অনেক দিন পর তালের রস খাওয়ার অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো তালের রস খাওয়ার অনুভূতি। তাহলে শুরু করা যাক আজকে আমার ব্লগ.....।



আজ থেকে প্রায় দুই যুগ আগে, আমার দাদাদের আমলে তাদের নিজের খনন করা একটা পুকুর ছিল। পুকুরের গভীরতা ছিল প্রায় ২০ ফিট। সেই পুকুরে চারপাশে ছিল প্রায় ২০ থেকে ২২ টা তালগাছ। সে সময় প্রচুর পরিমাণ তাল ধরতো ওই গাছ গুলোতে। আমাদের গ্রামে এক ব্যাক্তি, সম্পর্কে নানা হয়। তার নাম জমশেদ আলী। তিনি তাল গাছ কাটতেন অর্থাৎ তালের রস তৈরি করতেন। কিভাবে রস তৈরি করা হয় সেই থেকে আমার জানা। প্রথমের দিকে ভাবতাম খেজুর গাছে যেভাবে রস সংগ্রহ করে ঠিক সেই ভাবেই। কিন্তুু পরে দেখলাম আসলে বিষয়টা তেমন নয়। একটি তাল গাছে প্রায় আট থেকে দশটি ভাড় বান্দা হয়ে থাকে। তবে এগুলো খুব ছোট ছোট হয়ে থাকে। এই সময় অনেক তালের রস খেয়েছি। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সেই সমস্ত গাছ গুলো এখন আর নেই। তাই তালের রস আর খাওয়া হয় না।


IMG_20240504_180543.jpg


গত শুক্রবারে শ্বশুরের ফার্মেসির দোকানে হালখাতা ছিল। দুইদিন আগে আমি তাদের বাসায় গেছিলাম। আর হালখাতা শেষ হওয়ার পরের দিন আমার ছোট কুটুম বললো ভাই তালের রস খেতে যেতে হবে। তালের রসের কথা শুনেই বেশ ভালো লাগলো। কারণ কতদিন খাইনি তালের রস। বলতে গেলে দুই যুগ পর তালের রসের কথা শুনলাম এবং খেতেও ইচ্ছা হল। দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করেই তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কোথায় পাওয়া যায়। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম এই তালের রস কোথায় পাওয়া যায়? তখন সে আমাকে বলেছিল এটা পাওয়া যায় আমলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। এরপরে আমার কুটুম তার দুই বন্ধুকে ফোনে ডাক দিল। যেখানে আমরা গিয়েছিলাম জায়গাটা বেশ অচেনা। চারজনের মধ্যে সবাই একটু কম চিনে আমি তো কোন কিছুই চিনি না। না চেনা জানা থাকতে যা হয়ে থাকে। বারবার পথ ভুলে যাওয়ার মত অবস্থা।


পথের দূরত্ব ছিল ১০ কিলোমিটার কিন্তু আমরা ঘুরতে ঘুরতে ১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়ার পরে আমরা সেখানে উপস্থিত হই। এরপরে দেখলাম সেখানে অনেক জন তালের রস বিক্রি করছে। এর মধ্যে আমাদের বয়সের একটা ছেলের কাছেই আমরা তালের রস খাওয়ার জন্য মনস্থির করলাম। তাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম তালের রসের গ্লাস কত টাকা করে? সে বলল এক গ্লাস তালের রসে দাম ১৫ টাকা। কথাটা শুনে বেশ চমকে উঠলাম। যতটুকু রস ধরছে গ্লাসে তাতে তিন থেকে চার ঢোকেই শেষ হয়ে যাবে। যাইহোক নেশা যখন তালের রসের উপরে তখন খেতেই হবে। আমরা সর্বোপরি ১৫ গ্লাস রস খেয়েছিলাম। একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখলাম যেখানে আমরা তালের রস খেয়েছিলাম তার দুই পাশে শুধু তালগাছ। আর সেখানে অনেকেই তালের রস বিক্রি করছে।


IMG_20240504_180250.jpg


দিনটা বেশ গরম ছিল তাই বুঝতেই পারছেন তালের রস বেশ গরম ছিল। তবে তালের রস ছিল খুবই মিষ্টি। খেতে খুবই ভালো লাগছিল। আরো ভালো লাগতো যদি তালের রসটা ঠান্ডা হতো। যেহেতু সেখানে ঠান্ডা করার কোন ব্যবস্থা নেই তাই আর কি গরম তাই খেতে হবে। আমি মিষ্টি খেতে প্রচুর ভালোবাসি কিন্তু কেন যেন এক গ্লাসের বেশি খেতে পারি নাই। ওরাও কিন্তু আমার থেকেও অনেক বেশি খেয়েছে। সব থেকে বড় কথা অনেক দিন খাওয়া হয়নি তো তাই খাওয়ার এমন হয়েছিল। আগ্রহটা বেশি ছিল কিন্তু খেতে পরলাম না। তারপরও যেহেতু রস ঠান্ডা ছিল না তাই খেতে পারছিলাম না। তবে রসটা খুব টল টলে ছিল। সেখানে অনেকেই বিক্রি করেছিল সবার কাছে বেশ পরিমাণ মতোই ছিল রস। সেখানে রস খাওয়া পাশাপাশি ওখানকার সৌন্দর্যটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আমাদের খাওয়া দাওয়া শেষ হওয়ার পরে পুনরায় আমরা আবারও আমাদের জায়গা ফিরে আসি।


ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।


আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস poco M2
লোকেশন https://w3w.co/dived.tributary.snappers


👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 months ago 

আসলে আজকের পোস্টটা দেখে আমার খুব লোভ হচ্ছিল। কারণ এর আগে আমি কখনো তালের রস খাইনি। যদিও শুনেছি নাকি তাহলে রস খেলে মাথা ঝিমঝিম করে। আসলে আপনি তো দেখছি শ্বশুরবাড়ি গিয়ে হালখাতাও খেলেন এবং তালের রস খেলেন। যাই হোক আপনি আজকে যে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেটি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

তালের রস খাওয়ার আপনার অভিজ্ঞতা এবং সেই সাথে আপনার পারিবারিক ইতিহাস ও স্মৃতিচারণ অত্যন্ত জীবন্ত ও আবেগময়। আপনার লেখনীতে বাংলার গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য ও সারল্য ফুটে উঠেছে। আপনার পোস্টের মাধ্যমে তালের রসের মিষ্টি স্বাদ ও গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্য একদম চোখের সামনে ভেসে উঠে। আপনার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ এবং আপনার লেখালেখির পথে আরও সাফল্য কামনা করি।

 2 months ago 

জানিনা ভাইয়া তালের রস কেমন হয়ে থাকে। তবে খেজুরের রস অনেক খেয়েছি। আপনার এই নতুন একটা ইউনিক পোস্ট দেখে বেশ ভালই লাগলো। তবে এখানে দেখে তো বুঝতে পারলাম তালের রস খাওয়ার খুবই প্রবণতা চলছে।

 2 months ago 

খেজুরের রসের থেকে তালের রসের উপকারিতা বেশি। আর এটা খেতে অনেক ভালো এবং বেশি মিষ্টি।

 2 months ago 

তাহলের রস কখনো আমার খাওয়া হয়নি। তবে অনেক বার খেজুরের রস খেয়েছি। আপনার পোস্টের মাধ্যমে তালের রস দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ ভালোই লাগবে। তবে যে কোনো পানি ও জাতীয় খাবার গুলো ঠান্ডা হলে খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। যাই হোক আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

 2 months ago 

তালের রস অত্যন্ত সুস্বাদ এবং অধিক পরিমাণের মিষ্টি। কখনো যদি সুযোগ হয় একদিন খেয়ে দেখবেন।

 2 months ago 

তালের রস খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো ভাই। আমি অবশ্য কখনো তালের রস খেয়েছি বলে মনে হয় না। তবে এই রস খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। গাছের ভেজালমুক্ত জিনিস। আশা করি এতে শরীরের উপকার আছে।

 2 months ago 

বেশ অবাক হলাম ভাই আপনি আজ পর্যন্ত খান নাই। আমাদের গ্রামে এখনো তালের রস তৈরি করা হয়। যাহোক সবাই তো সবকিছু না খেতেও পারে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

তালের রস হয় জানতাম না। খেজুরের সর সম্পর্কে জানি।আপনার তালের রস খাওয়ার অনুভূতি এবং তালের রসের ফটোগ্রাফি দেখে তো ভীষণ ভালো লাগলো।খুব মিষ্টি তালের রস এটা জানার পর তো মনে হচ্ছে ইস যদি একটু খেতে পারতাম। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর তালের রস খাওয়ার অনুভূতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 2 months ago 

খেজুরের রসে থেকে তালের রস অত্যন্ত উপকারী। এবং তালের রস অত্যাধিক মিষ্টি। কখনো যদি সুযোগ হয় একদিন খেয়ে দেখবেন। অনেক সুস্বাদু একটি পানীয়।

 2 months ago 

বাহ দারুন একটি ব্লগ শেয়ার করলেন তো। আগে তো জানতাম মানুষ গ্লাস পুড়ে খেজুরের রস খায়। আজকে দেখলাম তালেরও রস খায়। রাস্তার দুই পাশেই তালের রস বিক্রয় করতে দেখলাম। তার মানে এই সিজনটা ঐ মানুষ গুলোর কাছে উৎসবের মত। মানুষ ‍দুর-দুরান্ত থেকে গিয়ে তালের রস খেয়ে আসে। ১৫ টাকা গ্লাস হলেও খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন। সাথে আইস দিলে বেশি মজা পেতেন। ধন্যবাদ।

 2 months ago 

অনেকদিন পরে তালের রস খেয়েছিলাম ভাই। খেতে বেশ দারুন লেগেছিল। তবে এটা ঠিক বলেছেন যদি একটু আইস থাকতো তাহলে আরো বেশি ভালো লাগতো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 56924.47
ETH 3086.51
USDT 1.00
SBD 2.41