পশুর হাটে কিছু অসাধারণ মুহূর্ত এবং অভিজ্ঞতা
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আপনাদের সামনে একটা নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।
সবাইকে জানাচ্ছি ঈদুল আযহার মোবারকবাদ। আজকে ঈদুল আযহার স্পেশাল একটি দিনের কথা শেয়ার করব আপনাদের মাঝে। আমি মনে করি ঈদুল আযহার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে পশুর হাট-বাজার। ঈদুল আযহা মানে হচ্ছে আত্মসর্গিত একটি বিষয়। সকল হিংসা বিদ্বেষের উর্ধ্বে উঠে নিজের আত্মা থেকে হিংসা বিদ্বেষ কে দূর করা এবংকি মনের পশুত্বকে জবাই করা। এটির নিদর্শন হিসেবে আমরা পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে আত্মসর্গিত করি।
ঈদুল আযহা কে ঘিরে গড়ে তুলে অসংখ্য পশু বাজার। সেসব বাজারে উঠানো হয় হাজার হাজার পশু যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি। যাদের উপর কোরবান দেওয়া ওয়াজিব হয়েছে, তারা সেসব হাটবাজারে গিয়ে পশুগুলো থেকে পছন্দ করে কোরবানির জন্য একটি পশু ক্রয় করে। আর সেটিকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য আমেজ। আমাদের একটা বিষয় স্পষ্ট হতে হবে যে, একটি গরুর সাত শরিকে কোরবান দেওয়া যায়। আর একটি ছাগল, ভেড়া এক শরিকে কোরবান দেয়া যায়। এই কারণে যার যার সমর্থ্য অনুযায়ী সে পশু বাজার থেকে পশু ক্রয় করে।
আমি গিয়েছিলাম, ফেনীর জেলার ঐতিহাসিক পশুর হাট তুলাতুলি বাজারে। সেখানে অসংখ্য পশু উঠেছে। এত ভীড় ছিল যে, হাটার মত কোন ব্যবস্থাই যেন নেই। গুরু বাজারের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে এক ঘণ্টার উপরে সময় লেগে যায়। এত গরু এবং এত মানুষ। ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পশুর হাট বসেছে। রাস্তার দুইপাশ গিয়েছিল গরুর বাজার। সেখানে রয়েছে অসংখ্য গরু। ছাগলের বাজার হচ্ছে আলাদা একটি জায়গা। আমি সেখানে গিয়ে গরু দেখেছি এবং ছাগলের বাজারে গিয়ে ছাগল দেখেছি। গরুর দাম অনেক বেশি থাকায় আমি সেখান থেকে গরু কিনিনি।
আমার সাথে আমার ফ্রেন্ড পাঁচজন ছিল তাদেরকে নিয়ে চারপাশ ভালোভাবে ঘুরে দেখলাম। সেখানে গিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা হল। গরু বাজারের সবাই গরু কিনতে আসেনি কিছু কিছু ব্যক্তি পকেট মারার জন্য এসেছে। তাই গরু বাজারে গেলে নিজেকে সাবধানে থাকতে হয়। মোবাইল এবং মানিব্যাগ খুবই সাবধানে রাখতে হয়। না হলে যে কোন মুহূর্তেই তা চিন্তাই হয়ে যেতে পারে। বারবার বাজার কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছেন আপনারা আপনাদের মোবাইল এবং মানিব্যাগ যত্নে রাখুন। আপনারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন, কারো কিছু হারালে কর্তৃপক্ষ দায় থাকবে না।
গরু বাজারে যেকোনো একজন বাজারের ডাক নেয়। তারা প্রতিটা উপর একটা হাসিল নির্ধারণ করে। ঠিক একইভাবে সে বাজারেও গরুর উপর 500 টাকা এবং ছাগলের উপর ৩০০ টাকা হাসিল নির্ধারণ করা হয়। আমরা সেখানে প্রায় ২ ঘন্টার মত ছিলাম। ঘোরাফেরা করে একটি দোকানে নাস্তা করার জন্য ঢুকলাম। দোকানে গিয়ে প্রথমেই হাতে বানানো কিছু নাস্তার অর্ডার দিলাম। দোকানদার আমাদেরকে নাস্তা দেয়, তা আমরা সবাই মিলে খেলাম। নাস্তা শেষ করে আমরা একটি ঠান্ডা নিলাম। যেহেতু প্রচন্ড গরম তাই সেভেন আপটি খেতে খুব ভালো লাগলো। খাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম, এরপর দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম।
নাস্তা শেষ করে দুটি গরু ভালো লাগায়, সে গরু গুলোর কাছে আবার গেলাম। গরুগুলোর দাম জিজ্ঞেস করলাম। গরু গুলোর দাম চাইলো একটি, তিন লক্ষ টাকা, আরেকটি তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। দাম অনেক বেশি চাওয়া আমাদের সাথে দামে মিল্লোনা। আমি একটি বললাম ২ লক্ষ টাকা কিন্তু তারা আমাকে দিলো না। তারা বলে দিল এক দাম ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি কোনভাবেই আর বাড়াতে পারলাম না। কারন আমাদের বাজেট ছিল দুই লাখ টাকার মধ্যে। তাই মনের দুখে সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম। অবশেষে মন খারাপ করে সেখান থেকে বিদায় নিলাম।
তখন বন্ধুরা বলতে লাগলো, আজকে আর গরু কেনা হবে না। কারণ গরুর দাম অনেক বেশি। আমরা পরবর্তী হাটে গরু কিনার চেষ্টা করব। তখন আমিও চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম আসলে আজকের হাটে গরু কেনা হবে না। দেখলাম যে ছোট ছোট গরুগুলোও লাখ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি শুরু হল, তখন আমি কনফার্ম ছিলাম গরুর দাম একটু হলেও কমবে। তাই নির্দ্বিধায় এলাকায় ফিরে আসলাম। এলাকা ফেরার পর বন্ধুদের কে নিয়ে আনুষাঙ্গিক হিসাব-নিকাশ করলাম, আমাদের বাজেট কত হবে। এভাবে গরুর দাম বেশি থাকলে আমাদের বাজেট বাড়াতে হবে। আর কমলে তো আমাদের বাজেট নির্ধারণ করা আছেই। তাই আমরা আমাদের ফাইনাল সিদ্ধান্ত পৌঁছালাম। যাই হোক গরু বাজারে গিয়ে খুব ভালো লেগেছে। কিছু বাস্তবিক অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হয়েছি।
আমার পোস্টটি যারা পড়েছেন সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
https://x.com/titaherul/status/1801898928834806104?t=jZQGvFkWNzbwX_JTfahdPw&s=19
আপনাকেও ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা। ঠিক বলেছেন ঈদুল আযহার সবচেয়ে আকর্ষণীয় জিনিস হচ্ছে পশুর হাট। আপনি এবং আপনার পাঁচ জন ফ্রেন্ড মিলে পশুর হাট ঘুরে ঘুরে দেখেছেন জেনে ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দারুন লাগেছে। পশুর হাটে কাটানো মুহূর্ত এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টে আপনার মূল্যবান মন্তব্য দেওয়ার জন্য। খুব ভালো কেটেছে মুহূর্তগুলো।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পশুর হাটে কিছু অসাধারণ মুহূর্ত এবং অভিজ্ঞতা। আসলে এবার কোরবানি উপলক্ষে আমার বাবা ঢাকাতে অনেক গরু নিয়ে গেছে বিক্রয় করার জন্য। আসলে আমি আমার বাবার কাছ থেকে যতটুকু জানতে পারলাম এবার গাবতলীতে পশুর বাজার কিছুটা খারাপ অন্যবারের তুলনায়। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টে আপনার মূল্যবান মন্তব্য দেয়ার জন্য। গাবতলীর বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। পশুর হাটে গিয়ে পশু কেনার মজাটাই আলাদা।
ফেনীর জেলার ঐতিহাসিক তুলাতুলি পশুর হাটে গিয়ে দারুন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আসলে ভাইয়া মসজিদে যেখন সবাই নামাজ পড়তে যায় না, ঠিক তেমনি গরুর বাজারেও সবাই গরু কিনতে যায় না। খারাপ মানুষ সব সময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। তাই সব জায়গায় আমাদেরকে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। কিছুদিন আগে মোটামুটি গরুর ভালই দাম ছিল। কিন্তু আজকে তুলনামূলকভাবে একটু কম। যাই হোক বন্ধুরা মিলে কেমন টাকার মধ্যে গরু কিনলেন সে অভিজ্ঞতাটা পরের পোস্টে জানার আগ্রহ রইলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
অলরেডি গরু বাজারে এক প্রবাসী ভাইয়ের মানিব্যাগ ছিনতাই হয়ে গেল। সেখানে তার ঐখানকার সব কাগজপত্র ছিল। দীর্ঘক্ষণ মাইকিং করার পরেও মানি ব্যাগ পেল না।