সিলেট বেড়াতে এসে সাপের আতঙ্কে আছি।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসলামুআলাইকম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু কতেছি
-

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের মাঝে সিলেট বেড়াতে এসে সাপ নিয়ে যে আতঙ্কের মধ্যে আছি সে বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখবো।বর্তমানে চারিদিকে রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। আর এই দিকে আমি গরম থেকে বাঁচার জন্য সবুজে ঘেরা শান্তিময় এই সিলেটে কিছুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছি। এখানে এসে শুনি এখানে সাপ ওইখানে সাপ। আর সেই ভয়ে আমিও কোথাও ঘুরতে যেতে পারছি না।

আমি বর্তমানে সিলেটে অবস্থান করছি। আপনারা সবাই জানেন যে, আমার বড় আপুর বাড়ি সিলেট। তিনি কুলাউড়া থানার ব্রাহ্মণবাজারে থাকেন। আপুর বাড়িটি মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া এর মাঝামাঝি স্থানে। তাই আপুর বাড়ি গেলে পাহাড়ি এলাকায় উচু নিচু সুন্দর সুন্দর রাস্তা দেখা যায়। তা ছাড়া চা বাগান আরো প্রাকৃতিক অনেক নিদর্শন দেখা যায়। এখানে আসলে বোঝা যায় যে প্রকৃতি আমাদের কতটা উপকার করে। প্রচুর গাছপালা থাকার কারণে এখানে প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখা যায়। এখানে আসলে পর্যটকের অনেক জায়গায় ঘুরতে গেলে ভালই লাগে। তবে একটি বিপদ হল যে, এইদিকে ধান ক্ষেতগুলো বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। সিলেটের হাকালুকি হাউর পানিতে ভরপুর হয়ে গিয়েছে। তাই এতো পানিতে বিভিন্ন প্রকার সাপ ভেসে ভেসে আসছে। যা এখন সিলেট বাসির ও পর্যটকদের জন্য একটি আতঙ্কের বিষয়।

আমি এখানে আসার পরেই আমার ভাগিনার মুখে শুনেছিলাম যে, তাদের বাজারে অর্থাৎ ব্রাহ্মণ বাজারের কানু পট্টির পিছনে এক রাসেল ভাইপার সাপ মারা হয়েছে। এই কথা শোনে আমার ভয় লেগে যায়। এক দিন বিকাল বেলা আপুর বাসার ভারাটিয়া এসে বলতেছে যে, একটি সাপ নাকি আপুর গেইট এর সামনে তারা বের হতে পারছেনা। সাপটা নাকি সাড়ে চার হাত। শোনে আমি আরো ভয় পেয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য কান্না শুরু করছি।

গতকাল দুপুর বারোটার দিকে আপুর বাসার বারান্দায় আমরা সবাই কথা বলছিলাম। তখন আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল ফুটেছে সেই ফুলগুলোর ফটোগ্রাফি করব। ফুল গাছের দিকে তাকাতেই দেখি ফুল গাছটি নাড়াচাড়া করতেছে। আমার এক মামনি গাছের দিকে তাকিয়ে বলতেছে যে সাপ সাপ। আমি একটু সাহস করে সেখানে গেলাম। আমাকে দেখিয়েছিল আমি সেই সাপের লেজের অংশটা দেখেছিলাম। সবাই শুধু একটি সাপ দেখছিল। তবে আমি একসাথে চারটি সাপের মাথা দেখে জুড়ে চিৎকার করে বারান্দায় চলে আসি তারপর আবার দেখি পেয়ারা গাছে একটি সাপ বেয়ে উঠতেছে। তাই আমি জুম করে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করে নিয়েছি । সে ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি।

সাপটা এত দ্রুত গাছবেয়ে যাচ্ছিল যে তার ফটো তুলতে অনেক সমস্যা হচ্ছিলো। এই সাপ গুলো দেখার পর আমার সারা শরীর বারবার শিউরে ওঠে। আমি যেখানে যাই সেখানেই মনে হয় আমার সামনে সাপ পেছনে সাপ। সাপগুলো চিকন হলেও দেখতে ভয়ংকর মনে হয়নি। আবার সাপের গায়ের রং ও খুবই সুন্দর। এখানকার সবাই বলতেছে যে, এই সাপের নাম পাতালত সাপ। এই সাপগুলো শুধু গাছ থেকে গাছে চরে বেড়ায়। আর লতাপাতার সাথে মিশে থাকে আর তারা সবসময় একসাথে পুরো ফ্যামিলি থাকে। তাই এখানে অনেকগুলো সাপ দেখা গিয়েছে। সাপগুলোর জীহ্বা টকটকে লাল ছিল। আমি যখন অনেকগুলো সাপ একসাথে দেখেছিলাম তখন দেখছিলাম যে, সাপগুলোর মাথা অনেক লম্বা লম্বা। মাথা উচু উঁচু করে এদিক সেদি নাড়াচড়া করছিল। আমার হাজবেন্ডের কাছে এই সাপের পিকচার পাঠানোর পরে তিনি আমাকে বলছে যে এটি পঙ্খী রাজ সাপ।আমি তো আরো ভয় পেয়ে গেলাম এই সাপের নাম শুনে।

সাপ গুলো দেখার পরে আপুর বাসায় সাপুড়ে আনা হয়েছিল। আমি ভয়ে আর তাদের সামনে যায়নি। সাপুড়ে নাকি বলেছে এই সাপগুলোর মধ্যে কোন প্রকার বিষ নেই। তাই আমরা যেন সাপ গুলোর কোনো ক্ষতি না করি। এগুলো এমনি এসেছে ছায়ার জন্য। আর কালকে প্রচুর গরম ছিল। সাপগুলো পুইশাক গাছ ও চিচিঙ্গা গাছের ঝোপঝাড়ে ছিল। তাই ওই দিকে আর যায়নি। গেলে হইত ৫-৬ টা সাপের ফটোগ্রাফি একসাথে তুলে আপনাদের দেখাতে পারতাম। সাপের আতঙ্কের মধ্যে কিভাবে যে থাকছি সেটা আমি জানি। গায়ে একটু সুরসুরি দিলে মনে করি যে সাপ বুঝি আমার গায়ে লেগে আছে। চুলের বিনিকে মাঝে মাঝে সাপ মনে করে চিৎকার করে ওঠি। আমার আপু বারবার আমার কাছে দৌড়ে আসে। তারপর আপু আমাকে বলে যে, দেখো মৃত্যু যদি সাপের কামড়ে লেখা থাকে তাহলে কেউ তো আটকাতে পারবেনা। আর যদি তা না হয় তাহলে এত ভয় কিসের। আল্লাহর উপরে ভরসা করে থাকো। ইনশাল্লাহ কিছু হবে না।

বন্ধুরা আজকে এখান থেকেই বিদায় নিলাম। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আবার দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 months ago 

আপনি দেখছি আপনার আপুর বাসায় ঘুরতে গিয়ে মহা বিপদে পড়েছেন। আসলে সাপকে খুব ভয় লাগে আর আপুদের ওখানে যেহেতু বন্যা এসেছে তাই সাপ গুলো আশ্রয়ের জন্য গাছ গাছালিতে চলে এসেছে। এই সাপের লেজ আমি ধরেছিলাম আপু ফুলের গাছের ডাল কাটতে গিয়ে। আপনার মতো অবস্থা হয়েছিলো সামনে সাপ পিছনে সাপ।সাবধানে থাকবেন। ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 61137.27
ETH 2383.64
USDT 1.00
SBD 2.52