অন্যের পর্দা দেখে যখন নিজের পছন্দ হয়ে যায়।। 10% beneficary for @shyfox & 5% abb-school ❤️

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে দরজা জানালার নতুন পর্দা কেনার অনুভূতি শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি এই ব্লগ থেকে আপনারা নতুন কিছু অভিজ্ঞতা জানতে পারবেন।

বর্তমানে আমি ঢাকা থাকলেও গত সপ্তাহে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আমাদের গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। আমার আম্মু গত রমজানে ওমরা পালন করে এসেছে। তিনি সৌদিআরবে প্রায় তিন মাস ছিলেন। ঐ তিন মাসে আম্মু তিনবার ওমরা হজ্ব পালন করেছেন। আম্মু সেখানে থাকা অবস্থায় আমাদের অনেক আত্বীয়স্বজন তথা মামা, চাচা,কাজিনরা আম্মুর সাথে দেখা করতে আসে। আম্মুুর সাথে দেখা করে অনেক ফল ফ্রুট দেওয়ার সাথে সাথে যাওয়ার সময় ঐ দেশের কিছু কিছু মূদ্রা তথা রিয়াল দিয়ে যেত। আম্মু সে গুলো খরচ করার প্রয়োজন হতো না। কারন আম্মু গিয়েছিলো বড় আপুর ফেমিলির সাথে। ঐখানে বড় দুলাভাইয়ের নিজের ফ্লাট আছে আবার গাড়িও আছে। যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন হতো দুলাভাই সবাইকে নিজের গাড়ি দিয়েই নিয়ে যেত। এমন কি যাবতীয় সব খরচ দুলাভাই বহন করেছে।

যার ফলে আম্মুকে যারা যত রিয়াল গিফট দিয়েছে আম্মু সব গুলো জমিয়ে রেখেছিল। গত কোরবানির ঈদের সময় আম্মু সালামি হিসাবে সেই রিয়াল গুলো আমাদের সবার মাঝে বন্টন করে দিয়েছে। আমার ছোট বোন আবার ভাগে কিছু বেশি পেয়েছিল। সে রিয়াল গুলো ব্যাংক থেকে বাংলাদেশি টাকায় কনবার্ট করে নিয়েছে। কিছুদিন আগে মার্কেটে গিয়ে তার নিজের যাবতীয় কিছু কেনা কাটা করেছে। আর আসার সময় আমাদের গ্রামের বাড়ির জন্য অনেক গুলো পর্দা কিনে এনেছে। সেই পর্দা গুলো দেখে আবার আমার পছন্দ হয়ে যায়। যার ফলে আমি আমার হাসবেন্ডের নিকট পছন্দের কথাটা শেয়ার করি। তিনি বলে তোমার পর্দা পছন্দ হলে ঢাকা থেকে কিনবা। আমি বললাম না এই পর্দা ঢাকাতে যদি খুজে না পায়, তাই ব্রাহ্মনবাড়িয়া থেকে কিনে ঢাকা নিয়ে যাবো। তিনি ক্যারি করার বিষয়টা আমাকে বুঝিয়ে বললেও আমার অবুঝ মন সেটা বুঝে নাই। তাই হাসবেন্ড আমাদের বাড়িতে যাওয়ার পরে তাকে নিয়ে পর্দা কিনতে গেলাম।

আমার হাসবেন্ড বৃহস্পতিবারে রাতে আমাদের বাড়িতে যায়। আমরা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ১০ টার দিকে বের হয়ে যায়। আমাদের সাথে আমার ছোট বোন ও গিয়েছিলো। কারন সে যেহেতো আাগে পর্দা গুলো কিনেছে সেই দোকানটা চিনবে। তাই তাকে সাথে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা বাসার সামনে থেকেই রিকশা নিয়ে সোজা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মসজিদ রোডে চলে যায়।

মসজিদ রোড নেমে একটি গলি দিয়ে দুই মিনিট উত্তর দিকে হেটে গেলাম। তারপর আমাদের কাংখিত পর্দার শোরুমটা পেলাম। আমার ছোট বোন যদি আমাদের সাথে না যেত তাহলে হয়তো আমরা সেই দোকান খুজেই পেতাম না। যায়হোক শোরুমটি নতুন দিয়েছে। অনেক দামি দামি ও সুন্দর সুন্দর পর্দা রয়েছে দোকানে। আমরা আমাদের কাংখিত পর্দাটা খুজে পাচ্ছিলাম না।

তারপর দোকানদার মামার কাছে জিঙ্গেস করলাম তাদের আর কোন শোরুম আছে কি না। তারা বললো দুই তলায় তাদের আরেকটি শোরুম রয়েছে। আমরা গেলাম দুই তলায়। সেখানে গিয়ে আমরা আমাদের কাংখিত পর্দা খুজে পেলাম। তারপর দামদর জিঙ্গেস করলাম। তারা প্রতি পর্দায় ৮০ টাকা করে বেশি চাচ্ছিলো। পরে আমার বোন বলে যে আমি কয়েকদিন আগে আপনাদের কাছ থেকে এই পর্দাটা আরো অনেক কমে নিয়েছি। তখন তারা বললো ঠিক আছে আগের দামই রাখবো। কয়টা নিবেন....। আমরা বললাম ১৪ পিচ লাগবে। তারপর তাদের কর্মচারিকে ১৪ পিচ পর্দা দিতে বললো। কর্মচারি অনেক খুজে ৮ পিচ পর্দা পেলেন। বাকি গুলো সব বিক্রয় হয়ে গেছে। এই কথা শুনে আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেল।

তারপর আমরা সেইম পর্দাটা আরো কয়েকটা দোকানে খুজেছি। কোথাও খুজে পাচ্ছিলাম না। আবার অন্য দিকে জুম্মার নামাজের সময়ও হয়ে যাচ্ছে। আমার হাজবেন্ড আমার মন খারাপ দেখে অন্য কালারের যে কোন দামের পর্দা চয়েজ করতে বলে। তারপর আমি হালকা পিংক কালারের পর্দা চয়েজ করলাম। চয়েজ বলতে শত ভাগ না। তারপরও খালি ফিরে আসলে কেমন লাগে তাই নিয়ে আসলাম। আগের পর্দা গুলো অনেক ভাল মানের ছিল। দামটা একটু বেশি হলেও পর্দা গুলো মার্কেটে নতুন এসেছে। পরের গুলো আবার বেশি নরমাল না। মোটামুটি ভালো।

যায়হোক আমাদের কেনাকাটা শেষ করতে করতে প্রায় একটা বেজে গিয়েছিলো। তাই আর কোন কিছু খাওয়ার সুযোগ পেলাম না। কারন খেতে গেলে নামাজ পাওয়া যাবে না। তাই আমরা রিকশা নিয়ে সোজা বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসতে আসতে ১টা ২০ মিনিট বেজে গিয়েছিলো। আমার হাজবেন্ড রিকশা থেকে নেমে দৌড়ে মসজিদে চলে যায়। আর আমরা পর্দা নিয়ে বাসার ভিতরে চলে গেলাম। বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের পর্দা কেনার কাহিনী।

আজকে এখানেই সমাপ্ত ঘোষনা করলাম। আবার আগামীকাল দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থা থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।