ডেংগু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত পদক্ষেপ....
হ্যাল্লো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করছি সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।
আমার গত পোস্টে আমি বলেছিলাম যে ডেংগু প্রতিরোধে আমি নিজে আমার অবস্থান থেকে কিছু ইনিশিয়েটিভ নিয়েছি৷ আজ তা নিয়েই আমার আজকের পোস্ট।
আসলে এখন ডেংগুর প্রকোপ যেভাবে বেড়েছে, আমাদের সবার পরিবার কোন না কোন ভাবে এফেক্টেড হয়েছে বা পরিনিয়ত হচ্ছে। কে কখন আক্রান্ত হবে কোন ভরসা নেই।
ডেংগু প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে সরকার থেকে মশানিধক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। বেশ কয়দিন চোখে পড়েছে আমার। তবে প্রত্যেকেরই উচিত যার যার অবস্থান থেকে একটু একটু করে এগিয়ে আসার। সবাই সচেতন হলে, তবেই এর প্রকোপ কমা সম্ভব, নচেত আশা ক্ষীণ।
আমরা সবাই জানি যে ডেংগু হয় এডিস মশার কামড়ের ফলে। আর ইদানিংকার গবেষণায় এসেছে, এডিস মশা তাদের কিছু জেনেটিক মডিফাইড এনেছে সময়ের সাথে সাথে। এখন যে কোন স্বচ্ছ কিংবা মিঠা পানিতে এডিস মশার বংশ-বৃদ্ধি হওয়া সম্ভব। তাই এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি রোধ করতে চাইলে আমাদের আশেপাশে যেনো জল জমে থাকতে না পারে সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে যা যা পদক্ষেপ নিয়েছি:
আমার বাসায় বারান্দায় জলে টিকতে পারে এমন কিছু গাছ ছিলো। যেমন-লাকি ব্যাম্বু, এরোহেড, মানিপ্ল্যান্ট ইত্যাদি। সেগুলোয় যেহেতু জল জমে থাকে, সেখানে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি হতে পারে এই ভেবে আমি ওই গাছ গুলো এখন মাটিতে প্রতিস্থাপন করেছি।
চলতি রাস্তায় যদি কোন পাত্র দেখি যেখানে জল জমে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, সেটার থেকে সেই জল ফেলিয়ে উলটে রাখবো বলে ঠিক করেছি। যেমন-কাটা ডাব বা ওয়ান টাইম খাবারের প্যাকেট অনেকে অনেক সময় রাস্তায়ই ফেলায় দেয়। সেখানে পানি জমার সম্ভাবনা থাকে। আমি ঠিক করেছি, যদি এমন কিছু আমার চোখে পড়ে, তবে অবশ্যই অবশ্যই তা উল্টে রাখবো, যেন সেখানে জল জমে থাকতে না পারে।
বাসায় বিকেলের দিকে করে জানালা বন্ধ করে রাখি সন্ধ্যা পর্যন্ত। কারণ এই সময়েই বাহিরের মশা ঘরে ঢুকে বেশি। আর সন্ধ্যার পর বাসায় ধূপ জালাই। কয়েলে যেহেতু বিষাক্ত উপাদান আছে, আমি প্রাকৃতিক ধূপেই বিশ্বাসী।
রাতে যতই গরম লাগুক, মশারী টাংগাই। যা কয়দিন আগেও টানাতাম না। আমাদের বাসা যেহেতু পাঁচ তলায়, মশা কম বলে এতদিন গায়ে লাগাতাম না বিষয় টা। কিন্তু এখন আর অবহেলা করবো না বলে ঠিক করেছি।
যেহেতু আমরা দুইজনই কর্মজীবী, দিনের বেলা বের হই, ফিরতে ফিরতে সন্ধা পার হয়।তাই বাসা থেকে বের হওয়ার আগে মনে করে কমোডের প্যানের ঢাকনাটি বন্ধ করে আসি।
টয়লেটে যে বালতিতে জল ধরে রাখি, সেই বালতি এখন সপ্তাহে একদিন ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করি। আগে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করতাম না। কিন্তু কোন একটি বিজ্ঞাপনে দেখার পর থেকে এখন বাড়তি সচেতনতা হিসেবে ব্লিচিং পাউডার যোগ করেছি।
এই গুলোই ব্যক্তিগতভাবে আমি আপাতত মেনে চলার চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি, এমন ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমেই অল্প অল্প করে কিছু না কিছু পরিবর্তন আসবে...... বাটারফ্লাই ইফেক্টের মতোন...
বর্তমান সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ যে পরিমাণে বেড়েছে তাতে নরমাল জ্বর হলেও খুবই ভয় লাগে। আপনি ডেঙ্গুনিধন উপলক্ষে ব্যক্তিগতভাবে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছেন সেগুলো আমারও করা হয়ে থাকে। গাছগুলো সব আমিও মাটিতে লাগিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া আমিতো দুপুর বেলায় সব জানালার নেট লাগিয়ে রাখি যাতে মশা ঢুকতে না পারে। যদিও আমাদের এলাকাতে এখন মশা একদমই নেই তারপরেও তো বলা যায় না। যাইহোক আপু ভালো লাগলো আপনার পদক্ষেপ গুলো।