আপনজনদের ছেড়ে ঢাকায় ফেরা।।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি।
হ্যালো, আমার বাংলা ব্লগবাসি প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনজনদের ছেড়ে ঢাকায় ফিরে আসার অনুভূতি শেয়ার করবো।
আপনার হয়তো অনেকে জানেন যে আমি ১২ই সেপ্টেম্বর আমার অনার্সের ইনকোর্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া গিয়েছিলাম। অবশেষে দিন সপ্তাহ অতিক্রম হয়ে প্রায় ২০ দিনের মত অতিক্রম হয়ে গেল। এই ২০ দিনে আমাদের বাড়ির সহ আমি আমার শ্বশুর বাড়িতেও থেকেছি। দুই জায়গায় মিলে বিশদিন অতিক্রম করেছি। এবার পরীক্ষার জন্য গ্রামে গিয়ে তেমন ভালো অনুভূতি নেই। কারণ এক দিক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাস্তা খুবই খারাপ, প্রচন্ড গরম, লোডশেডিং সব মিলিয়ে একটু খারাপ অবস্থা গেছে। তারপরও১ সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করি তিনি আমাকে সুস্থ রেখেছেন। তবে আমার মেয়েটা কিছুটা অসুস্থ। জ্বর এবং ঠান্ডা লেগেছে। ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়েছে। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমার মেয়েটা সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
গত শুক্রবারে আমার হাজব্যান্ড তার অফিস থেকে দুই দিন ছুটি নিয়ে আমাদেরকে আনতে গিয়েছিল। আমার হাজবেন্ড যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে গিয়েছিল, তখন আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। তিনি সোজা সেখানে চলে যায়। আমরা শুক্রবার সন্ধ্যার পরে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে গেলাম। সেখানে একদিন থেকেই রবিবারে আসার চিন্তাভাবনা করেছিলাম। কিন্তু ঘটনা ক্রমে রবিবার থাকতে হয়েছে। কিসের জন্য থেকেছি সেটা আমি আগের পোস্টের মধ্যে আপনাদের সাথে বলে দিয়েছি।
আজকের সকাল বেলা সাড়ে পাঁচটার সময় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কারণ সকাল সকাল না আসতে পারলে আমার হাজব্যান্ড অফিস ধরতে পারবে না। সেজন্যই এত সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা। আমরা ছয়টার মধ্যে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে গেলাম। সকাল রাস্তার মধ্যে তেমন কোন মানুষ ছিল না, তারপরও আমার হাজব্যান্ড একটি অটো রিক্সার ব্যবস্থা করলেন। সকালবেলা অবশ্য খালি কিছু অটোরিকশা পাওয়া যায়। আমরা ছয়টার সময় ব্যাগ গুছিয়ে অটোতে বসে গেলাম। পাঁচ থেকে ছয় মিনিটের মধ্যে আমাদেরকে ভাদুঘর বাসস্ট্যান্ডের সামনে নামিয়ে দিল। আমার হাজবেন্ডের ইচ্ছা ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস এসি গাড়ি দিয়ে আসবে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস একটু দেরি করে ঢাকায় পৌঁছে। কারন ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস এর যাত্রী তুলনামূলকভাবে কম। সেজন্য তারা একটু অপেক্ষা করে সম্পূর্ণ বাস ভর্তি ছাত্রী নিয়ে আসে। আর সোহাগের যাত্রী তুলনামূলক একটু বেশি। তার কারণ হলো সোহাগ খুব তাড়াতাড়ি ঢাকায় আসে। তাছাড়া রাস্তার মধ্যে যেখান সেখান থেকে যাত্রী ওঠায় না। আসলে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চললে সবারই লাভ।
আমি আর আমার হাজব্যান্ড সোহাগ বাসের দুইটি টিকেট কেটে গাড়িতে বসলাম। আমরা গাড়িতে বসার পাঁচ মিনিটের মধ্যে গাড়ি ছেড়ে দিলো। কিন্তু বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাস্তার তিন অবস্থা। রাস্তার কাজ চলমান থাকার কারণে বৃষ্টি বাদলের কারণে রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। তারপরও ধীরে ধীরে বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর অতিক্রম করল। বিশ্বরোডের একটু আগে এসে বাস কঠিন জ্যামের মধ্যে পতিত হলো। অবশেষে ধীরে ধীরে জ্যাম অতিক্রম করে আমরা সরাইল বিশ্বরোডে এসে পৌঁছালাম। এখানে আবার প্রত্যেক বাস যাত্রী কম হলে সাত থেকে দশ মিনিট দেরি করে। আমাদের গাড়ি প্রায় সম্পূর্ণ ভরা ছিল। অবশেষ সাতটার দিকে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড ছেড়ে চলে আসলাম।
দুঃখের বিষয় হলো এক দিক দিয়ে যেমন রাস্তা খারাপ অন্য দিক দিয়ে রাস্তার মধ্যে প্রচুর গাড়ি। ঢাকা টু ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেই গাড়িগুলো চলে সেগুলো কিছুতেই টানতে পারছিল না। কারণ সামনে পিছনে ডানে বামে শুধু গাড়ি আর গাড়ি। অটো রিক্সা সিএনজি এগুলোর মেইন রোডের মধ্যে চলে আসে। এগুলো আমাদের অনেক সময় নষ্ট করেছে, ভৈরব,সাহেব প্রতাপ, নরসিংদী, পাাঁচদোনা, গাউছিয়া পার হয়ে ডেমরা বিশ্বরোড এসে পৌছালাম। রাস্তার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো জ্যাম ছিল। কিন্তু ডেমরা বিশ্বরোড এমন জাম ছিল যে আমাদের ১ থেকে দেড় ঘন্টা সময় নষ্ট করে দিলো। তারপর অবশেষে অনেক কষ্ট করে আমরা কাঁচপুর পার হয়ে চিটাং রোড আসলাম। এখানে এসে আমরা সবকিছু গুছিয়ে নিলাম, আমরা যখন সাইনবোর্ড বাস থেকে নামলাম তখন প্রায় এগারোটা বেজে গেছে। চিন্তা করেন প্রায় 5 ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।
অটো নিয়ে বাসার সামনে এসে ১০-১৫ মিনিট জিমের মধ্যে আটকে ছিলাম। অবশেষে সাড়ে এগারোটার সময় আমরা বাসার মধ্যে প্রবেশ করলাম। আজকের জ্যামের কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে বাবু ও বাসের মধ্যে কিছুটা জ্বালাতন করেছে। যাইহোক সব মিলিয়ে সুস্থ ও সুন্দরভাবে ঢাকায় আসতে পেরেছি, এজন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করি। যদিও আমাদের বাড়ির এবং শ্বশুরবাড়ি আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কিছুটা মায়া লেগেছে। কিন্তু বাস্তবতার স্বীকার করে সবাইকে ছেড়ে আসতে হলো।
বন্ধুরা এ হলো আমার আজকের ব্লগ। কেমন হলো আমার আজকের ব্লগটি। অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আবার আগামীকাল আপনাদের জন্য নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | আপনজনদের ছেড়ে ঢাকায় ফেরা।। । |
স্থান | ব্রাহ্মণবাড়য়া,বাংলাদেশ। |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
সর্বপ্রথম আপনার মেয়ের সুস্থতা কামনা করছি যেন মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার মেয়েকে অতি দ্রুত সুস্থ করে তোলেন। তবে আপনজনদের ছেড়ে ঢাকায় ফেরা আসলে খুবই কষ্টকর। তারপরেও জীবনের তাগিদে আপনজনদের ছেড়ে চলে আসতে হয়। আর এটাই প্রকৃতির নিয়ম। যাইহোক আপু আপনার পরীক্ষা শেষে সুন্দরভাবে আবার ঢাকায় ফিরে চলে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। এবং আপনদের ছেড়ে আসার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।