পাশের বাড়ির এক ভাতিজির হাতে মেহেদী পড়ানোর অনুভূতি।।

in আমার বাংলা ব্লগ9 hours ago

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের ব্লগটি হচ্ছে পাশের বাড়ির এক ভাতিজির হাতে মেহেদী পড়ানোর অনুভূতি। আমরা মেয়েরা সব সময় মেহেদি পড়তে পছন্দ করি। তাছাড়া সবাইকে মেহেদি পড়িয়ে দিতেও ভালো লাগে। মেহেদি পড়িয়ে দেওয়া টা আমাদের একটা শখ। বেশি অংশ মেয়েই হাতে মেহেদি পড়তে ও পড়াতে পারে। খুব কম সংখ্যক মেয়েরাই মেহেদি পড়াতে জানে না। আমার শখের একটি কাজের মধ্যে মেহেদী পড়ানোটা ও রয়েছে। আমি কিভাবে মেহেদী দেওয়া শিখেছি সেই কিছু কথাও আজকে ব্লগে লিখবো। চলুন মেহেদি ডিজাইন এর সাথে আমার মেহেদী দেওয়া শিখার গল্পটা ও শেয়ার করি।

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন হাতে মেহেদি পড়ার জন্য অন্যের বাড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতাম। একদিন মেহেদি পড়ার জন্য আমার এক ফুফির কাছে গিয়েছিলাম। তিনি মেহেদি পড়িয়ে দেওয়ার বদলে সবার কাছ থেকে একটি কোমল পানীর বোতল নিতে লাগলো। আর নয়তো তার সমপরিমাণ টাকা নিতো। নয়তো দুই হাতে মেহেদি পড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি করে মেহেদি উনাকে দিতে হতো। যাই হোক আমিও দুইটা মেহেদি নিয়ে গিয়েছিলাম একটি ফুপিকে দিবো বলে, আরেকটি আমার হাতে দেওয়ার জন্য। উনার বাসায় আমি প্রায় দুই ঘন্টা বসে ছিলাম। তিনি অনেক ছেলে মেয়েদেরকে মেহেদী পড়িয়ে দিতে ছিল। একটা সময় আমার পালা এলো।

আমাকে যখন তিনি মেহেদি পড়িয়ে দিতে যাবেন তখন তিনি কেমন জানি আনমনা হয়েগেছিলেন। তার ভাবসাব দেখে আমার খুবই বিরক্ত লাগছিল। কেন না এমনিতে দুই ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপর তিনি আমার হাতে মেহেদীর যে ডিজাইন দিয়ে দিচ্ছিল। সেই ডিজাইনটা আমার পছন্দ হয়নি। আমার ছোটবেলায় প্রচুর রাগ ছিল। আমার হাতে যখন তিনি আঁকাবাঁকা একটি ডিজাইন শুরু করেছিল। তখন তো আমার মেজাজ গরম হয়ে গিয়েছিল। আমি কোন কাজ সুন্দর না হলে সেটা গ্রহণ করতে পারি না। যেমন ধরেন টেইলার্স এর কাছে কোন কাপড় দিলাম। সেই কাপড় সুন্দর করে বানানো হয়নি। সে কাপড় আর কখনো পড়ি না। তেমনি ঐদিনও তিনি আমাকে আঁকাবাঁকা ডিজাইন দিয়ে মেহেদি পড়িয়ে দিয়েছিল। আমি তখন মেহেদী পড়া শেষ না করে তিনিকে একটি মেহেদী দিয়ে আমার মেহেদী নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছিলাম। এসেই শরীর মাজার জালি দিয়ে ও সাবান দিয়ে ভালোভাবে ঘষে সেই মেহেদী উঠিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর অনেক সময় লাগিয়ে নিজেেই নিজের হাতে মেহেদি পড়িছিলাম। আমার আপুরা সেদিন আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছিল। আমার হাতের মেহেদী দেখে তারা সবাই পছন্দ করেছিল।

তারপর থেকে আমি সকালে বিকালে সব সময় হাতে পায়ে নিজে নিজে মেহেদী দিতাম। একটি মেহেদি শেষ হওয়ার সাথে সাথে আরেকটি মেহেদী কিনে আনতাম। আমার এই অভ্যাসটি এখনো যায়নি। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মেহেদি পড়ার শখ বেশি ছিল। এমন কি এখনো মেহেদি পড়ার শখ যায়নি। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও। সন্তান হয়েছে এখন সময় পাইনা হাতে মেহেদি পড়তে। তবে সময় পেলে আর হাতের কাছে মেহেদী পেলে মেহেদি পড়া শুরু করি। এমন কি কেউ মেহেদি পড়তে চাইলে পড়িয়ে দেয়।

কিছুূদিন আগে শশুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তখন পাশের বাড়ির এক ঝার এক মেয়ে এসে বলে, চাচী আম্মু আমাকে মেহেদি পড়িয়ে দেন। আমিও না করি নাই। মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে তাকে মেহেদি পড়িয়ে দিলাম। চলুন সেই ডিজাইনটি দেখাযাক।

প্রথমে হাতের কব্জির নিচে একটি চতুর্ভুজ এঁকে নিলাম। সেই চতুর্ভুজের চারপাশে চিকন চিকন পাঁপড়ি স্টাইল করে নিলাম। তারপর একসাইডে কুকিজ ও অন্যদিকে একটি পাতা দিয়ে দিলাম। তারপর কুকিজ ও পাতার সাইডে একটি করে ফুল দিয়ে দিলাম।

তারপর ছোট কুকিজের নিচের দিকে একটি ফুল ও একটি ছোট পাতা দিয়ে দিলাম। তারপর পাতার উপরে ময়ূরের পাখাঁর মত একটি পাতা দিয়ে দিলাম। তারপর সেটির উপরে আবারো একটি ফুল দিয়ে দিলাম। হাতের কব্জার নিচের অংশটা সেরে নিলাম।

এখন হাতের কব্জার ওপরের দিকে বড় একটি কুকিজ দিয়ে দিলাম। আর কুকিজের নিচের দিকে একটি ছোট ফুল দিয়ে দিলাম।

ছোট ফুল ও কুকিজের অপরের অংশে বড় একটি ফুল দিয়ে দিলাম। তারপরে মেহেদির নকশাটি সম্পূর্ণ করার জন্য নিজের মন মত একটি ফুলের নকশা দিয়ে দিলাম।

এইবার হাতের আঙ্গুল গুলির মধ্যে বিভিন্ন রকমের ছোট ছোট নকশা দিয়ে সম্পূর্ণ হাতে মেহেদি ‍পড়িয়ে দিলাম।

বন্ধুরা এই হল ফাইনাল আউটপুট। মেহেদিটা কেমন হয়েছে আপনারা কিন্তু অবশ্যই কমেন্টস এর মাধ্যমে জানাবেন। এবং সব সময় আমাদের পাশে থাকবেন। আমাদের সাপোর্ট করবেন।সবার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল ধন্যবাদ সবাইকে। আজ এখান থেকে বিদায় নিচ্ছি, আল্লাহ হাফেজ।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
শিরোনামপাশের বাড়ির এক ভাতিজির হাতে মেহেদী পড়ানোর অনুভূতি ।।
স্থাননিজবাসা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া,ঢাকা,বাংলাদেশ।
তারিখ১৮-০৬-২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 8 hours ago 

আপু আপনার দক্ষতা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে হাতে মেহেদী পরিয়ে দিয়েছেন। এত সুন্দর ভাবে ডিজাইন করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। দেখতে অনেক সুন্দর হয়েছে আপু। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.033
BTC 64136.37
ETH 2755.37
USDT 1.00
SBD 2.68