এসো নিজে করি (DIY) - পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে আসন তৈরি

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago

হ্যাল্লো বন্ধুরা

সকলকে আমার নমষ্কার/ আদাব। যে যেখানেই আছেন না কেন, আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনা করে আমার আজকের নতুন ব্লগ শুরু করছি। আজকে আপনাদের সামনে হাজির হলাম একটি " এসো নিজে করি" (DIY) " প্রজেক্ট নিয়ে। আমার আজকের প্রজেক্ট টি হচ্ছে- পাটের বস্তার উপর উল সুতা দিয়ে কাজ করে আসন তৈরি করা। এই আসন গুলো আগেকার সময়ে ঘরের মা-বোনেরা অবসর সময় কাটানোর অন্যতম মাধ্যম ছিলো! প্রত্যেক সনাতন ঘরে ঘরেই এমন আসন নূন্যতম হলেও দুটি করে থাকতো! সাধারণত পূজোর কাজ গুলো এই আসনে বসে করা হয়ে থাকে। আমি এই ডাই প্রজেক্ট টি শুরু করেছিলাম এবছরের মার্চ মাসে। আর সম্পন্ন করতে পেরেছি জুলাই এর মাঝামাঝি। যারা প্রফেশনাল, তারা হয়তো এত সময় নেন না একটি আসন তৈরি করার জন্য। তবুও তাদেরও মাস খানেক তো লাগেই!! আর আমি তো প্রফেশনাল না এই কাজে, তার উপর এটিই আমার করা প্রথম কোন পাটের আসন, যার প্রতিটি ঘরই আমি নিজে করেছি!! তাই হয়তো একটু বেশিই সময় লেগেছে। আর এই কাজটি একটানা বেশিক্ষণ করাও যায় না। হাতে এবং চোখে বেশ প্রেসার ই পরে! তবুও, শখের বশে শুরু করেছিলাম, তাই জেদ নিয়েই শেষ করেছি। যাই হোক, আশা করছি আজকের পোষ্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন।



IMG20240731173647~3.jpg



উপকরণ



  • চট/পাটের বস্তা
  • লাল, কালো, সাদা ও সবুজ রঙের উল সুতো
  • মোটা ছিদ্র যুক্ত ভোতা সুঁই
  • কাচি
  • লাল কাপড়

IMG20240315102242.jpg


প্রস্তুত প্রক্রিয়া :-

এই কাজ এর প্রথম ও প্রধান ধাপ ই হচ্ছে ডিজাইন। আমি প্রথমে একটি ছক কাটা কাগজে ঘর হিসেব করে করে আমার ডিজাইন টা তুলে নিয়েছি। আমি ডিজাইনের মাধ্যমে জবা ফুল ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।

IMG20240804222453~2.jpg


এবারে আমি একটি পাটের বস্তা আন্দাজমতো মাপে কেটে নিয়ে প্রথমে কালো রঙের সুতো দিয়ে বক্স করে কিছুটা বর্ডার করে নিবো। চটের দুইটা করে সুতা গুণে গুণে ক্রস হিসেবে এই সেলাই টা করতে হয়। কালো সুতা দিয়ে বক্স করার পর আমি সবুজ রঙের ডিজাইন করে নিয়েছি।

IMG20240206124714~3.jpg


এবারে সবুজ রঙের কাজ শেষ করে লাল রঙের সুতোর সাহায্যে ফুলের অংশটা তুলে নিয়েছি। এক্ষেত্রেও একই ভাবে দুই ঘর দুই ঘর হিসেব করে ক্রস সেলাই ব্যবহার করেছি। যখন ১ম ফুলের ডিজাইন টি নকশা মতো বস্তাতেও তুলে ফেলেছি, তখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। কারণ এরপর শুধু ধৈর্য্য ধরে এই একই ডিজাইন টা রিপিট করে পুরো আসনের কাজ টা সম্পন্ন করতে হবে। ক্রস সেলাই এর হিসেবটা যাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, বিস্তারিত বোঝার জন্য আমি একটা ক্লোজ ছবি দিলাম। আশা করছি দেখলেই বুঝতে পারবেন।

IMG20240313172549.jpg


IMG20240206153933.jpg


এবারে একই ডিজাইন শুধু উপরে, পাশে রিপিট করার পালা। রো হবে ৩ টা আর কলাম হবে ৪ টা রিপিট। আমি ধাপে ধাপে যেভাবে করেছি, ছবি গুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন সহজেই।

IMG20240211110639_BURST001.jpg


IMG20240313173610.jpg


IMG20240321133233.jpg


IMG20240627174807.jpg


এভাবে যখন বক্সের মাঝে ফুলের ডিজাইন রিপিট তোলা শেষ, তখন মাঝের ফাঁকা ঘর গুলো সাদা রঙের সুতো দিয়ে ভরাট করার পালা! কিন্তু এই পার্টটাই সবচেয়ে বোরিং ছিলো। এই কাজটুকু করতে করতে মনে হচ্ছিলো যেন অনন্তকাল ধরে করেই যাচ্ছি, তবুও শেষ ই হচ্ছে না। মাঝে দিয়ে অসমাপ্ত কাজের সাথে নিজের একটা সেল্ফিও নিয়ে রেখেছি স্মৃতি রাখার জন্য! সবশেষে চারপাশে লাল কাপড় দিয়ে বর্ডার করে নিবো।

IMG20240630144014.jpg


IMG20240701175227.jpg


IMG20240711134052.jpg


IMG20240715113244.jpg


IMG20240730194139~2.jpg


ফাইনাল লুক


IMG20240731173647~3.jpg


এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন। আশা করি খুব দ্রুত অন্য কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। ততক্ষণ পর্যন্ত খুব ভালো থাকবেন সেই শুভকামনা রইলো।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Sort:  
 8 days ago 

আপু আপনি পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে খুব সুন্দর একটি আসন তৈরি করেছেন। আপনার এত সুন্দর ডাই দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনার একসাথে দু'টো কাজ হয়ে গেলো। এটা যেমন আপনার ইউনিক পোস্ট হয়েছে তেমনি বাসায় আসন হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। ওদের সুতা দিয়ে ডিজাইন করার জন্য দেখতে আরও বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে। জবা ফুলের ডিজাইন কিন্তু খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এককথায় জাস্ট অসাধারণ হয়েছে। ধন্যবাদ আপু ইউনিক পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 8 days ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আপনার মন্তব্য পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো ।

 8 days ago 

পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে আসন তৈরি করেছেন বেশ ভালো লাগলো। ‌ পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে আসন তৈরি বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে আসন দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। আপনার পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে আসন তৈরি করার দক্ষতা বেশ । এতো সুন্দর ডাই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 8 days ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আজিম ভাই।

 7 days ago 

বেশ দারুণ একটা জিনিস তৈরি করেছেন আপু। পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে খুব সুন্দর ডিজাইন করেছেন। আপনার হাতের কাজ দেখে ‌সত্যিই মুগ্ধ হলাম আপু। বেশ ভালো লাগলো। আসনের মধ্যে ডিজাইনটা চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে। বেশ দক্ষতার সাথে কাজটা করেছেন। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 7 days ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আপনার মন্তব্য টি পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ভালোবাসা নিবান। 😍

 7 days ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এজাতীয় কাজগুলো অনেক আগে আমাদের এলাকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আগেকার মানুষের এমন বেশ সুন্দর সুন্দর কারু কাজ করতে দেখতাম। অনেকদিন পর এমন সুন্দর একটি ইউনিক পোস্ট দেখতে পেরে ভালো লাগলো।

 7 days ago 

আমিও ছোট বেলায় গ্রামে গেলে দেখতাম গ্রামের মেয়ে-মহিলারা এমন কাজ গুলো করতেন, যেটা এখন আর তেমন দেখা ই যায় না। অথচ কি সুন্দর শিল্প এটা! আপনার দারুণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।

 6 days ago 

আপনি তো দেখছি অনেকদিন ধরে খুব সুন্দর একটা আসন তৈরি করেছেন। পাটের বস্তায় উল সুতা দিয়ে আসন তৈরি করার বিষয়টা কিন্তু আমার কাছে বেশ দারুন লেগেছে। আপনি এটা কত সময় ধরে সম্পূর্ণ করেছেন। কিন্তু এখানে দেখে যেন মনে হচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে এটা সম্পূর্ণ করে নিয়েছেন। আপনার নিখুঁত হাতের কাজ দেখে সত্যি মুগ্ধ হলাম। পুরোটা অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে, আর দেখতেও দারুণ লাগছে। এটা আমাকে গিফট করে দেন আপু। আমার অনেক পছন্দ হয়েছে এটি। আমার জন্য পাঠিয়ে দেন।

 6 days ago 

আমিতো শুধু তাকিয়েই আছি আপু কিভাবে এত সুন্দর করে পাটের বস্তার মধ্যে এটা তৈরি করেছেন। মার্চ মাসে শুরু করে জুলাই মাসে শেষ করেছেন বেশ ভালই সময় লেগেছে। আর সময় লাগারই তো কথা এত সুন্দর একটা জিনিস তৈরি করতে তো সময় লাগবেই। সর্বোপরি ধাপে ধাপে যে শেয়ার করলেন এটা দেখেও ভালো লাগলো। যদিও এটা হয়তো পারবো না।তবে আপনার হাতের কাজ দেখে খুব ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58647.58
ETH 2550.58
USDT 1.00
SBD 2.50