ক্রিয়েটিভ রাইটিং :- তাল গাছের আত্মকাহিনী
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো,তাল গাছের আত্মকাহিনী। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
বিশাল এক মরুভূমি। চারিদিকে শুধু হাহাকার। কোথাও কোন লোকালয় নেই নেই কোন জনপদ নেই কোন মানুষের আনাগোনা। এই মরুর বুকে একটা তালগ গাছ ছিল। যদিও তালগাছটা সেই সময় অনেক ছোট ছিল। হঠাৎ এক পথিক ওই পথে যাচ্ছিল তখনই তার কাছে বলছিল ও পথিক ভাই একটু দাঁড়াবেন আপনার সাথে কিছু কথা বলবো। পথিকের মনে একটু দয়া হলো সে ভাবল যে এই তালগাছটি একাই ভাবে মরুর বুকে বসে আছে ঠিক আছে একটু কথা বলাই যেতে পারে। এই বলে অনেকক্ষণ ধরে তালগাছে ব্যক্তির সাথে কথা বললো। পথিক তাল গাছটিকে বললাম তুমি এই মরুর বুকে কিভাবে আসলে? তখন ওই তালগাছ প্রতীকে বলল আমিও ঠিক জানিনা ভাই তবে একদিন কে যেন আমাকে অনেক দূর থেকে এসে এখানে ফেলে দিয়ে যাই আর এরপর থেকে বৃষ্টি হয় আর বৃষ্টি পানি পেয়ে আমি একটু একটু করে এখানে বড় হতে থাকি যদিও মরুর বুকে খুব একটা বৃষ্টি হয় না এখানে একা থাকতে আমার অনেক কষ্ট হয়।
এত বড় হয়ে গেছে কারোর দেখা পায় না একা একা থাকতে আমার খুব নিঃসঙ্গ লাগে। আজ যখন আপনাকে পেয়েছি তখন আমি একটু কথা না বলে আর পারছি না। পথিকের মনে একটু দয়া হয় তাই সে তার কাছে অনেকক্ষণ বসে কথা বলতে থাকে। কিন্তু এই মরুর বুকে তো পথিক বেশিক্ষণ দাঁড়াবে না। তাই কিছুক্ষণ তার সাথে কথা বলার পরে পথিক চলে যায়। আবারো একা হয়ে যায় সে তাল গাছটি। এভাবে সে মানুষের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু এই মরুর বুকে কি কেউ কারোর কাজ আছে কখনো যদিও হঠাৎ করে কেউ আসে তবে সে দাঁড়িয়ে থাকার মত তার সময় থাকে না। কারণ এখানে নেই কোন পানি নেই কোন জনবসতি মানুষ এখানে যেন তার জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো। এভাবে বছরকে বছর কেটে যায় তবুও সে আর কারো দেখা পাই না। কোন কোন সময় তালগাছ হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে আর বলে আমি কি এত একা যে আমার জন্য কোন কিছু নেই এখানে। কখনো সে নিজেকে বলে আমার জন্মটাই বৃথা না হলে আমি কেন এখানে একা হবো। যদি কোন লোকালয়ের পাশে হতাম তাহলে মানুষ ছায়ার জন্য তো আমাকে একটু ব্যবহার করতো। সে ভাগ্যটাও আমার নেই।
এইভাবে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে একা পড়ে থাকে তাল গাছটি। এরই মধ্যে দে হঠাৎ করে আর একজন পথিক অনেক বছর পরে ওই মরুভূমির পাশ দিয়ে যেতে থাকে। তখন ওই তালগাছটি বলে ও ভাই ও ভাই পথিক একটু দাঁড়াবে। পথিক তো এই মরুভূমির বুকের কারোর কথা শুনে একটু ভয় পেয়ে যায়। সে আশেপাশে তাকায় কাউকে খুঁজে পায় না। অত্যাধিক গরম পড়ছিল তার জন্য ওই পথিক তালগাছের নিচে যে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তখন তালগাছ দেখে বলে ভাই পথিক তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো। প্রতি তখন আচমকা বলে ওঠে কে কে আমাকে ডাকছে এভাবে। তখন তালগাছ বলে ভাই তুমি ভয় পেয়ো না আমি তালগাছ তখন এই লোকটি বলে তুমি আমাকে এতক্ষণ ডাকছিলে তাহলে। তখন তালগাছ বলছে ভাই তুমি কোথাও যাচ্ছিলে নাকি? ঐ লোকটি বলল হ্যাঁ ভাই আমার একটু কাজ আছে তাই এ পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন বলছিল যে এই রাস্তা দিয়ে তো কেউ কখনো আসে না। যাহোক তার কাছে পথিকের মধ্যে অনেকগুলো কথা হয় তালগাছ তার মনের ব্যতীত কথা গুলো বারবার তাকে বলতে থাকে। তখন তালগাছ প্রতীকে বলছিল ভাই এখান থেকে আমাকে যদি তুমি তোমাদের লোকালয়ে নিয়ে যেতে তাহলে আমি খুব খুশি হতাম। এই পথিক ছিল কাঠুরে তখন এই প্রতিভাব ছিল যে তাল গাছে যত এতই কষ্ট তাহলে আমি তাকে কেটে নিয়ে যাবো।
পথিক যে তাকে এভাবে কেটে নিয়ে যাবে এই বিষয়টা তালগাছ বুঝতে পারছিল না। যখন প্রদীপ বলে যে হ্যাঁ আমি তোমাকে নিয়ে যাবো একথা শুনে তার আজ ভীষণ খুশি। তখন তাল গাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে ভাইয়া তুমি আমাকে কখন নিয়ে যাবে সে বলেছিল আমি আর কিছুদিন পরে সে তোমাকে নিয়ে যাব। সেই দিন চলে আসলো পথিক তখন কুড়াল দিয়ে তালগাছ কাটতে শুরু করল তখন তাল গাছ হাউমাউ করে কেঁদে বলে ও ভাই পথিক তুমি আমাকে কেন এখান থেকে এভাবে নিয়ে যাচ্ছ। তখন পথিক বলেছিল যে তুমি না বলেছিলে আমার সাথে যাবে তাই আমি তোমাকে কেটে নিয়ে যাচ্ছি। এই কথা শোনার পরে তালগাছ বলে আমি একা ছিলাম ভালোই ছিলাম কেন আমি তাকে এভাবে বললাম। আমি যদি তাকে না বলতাম তাহলে তো আমার মরণ হতো না। পৃথিবীতে নিঃসঙ্গতা থাকার চেয়েও মৃত্যুটা অনেক করুন।
এই কাহিনী নিয়ে আমি বাস্তব জীবনে মানুষের সাথে একটু তুলনা করি, মানুষের যখন বয়স হয়ে যায় তখন সে ওই মরুভূমির বুকে তাল গাছের মতো একা হয়ে যায়। তখন তার সাথে কথা বলার আর কেউ থাকেনা। তার অনেক ইচ্ছা করে কথা বলতে কিন্তুু কেউ তো তার সাথে কথা বলে না তার সাথে চলে না। কিন্তুু যখন কাকু তুমি নদী করে সে তার মানুষের মধ্যে চলাফেরা করবে তখন তার সময় থাকে না। পথিক যেমন তালগাছে কেটে নিয়ে যায় ঠিক তেমনি সৃষ্টিকর্তা তাকে উপরে তুলে নিয়ে যায়। বৃদ্ধ মানুষের সাথে আমি তাল গাছের আত্মকাহিনী টাকে মিলিয়ে দেখেছি ঠিক একই রকম।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | জুগির গোফা,গাংনী মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/ABashar45/status/1688844600927268864?t=ZQJoRFvNFN09ymTMeSpxJQ&s=19
আসলে এটা সত্যি যে তালগাছের আত্মকাহিনীর সাথে বৃদ্ধ একটা মানুষের আত্মকাহিনী অনেক বেশি মিলে গিয়েছে। আসলে বৃদ্ধ মানুষ ও অনেক বেশি একা হয়ে যায় যখন তারা বৃদ্ধ হয়ে যায়। তাল গাছের আত্মকাহিনীর এই গল্পটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনি সম্পূর্ণটা অনেক সুন্দর করে লিখেছেন দেখে আমার কাছে পড়ে ভালো লেগেছে।
মানুষ যখন বৃদ্ধ হয়ে যায় সে তখন নিজেকে একাকীত্ব মনে করে। আসলে সত্যিকারে সে বেশি একা হয়ে যায় তাই সে নিজেকে ওই মরুভূমি তাল গাছের মত নিজেকে ভাবে।
চমৎকার একটি কাহিনী শেয়ার করলেন আপনি তালগাছের আত্মকাহিনী শুনে তো ভীষণ খারাপ লাগলো। আসলে আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে একাকীত্ব জীবন যাপন করতে করতে হইত বিষন্নতা চলে আসে। কিন্তু সেই বিষন্নতা থেকে মুক্তি চাওয়ার যে এত করুন হবে তা তালগাছ কখনো ভাবেনি। আমাদের সমাজে বাস্তবে এমন কিছু মানুষের জীবন আছে যা তাল গাছের কাহিনীর মতো। অসাধারণ একটি গল্প শেয়ার করলেন ভীষণ ভালো লেগেছে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শুধু আপু মানুষ যখন বৃদ্ধ হয়ে যায় তখন তাদের পাশে কেউ থাকে না। তাদের ইচ্ছা করে কারো সাথে গল্প করতে ইচ্ছে করে সবাই মিলে খেতে। কিন্তু তাদের সাথে কেউ তেমনভাবে কথা বলে না বা মেশেনা। তারা নিজেকে খুব একাকীত্ব মনে করে অনেকটা সেই মরুভূমির তালগাছের মতোই।
তালগাছের আত্মকাহিনী গল্পটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে আবার খারাপও লেগেছে। গাছটা একা ছিল যার কারণে সে কারো সাথে কথা বলতে চাইতো। কিন্তু অবশেষে একজন এমন মানুষের সাথে দেখা হয়েছে সে তো তাকে কেটে নিয়ে যাচ্ছে একেবারে। বেশিরভাগ মানুষের জীবনের সাথে তাল গাছের আত্মকাহিনীটার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে আপনার লেখা এই সম্পূর্ণ পোস্ট
বিষয়টা ঠিক এমন ভাই সমাজের বৃদ্ধ মানুষগুলো যখন কাউকে পায় না তখন তারা নিজেকে বোঝা মনে করে আবার যখন কারো সহযোগিতা চায় তখন সে মনে মনে ভাবে এই বৃদ্ধটা মারা গেলেই ভালো হতো।