মুরগির কড়াইয়ের চ্যালেঞ্জে ক্যারাম খেলা || লাইফস্টাইল

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আমি আরেকটা নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।

1000004979.jpg

https://w3w.co/groomed.pounce.stated

বাড়িতে আসলে মাঝেমধ্যে সন্ধ্যার পর ক্যারাম খেলতে যাই। পুরো দিনের ব্যস্ততার মাঝে একটু আনন্দ খুঁজে পাই। বন্ধুরা সকলে মিলে মজার ছলে অনেক ভালো সময় কাটে তখন। এই সময়টুকুর মধ্যে মনে হয় যেন পুরো দিনের ক্লান্তি শেষ। আর খেলা যদি হয় কোন খাওয়ার চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তাহলে তো আনন্দের শেষ নেই। আমরা ১২ জন বন্ধু একসাথে হয়েছি ক্যারাম খেলতে। আমাদের বাড়ির পাশেই দোকান, সেখানে ক্যারাম ঘর রয়েছে। সবার মাঝে সিদ্ধান্ত হল আজকের খেলাটি একটু ভিন্ন ধরনের হবে।

20240603_101201.jpg

20240603_101151.jpg

আজকের খেলাটি একটু ভিন্ন ধর্মীয় খেলা হবে। আজকে যে চার জন খেলোয়াড় খেলবে তাদের মধ্যে যারা হারবে তারা রূপনগরে গিয়ে একটি খাওয়ার পার্টি দিতে হবে। তখন প্লেয়ার পছন্দের বিষয়গুলো আসলো। দুইদলের দুজনকে ক্যাপ্টেন করা হলো, এবার ক্যাপ্টেনেরাই তাদের পছন্দ অনুযায়ী একজন করে প্লেয়ার নিবে। তো তারা তাদের পছন্দের প্লেয়ার নির্ণয় করল। খেলার ডিসিপ্লিনতা রক্ষার্থে একজন রেফারি নিয়োগ করবেন। তারা রেফারী হিসেবে আমাকে নিয়োগ করলো। কারন আমার প্রতি তাদের বিশ্বাস রয়েছে আমি কখনো পক্ষপাতিত্ব করব না।

শুরুতেই আমি কিছু নিয়ম নীতির কথা বলে দিয়েছি, কিভাবে খেলাটি আমি পরিচালনা করব। এবং রেফারির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে এবং সেটি উভয় পক্ষকে মেনে নিতে হবে। তারা সবকিছু মেনে নিয়ে খেলা শুরু করল। দুর্দান্তভাবে খেলা শুরু হল। খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হল। এই ম্যাচটি আমার দেখা শ্রেষ্ঠ ম্যাচের মধ্যে একটি। উভয়পক্ষ খুব দারুণভাবে অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিয়েছে।। একপর্যায়ে তাদের উভয়ের স্কোর দাঁড়িয়েছে আটাশে-আটাশে। ক্যারাম খেলা ২৯ হলে গেম। খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমার বন্ধু জুয়েল এবং মোল্লা হেরে গেলো।

1000004978.jpg

তাৎক্ষণিক সবার চিৎকার কে দেখে। অসাধারণ এক মজার মধ্য দিয়ে খেলাটি আমরা শেষ করলাম। সাথে সাথেই তিনটা বাইক নিয়ে রূপনগরের দিকে রওনা হলাম। মানুষ হলাম বারো জন, একটি গাড়িতে চারজন করে আমরা রূপনগরে গেলাম। তখন রাত সাড়ে দশটা বাজলো। সবাই গিয়ে সেখানেই হাত-মুখ ওয়াশ করলাম। এরপর টেবিল বুকিং দিয়ে মুরগির কড়াই, পরটা এবং কোকাকোলার অর্ডার দিলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আমাদের সামনে খাবার আসলো।

1000004932.jpg

1000004929.jpg

1000004917.jpg

সে সময়ের কয়েকটা ফটোগ্রাফি করলাম। তো রেফারি হিসেবে ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্বটাও আমার উপর পড়লো। তো আমি সবাইকেই ডিস্ট্রিবিউশন করে দিলাম। এবং বিভিন্নভাবে হাসির ছলে রোমান্টিকতার মধ্য দিয়ে খাওয়া চালিয়ে নিলাম। মোটামুটি বারো জনের খাওয়ার দামটা সাধ্যের মধ্যেই ছিল। আমরা চাইনি যারা হেরে গেলো তাদেরকে বড় ধরনের ধরা দিতে। আমি রেফারি হিসেবেই বলে দিলাম কত বাজেটের মধ্য দিয়ে তারা খাওয়াইতে হবে। তো আমি বলেছিলাম বাজেট দুই হাজার এর উপরে যাওয়া যাবে না। সে সিদ্ধান্তটাই চূড়ান্ত হলো।

সবকিছুই সৌন্দর্যের মধ্য দিয়ে আমরা শেষ করলাম। শেষ করতে করতে প্রায় বারোটা বাজছিল। একেকজন বন্ধুর বাড়ি এক এক দিকে বিধায় তারা সেখান থেকেই আমাদের থেকে বিদায় নিলো। আমাদের চারজনের বাড়ি একই পথে তাই আমরা একসাথে রওনা দিলাম। খুবই মজার মধ্য দিয়ে সময়টা কাটালাম। অবশেষে বাড়িতে ফিরে এলাম। সত্যিই এমন একটি পার্টিতে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। খেলা থেকে শুরু করে খাবার ডিস্ট্রিবিউশন সবকিছু আমার সিদ্ধান্তে হয়েছে। তার জন্য খুবই ভালো লাগলো আমার কাছে। সবাই আমার উপর সন্তুষ্টও থাকলো।

1000004905.jpg

1000004908.jpg

1000004938.jpg

আজকে এ পর্যন্তই। সবাইকে অন্তরের অন্তস্থল হতে মোবারকবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি। ফি আমানিল্লাহি ওয়া রাসুলিহিল কারীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 months ago 

এরকম কিরাম খেলার মাধ্যমে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি আমাদের ক্ষেত্রে অনেকবার হয়েছে। অনেক মজা হয় খেলার মধ্যে টানটান উত্তেজনা থাকে। যেটা খেলার অনেক বড় একটি অনুভূতি। আপনাদের চ্যালেঞ্জ ভালই ছিল অনেক খাওয়া দাওয়া করেছেন। সেই মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আমার পোস্টি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য দেয়ার জন্য। এখানে খাওয়ার চেয়েও অনুভূতিটা অনেক বেশি কাজ করে।

 2 months ago 

বন্ধুরা মিলে বেশ টান টান উত্তেজনার মাঝে ক্যারাম খেলা হয়েছে!! খেলা শেষে সকলে মিলে মজা করে খাওয়া দাওয়াও করলেন, বেশ ভালোই। তবে এক বাইকে চার জন করে কেন চলাচল করতে হলো ভাই! এক মুহূর্তের অসাবধানতার ফল সকলের ভুগতে হতে পারতো! ওই বিষয় টি মানতে পারলাম না। সাবধানতার মাইর নাই। আর নিয়ম মেনে চলা আমাদের সকলের ই উচিত!

 2 months ago 

ধন্যবাদ আমার পোস্টের আলোকে আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। সঠিক বলেছেন চারজন বাইকে উঠার বিষয়। তবে সেই সময় কোন গাড়ি পাইনি তাই যেতে হলো। পরবর্তী সময়ে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করব। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মতামত দেয়ার জন্য।

ভাই আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে, আমারও ক্যারাম খেলায় জিতে যাওয়ার সুন্দর ঘটনাটি মনে পড়ে গেল। আমরাও বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। তবে তখন বাংলা ব্লগে কাজ করিনি বলে ফটোগ্রাফি করার চিন্তা ভাবনাটা মাথায় আসেনি। তাই আজ ফটোগ্রাফির স্মৃতিটুকু নেই। তবে সেই দিনের স্মরণীয় সেই সময়টুকু স্মৃতি হয়ে সারা জীবন অন্তরে গেঁথে রবে। যাইহোক ভাই, আপনাদের প্রতিযোগিতার আয়োজন দেখে, সেই সাথে প্রতিযোগিতায় জিতে খাওয়ার আয়োজন দেখে, খুবই ভালো লাগলো। আপনাদের ফটোগ্রাফি দেখেই বোঝা যাচ্ছে সময়টা খুব এনজয় করেছেন। খুব ভালো লাগলো ভাই, আপনার পোস্ট পড়ে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইজান আমার পোস্টি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়ার কারণে। এবং আপনার স্মৃতি স্মরণ করে তা আমাদের সাথে আবার শেয়ার করার জন্য। ভবিষ্যতে যদি এরকম ক্যারাম খেলেন তাহলে তার স্মৃতি অবশ্য আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।

 2 months ago 

ক্যারাম খেলার আনন্দটা সত্যি অনেক বেশি। আর বন্ধুরা মিলে একসাথে হলে তাহলে তো কথাই নেই। সত্যি ভাইয়া অনেক মজা করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আর সেই সাথে ভালোই খাওয়া দাওয়া করেছেন। মুরগির কড়াই খাবারের নামটা কিন্তু দারুন ছিল।

 2 months ago (edited)

ক্যারাম খেলার আনন্দটা সত্যিই আলাদা হয়। আর বন্ধুরা মিলে খানার আয়োজন করে যদি তা করা যায় তাহলে আনন্দ দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পায়। তবে সবকিছুর চেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে চ্যালেঞ্জের মধ্যে খেলা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 67002.47
ETH 3459.18
USDT 1.00
SBD 2.65