ঈদের যাত্রা ভোগান্তি।।
হ্যাল্লো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। আমিও সুস্থ আছি৷
আজ যখন আমি লেখাটা লিখছি, ঠিক এই মুহূর্তে আমি বসে আছি কল্যানপুর বাস্ট স্টপেজে। খোলা আকাশের নিচে বসে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে দিতেই লেখাটা শুরু করেছি।
আর একদিন পরে আমাদের দেশে পবিত্র ঈদ উল আযহার উৎসব। আমাদের এখানে মূলত চাকরি জীবনে লম্বা ছুটি পাওয়া হয় দুই ঈদ উপলক্ষেই। যাদের গ্রামের বাড়ি ঢাকা থেকে দূরে অথচ জীবন ও জীবীকার প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে ঢাকায় থাকি, তারা আসলে মুখিয়ে থাকি ঈদের ছুটির জন্য। কর্মজীবনে টানা সাত দিনের ছুটি মানে অবশ্যই অনেক কিছু।
২৯ তারিখে ঈদ। তাই ২৭ তারিখ শেষ অফিস করে ঈদের ছুটি শুরু। কিন্তু মন তো ২৫/২৬ তারিখ থেকেই বাড়ির প্রতি ছূটে গেছে। অবাধ্য মনকে এমনিতে মানানো কষ্টের হলেও কাজ তো কাজই। কাজের দ্বায়বদ্ধতা তো এড়ানো যায় না কিছুতেই।
বাড়ি ফেরার বাসের টিকিট করে ফেলেছি আরো দশ দিন আগেই। ২৭ তারিখ রাত ৭:৪৫ এ গাড়ি। গন্তব্য শ্বশুড়বাড়ি- লালমনিরহাট। ২৭ তারিখ যেহেতু ঈদের আগে লাস্ট অফিস, একটু আগে আগেই অফিসের সবাই দুপুরের পরেই সবার সাথে বিদায় নিয়ে চলে যায়।
বিকেলের দিকে আমার হাসবেন্ড এর ফোনে কল আসে। কল করে জানানো হয় যে গাড়ি লেট হবে। ১২ টার দিকে গাড়ি ছাড়বে। সে অনুযায়ী যেন কাউন্টারে আসা হয়।
আমরা সে অনুযায়ী আস্তে ধীরে হাতে সময় নিয়ে ১১ টার দিকে কাউন্টারে পৌঁছে যাই। বিপত্তি বাজে যখন রাত ১ টা বেজে যায় তারপরেও গাড়ির কোন খোঁজ নাই। কাউন্টার থেকে জানানো হয় গাড়ি রাস্তায় জ্যামে আটকে আছে। আরো দেরি হবে। কিন্তু আসলে গাড়ির ড্রাইভার এর সাথে কোনো যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তার ফোন বন্ধ। এদিকে ছোট ছোট বাচ্চা নিয়েও সহযাত্রীরা অধৈর্য হয়ে উঠেছে... যেহেতু ড্রাইভার এর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিলো না, গাড়ি কখন আসবে, সেটা নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি হয়। রাত ৩ টার সময় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে পুলিশে কল দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের এস আই এবং কয়েকজন কনস্টেবল মিলে কাউন্টারে আসে...
তারপরে জানা যায়, গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে গিয়েছিলো, ফলে সেই চাকা রিপ্লেস করতে কিছু অতিরিক্ত সময় লেগে যায় এবং তারপর গাবতলি গরুর হাটের জ্যামে পড়ে।
এখন রাত পার হয়ে ভোর হতে চলছে, সময় ৪:৪৫ মিনিট, এইমাত্র গাড়িতে উঠে বসলাম। জীবনে যতবার বাড়ি গিয়েছি, আজকের মতোন বাজে অভিজ্ঞতা এই প্রথম।
তাও যাত্রা তো মাত্রই শুরু, ফাইনালি বাড়িতে পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে, সে উপরওয়ালা ই ভালো জানেন। তবে আশা করি এমন বাজে অভিজ্ঞতা অন্য কারোর না হোক কোন যাত্রাপথেই......
সবার ঈদের ছুটি ভালো কাটুক, সেই শুভকামনা।