গল্প: একটি দাঁতব্রাশের আত্মকাহিনী
|| আজ ১৭ মার্চ, ২০২৪ || রোজ: রবিবার ||
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে যেমন আছি, ভালোই আছি।আজ আবারো আপনাদের সামনে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আপনারা পড়ে আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন।
আমি একটি দাঁতব্রাশ। এখনো মোড়কের ভেতরেই পরে রয়েছি। মাস খানেক আগে আমাকে আমার কাজ সম্পর্কে ট্রেনিং দিয়ে এই মোড়কে পুরে পাঠিয়ে দেয়া হয় আমার মালিক যেন আমাকে দেখে কিনে নিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে। আমার কাজ নাকি হবে আমার মালিকের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ দাঁতের সকল ময়লা পরিষ্কার করে তার দাঁতকে সুরক্ষিত রাখা। একাজে সহোযোগিতা করার জন্য আমাকে শক্তি বাড়িয়ে দিবে টুথপেষ্ট নামক বন্ধু! যদিও টুথপেষ্ট বন্ধুর সম্পর্কে এখনো আমার কোন ধারণা নেই, তবে আমি ভীষণ এক্সাইটেড। এসব কথা ভাবতে ভাবতেই দেখি এক বিশালদেহী লোক এসে আমাকে হাতে নিলেন এবং অন্ধকার হয়ে গেল আমার চারপাশ। এবার বুঝি আমি আমার মালিক এর বাসায় যাচ্ছি। এবার থেকে তবে আমার কাজ শুরু হবার দিন চলে এলো! উফফ কি যে আনন্দ লাগছে! এতদিন পরে আমি আমার মালিকের সেবা করার সুযোগ পাবো!
আজ আমার কাজ শুরুর দিন। আমার বন্ধু পেস্ট এর সাথে দেখা হয়ে গেছে৷ মালিক প্রথমেই আমার সাথে আমার বন্ধু পেস্ট কে মিলিয়ে দিলেন। এবার আমাকে নিয়ে গেলেন তার দাঁতের কাছে৷ কিন্তু একি!!! কী ভীষণ দুর্গন্ধ এখানে! আমার তো অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা প্রায়। ভাগ্যিস বন্ধু পেস্ট তার নিজের সুঘ্রাণ দিয়ে আমায় সহায়তা করেছে। আমার কাজ সম্পর্কে যখন ট্রেনিং করেছিকাম, তখন আমার কাজ সম্পর্কে তো সবকিছু ঠিকঠাক ই জানিয়েছেন, কিন্তু এখানে এমন মরার দুর্গন্ধ হবে এসব তো জানায়নি! আমার তো টেকা মুশকিল হয়ে পড়েছে প্রথম দিনেই। এরই মধ্যে আমার প্রথম দিনের কাজ শেষ হলো।
এবার আমার ২য় দিনের কাজের পালা।আমার আরো শক্ত হতে হবে। নিজের কাজ ঠিকভাবে করে নিজের জীবনের স্বার্থকতা খুঁজে নিতে হবে৷ এই ভেবে নতুন উদ্যোমে নিজেকে তৈরি করলাম। আজকেও দুর্গন্ধে টেকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে আমার। আমার আগের টুথব্রাশ বোধ হয় ভালোভাবে তার কাজ করতো না, দাঁতে এমন বাজে স্তরের ময়লা, যে কি বলবো!! কিন্তু মালিক এত জলদি জলদি এদিক সেদিক ঘোরাচ্ছে যে আমি ময়লা দেখার পরেও সেগুলো পরিষ্কার করতে পারতিসি না। কি মুশকিলের ব্যাপার! এদিকে এক মিনিট ও যেন আমাকে কাজ করতে দেয় না আমার মালিক! কিসের যে এত তাড়া তার, আমি বুঝি না। আমাকে সময়-সুযোগ না দিলে আমি আমার কাজ করবো কীভাবে!
এভাবেই চলে গেলো ছয় মাস। আমার মালিক আমাকে কাজই ই করতে দেয় না। ওদিকে আমার জীবন এভাবেই নিষ্ফল হয়েই কাটালো!! আমার কাজ নামমাত্র বন্ধু পেষ্ট এর সাহায্যে মুখে কিছু ফেনা দিয়ে ধুয়ে ফেলা! ওদিকে মালিকের দাঁতের অবস্থা দিন দিন খারাপ ই হচ্ছে। আর আমার দিকে বাজেভাবে তাকায় থাকে! আমি নাকি কোন কাজের না! অথচ আমাকে কাজ করতে দিলে না!! এই জীবন তো এভাবেই দুর্নাম নিয়েই কাটিয়ে দিতে হচ্ছে! এই জীবন দিয়ে আমি কি করবো! ওদিকে আমার লাইফ-লাইন ও তো তিন মাস হওয়ার কথা ছিলো... এখন আর কাজের কোন এনার্জিও পাই না। ওদিকে শুনলাম মালিক দাঁতের ডাক্তারকে দেখায় ওখানে হাজার হাজার টাকা দিচ্ছেন। সাথে তো যন্ত্রণা আছেই!! অথচ মাঝখান দিয়ে আমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিলো। দুঃখ!! দুঃখ!!
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
একটি দাঁতব্রাশের আত্মকাহিনী নিয়ে আপনার লেখা গল্পটি শুধু মজাদারই নয়, বরং এটি সৃজনশীলতা ও কল্পনার অসাধারণ নিদর্শন। আপনি যেভাবে দাঁতব্রাশের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্পটি বলেছেন, তা পাঠককে নতুন এক জগতে নিয়ে যায়। আপনার লেখনীতে জীবন্ত চরিত্রের সৃষ্টি ও বাস্তবতার সাথে মিশে যাওয়া কল্পনার মিশ্রণ অত্যন্ত প্রশংসনীয়, দিদি।
নিজের দৃষ্টিকোন থেকে চেষ্টা করে লেখাটিকে মজার করে তুলতে। আপনার মতামত পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার দারুণ মতামত শেয়ার করার জন্য।
হাহাহা আপু বেশ মজা লাগলো এই দাঁত ব্রাশের আত্মকাহিনী পড়ে। আসলে প্রথম দিকটায় ভেবেছিলাম হয়তো অন্য কিছু হবে। এখন দাঁত মাজা নিয়েই যে বিষয়টা লিখলেন তা বেশি মজা লাগলো। আর এমন মজার গল্প গুলো পড়তে আসলেই বেশি ভালো লাগে। এই ছয় মাসেও মালিক ব্রাশকে কাজ করতে দেয় নি ঠিকমত,হাহা।
বেচারা ব্রাশের জীবনটাই বৃথা করে দিয়েছে ভাই সেই মালিক! 😂😂 আমি চেষ্টা করলাম একটু মজার গল্প লিখতে। আপনি পড়ে মজা পেয়েছেন, জেনে লেখা স্বার্থক মনে হলো। 😇
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আসলেই অনেক মজার ছিলো।
দিদি, আপনার পোস্ট পড়ে হাসতে হাসতে পাগল হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা আমার। হা হা হা..😂😂😁😁 যদিও আমি পোস্ট পড়ার আগে অনুমান করেছিলাম, যে এরকম ঘটনা কিছু একটা ঘটবে। তবে এটা যদি দাঁতব্রাশের আত্মকাহিনী না হয়ে বাথরুমের কোমোটের ব্রাশের আত্মকাহিনী হত তাহলে ঠিক কিরকম অবস্থা হতো সেই ব্রাশের, সেটা চিন্তা করে আরো কিছু সময় হাসলাম।😁😁
আয় হায়!! এভাবে তো ভেবে দেখি নি! 🤣🤣🤣
হিহি 😂😂আমি ভুল করে ভেবে ফেলেছি দিদি!🤭🤭
এককথায় অসাধারণ ছিল আপু হা হা। টাইটেল দেখেই বুঝেছিলাম নিশ্চয়ই ভিন্ন কিছু হবে এবং সত্যি তাই। এইটা কোন কথা বলেন এভাবেই একটা ব্রাশের জীবন বৃথা কেটে গেল। তার মালিক তাকে কোন কাজ করতে দিল না অথচ নাম হলো সে কোন কাজের না। এই দুঃখ টা ঐ ব্রাশ রাখবে কোথায়।
সেটাই! এই জীবনে এত দুঃখ সেই ব্রাশ কই রাখবে বলেন!! অপবাদ নিয়েই জীবন পার করতে হচ্ছে বেচারাকে। 🫢
খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ প্রথমে ভেবেছিলেন যে একদম ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট হবে৷ পরে যখন পড়লাম শুধু শুধু হাসি পাচ্ছিল৷ একটি দাত ব্রাশ এর আবার জীবন কাহিনী হতে পারে তা আমার কখনো জানা ছিল না। তাই আপনার পোস্টের টাইটেল পড়ে পোস্টটি পড়ার প্রতি অনেকটা আগ্রহ জন্ম নিল। পরবর্তীতে সে ব্রাশের মালিক তাকে ছয় মাস ধরে কোন ধরনের কাজই করতে দেয়নি৷ অথচ বলতে থাকে যে সে কোন কাজেরই নয়৷ ধন্যবাদ এই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
আপনার দারুণ মন্তব্যের পাশাপাশি আমাকে আপভোট দিয়ে আপনার সাপোর্ট এর জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। আমি আসলে চেষ্টা করেছি একটি মজার লেখা শেয়ার করার। আপনাদের ভালো লেগেছে, আমি অনুপ্রেরণা পাচ্ছি এতে। ধন্যবাদ ভাই।