দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরার ঘটনা।

হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।আমার আজকের পোস্টের বিষয় হল দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরার ঘটনা।

গত শনিবারে আমি ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার সময় পথে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। আমার আপু এবং আমি দুজনেই ঢাকায় থাকি। আমার আপু অনেক অসুস্থ তাই উনাকে দেখতে আমার আম্মু ঢাকায় যায়। এই দিকে আমার অনার্স সেকেন্ড ইয়ারের পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। তাই আমি ভাবলাম আম্মুর সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসি।

আমরা অবশ্য ট্রেনের টিকেট কেটে রেখেছিলাম। কিন্তু আমার হাজবেন্ডের অফিসের অনেক চাপ পড়ে যায়। তাই তিনি বলেছেন তুমি আম্মুর সাথে বাড়িতে চলে যাও আমি পরিক্ষা শেষ হলে তোমাকে নিয়ে আসবো। আমাদের ট্রেনের টিকেটের সময় ছিল সোমবার রাত সাড়ে নয়টায় । আমি দুদিন আগেই তথা শনিবারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসার জন্য রওয়ানা দেই।

আমি এমনিতে বাস জার্নি করতে পারিনা। তাই আমার হাজব্যান্ড তুবা বালাইন এসি বাসে আমাদেরকে উঠিয়ে দেন। আমার সাথে আমার আম্মু আমার আপু এবং আমার একজন ভাগিনা আর ভাগ্নি ছিল। বাসে ওঠার পর আমার অনেক আরামবোধ হচ্ছিল। তবে এত ভিআইপি বাস কিন্তু আস্তে আস্তে চলছে। এতে অনেক যাত্রীরা বলছে ভ্যান গাড়ি অনেক ভালো। এসি বাস এত ঠান্ডা লাগছিল আমার। আমার সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।

বাস চলতে চলতে নরসিংদী মাধবদী এসে হঠাৎ ব্রেক ফেল করে। সোহাগ বাসের সাথে ধাক্কা খায়। এতে পিছনের যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুকে পড়ে। গাড়ির সামনের গ্লাস ভেঙ্গে যায়। আমার ভাগিনার সামনের দুইটা দাঁত ভেঙ্গে যায়। আমি অবশ্য ব্যথা পায়নি। আমার আম্মুর পায়ে এবং হাতে হালকা ব্যথা লাগে। আমার ভাগ্নির ও পায়ে একটু ব্যাথা লাগে। অনেকে এরকম কপালে বাড়ি খেয়ে কপাল ফুলে মাথা ফুলে গিয়েছে। তবে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেনি। কেউ মারাত্মকভাবে আহত হয়নি। হ্যাঁ পেয়েছে একজন লোক এবং আমার ভাগিনাই। বাস জুড়ে ঝাকুনিতে আমার মাথা ঘুরিয়ে যাই এবং আমি প্রচুর বমি করি। শরীর একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

তারপরও বাস আবারো আস্তে আস্তে চলতে থাকে। বারবার ব্রেকফিল করা শুরু করে। সব যাত্রীদের একটা ভয় লেগে যাই। বাস ছাড়ার সময় গাড়ির চেক না করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এমন একটি অবস্থা আমরা সবাই যার যার মত আল্লাহকে ডাকতে শুরু করে দিয়েছিলাম। তারপর একটি স্থানে বাসটি থামানো হয়।সম্ভবত জায়গাটি নরসিংদীর শেখেরচর নামানো হয় । এসি বাস থেকে সব যাত্রীরা নেমে যায়। আমাদেরকে নন এসি তিতাস বাসে উঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর আমরা বাড়িতে চলে আসি।

আল্লাহর অশেষ রহমতে ঐদিন আমরা সবাই ভালো ভাবেই বাড়িতে আসতে পেরেছি। ওই দিন প্রতিজ্ঞা করেছি হাজবেন্ডকে ছাড়া কোথাও বের হবো না। আমার খুব ভয় লেগে গিয়েছিল। আর বাসেও চড়বো না ট্রেনে হলে আসবো নয়তো না। বাস মালিক এবং চালকরা যদি একটু কেয়ার ফুল হয়ে তাহলে রাস্তা ঘাটে অনেক এক্সিডেন্ট থেকে যাত্রীরা রক্ষা পাবে।

আমার মত আপনাদেরও যদি এরকম কোন অবস্থা হয়ে থাকে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আজ এই পর্যন্তই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা করছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হফেজ।