একটি শিক্ষনীয় গল্প। সুরাইয়া আপুর জন্য সবার কাছে দোয়া চায়।।
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আবার আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আমার খুব কাছের একজন মানুষের গল্প শেয়ার করব। আশা করি আপনারা এই গল্প থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন এবং আমি কয়েকটি ব্লগের মধ্যেও শেয়ার করেছি যে, আমার একমাত্র বড় ভাই আব্দুল্লাহ। তিনি বিয়ে করেছেন আমাদের জেলা সদরের শিমরাইলকান্দি এলাকায়। আমাদের ভাবির তিন বোন তিন ভাই ছিল। সবার ছোট যে ভাইটি ছিল সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা জামিয়া ইউনুসিয়াতে পড়াশোনা করত। কয়েক বছর আগে ইসলামের পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে সে পুলিশের গুলিতে শাহাদত বরণ করে। তার জন্য আমরা সবাই মাগফেরাত কামনা করি।
ভাবির আরো দুই ভাই আছে, বড় ভাইটি বাংলাদেশেই ছোটখাটো বিজনেস করে। আর দ্বিতীয় নাম্বার ভাইটি বিদেশে থাকে।। ভাবি সহ তারা তিন বোন। আমাদের ভাবি তাদের বোনদের মধ্যে সবার বড়। আমাদের ভাবির ভাইয়ের সাথে বিয়ে হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ। ২০২৩ সালের জানুয়ারির ২২ তারিখ ভাবির দ্বিতীয় বোনের বিয়ে হয়। আর মার্চের ৬ তারিখ ভাবির তৃতীয় বোনের বিয়ে হয়ে যায়। বলতে গেলে একমাস পরপরই তাদের তিন বোনের বিয়ে হয়ে যায়।
আমাদের ভাবি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো। সে আমাদের সংসারে খুব সুন্দর ভাবেই কাজকর্ম করতেছিল। কিন্তু ভাবির দ্বিতীয় নাম্বার বোনটি মাঝে মাঝে ভাবিকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কুপরামর্শ দিত। ভাবির বোনের নাম সুরাইয়া। সে ভাবিকে বলতো বেশি কাজকর্ম না করতে। সে তেমন কাজ করে না। তার শাশুড়ি সব কাজ করে ইত্যাদি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভাবির ওই বোনের জামাই বিয়ের তিন মাস পর বিদেশ চলে যায়। তারপর থেকে ভাবির বোন সকালবেলা ঘুম থেকে ১১ টার পরে। তারপর বেশি কাজকর্ম করতো না। সাধারণত শাশুড়িকে দিয়েই সব কাজকর্ম করাতো। আর ভাবির বোন জামাইয়ের আর কোন ভাই বোন ছিল না। ভাবির বোন জামাই ছিল বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। যার ফলে সুরাইয়া আপুর শাশুড়ি ও তাকে কিছু বলতো না। কিছু বললে সে তার স্বামীর কাছে মায়ের নামে উল্টাপাল্টা বলতো। যার ফলে সুরাইয়া আপুর শাশুড়ি সব কাজকর্ম করতো। সব কিছু নিরবে সহ্য করতো।
বিয়ের এক মাস পরেই সুরাইয়া আপু জানতে পারে যে সে প্রেগনেন্ট। যার ফলে সে বাসার কোন কাজকর্ম করতো না। সে সারাদিন শুয়ে বসে দিন কাটাতো। আর আমাদের ভাবীকেও কুপরামর্শ। সেও যেন বেশি কাজকর্ম না করে। নতুন বউরা নাকি এত বেশি কাজকর্ম করে না। তার কথা শুনে আমাদের ভাবিও মাঝেমধ্যে দরজা লাগিয়ে ঘরে শুয়ে থাকতো। আমাদের ভাইয়া ব্যবসার কাজে বাইরে চলে গেলে ভাবি ঘর থেকে তেমন বের হতো না। এভাবেই দিনকাল অতিক্রম হতে লাগলো।
যেহেতো আমাদের ভাবির আগে বিয়ে হয়েছে তাই আমাদের ভাবি আগে প্রেগন্যান্ট হয়েছিল। আমাদের ভাবীর ঘরে এই মাসের ১৯ তারিখ আমাদের একমাত্র ভাতিজা জন্মগ্রহণ করে। তবে ভাতিজা জন্ম হওয়ার সময় ভাবির সিজার লেগেছিল। এদিকে ভাবির মেজো বোন সুরাইয়া আপুর ও ডেলিভারি ডেট দিন দিন এগিয়ে আসতে লাগলো। ডাক্তারের হিসাব অনুযায়ী সুরাইয়া আপুর বাবু হবে নভেম্বর মাসে। কিন্তু অক্টোবর মাসেই ভাবির বোনের অবস্থা খুবই খারাপ। সারাদিন শুয়ে বসে কাটানোর ফলে আপুর সারা শরীর ফুলে গেছে। তারপর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গেছে। জানিনা এগুলো শাশুড়ির ওরদোয়া কিনা।
যাইহোক গত এক মাস যাবৎ আপু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। গত পরশুদিন সব ডাক্তার মিলে আপুর গার্জিয়ান কে বলে দিল যে আপুকে আর ওই হাসপাতলে চিকিৎসা দিতে পারবেনা। তারা যেন অতি দ্রুত আপুকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সুরাইয়া আপুর বাবা মা এবং শশুর শাশুড়ি আপুকে নিয়ে আরো কয়েকটি হাসপাতালে গিয়েছে কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কোন হাসপাতালে আপুকে ভর্তি করতে চায়না। সবাই আপুর অবস্থা দেখে ঢাকায় নিয়ে আসতে বলে।
এখন ডাক্তাররা বলতেছে সুরাইয়া আপুর যে condition তাতে যদি ডেলিভারি করতে যায় তাহলে সুরাইয়া আপু ও বাচ্ছা কাউকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। কারণ আপুর সারা শরীর ফুলে গিয়ে ফুসফুসে প্রবলেম হয়ে গেছে। এখন ডাক্তাররা কি করবে কিছুই বুঝতে পারতেছে না। অন্যদিকে প্রেসার খুব বেশি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সুরাইয়া আপুকে বাঁচানো যাবে কিনা কোন ডাক্তার শিওর দিয়ে কিছু বলতে পারতেছে না। সবাই আপুর জন্য দোয়া করবেন।
সবাই বলতেছে এটা নাকি আপুর পাপের ফসল। আপু কারো কথা শুনতো না। যা ইচ্ছা তাই করতো। কোন কাজকর্ম করতো না। বরং আরো দুই বোনকে ফোন করে বিভিন্ন উল্টা পাল্টা কথা বলতো। আমিও জানি মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে সেই পাপ একদিন বহন করা লাগেই। তারপরও দোয়া করি আপু এবং তার বাবু বেঁচে থাকুক। সবাইকে ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
দোয়াকরি সুরাইয়া আপুর বাচ্চা যেনো সুস্থভাবে জন্মগ্রহন করে। এবং আপু ও হয়ে সকলের মাঝে ফিরে আসেন।
আপু, সবার কাছে আমিও সুরাইয়া আপুর জন্য দোয়া চাই। সে হয়তো ভুল করেছে কিন্তু তার বাবুটা নিষ্পাপ।
জানিনা আপনার সুরাইয়া আপু ভাগ্যে কি আছে? তবে আপনার লেখা গল্পটি কিন্তু সত্যিকারের শিক্ষনীয় একটি ঘটনা। যা পড়ে আমাদের সমাজের অনেকের অনেক কিছু শিখার আছে। তবে দোয়া রইল আপনার সুরাইয়া আপুর জন্য।
জ্বী আপু,, গল্পটা শেয়ার করার পিছনে একটাই কারণ যদি কেউ কোন কিছু শিখতে পারে। ধন্যবাদ।
হয়তো তার পাপের শাস্তি সে পাচ্ছে। তবে এখন তার অবস্থা যা সবার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কিন্তু প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কাজকর্ম না করলেও এমন হওয়ার কথা নয়। যাই হোক সুরাইয়া আপু আর তার বাচ্চার জন্য দোয়া রইল যাতে সুস্থ হয়ে ওঠে।
জ্বী আপু তার অবস্থা এমন কিভাবে হলো সেটা কিছুতেই বুঝতেছিনা। আপনারা সবাই উনার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ।