ভাইয়াকে নতুন মোবাইল কিনে দেওয়ার অনুভূতি।
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। সব সময় ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন, সেই কামনাই করি। সবার সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে, নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। আজকে আমি একটি অনুভূতিমূলক পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি আপনাদের সবার সাপোর্ট পাবো।
আমাদের ফ্যামিলিতে আমরা আট বোন দুই ভাই। বাবা মাকে নিয়ে আমাদের ফ্যামিলিতে সর্বমোট বারো জন মেম্বার রয়েছে। আমাদের ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড় হল আমার আপু। তারপর দ্বিতীয় নাম্বার হলো আমার বড় ভাইয়া। আজকে আমার পোস্টের মূল বিষয় হলো ভাইয়াকে নিয়ে। আমার ভাইয়া আমাদের সবার শখ আহ্লাদ পূরণ করে থাকেন। এমন কোন জিনিস নেই যা আমরা ভাইয়ার কাছে চেয়ে পাইনি। আমাদের খুশির জন্য আমাদের ভাইয়া অনেক পরিশ্রম করেন। প্রত্যেক উৎসবে ঈদ অনুষ্ঠান সবকিছুতে আমাদেরকে পোষাক কিনার জন্য টাকা দেন। আমরা প্রত্যেক বোন কমপক্ষে তিনটি করে নতুন জামা কিনতাম। অথচ ঈদ এসে গেলেও বা কোন অনুষ্ঠান সামনে এসে গেলেও ভাইয়া নিজের জন্য কোন পোশাক কিনেন না। আমরা সবাই মিলে ভাইয়াকে সারপ্রাইজ হিসেবে ঈদের পোশাক উপহার দিতাম।
আমার বড় ভাইয়া একজন সাধারন সাদামাটা মানুষ। এ যুগে মানুষ কতই না ফ্যাশন করে। অথচ আমরা যদি ভাইয়াকে গুছিয়ে না দেই,তাহলে ভাইয়া নিজেকে গুছিয়ে রাখতে পারে না। আমাদেরকে ঠিকই ভাইয়া গুছিয়ে রেখেছেন। এই যুগে মানুষ এন্ড্রয়েড সেট এবং বিভিন্ন জায়গায় কত কিছুই না করে।ঘুরাঘুরি করে,ফ্যাশন করে। অথচ আমার ভাইয়া ছোট একটি বাটন সেট মোবাইল চালাই। ভাইয়ার এন্ড্রয়েড সেট আছে, তিনি শুধু বাড়িতে এই এন্ড্রয়েড সেট দিয়ে ওয়াজ শুনে কিন্তু বাহিরে নিয়ে যায় না। তারপর আমাদের বাড়ি থেকে ভাইয়ার এন্ড্রয়েড সেটটি চুরি হয়ে যায়। ভাইয়া আরেকটি এন্ড্রয়েড সেট কিনেন, এটিও আমার ছোট ভাগ্নি চার্জ থেকে খুলে গেটের সামনে নিয়ে যাই। তার দুই বছর বয়স কথা বলতে পারেনা। রাস্তা দিয়ে পথচারী হেঁটে যাওয়ার সময় একটি ছেলে ওর হাত থেকে সেটটি নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাই। আমরা বের হতে হতে ছেলেটিকে আর খুঁজে পাইনি। এভাবে ভাইয়ার দুইটি মোবাইল চুরি হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে ভাইয়ার একটি বাটন সেট ও কিছু টাকা চুরি হয়ে গেছে।
বর্তমানে ভাইয়ার কাছে বাটন অ্যান্ড্রয়েড কোন ফোন ছিলনা। আর বাড়িতে এসেও ভাইয়া ওয়াজ শুনতে পারেনা। যার ফলে আমরা বোনরা সবাই মিলে ভাইয়াকে একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনে দেওয়ার চিন্তা করলাম। বড় আপুর কাছে আমি সর্বপ্রথম এ প্রস্তাবটি স্থাপন করি। বড় আপু আমাদের সব বোনের সাথে আমার প্রস্তাবটি শেয়ার করে। তখন সবাই এক কথায় কি হয়ে যায়। আমরা পাঁচ বোন যাদের বিয়ে হয়ে গেছে তারা তিন হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সর্বমোট আমরা ১৫০০০ টাকা ভাইয়ার হাতে খুলে দেয়। তারপর ভাইয়াকে বলি মার্কেট থেকে যেন একটি নতুন অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনে নিয়ে আসে।
কিছুদিন আগে হঠাৎ করে আমার মোবাইলে নতুন মোবাইলের কয়েকটি ফটোগ্রাফি আসে। তখন আমার ছোট বোন আমাকে জানায় যে ভাইয়া সবার টাকা দিয়ে এই নতুন ফোনটি কিনেছে। ভাইয়ার ফোনটি আমাদের সবার অনেক পছন্দ হয়েছে। এখন প্রতিদিন ভাইয়া এই মোবাইল দিয়ে ওয়াজ শুনে। ভাইয়া আমাদের জন্য কত কিছুই না করেছে। আমরা সবাই ভাইয়ার জন্য এই কাজটি করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।
বন্ধুরা এ হল আমার আজকের ব্লক। আশা করি আমার ব্লক টি আপনাদের সবার কাছে পছন্দ হয়েছে। আজ আর বাড়াবো না এখান থেকেই আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিব। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
কয়েকবার মোবাইল চুরি হয়ে গেছে যাই হোক এবার ভাইকে নতুন একটা মোবাইল কিনে দিলেন, ভাই আপনাকে কতই না উপহার দেয় ভাইকে যখন এটা দিয়েছেন সে নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছেন।
জি ভাইয়া আমার ভাইয়া আমাদের অনেক উপহার দেয়। আমাদের এই উপহারটা পেয়ে ভাইয়া অনেক খুশি হয়েছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার ভাইয়ের ফোন কেনার অনুভূতির গল্পটি পড়ছিলাম সত্যিই অবাক হচ্ছিলাম ।আপনাদের অনেক বড় একটি পরিবার ভাই বোন মিলে অনেক সদস্য বড় ভাই হিসেবে যে দায়িত্ব থাকা উচিত তার সম্পূর্ণটা পালন করার চেষ্টা করে। যেটা আপনাদের অনেক বড় একটি পাওয়া। দুইটা মোবাইল ফোন হারিয়ে গিয়েছে তার জন্য সবাই যে প্ল্যানটি করে মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছেন ভালো লাগল। যেটা তাকে অনেকটা তৃপ্তি দেবে এবং আপনাদের ভালোবাসার বন্ধন অটুট থাকুক সেটাই প্রত্যাশা করি।
ভাইয়ার মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার পরে আমরা এই সিদ্ধান্তটা নিলাম। জি ভাইয়া অবশ্যই দোয়া করবেন, আমাদের ভাই বোনদের ভালোবাসার এই বন্ধন সব সময় যেন অটুট থাকে। সুন্দর একটি কমেন্টস করেছেন ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য ও দোয়া রইল।