মনের পশুরে কর জবাই, পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago (edited)

হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটা বাস্তবিক পোস্ট শেয়ার করবো। আমি নিয়মিত লেখালেখি করতে চেষ্টা করি। যখনই সময় সুযোগ হয়ে ওঠে ঠিক তখনই বই পড়া কিংবা লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমি বাস্তবসম্মত লেখা লিখতে চেষ্টা করি । তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে তেমনি বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।

Photo_1718513326529.png
https://pixabay.com/illustrations/ai-generated-werewolf-monster-8160493/

এডিট snapseed
প্রথমে জানাচ্ছি সবাইকে ঈদুল আযহার মোবারকবাদ। ঈদুল আযহা মানেই আত্মোৎসর্গের একটি মাস। এ সময় নিজের মনের পশুকে দয়াময় স্রষ্টা কোরবান দিতে বলেছেন। নিজের মনের মধ্যে পশুত্ব ভাব রেখে পশু কোরবান নিছক হত্যাই হয়, কোরবান নয়। আমাদের হৃদয় আত্মার মধ্যে হিংস্রতা ভরপুর, আচার আচরণের মধ্যে জানোয়ারের মনোভাব ফুটে ওঠে। এই মনোভাব হৃদয়ে রেখে পশু কোরবান হবে হত্যা। তাই আমাদেরকে প্রথমত বুঝতে হবে কোরবান কি? কোরবান আমাদেরকে কি মেসেজ দেয়? কোরবান আমাদেরকে মেসেজ দেয় হৃদয় থেকে হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, হৃদয়ের হিংস্রতা দূর করে আত্মাকে মহাপবিত্র করা।

কাজী নজরুল ইসলামের চির অমীয় বাণীটি বাস্তবায়ন করি, মনের পশুরে করো জবাই পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই। এবার বুঝতে হবে কোরবানির প্রচলনটা কিভাবে হয়েছে। এটি নিদর্শন হিসেবে মুসলিম মিল্লাতের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে দয়াময় স্রষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন তিনার প্রিয় বস্তুকে কোরবান দেওয়ার জন্য। ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম অনেক কিছুই উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু দয়াময় স্রষ্টা তারপরও বলেছেন তিনার প্রিয় বস্তুকে কোরবান দেয়ার জন্য। তখন ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম বুঝতে পারলেন তিনার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু হচ্ছে তিনার পুত্র হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম।

তখন ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম, ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কোরবান দিতে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। ইব্রাহিম আলাইহি সাল্লাম, ইসমাইল আলাইহিস সালামকে বললেন আল্লাহতালার নির্দেশ তোমাকে কোরবান দেয়ার। ইসমাইল আলাইহিস সালাম বললেন যদি আল্লাহতালার নির্দেশ হয় আমি কোরবানি হতে প্রস্তুত আছি। তখন ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং ইসমাইল আলাইহিস সালাম রওনা দিলেন একটি নির্দিষ্ট জায়গা। সেখানে ইসমাইল আলাইহিস সালামকে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম শোয়াইলেন কোরবান দেয়ার জন্য। যখনই ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম, ইসমাইল আলাইহিস সালামের গলা ছুরি চালাবেন, ঠিক তখনই আল্লাহতালার নির্দেশে একটি দুম্বা চলে আসলো।

তখন ওই দুম্বাটি কোরবান হলো। দয়াময় স্রষ্টা বাপ পুত্র উভয়ের উপর সন্তুষ্ট হলেন। এত বেশি সন্তুষ্ট হলেন যে, যুগ যুগ ধরে এটির নিদর্শন হিসেবে পশু জবাই এর মধ্য দিয়ে কোরবানির নির্দেশ দিয়ে দিলেন। সেই ধারাবাহিকতা পূর্ববর্তী নবীদের উম্মতের জন্যও কোরবান ওয়াজিব ছিল। তবে কোরবানির মূল শিক্ষা আমাদেরকে উপলব্ধি করতে হবে। আমরা কোরবানির মূল শিক্ষা থেকে বাহিরে থাকার কারণে আমাদের হৃদয়ের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। বরং দিন দিন খুন, জুলুম, হত্যা, ব্যভিচার বেড়ে চলছে। মানুষের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না।

আজকে পশু হত্যার প্রতিযোগিতা শুরু হলো। কে কতটা পশু হত্যা করবে তা নিয়েই মেতে থাকে। কোরবান কতটুকু আল্লাহর দরবারে কবুল হচ্ছে সেটাই দেখার বিষয়। মনের মধ্যে এত হিংস্রতার রেখে কোরবান কখনো কবুল হবে না। এখানে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা গরুর চামটা নিয়েও করে ধান্দা। তারা সিন্ডিকেট করে পশুর চামড়া দাম একদম কমিয়ে রাখে, মানুষকে তার ন্যায্য দেয় না। শুধু তাই নয় মসলা ব্যবসায়ী যারা রয়েছে তারা মসলার দামও আকাশচুম্বি করে রাখে। এক কথা যে যেভাবে পারে সে সেভাবেই শোষণ করে। তাহলে নিজের মনের পশুত্বকে আমরা কিভাবে কোরবান দিলাম? এ প্রশ্নটা সবসময় থেকে যায়।

আবার কিছু কিছু রয়েছে যারা কোরবানির পর গরুর বর্জ্য গুলোকে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। তাতে চরমভাবে পরিবেশ দূষিত হয়। তার দুর্গন্ধে মানুষ রাস্তার পাশ দিয়ে চলতে পারে না। সেটি দেখার মত লোক থাকে না। এ বর্জ্য গুলো যে একটি গর্ত করে গর্তের মধ্যে ফেলবে তার বিবেক টুকাও থাকে না। অসুস্থ মেন্টালিটি নিয়ে এ ধরনের কোরবানগুলো প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমি বলতে চাই, আসুন সবাই কোরবানির মূল শিক্ষা চেতনা বুঝে নি। মনের পশুত্বকে কোরবান দিই। কাজী নজরুল ইসলামের চির অমীয় বাণীটি বাস্তবায়ন করি, মনের পশুরে করো জবাই পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই।

আমার এই পোস্টে আপনাদের কেমন লেগেছে, তা আপনারা মন্তব্যের মধ্য দিয়ে জানাবেন। আমি চেষ্টা করেছি কিছু বিশেষ সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার জন্য। কতটুকু পেরেছি তা জানি না। যদি আমরা আপনারা একটু সচেতন হই, তাহলে কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আপনাদের যদি কোন কিছু সংযুক্ত করার থাকে তাহলে আমার সাথে সংযুক্ত করতে পারেন। আর যদি আমার লেখনীতে কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানে শেষ করছি। ফি-আমানিল্লাহি ওয়া রাসুলিহিল কারীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 61123.08
ETH 2628.55
USDT 1.00
SBD 2.46