ছেলেকে নিয়ে চোখের ডাক্তারের কাছে যাওয়া
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সঙ্গে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ছেলেকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার অভিজ্ঞতা । বেশ কিছুদিন হয়ে গেল ছেলেটা শুধু বলছে যে ওর চোখে নাকি ব্যথা করে । আমি প্রথমে সেটাকে কেমন একটা পাত্তা দেইনি ভেবেছিলাম সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করে দিনের বেলা তেমন একটা ঘুমায় না সেই সকালবেলা উঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য সারাদিনই দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে । রাত ২ঃ০০ টার আগে তো কখনোই বিছানায় যায় না । এ কারণে হয়তোবা চোখ ব্যাথা করে । মাঝে মাঝে রাতের বেলা শুয়ে আমাকে বলে যে আমার চোখে ব্যাথা করছে চোখটা টিপে দাও । আমি তখন বলতাম যে ঘুমিয়ে পড়ো ঠিক হয়ে যাবে । এভাবে করে কয়েকটা দিন পার হয়ে গিয়েছে ।
এরপর সেদিন স্কুলে নিয়ে গিয়েছি স্কুলে ক্লাসে বসেই দেখি ছেলেটা শুধু চোখটা পিটপিট করছে আর লিখতে পারছে না ঠিকমত । বারে বারে শুধু আমাকে বলছে ভালো লাগছে না । আমি তো প্রথমে বুঝতেই পারিনি কারণ ও ক্লাসে একা বসতে চায় না এজন্য বিভিন্ন ধরনের বাহানা করতে থাকে । যার কারণে আমি তেমন একটা পাত্তা দেইনি । পরে তখন বারবার বলছে যে মা আমার চোখে ব্যথা করছে তখন মিস বলল যে ও শুধু একটু পর পর চোখ পিটপিট করছে আর চোখে ব্যথা করছে ও তো কখনো এরকম করে না । এরপর মিস বলল যে হয়তোবা চোখে একটু সমস্যা হচ্ছে আপনি ওকে বাসায় নিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান । তখন আমার মনটা যেন কেমন কেমন করলো । মনে হচ্ছে চোখের ব্যাথাটা আসলেই হচ্ছে মনের ভিতরে খচখচ করতে শুরু করলো । আর আমার কোন কিছু শুনলে টেনশন টা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায় সেখান থেকে টেনশন হতে লাগলো । ওকে বললাম যে চলো আমরা চলে যাই । সে আবার স্কুল রেখে বাসায় আসবে না বলে যে লেখাটা শেষ করে তারপর যাব । এরপর লেখা শেষ করল এবং স্কুল শেষ করে একবারে বাসায় চলে আসলাম ।
পরে বাসায় এসে সিদ্ধান্ত নিলাম যে বিকেলবেলা নিয়ে যাব ডাক্তারের কাছে । এর ভিতর ও বারবারই শুধু চোখের ব্যথা বলছে আর শুধু বলছে যে মা কখন ডাক্তারের কাছে যাব ।এরপর সন্ধ্যায় নামাজের পর পর আমরা রেডি হয়ে ডাক্তারের কাছে চলে গেলাম । ডাক্তার আসতে দেরি হবে বিধায় নিচে নেমে কিছু ভাজা জিনিস খেলাম ও সাথে চা খেয়ে নিলাম ।এরপর আবার ডাক্তারর চেম্বারে গেলাম তখন জিজ্ঞাসা করলাম ডাক্তার আসতে কত দেরি । তখন ছেলেটা বলল যে ডাক্তার পাশেই থাকে পাশে বিল্ডিং থেকে আসবে । তখন দেখলাম যে ডাক্তার আমাদের বিল্ডিং এর উপরেই থাকে ।অপেক্ষা করছি এর ভিতরে ডক্টর এলো এবং ডাক্তারকে দেখে আমরা তাকে চিনতে পারলাম ডাক্তার ও আমাদেরকে চিনলো । একই বিল্ডিং এ থাকার কারণে লিফটে সব সময় একসাথে যাওয়া আসা হয় দেখা হয় ।
ডাক্তার আসার আগে ছেলের ফটোসেশন
এরপর ডাক্তারের কাছে গিয়ে ওর প্রবলেম এর কথা বললাম তারপর ডাক্তার ভালোভাবে সবকিছু পরীক্ষা করে বলল যে ওর চোখে একটু এলার্জি প্রবলেম হয়েছে । এই কারণে চোখ ব্যথা করে এবং মাঝে মাঝে চুলকায় । তারপর আমি অন্য আরো সমস্যার কথা বললে ডাক্তার ভালো মতো পরীক্ষা করল এবং পরীক্ষা করে দেখল যে ওর চোখে আরো সমস্যা রয়েছে এবং চশমা ব্যবহার করতে হবে । দূরের জিনিস একটু কম দেখছে এবং চোখের পাওয়ার অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যা এতদিনে আমরা টের পাইনি । ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চশমাটা দিয়ে দিল এবং দুমাস পরে আবার আমাদেরকে যোগাযোগ করতে বলল । আমরা চশমাটা বানাতে দিয়ে এবং কিছু ওষুধ দিয়েছে এবং ওষুধগুলো পাশের দোকান থেকে কিনে নিলাম । ডাক্তার আমাদের কাছ থেকে ভিজিট নিতে চাইনি তারপরও আমার হাজব্যান্ড জোর করে ভিজিটটা দিয়ে দিয়েছে । কারণ আমাদেরকে নিয়মিত এখানে আসতে হবে ভিজিট না নিলে কেমন হয় । এখন ছেলের ফোন দেখা বন্ধ এবং সবসময় চশমা পরে থাকতে হবে তারপর যদি কিছুটা সমস্যা দূর হয় । সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
প্রথমেই আপনার ছেলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আপনার ছেলের চোখের সমস্যা জেনে খারাপ লাগলো। ছেলেকে নিয়ে চোখের ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরমর্শ নিয়েছেন এবং চোসমা দিয়েছে জেনে ভালো লাগলো। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলে সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এখন ডাক্তারের পরামর্শ মতই চলছে দেখি পরবর্তীতে কি হয় ।
মূলত এরকম এলার্জি সমস্যার কারণে আমারও চোখে সমস্যা হয় তবে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম সেটা বড় কোন সমস্যা নয়। তবে আপনার ছেলের ক্ষেত্রে ডাক্তার দুমাস চশমা ব্যবহারের কথা বলেছেন। দুমাস চশমা ব্যবহার করলে আর ওষুধগুলো খেলে আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে ভাগ্নের ফটোসেশন দেখে বুঝলাম ভাগ্নেটা খুবই স্মার্ট। যাই হোক মামার জন্য শুভকামনা রইল।
ধুলাবলির কারণে চোখের এলার্জি সৃষ্টি হয় । এলার্জি তো ঠিক হয়ে যায় কিন্তু চোখে যে পাওয়ার বেড়ে গিয়েছে এটাই হল ভয়ের বিষয় । ধন্যবাদ ভাইয়া দোয়া করবেন আমার ছেলেটার জন্য ।
বাচ্চাকাচ্চার এরকম ছোট সমস্যাগুলো আমরা অনেক সময় ইগনোর করি। পরে দেখা যায় সেগুলোই বড় আকার ধারণ করেছে। হয়তো বেশ কিছুদিন ধরে এই সমস্যা হচ্ছিল। যাই হোক ডাক্তারের কাছে গিয়ে ভালো হয়েছে। ও যেন সবসময় চশমা পড়ে থাকে। তা না হলে পাওয়ার দিন দিন আরো বেড়ে যাবে। চুল কেটেছে মনে হচ্ছে। খুব ভালো লাগছে দেখতে। দোয়া রইল।
গরম চলে আসছে এজন্য চুলগুলো কেটেই দিলাম । পাওয়ার ভালোই বেড়েছে আল্লাই জানে পরবর্তীতে কমবে কিনা ।
আপু প্রথমেই আপনার ছেলের চোখের সুস্থতার কামনা করছি। আপনার ছেলের চোখের এরকম সমস্যার কথা শুনে খারাপ লেগেছে। ডাক্তার চশমা ব্যবহার করার জন্য বলেছে জেনে ভালো লাগলো। আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে। ওষুধ নিয়মিত ভালোভাবে খাওয়াবেন আপু। দোয়া করি সব সময় যেন তার চোখ শীঘ্রই ভালো হয়ে যায়। ডাক্তার দেখানোর আগের মুহূর্তের তার দুষ্টামি করার দৃশ্য দেখে ভালো লাগলো।
সে আবার ছবি তোলার ওস্তাদ কোথাও গেলে ছবি তোলার জন্য রেডি হয়ে যায় ।
ডাক্তারের কাছে যেয়ে খুবই ভালো করেছেন। চশমার নিয়মিত পরতে বলবেন। তা না হলে চোখের পাওয়ার আরো বৃদ্ধি পাবে। আর এখন থেকেই বাবুকে ফোন দেখা থেকে দূরে রাখবেন। আপনার ছেলের সুস্থতা কামনা করছি আপু ।
ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য আর ও এখন নিজের থেকেই ফোন দেখা বন্ধ করে দিয়েছে ।
প্রথম কথা হলো রাত জাগার এই অভ্যাসটা যে করেই হোক বাদ দিতে হবে আপু। ছোট বাচ্চারা যদি এত রাত জেগে থাকে তবে শরীরের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। ধীরে ধীরে অন্য আরো অসুখ বাসা বাঁধবে। চশমাটা যেন সব সময় ব্যবহার করে ফানা এটার ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন। আর বাড়ির ওপরেই যেহেতু ডাক্তার আছে, যখন তখন হানা দিবেন যদি কোন প্রবলেম মনে হয়। হিহিহিহি। ভালো থাকবেন আপু।
রাত জাগাতো একেবারে ছোটবেলার অভ্যাস এটা তো কিছুতেই বন্ধ করতে পারছি না । আমাদের সবারই একই অবস্থা । আর ফোন অতিরিক্ত দেখার কারণে হয়তোবা চোখের এই অবস্থা ।
বাচ্চারা কোন কিছু বললে আমরা সহজে পাত্তা দেই না ।আমার মনে হয় সেটা আমাদের গুরুত্ব সহকারে শোনা উচিত। হয়তো বেশ কিছুদিন থেকে তার সমস্যাটা হচ্ছিল যার কারণে চোখে ব্যথা বলছিল। যাইহোক অবশেষে ডাক্তারের কাছে গিয়ে চোখটা দেখাতে পেরেছেন এবং চশমা দিয়েছে। মোবাইল এখন থেকে একটু কম দেখাই ভালো ।মোবাইল দেখার কারণেই বাচ্চাদের চোখের সমস্যা গুলো বেশি হয়।আর ডাক্তারের সঙ্গে পরিচয়ের ব্যাপারটা বেশ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ।
শেষ পর্যন্ত ডাক্তারের কাছে যেতেই হল মোবাইল দেখাটা অতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছিল এখন চোখের ক্ষতি তো হয়েই গেল।