আমাদের ঘর আলোকিত করে নতুন অতিথির আগমন ঘটেছে।।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন,
আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি ও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। বেশ কিছুদিন যাবত আপনাদের মাঝে আমি পোস্ট করতে পারিনি। শারীরিক অসুস্থতা ও পরীক্ষার কারণে। আমি একজন শিক্ষার্থী প্লাস গৃহিণী। আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করেছি গত জানুয়ারী মাসের একুশ তারিখে। আর পরীক্ষা শেষ হওয়ার চারদিন পর হঠাৎ পঁচিশ শে জানুয়ারিতে খুশির সংবাদ নিয়ে এসেছে আমার মেয়ে। আমি এই প্রথমবারের মতো মা হলাম। আমাদের ঘরকে আলোকিত করে ফুটফুটে একটি সুন্দর মেয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। মেয়ের নাম রাখা হয়েছে নিসা। নিসা নামটি অবশ্য ওর বাবা রেখেছে। আমার নাম নীলা। তাই আমার নামের সাথে মিল রেখে এই নামটি রাখা হয়েছে। আর আমার মেয়ের নাম আমি রেখেছি রামিসা জাহান নুসাইবা। নুসাইবার বাবার নাম হচ্ছে রামিম তাই রামিসা নামটি পছন্দ করে রেখেছি।

সময় যে কখন চলে যাই কেউ বলতে পারে না। দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ের প্রায় দুই বছর অতিক্রম হয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালের ৬ মে আমার বিয়ে হয়েছিল। আর ২০২৪ সালে আমি একজন মা হলাম। সন্তান যে আল্লাহতালার কত বড় একটি নিয়ামত যদি মা না হতাম তাহলে বুঝতাম না। মেয়ের মুখের দিকে তাকালে যেন কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়। দশ মাস পেটে ধারণ করার যে যন্ত্রণা এবং বাচ্চার জন্ম হওয়ার যে যন্ত্রনা তা যেন কোন কিছুই না। সারারাত নিজের সন্তানের জন্য সজাগ থাকলেও বিরক্ত বোধ হয় না। আগে এক ঘন্টা কম ঘুমালে দিনে এক ঘন্টা বেশি ঘুমাতে হতো আমার। এখন প্রায় দশ রাত ধরে আমার কোন ঘুম নেই। কিন্তু আগে যে প্রচুর ঘুমাতাম তা এখন ভুলে গিয়েছি। এমনকি দিনের বেলায় না ঘুমালেও আমার তেমন খারাপ লাগে না। এত বড় একটি পরিবর্তন এসেছে আমার নিসা সোনামনির জন্য।

নুসাইবা পৃথিবীতে আসার পর সবাই অনেক আনন্দ উল্লাসের সাথে আমার মেয়েকে গ্রহণ করেছে। আমরা আগে জানতাম না আমার মেয়ে হবে কিনা ছেলে হবে। নুসাইবা একটি সারপ্রাইজ হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে। ইসলামিক বিভিন্ন রীতি অনুসারে আমার মেয়েকে প্রথম থেকেই তৈরি করার চেষ্টা করছি। বাচ্চা জন্ম হওয়ার পর তাকে ইসলামিক রীতি অনুসারে লবণ পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়। নুসাইবা কে প্রথমে গোসল করানোর পরে মসজিদের ইমাম সাহেবের মাধ্যমে আযান দেওয়া হয়েছে। এবং তার পাশাপাশি আমার মেয়ের কানে একামত দেওয়া হয়েছে। তারপর আমাদের এখানে বড় মাদ্রাসার বড় মুহতামিমের মুখের লালা খাওয়ানো হয়েছে। যাতে করে আমার মেয়ের জবানের জড়তা না থাকে। ইসলামিক বিভিন্ন নিয়ম কানুন পালন করার পরে, আমি আমার মেয়েকে দেখতে পাই। আমি আমার মেয়েকে সাথে সাথেই দেখতে পারেনি। যখন আমার কাছে আমার মেয়েকে দেয়া হয় তখন মনে হয়েছে আমি একেবারেই সুস্থ হয়ে গেছি। আমি এত শান্তি , প্রশান্তি পেয়েছি তা অন্য কোথাও পায়নি। আমার মেয়েকে দেখে মনে হয়েছে পৃথিবীর সকল সুখই যেন আমি একসাথে পেয়ে গেছি।

আমাদের ঘর আলোকিত করে যে অতিথি এসেছে তার নাম তো আপনারা ইতিমধ্যে জেনেই গিয়েছেন। তারপরেও আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা অনেক নাম দিয়েছে। যেমন, মুত্তাকিয়া, তাসফিয়া, নাফিজা,তামিমা, তাজিমা, রাওনাফ, রোশনি, সুহাইরা, রাবেয়া, ইত্যাদি আরও অনেক নাম। তবে আমরা রামিসা জাহান নুসাইবা ( নিসা) এই নামটি রেখেছি । যাই হোক মা হওয়ার সম্পূর্ণ অনুভূতিটা আমি আপনাদের মাঝে প্রকাশ করতে পারিনি। তাছাড়া এটা প্রকাশ করার মতো না। আমি যে কতটা খুশি হয়েছি এবং কতটা আনন্দিত তা আমার আল্লাহ একমাত্র জানেন। আমি সৃষ্টিকর্তার লক্ষ কোটি গুন শুকরিয়া আদায় করি।

বন্ধুরা আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এ কামনা করছি। আর আমার মেয়ে নিসার জন্য আপনাদের কাছে দোয়া চাই,, যেনো নিসা সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। আর বিভিন্ন বিপদ আপদ রোগ থেকে আল্লাহ যাতে ওকে হেফাজত করে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।