নারী শিক্ষার ভূমিকা ও বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা || জেনারেল রাইটিং
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটা বাস্তবিক পোস্ট শেয়ার করবো। আমি নিয়মিত লেখালেখি করতে চেষ্টা করি। যখনই সময় সুযোগ হয়ে ওঠে ঠিক তখনই বই পড়া কিংবা লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমি বাস্তবসম্মত লেখা লিখতে চেষ্টা করি । তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে তেমনি বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।
এডিট snapseed
যে সমাজে নারীর সম্মান নেই, সে সমাজ কখনো সভ্য সমাজ হতে পারে না। আমরা সব জায়গায় দেখি নারীর প্রতি অসম্মান, হেনেস্তা সব সময় চলমান থাকে। মা বোনদের সঠিক সম্মান প্রদর্শন করা হয় না। তাদের যে অধিকার, মর্যাদা তা পরিপূর্ণভাবে দেয়া হয় না। সুযোগ পেলেই তাদের উপর জুলুম, অত্যাচার, নিপীড়ন করে। অথচ মা-বোনদের সম্মান অনেক বেশি। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, "যে সমাজে মা বোনদের সম্মান নেই, সেই সমাজ কখনো সভ্য সমাজ হতে পারে না"।
প্রতিটা সমাজ ব্যবস্থা মা বোনদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি একটু ভিন্ন থাকে। অনেক সময় মনে হয় তাদেরকে যেন মানুষ হিসেবে গণ্য করছে না। পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি যেন মা বোনেরা শুধু পুরুষদের দাসীর মতোই থাকবে। তাদের সেবা যত্ন করবে, ঘরের হাড়ি-পাতিল ওয়াশ করবে, সকাল হলে ঘর ঝাড়ু দিবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই মেন্টালিটি থেকে যদি আমরা বের হতে না পারি। তাহলে আমাদের সমাজ রাষ্ট্র বিশ্ব ব্যবস্থা কখনোই উন্নতির শিখরে যেতে পারবে না।
মা-বোনদের পড়াশোনার দিকে যদি আমরা যাই তাহলে দেখতে পাই সেখানেও কিছু মানুষের ফতুয়া রয়েছে। মা বোনেরা পড়াশোনা করতে পারবে না। তারা স্কুল কলেজে যেতে পারবেনা। তারা স্কুল কলেজে গেলে তাদের পর্দা লঙ্ঘন হবে। তাদেরকে পর পুরুষ দেখলে তাদের পর্দা লঙ্ঘন হবে। এযে হিংস্র মেন্টালিটি মা বোনদেরকে ঘরবন্দী করে শিক্ষা থেকে দূরে রাখার একটা কৌশল। মা যদি অশিক্ষিত হয় তাহলে একটি জাতীয় অশিক্ষিত হয়ে জন্মাবে। মা শিক্ষিত হলে সন্তানও শিক্ষিত হবে।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, একটা সন্তান জন্মের ছয় মাস আগে থেকে পড়াশোনা শুরু করে। তখন সাহাবায়ে কেরাম এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মা শিক্ষিত হলে মায়ের গর্ভে থাকা সন্তান মায়ের চিন্তা-চেতনা, পড়াশোনা সবকিছু সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে। তাই মায়েদের শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। মা শিক্ষিত হলে, তিনি সব সময় সন্তানদের ব্যাপারে সচেতন থাকেন। কিভাবে সন্তানকে মানুষের মতো করে মানুষ করে গড়ে তোলা যায়। তখন মা নিজ দায়িত্বে সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে।
নেপোলিয়নের একটি উক্তি আমরা সবাই জানি, নেপোলিয়ন বলেছেন, **"আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো"** নেপোলিয়নের এই উক্তিটি সারা পৃথিবীতে স্মরণীয় হয়ে আছে। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই বিভিন্ন নারীদের কর্মসূচিতে এই উক্তিটি বক্তারা ব্যক্ত করে। মায়েরা যদি শিক্ষিত হয় তাহলে সন্তানেরা শিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠবে। মা যদি অশিক্ষিত হয় তাহলে জাতিও অশিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠবে।
প্রাণাধিক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছে, প্রত্যেকটা নর-নারীর উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। জ্ঞান অর্জনের জন্য তোমরা সুদূর চীন দেশ ভ্রমণ কর। জ্ঞান অর্জনকে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত গুরুত্ব দিয়েছেন। এখানে নারী পুরুষ উভয়কেই জ্ঞান অর্জনের কথা বলেছেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান, সভ্যতা-সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তাহলেই একটি সমাজ, রাষ্ট্র উন্নতির শিকড়ে এগিয়ে যেতে পারবে। একটি রাষ্ট্র উন্নয়নের পিছনে নারী এবং পুরুষ উভয়েরই অবদান থাকে।
যদি আমরা ভালো মানুষেরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি তাহলে অমানুষদের আধিপত্য আমরা সেখানে ধ্বংস করে দিতে পারব। কিন্তু সমাজে কাদেরকে নিয়ে আমরা সেই খারাপ মানুষদের বিরুদ্ধে লড়াই করব? তারা কি আমার সাথে এগিয়ে আসবে? যদি না আসে তাহলে এভাবে অন্যায়, অপরাধ, জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন চলতে থাকবে। আর তা আমরা মুখ বুঝে সহ্য করতে হবে। তবে এটা জীবন না।
কিছু মোল্লাদের ফতুয়ার কারণে মা-বোনদের পড়াশুনা রুদ্ধ হচ্ছে। তারা বলে মা-বোনেরা ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়লেই যথেষ্ট। স্বামী বিদেশ থাকলে টাকা পাঠালে তা গুণে নিতে পারলেই হলো। এমন মস্তিষ্ক বিকৃত ফতোয়া আমাদের মা বোনদের ধ্বংসের দিকে এগিয়ে দিল। মা বোনদের পড়াশোনা রুদ্ধ মূলত আগামী প্রজন্ম অশিক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠা। তাই সর্বদা নিজেদের সাবধান থাকতে হবে, এবং নারী শিক্ষার দিকে অনেক বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তাহলে আশা করছি একটি শিক্ষিত জাতি গড়ে উঠবে।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
https://x.com/titaherul/status/1800476146557186382?t=7N39w5wHf20-cVo8H-i9pA&s=19
নারী শিক্ষার ভূমিকা ও বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে দারুন একটি পোস্ট উপহার দিলেন। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আমাদের সমাজে নারী শিক্ষার গুরুত্ব কম দেওয়া হয়। নারীদেরকে দিয়ে শুধু সংসারে কাজকর্ম না করিয়ে শিক্ষার দিকে অগ্রসর করা আমাদের সকলের কর্তব্য। অনেক পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি মা বোনেরা শুধু পুরুষদের দাসীর মতোই থাকবে। এই ধরনের মন মানসিকতা আমাদের ত্যাগ করতে হবে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, একটা সন্তান জন্মের ছয় মাস আগে থেকে পড়াশোনা শুরু করে। তখন সাহাবায়ে কেরাম এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন একটি রাষ্ট্র উন্নয়নের পিছনে নারী এবং পুরুষ উভয়েরই অবদান থাকে। আমাদের মাঝে নারী শিক্ষার ভূমিকা নিয়ে দারুণ একটি পোস্ট তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য উপস্থাপন করার জন্য। দারুণভাবে নিজের মন্তব্য আমার লিখনির সাথে এড করলেন।