পারিবারিক শিক্ষা
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী- সবাইকে আমার নমষ্কার/আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে ভালো আছি। আজ আপনাদের সাথে আবারো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজ আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো। আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে।
ঘটনা ১: গত বৃহস্পতিবার রাত, আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাপ্তাহিক হ্যাং আউট চলছে। একপর্যায়ে আমাদের প্রিয় নুসুরা আপু বললেন আইরিন আপুর শুভ সংবাদটি যেন আমাদের সকলের সাথে শেয়ার করেন। তখন @shuvo35 ভাইয়ার উত্তরটি অনেকটা এমন ছিলো যে-"আসলে আমি তো এতক্ষণ জানতাম না যে খবরটি সবার সাথে শেয়ার করার অনুমতি আছে কি না, তাই এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে সবাইকে জানাই নি। নুসুরা আপু যখন বললেন, তাহলে শেয়ার করছি। "
ঘটনা ২: গত শুক্রবার দুপুরবেলা আমি আর আমার হাসবেন্ড কাচ্চিভাইতে চুইঝাল মাংস এবং পোলাও অর্ডার দিয়ে বসে আছি। সেদিন রেস্টুরেন্টের একাংশ রিজার্ভ ছিলো, কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য। সেজন্য বাকি অংশে বেশ ভীড় ছিলো এবং সবাইকে টেবিল শেয়ার করে বসতে হচ্ছিলো। আমাদের টেবিলে বাবা-মা এবং ১১-১২ বছর বয়সী একটা ছেলে বসেছিলো। যখন আমাদের খাবার দিয়ে গেলো, সেই মুহুর্তে ছেলেটি তাচ্ছিল্যের সুরে বলে উঠলো, "বাবা কাচ্চিভাইতে এসে কাচ্চি ছাড়া ভাত কে খায়!!" আমি অবাক হয়ে খেয়াল করলাম ছেলের এমন অযাচিত আচরণে সামনে বসে থাকা আমরা বিব্রত বোধ করলাম কি না, এই নিয়ে মা-বাবার নূন্যতম কনসার্ন ও নাই।
উপরের ঘটনা দুইটি আমার আজকের লেখার প্রেক্ষাপট হিসেবে শেয়ার করলাম। যেখানে, ১ম ঘটনার মাধ্যমে আমরা এমন একজন সেন্সিবল মানুষকে (আমাদের শুভ ভাই) দেখলাম যিনি জানেন এবং প্রাকটিস করেন যে, কোনো মানুষের কনসার্ন ছাড়া তার ব্যক্তিগত কোন তথ্য বা সংবাদ অন্য কারো সাথে শেয়ার করাটা ঠিক না। সে যতই সুসংবাদ বা খুশির খবর ই হোক আর যতই কাছের মানুষের সাথেই হোক না কেন। অপরদিকে ২য় ঘটনায় আমরা এমন একটি পরিবারকে দেখলাম যেখানে কারোরই সঠিক জ্ঞানটুকুও নেই যে অন্যের বিষয়ে অকারণ অযাচিত মন্তব্য করাটা অশোভনীয় এবং অনুচিত।
এই দুইটি ঘটনার নেপথ্যে একটি কমন ফ্যাক্টর কাজ করছে, যেটা হচ্ছে পারিবারিক শিক্ষা।
একজন মানুষ হিসেবে যা যা মানবিক গুণাবলী থাকার প্রয়োজন, তা শেখার সর্বপ্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পরিবার। সততা, সদ্ব্যবহার, ভদ্রতা, অপরের প্রতি শ্রদ্ধা বোধ, নৈতিকতা, দানধর্ম, পরোপোকার, চরিত্র, মূল্যবোধ -এসবের ভিত্তি গঠন হয় পরিবারিক শিক্ষার মাধ্যমেই। কোনো স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় বা কোচিং/প্রাইভেট টিউটর থেকে এসকল শিক্ষা খুব বেশি অর্জন করা যায় না। মানবশিশু মাত্রই অনুকরণপ্রিয়। সে তার আশেপাশে যা দেখে তাই অনুকরণ করে, তাই শিখে। বাড়ির বড়রা অন্যদের সাথে যেমন আচরণ করে, সেটাই তার কাছে সঠিক এবং স্বাভাবিক বলে মনে হয়। বড়রা যদি সবসময় অন্যের বিষয়ে অকারণ অযাচিত মন্তব্য করে থাকে, আলোচনা করে, সেই বাড়িতে বেড়ে ওঠা শিশু এটাকেই স্বাভাবিক বলে মনে করবে এবং নিজেও একই মানসিকতার হবে। আবার যে পরিবারের সকলে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল, সেই পরিবারে বেড়ে ওঠা শিশুটিও অন্যের কষ্টে কষ্ট পাবে এবং নিজের অবস্থান থেকে সাহায্য করতে উৎসাহিত হবে।
তাই বাড়ন্ত বয়সের শিশুর সামনে আমাদের সকলের উচিত নিজেদের আচরণ সংযত রাখা এবং একটু বাড়তি মনোযোগ দিয়ে বাড়ন্ত শিশুটিকে একজন মানবিক গুণসম্পন্ন সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করা।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
আসলে যে মানুষের পারিবারিক শিক্ষা যেরকম, সেই মানুষটা বড় হয়ে ওরকম ভাবেই আচরণ করে। শুভ ভাইয়া এবং ওই ছেলেটির দুজনের ঘটনা কে কেন্দ্র করে আপনি আজকের এই বিষয়টার উদাহরণ দিয়েছেন। আমার কাছে সত্যি অনেক বেশি ভালো লেগেছে আপনার লেখা এই পোস্ট। জাস্ট অসাধারণ ছিল এটাই বলতে হচ্ছে।
এজন্যই বলে যে ব্যবহার এই বংশের পরিচয়। আপনার কাছে আমার পোস্ট টি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো সোনিয়া আপু। ভালোবাসা নিবেন।
বেশ ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে। তবে ব্যাখ্যা করেছেন যথার্থ। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য 🙏
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার যেস্চার সেদিনই খুব ভালো লেগেছিলো, তাই ভালো মতোই মনে আছে।
প্রথমেই বলবো আপনার ব্যাখ্যাটা অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে। এত সুন্দর করে আপনি ব্যাখ্যা করেছেন, যা পড়ে আমার তো খুব ভালো লেগেছে। আসলে যে রকম কথা ই হোক না কেন কারো কোন কথা তার অনুভূতি ছাড়া বলা উচিত না। এই ধরনের বিষয়গুলো আমার অনেক ভালো লাগে। আর ওই ছেলেটার আচার আচরণের কথা শুনে তো আমি অবাক। আসলে পারিবারিক শিক্ষা একেবারেই ঠিক ছিল না ছেলেটির।
অসংখ্য ধন্যবাদ রকিভাই। আমার ব্যাখা আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
একদম ঠিক বলেছো পুঁথিগত বিদ্যার থেকে সবার বেশি দরকার পারিবারিক শিক্ষা। শুভ ভাই সেই শিক্ষায় শিক্ষত।বাচ্চারা অবুঝ না বুঝেই বলেছে কিন্তুু বাবা মায়ের উচিত ছিলো তখনি বাচ্চাকে বুঝিয়ে দেয়া যে কাচ্চিভাই নাম রেষ্টুরেন্ট এর কিন্তুু এখানে সবাই তার পছন্দের খাবার খেতে পারে।ভাত,কাচ্চি সব আইটেম থাকে। তাহলেই বুঝতে পারতো বাচ্চা এবং ভবিষ্যতে আর এমন কথা বলতো না।পরিবারের কাছেই বাচ্চারা তার আচার আচরণ ও মানবিক গুনাবলিগুলো শিখতে পারে।ধন্যবাদ সুন্দর শিক্ষানীয় পোস্ট করার জন্য।
তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ বোদি সুন্দর একটি গঠনমূলক কমেন্ট করার জন্য।