শাশুড়ি ও মায়ের মতো ভালোবাসে।
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি নীলা স্টিমিটে আমার আইডির নাম @titash। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে শাশুড়ি ও মায়ের মত ভালবাসে এই প্রসঙ্গে একটি ব্লগ শেয়ার করবো।
আপনারা সবাই জানেন যে, আমি বর্তমানে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছি মাত্র। তাছাড়াও আমি একজন গৃহিণী। আমার তিন মাসের একটি ছোট মেয়ে বাবু ও আছে।লেখাপড়া সংসার, বাবুর দেখাশোনা করা সবকিছুই নিয়ে আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তবু কেন যেনো আমার শাশুড়ির জন্য আমার অনেক মায়া লাগে। অনেকদিন হয়ে গেল আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে যাইনা। আমার শ্বশুর বাড়িতে কোন ঝামেলা হয়নি, আমার শাশুড়ির সাথে আমার কোন মনোমালিন্য নেই। আমার হাজব্যান্ড ঢাকায় চাকরি করার সুবাদে, আমি ঢাকায় থাকি।
প্রত্যেক মেয়েদের বিয়ের পর একজন নতুন মা হয়। যাকে আমরা শাশুড়ি বলি। আমরা আমাদের শাশুড়িকে কতটা ভালোবাসি বা কতটা সম্মান করি তা আমারা নিজেরা উপলব্ধি করতে পারি। বর্তমানে দেখা যায় যে, হয়তো শাশুড়ি ভালো নয় আর নয়তো ছেলের বউ ভালো না। এইরকম অনেক সমস্যা দেখা যায়। আচ্ছা একটু চিন্তা করে দেখুন তো। একটা মেয়ে যখন মায়ের কাছে থাকে তখন সে মেয়েটি তার মায়ের কাছে ভালো। আবার যখন শাশুড়ি ছেলেকে বিয়ে না করাই ততদিন পর্যন্ত তিনিও ভালো। কেন বিয়ের পর শাশুড়ি নিজের মায়ের মতো হয়না। আর কেনই বা ছেলের বউ নিজের মেয়ের মত হয় না। এটা সম্পূর্ণ মানুষের ব্যক্তিত্বের উপর। আমার শাশুড়ি যদি অনেক করাও হয়। তিনি যদি আমাকে ভালো নাও পাই। আমি যদি তাকে সম্মান করি ভালোবাসি নিজের মায়ের স্থানে রাখি। তাহলে শাশুড়ি বাধ্য হবে ছেলের বউকে নিজের মেয়ের মত ভালবাসতে।
তেমনি আমার শাশুড়ি আমাকে মায়ের মতই ভালোবাসে। আমার বিয়ের পর দিন থেকে আমি আমার শাশুড়িকে আম্মু বলে সম্বোধন করি। আমার মাকে যেমন আমি আম্মু ডাকি। তেমনি আমার শাশুড়িকেও আমি আম্মু বলেই ডাকি। তাছাড়া বিয়ের পর থেকে আমার সামনে যখন আমার শাশুড়ি কোন কিছু করতে যায়। আমি তাকে বাধা দিয়ে সেই কাজগুলো নিজে করে নিতাম। অথচ বিয়ের আগে আমি কখনো আমি আমার মায়ের কাজে সাহায্য করিনি। এমনকি লেখাপড়া ছাড়া কোন কাজই করতাম না। আমার বাবা আমার ভাই পরিবারের সকলকে নিষেধ করে রেখেছিল যে আমাকে যেন কেউ কাজ না দেয় শুধু লেখাপড়া আর লেখাপড়া। কিন্তু সেই আমি শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে শশুর বাড়ির সবার মন অল্প সময়ে জয় করে নিতে পেরেছি। আমার শাশুড়ি যখন আমার সামনে কাজ করতো আমার খুব খারাপ লাগতো। আমি কেন কাজ করবে আমি ওনার ছেলের বউ থাকতে।
আমার শাশুড়ি মাঝে মাঝে একটু একটু করা কথা বলতো। আমি আমার শাশুড়ির কথা শুনে হেসে ফেলতাম। একদিন আমার শাশুড়ি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, আমি যে তোমায় কটু কথা বলি। তোমার খারাপ লাগে না। তখন আমি হাসি দিয়ে বলেছিলাম, আম্মু আপনি যদি আমাকে কটু কথা বলে শান্তি পান। তাহলে সারাদিন বলেন। তাহলে আমার কোন কষ্ট লাগবেনা। এই কথা শুনে আমার শাশুড়ি কেঁদে ফেলেছিলেন। আমার শাশুড়ি আজ পর্যন্ত এখনো কোন কটু কথা বলেনি।
বিয়ের পর থেকে আমার শাশুড়ি আমাকে কখনো মরিচের ডাটা ফেলতে দেয়নি। আমার শাশুড়ি বলতো তোমার হাতগুলো নতুন হাত এই হাত দিয়ে যদি মরিচের ডাটা ফেলো তাহলে সারাদিন হাত পোড়াবে। এমনকি আমার শাশুড়ির যদি শুটকি দিয়ে সিল পাটাই বাটা বার্তা খেতে মন চায়। তিনি নিজে করতো। আমি জোর করে নিতে চাইলেও আমার শাশুড়ি কখনো আমাকে মরিচ বাটতে দেয়নি।
আমি যখন আড়াই মাসের গর্ভবতী। তখন আমি ঢাকায় ছিলাম। ঢাকা থেকে শশুর বাড়িতে যাওয়ার সময়। আমার শাশুড়ি ফোন করে বলেছিল। তোমার কি খেতে মনে চায়। তোমার জন্য একটি হাঁস জবাই করে রেখেছে রান্না করব। আমি বলেছিলাম আম্মু আমার কোন গোস্ত খেতে মনে চায় না। কচুর লতি চিংড়ি মাছ দিয়ে খেতে মনে চেয়েছিল। আমার শাশুড়ি এই কথা শুনে, আমার দেবরকে দিয়ে আমাদের পুকুর থেকে চিংড়ি মাছ ধরে আনিয়ে ছিলেন। আমার শশুরকে বাজারে পাঠিয়ে কচুর লতি আনিয়ে ছিলেন।
আমি সকালে কিছু না খেয়ে আমার হাজবেন্ডের সাথে ট্রেনে করে রওনা দিয়েছিলাম। জ্যামের কারণে বাড়িতে যেতে যেতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। বাড়িতে যাওয়ার পর আমার শাশুড়ি আমাকে তৎক্ষণাৎ বলেছে হাতমুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিতে। আমি যখন খেতে বসেছিলাম। তখন দেখেছি যে আমার শাশুড়ি অনেক সুন্দর করে আমার জন্য চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর লতি রান্না করে রেখেছেন। আমার হাজব্যান্ড ও আমার জন্য রুই মাছের মাথা ভুনা করে রেখেছিলেন। আমি ঐদিন পেট ভরে ভাত খেয়েছিলাম। কারণ মেয়ে পেটে আসার পর থেকে আমি কিছুই খেতে পারতাম না। তখন আমার শাশুড়ির জন্য আমি মন থেকে দোয়া করেছিলাম। শাশুড়িকে যেন আল্লাহতালা নেক হায়াত দান করেন।
শাশুড়ির ও মায়ের মত আদর করে। যদি আপনি মেয়ের মত শাশুড়ির সাথে আচরণ করেন। আজ পর্যন্ত আমি আমার শাশুড়ির সাথে কোন বেয়াদবি করেনি। তেমনি আমার শাশুড়ি ও আমাকে কষ্ট দেয়নি। সবাই আমার শাশুড়ির জন্য দোয়া করবেন। তিনি যেন ভালো থাকেন।
বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের ব্লগ। কেমন লাগলো আমার আজকের এই ব্লগটি। কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। এই কামনা করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবার করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপ করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে শাশুড়ি ও একজন মায়ের মতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মেয়ে বিয়ের পর শাশুড়ি মা কে সম্মান করতে চায় না। আসলে শাশুড়ি কে সম্মান করলে পৃথক ভালোবাসা পাওয়া যায়। আপনি শাশুড়ি মা কে খুবই সুন্দর কিছু লেখা লিখেছেন, আপনার লেখা গুলো পড়ে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগলো।
ভাইয়া আমরা যদি একটু ভালোবাসা দেই তাহলেই তো আমরা ভালোবাসা পাবো। আর আপনি ঠিকই বলেছেন, শাশুড়িকে যদি সম্মান করা হয় তাহলে পৃথক ভালোবাসা পাওয়া যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে একটি মেয়ে যখন শ্বশুর বাড়িতে যায় তখন নতুন একটি পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত হয়। সেখানে শ্বশুর শাশুড়ি থাকে তাদের সাথে দেখা যায় অনেক সময় সম্পর্ক ভালো থাকে না । খারাপ সময় পার করে। জেনে ভালো লাগলো যে আপনার শাশুড়ি আপনার মায়ের মতই দেখে। যেটা সত্যি অনেক বড় একটি পাওয়া। এরকম সুখী পরিবার খুবই কম দেখা যায়। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
আমার শাশুড়ি আমাকে মায়ের মত দেখে। এর মত বড় পাওয়া আর কোথায় পাওয়া যায় না। তাছাড়া আমি আসলেই একটি সুখী পরিবার পেয়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই কথাটা একদমই ঠিক। তবে ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্নতাও দেখেছি।আসলে সবদিকেই সবাইকে মানিয়ে চলার মত মানসিকতা রাখতে হয়।তাহলেই হয়তো সবকিছু সুন্দর থাকে।আপনার শাশুড়ি মা আপনাকে যেমন আপন করে নিয়েছে ঠিক তেমনি আপনিও তাকে নিজের মায়ের মত আপন করে নিয়েছেন। আর প্রত্যেকটা মেয়েরই উচিত শ্বশুর শাশুড়ির প্রতি নিজ দায়িত্ব কর্তব্য পালন করা,তারা যেমনই হোক না কেন।খুব ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে।
একেবারেই সঠিক কথা বলেছেন আপু। আসলে সব মানুষকে মানিয়ে চলার মত মন মানসিকতা রাখতে হয়। তাহলে অশান্তির সৃষ্টি হয় না। ধন্যবাদ আপু।
আপনার শাশুড়ি অনেকটা আমার শাশুড়ির মতনই। আমি কি খাব সেই নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকে। তাছাড়া আপনার শাশুড়ি আপনার পছন্দের কথা চিন্তা করে আগে থেকে রান্না করে রেখেছিল দেখে ভালো লাগলো।ভালোবাসা দিলে ভালোবাসা কয়েকগুণ বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকে এই জিনিসটি বুঝতে চায় না। যাইহোক এরকম সম্পর্ক গুলো ভালো থাকুক।