স্মৃতিময় একটি মূহর্ত।।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি স্মৃতিময় একটি মূহর্তের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
আমি নারায়গঞ্জে আছি প্রায় দুই বছর হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত একটি বাসাতেই আমরা আছি। কোন বাসা চেইন্জ করি নাই। কারন বাসাতে তেমন কোন প্র্রবেলম নাই। মালিকও অনেক ভালো। মাঝে মাঝে গ্যাসের প্রবেলম হয়। তবে সেটা প্রাকৃতিক প্রবলেম। সবার এক সাথেই সমস্যাটা হয়। এই সমস্যা সব জাগাতেই হয়ে থাকে। তো দুই বছর একটি বাসাতে থাকার কারনে আমাদের বেল্ডিং এর সবার সাথেই আমার মোটামুটি পরিচিতি আছে। আমরা যেই বাসাটিতে থাকি। সেটি একটি তিন তলা বেল্ডিং। কয়েকটা ফেমিলি এখানে থাকে।
তো নিচতলাতে আমাদের এক আপা থাকে। এই বাসাতে আসার পর থেকেই তার সাথে আমার পরিচয় হয়। তার বাড়ি সম্ভবত উত্তবঙ্গের কোন এক জেলাতে হবে। কারন তার সব ভাষা আমি বুঝি না। কিছু কিছু কথা টেনে টেনে বলে থাকে। তবে মানুষ হিসাবে অনেক ভালো। তিনি একটি রুম নিয়ে থাকে। তার একটি মেয়ে ও হাসবেন্ড, তিন মেম্বারের ফেমিলি। তিনির মেয়েটা সম্ভবত এই বছর অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে। আর কোন ছেলে মেয়েও হবে না। হয়তো শারিরীক কোন সমস্যা রয়েছে। তবে তিনি বাচ্ছাদের খুব আদর করেন। মাঝে মাঝে আমার মেয়েকেও তাদের বাসায় নিয়ে যায়।
তো সেই আপা কিছুদিন আগে আমাকে বললেন তিনি বাড়ি থেকে কিছু খুদের চাউল এনেছেন। আমি খুদের চাউলের ভাত খাবো কিনা। যদি খায় তাহলে কিছু খুদের চাউল আনতে। আমি তখন সেই আপাকে না বলেছিলাম। অনেকে হয়তো খুদের চাউলের বিষয়টা নাও বুঝতে পারেন। তাই আমি বিষয়টা পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছি। খুদের চাল বলতে মূলত ভেঙে যাওয়া চালকেই বোঝানো হয়। ধান থেকে চাল তৈরি করার সময় অপরিপক্ব বা অপুষ্ট চাল প্রক্রিয়াকরণের সময় ভেঙে যায়। এই ভাঙা চাল পরে আলাদা করা হয় এবং বাজারে খুদের চাল হিসেবে বিক্রি হয়। সাধারণত আমাদের দেশে এই ধরনের চালের ভালোই চাহিদা রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় এই খুদের ভাত গরুকেও খাওয়ানো হয়। গ্রামের মানুষ সাধানরত এই চাউল দিয়ে পিঠা অথবা ভাত রান্না করে খায়। খুদের ভাত আমি একবার খেয়েছিলাম। ভালোই লাগে।
তো আপা গত কাল দুই তলার দুই জন ভাবিকে নিয়ে উনার ঘরের সব গুলো খুদের চাউল দিয়ে ভাত রান্না করলেন। আর কয়েক জাতের ভর্তা করলেন। তারপর আমাদের বাসার প্রতি ফ্লাটে খুদের ভাতের সাথে ভর্তা দিয়ে পার্সেল করে পাঠিয়ে দেন। তো গতকাল সন্ধার পরে বাবু কান্না করার কারনে দুই তলার পরিচিত এক ভাবির বাসায় গিয়ে দেখি তারা এই গুলো আয়োজন করছেন। এখানে যদিও আমি কোন কাজ করি নাই। তবে তাদের বিষয়টা দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আমি কিছুক্ষন বসে আবার বাসায় চলে এসেছিলাম।
রাত নয়টার দিকে একটি স্টিলের গামলাতে বেশ কিছু খুদের ভাতের সাথে পাঁচ প্রকার ভর্তা দিয়ে আমাদের বাসায় নিয়ে আসেন। আমার হাসবেন্ড তখন বাসায় ছিল না। আমি এগুলো রেখে দিয়েছিলাম। আপা খুব শখ করে নিয়ে এসেছে। না রাখলে হয়তো রাগ করতে পারে। তো দশটার পরে আমার হাসবেন্ড বাসায় আসার পরে দুইজন মিলে ভর্তা দিয়ে খুদের ভাত খেলাম। ভালোই লাগলো। ভর্তার মধ্যে ছিল কালো জিরের ভর্তা, লইট্রা শুটকির ভর্তা, সিদল শুটকির ভর্তা, হেলেঞ্চা শাকের ভর্তা ও বিচি আলুর ভর্তা। অনেক বছর পরে খুদের ভাত খেলাম।
আসলে খাবার টা হয়তো নরমাল তবে সবাই খুবই আনন্দ করেই খেয়েছে। আর খাওয়া দাওয়া বড় বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো মিল মুহাব্বাত। পরে জানতে পারলাম সব ফ্লাটের ভাবিরাই খুদের ভাত খেয়ে আপার অনেক প্রশংসা করেছে।
বন্ধুরা কেমন হলো আমার আজকের ব্লগ। আশা করি কমেন্ট করে জানাবেন। আবার আপনাদের মাঝে নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | স্মৃতিময় একটি মূহর্ত।। |
স্থান | শিবুমার্কেট, নারায়নগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১৫-০৮-২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনার পরিবেশে দেখছি বেশ মজার খাবার পাঠিয়েছে আপু। এভাবে খুদের ভাত এবং বিভিন্ন ভর্তা তৈরি করে খেতে খুবই ভালো লাগে। আমার খুবই পছন্দের একটি খাবার। যাইহোক আপনার প্রতিবেশী বেশ লোভনীয় কয়েকটি ভর্তার সাথে খুদের ভাত দিয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু আপনারও খুদের ভাত আর ভর্তা খেতে ভালো লাগে যেনে অনেক ভালো লাগলোৃ আমিও এগুলি খেতে পছন্দ করি। তবে নিজে তৈরি করে খাওয়ার সময় নেই। তবে প্রতিবেশীর কাছ থেকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। আপনাকে ধন্যবাদ আপু।
বাহ! আপনাদের প্রতিবেশী দের মাঝে এমন মিল, ভালোবাসা দেখে বেশ ভালো লাগলো আপু। বর্তমান সময়ে তো এমন মিলেমিশে একসাথে থাকার বিষয় টি দেখাই যায় না! আর খুদের ভাত ভর্তা দিয়ে খেতে ভীষণ মজা ই লাগে। একসাথে এত মজার ভর্তা করা, একসাথে হাতে হাতে কাজ করে রান্না করে, বিল্ডিং এর সবাই একই খাবার খাওয়া, অসাধারণ ভালো লাগার অনুভূতি !
হ্যাঁ আপু,ফ্লাটের সবাই মিলেমিশেই থাকি। আমরা মনে হয় বোন বোনের মত। আর আমরা যে যা কিছু বানায় না কেন একজনকে একজন দিয়ে মহাব্বত বজায় রাখি। আমাদের ফ্ল্যাটে কারো সাথে কারো কোন ঝগড়া হয় না। আলহামদুলিল্লাহ সবাই মিলে অনেক ভালো আছি। আপনার কথাগুলো দারুন ছিল। ধন্যবাদ আপু।