ফেনী জেলার ঐতিহাসিক রাজবাড়ি ভ্রমণ।
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আপনাদের সামনে একটা নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।
https://w3w.co/corny.misspoken.manufactured
প্রতিটা জেলাতেই ঐতিহাসিক কিছু নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায়। ফেনীর জেলা ঘিরেও অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রতাপপুর রাজবাড়ি। এটি প্রায় ১৮৬০ সালে রাজা রামকৃষ্ণ সাহা প্রায় ৮০০ শতক জমিতে তার এ প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। এ প্রাসাদের চারপাশে রয়েছে প্রায় ১৩ টি পুকুর। এবং রয়েছে চারটি রাজপ্রাসাদ। এগুলোর ডিজাইন এতটাই সুন্দর যে দেখেই বিস্মিত হবেন আপনি।
এত নিখুঁত ডিজাইন বর্তমানে করা সম্ভব নয়। বর্তমানে প্রাসাদ গুলো প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তারপরও নিদর্শন হিসেবে এ প্রাসাদগুলো দাঁড়িয়ে আছে। এগুলো দেখার জন্য অসংখ্য পর্যটক আসে এখানে। বিভিন্ন উপলক্ষকে কেন্দ্র করে এখানে প্রচুর ভিড় জমে। প্রতি বছরেই এ রাজবাড়িকে ঘিরে একটি মেলার আয়োজন করে। সেই মেলাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে। ইন্ডিয়া থেকেও অনেক মানুষ এ মেলায় অংশগ্রহণ করে। কারণ রাজার রামকৃষ্ণের বংশধররা ইন্ডিয়াতেও বসবাস করে এছাড়াও তারা বাংলাদেশের কয়েকটি জেলাতেও রয়েছে।
তবে বর্তমানে রাজবাড়ীটি স্থানীয় কিছু প্রতিনিধির আন্ডারে রয়েছে। যারা এই সম্পত্তি দেখভাল করতেছে। এক সময় এ রাজবাড়ীটি জঙ্গলে ভরপুর ছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রায় খোলামেলা হয়ে গেল। জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে ফেলল। তবে পুরো রাজবাড়ী ঘিরে বর্তমান শিয়ালের রাজত্ব রয়েছে। এ রাজবাড়িতে সুরঙ্গ পথসহ কিছু রুম রয়েছে যেগুলো সত্যিই অবাক করার মত। তবে সে রুমগুলোতে আলো বাতাস যাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয়রা পুকুরের মধ্যে মাছ চাষ করতেছে। ১৩ টি পুকুরের মধ্যে ৪ টিতে ঘাট রয়েছে। যে ঘাটগুলোতে রাজবাড়ীর বউ, মেয়েরা গোসল করতো। পুকুর গুলো তুলনামূলক বড় নয়, তবে আবার কোন অংশে ছোটও নয়। বর্তমানে পুকুরগুলোতে প্রচুর মাছ চাষ করা হয়। আপনারা সেখানে গেলে দেখবেন পুকুরগুলোতে বড় বড় মাছ রয়েছে। তবে আমার খুব পছন্দের একটি জায়গা প্রতাপপুর রাজবাড়ি।
তৎকালীন সময়ে জমিদাররা সফর বিরতিতে প্রতাপপুর রাজবাড়িতে অবস্থান করত। এ বাড়িকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য কৌতুহল। তৎকালীন সময়ে মানুষের রাজবাড়ির সামনে দিয়ে জুতা পায়ে দিয়ে যেত না। রাজবাড়ীর সামনে দিয়ে যেতে হলে তাকে খালি পায়ে যেতে হতো। এ বাড়ির সামনে একটি বিচার কার্যালয় রয়েছে। কেউ খাজনা দিতে অস্বীকার করলে তাকে সেখানে বসানো হতো এবং শাস্তির ব্যবস্থা করা হতো।
কারো অন্যায় অপরাধ হলে, এ বিচারালয়ে তার বিচার করা হতো। তবে এ বাড়িকে অনেকেই জমিদার বাড়ি বলে আখ্যায়িত করেন। আবার অনেকে রাজবাড়ি বলে ধরে নেন। এ বাড়ি কে কেন্দ্র করে বৈশাখ মাসে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তিন দিনব্যাপী উৎসব করেন। এই জমিদার বাড়ির পাশে রয়েছে তাদের তৈরি প্রতিষ্ঠান প্রতাপ পুর হাই স্কুল। এটি ফেনী জেলায় দাগনভূঞা উপজেলার নামকরা একটি প্রতিষ্ঠান।
বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম প্রতাপুর রাজবাড়ীতে যাব। সেই সুবাধে দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা হলাম। এটি আমাদের উপজেলাতে হওয়া যাতায়াতটা আমাদের জন্য খুবই সহজ। তাই বেশি সময় লাগেনি আমরা আধা ঘন্টার মধ্যেই রাজবাড়ী প্রতাপপুরে পৌঁছে গেলাম। সেখানে গিয়ে রাজবাড়ীর সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এবং দীর্ঘ সময় আড্ডা দিলাম। আপনাদের দেখার সুবিধার্থে কিছু ফটোগ্রাফি তুলে ধরলাম। দীর্ঘ সময় সেখানে কাটানোর পর, ফিরে আসলাম বাড়ির পথে। সেখানে সময়টা বেশ ভালই কাটলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে। আজকের মত সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই কামনা করছি।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/titaherul/status/1798276794640134440?t=q4AhfkZ4E_8L7wdNNk08Pw&s=19
পুরনো জমিদার বাড়ি দেখে অনেক ভালো লাগলো। প্রতিবছর এই জায়গাটিতে মেলা বসে জেনে ভালো লাগলো। এরকম কোন জায়গায় মেলা বসলে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। আপনি পুরনো এই জমিদার বাড়িতে ভ্রমণ করেছেন এবং এই পোস্ট শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য উপস্থাপন করার জন্য। এ মেলাতে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে।
পুরনো রাজবাড়ি গুলো দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর হয়। তবে এই রাজ বাড়িতে আমিও গিয়েছিলাম। কিন্তু রাজবাড়ী সম্পর্কে এত বিস্তারিত আমার জানা ছিল না। আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজকে রাজবাড়ি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। বিশেষ করে এর চারপাশে ১৩ টি পুকুর আছে দেখছি। সব মিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য দেয়ার জন্য। রাজবাড়ীর দৃশ্যটা সত্যি অসাধারণ। আপনি গিয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ফেনী জেলার ঐতিহাসিক রাজবাড়ি সম্পর্কে একটি ভ্রমণ পোস্ট। আপনার শেয়ার করা পোস্ট পড়ে বেশ কিছু সম্পর্কে জানতে পারলাম। আসলে এই জায়গাগুলোতে এখন মানুষ বসবাসের উপযোগী নেই আপনার পোস্ট দেখে জানতে পারলাম। তৎকালীন মসজিদ বেশ অসাধারণ ছিল ভাই। বন্ধুরা মিলে বাইক নিয়ে যদি এরকম ভ্রমণে বের হওয়া যায় তাহলে বেশ ভালোই লাগে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ আমার পোস্টে মন্তব্য করার জন্য। থাকলে অবশ্যই আসবেন এসে ঘুরে যাবেন। আশা করি অনেক ভালো লাগবে।
প্রতাপপুর রাজবাড়ি তে দারুন কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। রাজবাড়ীটা আসলেই খুব সুন্দর। আপনি বিস্তারিত অনেক কিছু শেয়ার করেছেন এই রাজবাড়ী সম্পর্কে। পুরনো জমিদার বাড়িগুলো দেখতে আসলেই ভালো লাগে। আপনাদের কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টে আপনার মূল্যবান মন্তব্য দেয়ার জন্য। রাজবাড়ীর ভিউটি অসম্ভব সুন্দর। এ বাড়িকে ঘিরে আরো অসম্ভব কিছু কাহিনী বিদ্যমান রয়েছে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইজান। আগেকার দিনের এমন সুন্দর সুন্দর ঘরবাড়িগুলো কিন্তু এখন আর নির্মাণ হয় না। আগে খুব সুন্দর ভাবে কারিগররা ঘরগুলো নির্মাণ করেছিল। এমন ঘর তৈরি করাও কিন্তু বেশ কঠিন ব্যাপার, মাটি দিয়ে তৈরি সব। সে সমস্ত ঘরবাড়ি আজকে আপনি ধারণ করে আমাদের দেখিয়েছেন দেখে নতুন কিছু দেখার সুযোগ হলো।
এটির যে শিল্পকলা এটি খুবই সুন্দর এবং চমৎকার। যেটি বর্তমানে দৃশ্যমান নয়। ঘর গুলোর ডিজাইন সত্যিই অসাধারণ।
আসলে আমি আপনার সাথে একমত এই ফেনী জেলার যেই পুরনো বাড়িগুলো রয়েছে আর এই ডিজাইনগুলো যে আগের মানুষেরা উপস্থাপন করেছিল এখন হয়তোবা এগুলো করা আর সম্ভব নয় । কারণ এত নিখুঁতভাবে এত সুন্দর ডিজাইন করা আসলেই অনেক অসাধ্য একটা বিষয়। ফেনীতে কখনো যাইনি তবে যাওয়ার জন্য মনের ভিতরে অনেক আনচান আনচান করছে কারণ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে এই জেলা সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।
যাইহোক আমার পোস্ট পড়ে মতামত ব্যক্ত করার জন্য ধন্যবাদ। যদি কখনো ফেনীতে আসা হয় তাহলে যোগাযোগ করবেন। আপনাকে নিয়ে চলে যাব রাজবাড়ী।
ফেনীতে এত সুন্দর জায়গা রয়েছে তা আমার কখনো জানা ছিল না। আজকে আপনার কাছ থেকে এরকম একটি জায়গা সম্পর্কে জানতে পারলাম৷ যেভাবে আপনি সেখানে গিয়ে খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে। আসলে এই পুরাতন রাজবাড়িগুলো অনেক সুন্দর হয়ে থাকে৷
রাজবাড়ীটি অনেক পুরাতন হওয়া অনেকটা আকর্ষণীয় হয়ে আছে। তাই যদি সময় সুযোগ করতে পারেন অবশ্যই সেখানে যাবেন। আশা করছি আপনার ভালো লাগবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টে আপনার কমেন্ট করার জন্য।