ইদুর যখন বিড়ালের বন্ধু || রক্ষক যখন ভক্ষক || পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগ25 days ago (edited)

হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটা বাস্তবিক পোস্ট শেয়ার করবো। আমি নিয়মিত লেখালেখি করতে চেষ্টা করি। যখনই সময় সুযোগ হয়ে ওঠে ঠিক তখনই বই পড়া কিংবা লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমি বাস্তবসম্মত লেখা লিখতে চেষ্টা করি । তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে তেমনি বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।

Photo_1717847776380.png

এডিট snapseed
টাইটেলটি দেখেই আপনারা বুঝেছেন আজকের লেখাটি কি নিয়ে লিখতে চাচ্ছি। আমাদের চারপাশের রয়েছে অসংখ্য রক্ষক বেশে ভক্ষক। তাদের চলাফেরা, কলা-কৌশল যে কাউকেই প্রতারিত করতে পারে। কিন্তু আপনি তাদের চেহারাটা দেখলে কখনোই বুঝতে পারবেন না তাদের মুখোশের আড়ালে কি লুকিয়ে আছে। মুখোশটি যখন উন্মোচিত হয় তখনই বোঝা যায় তার মধ্যে একটা হিংস্র জানোয়ার বসবাস করেছিল। আর যখন বুঝেন তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।

প্রথম পর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে আমি শেয়ার করেছি। শিক্ষকদের অনিহার কারণে আজকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। শিক্ষকদের অনৈতিক আচরণের কারণে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ওপর অনৈতিক আচরণের কথা বারবার ফুটে উঠেছে। তারপরও ঐ শিক্ষকদের কে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তাদের হাত অনেকটা লম্বা।

আমরা দেখেছি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রীদেরকে যৌন হয়রানি করতে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অনেকবার কথা উঠেছিল। ছাত্রীরা কলেজের মধ্যে বিক্ষোভ, অন্বেষণ, মানববন্ধন করেও কোন সাড়া ফেলো না। কলেজ কর্তৃপক্ষ এটার উত্তর দিয়েছিল আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখতেছি। কিন্তু এটির কোন সঠিক তদন্ত হয়নি বরং ঐ অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষে সাফাই গাইতেছিল। অভিযুক্ত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ছিল। প্রধান শিক্ষকের চরিত্র যদি এমন হয় তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিসের ভিত্তিতে চলবে। এভাবে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে। শিক্ষকদের অনৈতিক আচরণের কারণে আজকে সব প্রতিষ্ঠান প্রশ্নবিদ্ধ।

যেখানে শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর, তাদের চরিত্রের সার্টিফিকেট যদি এমন হয়, তাহলে ওদের হাতে যারা গড়ে উঠবে তাদের অবস্থা কোন পর্যায়ে যাবে? এবার যদি আমরা প্রশাসনের দিকে আসি, তাহলেও দেখতে পাই দুর্নীতির ছড়াছড়ি। টাকার কাছে প্রশাসন প্রতিনিয়ত বিক্রি হচ্ছে। বিচার পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। কোন একটি সমস্যা নিয়ে যখন তাদের কাছে যাওয়া হয়, তখন তারা টাকা ছাড়া কোন কথাই বলে না। অথচ তারা জনগণের বন্ধু কিংবা জনগণের সেবক। জনগণের ট্যাক্সের টাকা তাদের স্যালারি নির্ধারণ করা হয়। জনগণের সেবা করতে তারা বাধ্য। জনগণের সুযোগ-সুবিধা, বিপদ-আপদ সবকিছুতে প্রশাসনে অবদান রাখবে। কিন্তু তা না করে তাদেরকে শোষণ করতেছে প্রতিনিয়ত।

সমাজে কোন মানুষ যখন বিপদে পড়ে, তখন তারা প্রশাসনের আশ্রয় নিতে চায়। যখন প্রশাসনের কাছে যায় তখন প্রশাসন তাদের সেবা না করে পকেটের দিকে চেয়ে থাকে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কি? বাংলাদেশের প্রতিটা সেক্টরে আইন রয়েছে, কিন্তু আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই। যার কারণে যে যেভাবে পারে ঠিক সেভাবে দুর্নীতি করে। আমরা সবাই চাই আইনের সঠিক প্রয়োগ। দাগী আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে, ও ফ্রীভাবে রাস্তা চলাফেরা করতেছে। কিন্তু নিরীহ মানুষ জেলে পঁচে মারতেছে। টাকাওয়ালারা ক্ষমতার বলে অন্যায় করেও বুক ফুলিয়ে রাস্তা চলাফেরা করছে।

অথচ আইনের অভাবের সাধারণ মানুষ গণধোলাই খেয়ে রাস্তা মরছে। বর্তমানে পরিস্থিতিতে যেটি প্রমানিত হয়, প্রশাসক জনগণের রক্ষক নয় বরং ভক্ষক। আমরা সবাই জানি দুর্নীতি দমন কমিশনারের কথা। সর্ব সেক্টরের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ তারাই করে। অথচ সেখানে চাকরির জন্য দুর্নীতি দিয়ে ঢুকতে হয়। তাহলে যেখানে রক্ষক, ভক্ষক হচ্ছে তাহলে সেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে কিভাবে। এটাও সত্য আমরা নিজেরাও সচেতন নয়। যদি আমরা সচেতন হতাম তাহলে কখনোই এই দুর্নীতিগুলো নীরবে সহ্য করতাম না।

টাকার কাছে যেখানে দুদক বিক্রি হয়, সেখানে অন্যরাতো সাধারণ বিষয়। এভাবে বলতে গেলে প্রতিটা সেক্টর নিয়েই বলা যায়। দুর্নীতির উর্ধ্বে কাউকে দেখি না। হ্যাঁ, তবে কিছু মুষ্টিময় ব্যক্তি রয়েছে, যারা কখনোই দুর্নীতিকে মেনে নেয়নি। বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। সবাই যদি এভাবে সোচ্চার হত তাহলে দুর্নীতি একদিন দেশ থেকে পলায়ন করত। বিগত ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ছিল। কোন পরিমাণ দুর্নীতি বাংলাদেশ করছিলো সেটি কল্পনা করা যায় না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রতিটা মানুষেরই কর্তব্য। আজকে আমরা একটা সমাজ পরিবর্তন করতে পারলে, আস্তেধীরে একটা জেলা, উপজেলা দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  
 23 days ago 

বেশ কিছু বাস্তববাদী কথা শেয়ার করেছেন ভাইয়া। যেগুলো বলার সৎ সাহস সবার থাকে না। আসলে এই অন্যায়গুলো আমরা অনেক সময় বুঝেশুনেও সহ্য করি। আসলে আমাদের প্রতিবাদী হওয়া উচিত।তাহলে হয়তো এইসব অন্যায়ের প্রতিরোধ করা যাবে। যাইহোক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65017.48
ETH 3454.80
USDT 1.00
SBD 2.50