নোয়াখালীর চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ঘাট ভ্রমণ || নদীর তাজা ইলিশ কিনলাম
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আপনাদের সামনে একটা নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।
নোয়াখালীর চেয়ারম্যান ঘাট বাংলাদেশের সুপরিচিত একটি জায়গা। এই ঘাটটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে জমজমাট ব্যবসা। এই ঘাট দিয়েই মেঘনা নদী পার হয়ে যেতে হয় হাতিয়া। হাতিয়া হচ্ছে একটি দ্বীপ। হাতিয়ার দেখার মত অনেক কিছুই রয়েছে। ইলিশের মৌসুমে চেয়ারম্যান ঘাটে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। প্রতিদিন বিক্রি হয় কয়েক লাখ টাকার ইলিশ। ইলিশের মৌসুমে অস্থায়ী দোকানের পরিমাণও বেড়ে যায়।
আমরা বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম চেয়ারম্যান ঘাট নোয়াখালী যাব। আমাদের ফেনী থেকে বেশি দূরে। চেয়ারম্যান ঘাটকে ঘিরে আমাদের মাঝে কৌতুহল ছিল। কম দামে নদীর তাজা ইলিশ পাওয়া যায়। এছাড়াও পাওয়া যায় গলদা চিংড়ি, চুরি মাছ, টেংরা মাছ, নদীর বড় পাঙ্গাশ মাছ ও লইট্টা মাছ। এ মাছগুলো খুবই সুস্বাদু। তাই আমরা গিয়েছিলাম সেখান থেকে তাজা মাছ কেনার জন্য। তখন বন্ধুরা মিলে আমরা একটা হাইস নিলাম। দশজন বন্ধু হাইস নিয়ে রওনা হলাম চেয়ারম্যান ঘাটের উদ্দেশ্যে।
গাড়ির মধ্যে বেশ মজা করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে পৌঁছালাম চেয়ারম্যান ঘাটে। সেখানে গিয়ে দেখি অনেকগুলো লঞ্চ, স্টিমার, ফেরি রয়েছে। শুরুতেই দৃশ্যটি অসাধারণ ছিল আমার কাছে। আশেপাশে তৈরি হচ্ছে বড় বড় ইঞ্জিল চালিত নৌকা। তা দেখে বরাবরই অবাক লাগলো। কারিগর এতো নিখুঁতভাবে এত সুন্দর করে নৌকাগুলো তৈরি করতেছে তা ভেবেই অবাক হই। তখন নতুন তৈরিকৃত নৌকার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম এবং সেখানে কিছু ছবি তুললাম।
বেশ ভালই সময় কাটতে ছিল। হঠাৎ দেখলাম একটি স্টিমার জাল নিয়ে বের হচ্ছে। তাদের সাথে কথা বললাম, জিজ্ঞেস করলাম মাছ ধরে আসতে আপনাদের কত সময় লাগবে? তারা বলল ১৫-২০ দিনের সফরে যাচ্ছে তারা। এর মাঝে যতটুকু কাভারেজ করা সম্ভব হয়। তবে তাদের লক্ষ্য ইলিশ, গলদা চিংড়ি, টেংরা মাছ ধরবে। আবার এটাও বলল তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন না হলে সময় আরো বাড়াতে পারে। আবার সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ফিরে আসে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম তাদের খাওয়া দাওয়া সম্পর্কে, জবাব দিল রান্নাবান্নার সবকিছু স্টিমারে করবে। সে অনুযায়ী তাদের পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী সাথে নিয়ে যাচ্ছে। স্টিমারের মধ্যেই রান্নাবান্না করবে।
দুপুর বেলা ভাজা ইলিশ দিয়ে ভান্ডারী হোটেলে ভাত খেলাম। সত্যি খুব মজাদার ছিল আমাদের খাওয়ারটি। আমাদের খাওয়ার আইটেমের মধ্যে কিছু জিনিস ছিল, সবগুলোই নদীর মাছের আইটেম। বিকেলবেলা ভাজা ইলিশ দিয়ে মুড়ি খেলাম সাথে আলুর চপ ছিল তা খেলাম। বিকেলের নাস্তার পর মাছ কেনার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। দেখলাম স্থায়ী অনেকগুলো দোকান রয়েছে পাশাপাশি অস্থায়ী ও দশটির উপরে দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকানে রয়েছে মেঘনা নদীর অসংখ্য প্রজাতের মাছ।
সেখান থেকে প্রথমে আমরা দশজন মিলে ইলিশ মাছ কিনেছি তিন ক্যারেট। টেংরা মাছ কিনেছি এক ক্যারেট। তারা মাছগুলোকে খুব সুন্দর ভাবে প্রসেসিং করে দিল। বরফ দিয়ে তারা মাছগুলোকে ক্যারেটের ভিতরে সুন্দর ভাবে দিল যাতে কোনভাবেই সমস্যা না হয়। যেহেতু আমরা আমাদের গন্তব্যে ফিরতে অনেকটা লেট হবে। সেখানে গিয়ে সত্যিই ভালো লেগেছে আমার কাছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ কেনার জন্য এবং কি ঘাট দেখার জন্য আসতেছে অসংখ্য মানুষ। আমরা যেদিন গেলাম সেদিনও দেখলাম মানুষের বিড়।
বৃহস্পতি, শুক্র, শনি এই তিন দিন অনেক বেশি মানুষের আনাগোনা থাকে। প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি থাকা ঐদিন অসংখ্য পর্যটক এবং মাছ ভালবাসে এমন মানুষগুলো মাছ কেনার উদ্দেশ্যে আসে। ইলিশের ঘাঁটি চাঁদপুরকে বলা হলেও বর্তমানের চেয়ারম্যান ঘাটকে ইলিশের দিক থেকে অনেক বেশি মূল্যায়ন করে থাকে। আমরা সব কিছু ঘুরে দেখলাম, অবশেষে মাছ কিনে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠলাম। অবশেষে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ফেনীতে আসলাম। সেখানে এসে মাছগুলো পাল্লা দিয়ে মেপে সুন্দরভাবে বন্টন করলাম। যখন গিয়েছিলাম তখন স্টিমেটে কাজ না করায় ছবি তোলা হয়নি। তারপরও যা ছবি তোলা হলো তা দিয়েই আজকের ব্লগটি করার চেষ্টা করলাম।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
https://x.com/titaherul/status/1800722617051357610?t=t8Aj1a043dx-uN3y4FSzPg&s=19