


IMG_20220723_115342_9~3.jpg

আমি তুহিন ব্লগ।আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।আমার মাতৃভাষা বাংলা।আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি।সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া আপনার পোস্ট টি পরে ভালোই লেগেছে। পড়ায় যদি একটা অক্ষর বাদ হচ্ছে তাহলে ছড়ি দিয়ে এত মার মারছে যে ছেলেরা সব হাউ মাউ কেদে উঠল
সত্যি বলেছেন ভাইয়া স্যাররা মনে হচ্ছে মেয়েদের একটি কম কিছু বলে। আপনি বসবেন না আলে স্যার যেভাবে মার ধর করল তা ক্ষমার অযোগ্য। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

এই শিক্ষক কিন্তু আমার আপন বড় খালু। আর এর জন্যই ওই দিন আমি মার বেশি খেয়েছিলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59311.47
ETH 2603.68
USDT 1.00
SBD 2.40