জেনারেল রাইটিং :- শৈশবের স্মৃতিময় দিন গুলো।

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago (edited)
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো সরলতা নিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে যাবেন না,তাহলে নিজেই ধোঁকায় পড়বেন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


kid-1508121_1280.jpg

Source

প্রতিটা মানুষের জীবনে শ্রেষ্ঠ জীবন হলো শৈশব জীবন। আর শশুর জীবন শ্রেষ্ঠ জীবন বলে যেকোনো সময় মানুষ শুধু সেসব জীবনকে ফিরে পেতে চাই। এই জীবনে হাসি কান্না দুঃখ বেদনা সবই যেন এক সুখের মধ্যেই পড়ে যায়। পৃথিবীতে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একটা সময় এই মানুষকে আবার ধ্বংস করে দিবে অর্থাৎ এই সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরবর্তীকালে গমন করতে হবে। এরপরও এই পৃথিবীর মানুষকে যদি কখনো জিজ্ঞাসা করা যায় আপনি কোন জীবনকে সবচেয়ে বেশি মধুময় মনে করেন। প্রতিটা মানুষকে শৈশব জীবনের কথা বলবে এক বাক্যে। এই জীবনে মানুষের মধ্যে কোন চাওয়া পাওয়া বা কোন আকাঙ্ক্ষা থাকে না তেমন একটা। আর যদি কোন চাওয়া পাওয়া থাকে সেটা পিতা মাতাকে বললেই তারা পূরণ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কারন তখন প্রতিটা শিশুই যে ছোট থাকে আর এজন্য বাবা-মা তাদের প্রত্যাশাটাকে পূরণ করতে চাই। আর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের ছোট বা শোষক কালের আবেগঘন মুহূর্ত থাকে। এমন শৈশব স্মৃতি আমার জীবনে প্রচুর রয়েছে। আমার জীবনের মধ্যে কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। সবাই বলে ছোট আমি ছিলাম নাকি খুবই ভালো। অবশ্য মাঝখানের পাজি হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে মানুষ জীবন তো পরিবর্তনশীল। মানুষ সব সময় এক জীবনের উপর থাকতে পারে না। মানুষের জীবনের মধ্যে প্রধান প্রধান আসবে এটাই স্বাভাবিক।


প্রতিটা মানুষের শৈশব কাল থাকে দুরন্ত। আমার শৈশবকালটা ঠিক তেমনি। আমি ছোটকাল থেকে একটু জেদি ছিলাম। যখন আমার বয়স তিন বছর তখন আমার মামার এক বন্ধু একটা ক্যামেরা নিয়ে আসছিল। আমার নানীদের প্রচুর নারিকেল গাছ রয়েছে। ঐদিন আমার নানির পিঠা তৈরি করার জন্য এক অনেকগুলো নারিকেল ভাংছিল। তার মধ্যে আমি একটি নারিকেল নিয়ে হাতে ধরে রাখছিলাম। মামার ওই বন্ধু ক্যামেরা দিয়ে আমাকে ছবি তুলতে চেয়েছিল। আমি ছোটকাল থেকে যথেষ্ট পরিমাণ সাজগোজে থাকতাম এবং পরিচ্ছন্ন থাকতেও বেশ পছন্দ করতাম। তাই ক্যামেরার সামনে যাওয়ার জন্য নতুন করে সাজানো বোঝানোর কোন দরকার হয়েছিল না। কিন্তু আমার মামার বন্ধু সে ছিল আমার হাতে নারিকেল দিয়ে রেখে আমি যেন ছবি উঠি। কিন্তু ওই নারিকেল তো আমি ছাড়তে চেয়েছিলাম না। আমাকে যত পরিমান বোঝানো দরকার বুঝেছিল অনেক ছোট ছেলেদের অনেক কিছু বলে অন্য কিছু হাত থেকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সেটাও করেছিল তারপরও কোন কাজ হয়েছিল না। অবশেষে আমি অনেক কেঁদেছিলাম এবং ওই কাদা অবস্থায় আমার মামার বন্ধু আমার একটা ছবি তুলেছিল। সেই ছবিটা আজও আমার কাছে রয়েছে। ওই ছবি দেখলে এখন তো নিজের কাছে অনেক হাসি পায়। শৈশব জীবনের মধ্যে একটা বড় স্মৃতি আমার জন্য। আমার মামার বন্ধু আমাকে অনেক ভালোবাসতো। তিনি আসলে আমার জন্য অনেক খাবার জিনিস আনত।


শৈশবের দিনগুলোর মধ্যে আরেকটি ঘটনা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দেয়। সেই ঘটনাটি ঘটেছিল আমার বড় ভাইয়ের বিয়ে কে কেন্দ্র করে। আপনারা সবাই রাজ হাস চিনেন। বিয়ের জন্য সবাই যখন রেডি তখন আমিও তৈরি নিজেকে করেছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা বিয়ে খেতে বের হয়ে যাব ঠিক এমনই সময় একটি রাজহাঁস কোথা থেকে দৌড়ে এসে আমার গায়ে ঠোকা মারে। এতে করে আমার পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। আর এর জন্য আমার ভীষণ রাগ হয়ে যায়। ওই সময় বয়স ছিল সাত বছর। মনের ভেতরে এমন মনে হয়েছিল ওই হার যদি না করা পর্যন্ত আমি বিয়েতে যাবো না ঠিক সেই বায়নায় ধরলাম। সবাই যখন আমাকে থামাতে আসলো আমি তখন বলেছিলাম ওই রাজার জমি হবে তা জবাই হবে তারপরে আমি বিয়েতে যাব। এরপরে আমার আব্বা ওই রাজার ছবি করতে চেয়েছিল। অবশ্যই এটা অনেকক্ষণ চলতে থাকার কারণে একটা সময় আমার রাগ কমে যায়। এবং পরবর্তীতে আমি বলে ঠিক আছে আর জবাই করতে হবে না আমি বিয়েতে যাচ্ছি। আর এই মেয়ে অনেক কাণ্ডকারখানা ঘটে যায়। আমি ছোটবেলা থেকে নিজের মনের মত চলতে নিজের মনের মত করে বুঝতে শিখেছি এবং অন্য কারো কথা সহজে আমার নিতে ভালো লাগে না। আমার কথার উপরে যদি কেউ কথা বলে সেটা আমার সহ্য হয় না। তবে নিজে যদি কোন ভুল কথা বলে থাকে তাহলে সেটা খুব সহজেই মেনে নেই। কিন্তু আমার সামনে কি অন্যায় করবে ভুল বলবে সেটাকে আমি কখনও প্রশ্রয় করি না। টাকা বা অর্থের জন্য আমি কারোর পায়ের তলে নিজেকে সপিয়ে দেওয়া দেয়া ছেলে না। অনেকে আছে অল্প কিছু পাওয়ার জন্য চাটুকি ওটা করে থাকেন, কিন্তু আমি এর পুরোটাই ব্যতিক্র।


ছোটবেলা থেকে আমি অনেক ডানপিঠে। আর এর জন্য বাবার হাতে কম মার খেয়েছে বলে মনে হয় না। একটা মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল তার বাবার একটা কলাগা ছিল। রাতের বেলা ওই কলার কাঁধ কেটে আনবো এটাও মনে করলাম এবং আমার বন্ধুদের সাথে করে চলে গেলাম। আমাদের মধ্যে আমারই নিজের একটা ফুফাতো ভাই ছিল সে অত্যন্ত ভালো মানুষ। সে এগুলো পছন্দ করে না তারপরও আমরা এক জায়গায় থাকতাম ওখানে কেউ ছিলনা বলে আমাদের সাথে এসেছিল। পরবর্তীতে আমরা যখন সেটা কাটার জন্য প্রস্তুত নিয়েছিলাম ঠিক কাটার পর পরে পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার সেই ভাইটা ওখানে আর নাই। যেহেতু রাত তখন বারোটা বাজে তাই একটু ভয় পেয়ে গেছিলাম। তাকে বারবার ডাকাডাকি করার সত্বেও তার কোন সন্ধান মিল ছিল না। পরবর্তীতে আমরা যেখানে থাকি সেখানে ফিরে এসে দেখি সে বসে আছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম তুই চলে এসেছিস ভালো কথা আমাদেরকে তো বলে আসতে পারতি। আসলে আমার এই ভাইটা ছোটবেলা থেকে নামাজ-কালাম পড়ে এবং ইসলামের পথ সব সময় সে অটুট। তার এই দৃঢ়তা আমাকে অবাক করে দেয় মাঝেমধ্যে। ছোটবেলায় এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেসব ঘটনা গুলো এখন মনে পড়লে কিছু কিছু ঘটনা নিজেকে লজ্জা দেয় এবং কিছু কিছু ঘটনা খুব হাসি পায়। ঠিক এমন অনেক ঘটনা রয়েছে এসব ঘটনা গুলো নিয়ে শৈশবে স্মৃতিময় দিনগুলো মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা আবারো আপনাদের মাঝে শেয়ার করব ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন


ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শৈশব নিয়ে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। রাজহাঁস কামড় দেওয়ার কারণে আপনার পোশাক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল এই ঘটনাটি আমি অনেক জনের কাছ থেকে শুনেছি। আপনি অবশেষে বায়না ধরেছিলেন রাজহাঁস জবাই না করলে বিয়ে খেতে যাবেন না। অবশেষে আপনার রাগ কমলে রাজহাঁস জবাই না করেই বিয়ে খেতে চলে যান বিষয়টি কিন্তু বেশি দারুণ। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

ঐদিন যদি বিয়ে না খেতে যেতাম তাহলে রাজহাঁস জবাই করে খেয়ে তারপরে দম নিতাম। ধন্যবাদ ভাগ্নে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

শৈশবের সৃতিময় দিন গুলো

ভাইয়া,আপনার টাইটেলের এই সৃতির অর্থ ভিন্ন।কারন এর অর্থ হচ্ছে-পথ, গতি, গমন।আমার মনে হয় স্মৃতি বানান এটাই সঠিক হবে।শৈশব জীবন সকলেই ফিরে পেতে চায় কিন্তু সেটা অসম্ভব।যাইহোক আপনার শৈশবের দিনগুলো পড়ে ভালো লাগলো।যদিও দুই একটি বাক্য ঠিকভাবে বুঝতে পারিনি,বিশেষ করে রাজহাঁসের ওখানে।ছোটবেলায় এমন মজার জেদ ও হাস্যকর স্মৃতিগুলো আসলেই হাসায়,ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার ভাবে মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

ভাইয়া টাইটেলে বানান ভুল আছে।আপনি আজ আপনার ছেলেবেলার কিছু স্মৃতিময় দিন শেয়ার করলেন।আপনার ছেলেবেলার গল্প পড়ে জানলাম আপনি খুব জেদী ছিলেন।ছেলেবেলার মধুময় স্মৃতি আমাদের সকলের মনে ই দোলা দিয়ে যায়। যা মনে পরলে এখন হাসি পায়।ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

ধন্যবাদ আপু ভুল ধরতে পারার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 11 months ago 

একদম ঠিক বলছেন ভাইয়া প্রথমত মানুষের জীবনে শৈশবের স্মৃতিগুলো সব সময় মনে পড়ে। কারণ জীবনের প্রথম দিকে শৈশব জীবন সবার কাছে অনেক মধুর হয়। এরপরে বড় হয়ে যে যার মত জীবন সাজিয়ে নেই। অসাধারণ একটি স্মৃতি শেয়ার করলেন আপনি শৈশবের নারকেল নিয়ে। বেশ ভালোই লেগেছে আপনার গল্পটি পড়ে। অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি স্মৃতি আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য।

 11 months ago 

ছোটবেলার জীবন আর বর্তমানে জীবনের ভেতর অনেক তফাৎ রয়েছে। জীবনের সবকিছু যেন ছোটবেলার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে আর বড় হলে সেটা ধ্বংস হয়ে যায়।

 11 months ago 

ছোটবেলার ঘটনাগুলো পড়ে তো ভালোই লাগলো। আপনি তাহলে তো খুব রাগী মানুষ ছিলেন দেখছি! রাজহাঁস কে জবাই করে পরেই বিয়েতে যেতেন 😁। আপনার ভাইয়ের ব্যাপারটা ভালো ছিল। ছোট বেলা থেকেই নামাজকালাম পরেছে।

 11 months ago 

এখনো আমি অনেক জেদি ভাই যদি রাগ হয়ে যায় মাথায় কোন কাজ করে না ইচ্ছায় সবকিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলি 😄।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 63788.86
ETH 2476.31
USDT 1.00
SBD 2.66