★ঈদে বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি★
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজ আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঈদের ছুটিতে বাবার বাসায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া প্রসঙ্গে। আমরা সাধারণত সব সময় ঢাকাতে ঈদ করি। আমার হাজব্যান্ড নিজের বাসা থেকে অন্য কোথাও ঈদ করতে যাওয়াটা পছন্দ করে না। সে মনে করে নিজের বাসায় থাকবো মজার মজার খাবার রান্না হবে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসবে সেটাই এক ধরনের মজা। অন্যের বাড়িতে গিয়ে ঈদ করার মধ্যে কোন মজা নেই । এজন্য আমি খুব একটা বাসার বাইরে গিয়ে ঈদ করি না। তবে এইবার আমার বাবার বাড়িতে ঈদ করতেই হবে, কারণ আপনারা সবাই জানেন বেশ কিছুদিন আগে আমার বাবা মারা গিয়েছেন তাই বাসাটা একেবারে খালি আম্মা একা একা রয়েছে ছোট ভাইকে নিয়ে। আম্মা চায় যে আমি এবার তাদের সাথে ঈদ করি এবং আমারও ইচ্ছা আম্মার সাথে ঈদ করি এই জন্যই যাওয়া। আর আমার হাজব্যান্ড এবার আর যেতে না করেনি। এজন্য সেই রোজার প্রথম থেকেই বাসায় যাওয়ার জন্য মনটা কেমন যেন করছে, তবে এক ধরনের কষ্ট লাগাও কাজ করছে এই কষ্টটা অনেক বড় একটা কষ্ট । জীবনে এই প্রথম বাবাকে ছাড়া ঈদ করব এত তাড়াতাড়ি আমাদের জীবনে এই দিনটা আসবে তা কল্পনাই করতে পারিনি । তারপরও সবকিছু তো মেনে নিতেই হবে আস্তে আস্তে সব কিছু মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
সবার শপিং করা শেষ হয়ে গিয়েছে । আমি অনলাইন থেকেই বেশিরভাগ জিনিস কিনেছি এবং যাও কিছু বাকি ছিল তিন চারদিন গিয়ে গিয়ে শেষ করেছি। তবে ইদানিং যে গরম পড়েছে এর ভিতরে শপিং করাটা যেন একেবারে কঠিন একটা কাজ। তারপরও কিছু কিছু জিনিস না কিনলেই নয় তারপরও কিনে নিয়েছি। এদিকে আমার ছেলেটিও তার যত জামাকাপড় রয়েছে নতুন নতুন ড্রেস যেগুলো সে ঈদে পেয়েছে সবকিছুই সে প্যাকিং করছে ফরিদপুরে নিয়ে যাবে বলে। পাঞ্জাবি টুপি রেডি করেছে মামার সাথে গিয়ে ঈদের নামাজ পড়বে সেটা দেখে আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। আজ দুই তিন দিন ধরে সে শুধু লাগেজ গোছানোর চেষ্টা করছে আমিও চিন্তা করেছি আগে থেকে যদি লাগেজ গুছিয়ে না রাখি তাহলে কোনটা থেকে কোনটা বাদ পড়ে যাবে। ঈদের জন্য যেগুলো কেনা হয়েছে সবই নিয়ে যেতে হবে আমার ছেলের আবদার। সে তার তিন-চারটা জুতা স্যান্ডেল নতুন যা কিছু আছে এবং ১৫-১৬ সেট ড্রেস হয়েছে , সবই তার নিয়ে যেতে হবে একটাও রেখে যাওয়া যাবে না।
তারপর আবার টিকিট কাটার আবার একটা ব্যাপার আছে। কারণ ঈদের সময় সবারই দেশে যাওয়ার একটা হিড়িক পড়ে যায়। এ সময় টিকিট খুব একটা পাওয়া যায় না। তাই ভাবলাম যে আগে থেকে ফোন দিয়ে খোঁজখবর করে তারপর টিকিত কাটতে হলে কাটার ব্যবস্থা করব ।তবে একদিন কয়েকবার ফোন দিলাম তারা ফোনই ধরে না পড়ে তাদের অনলাইন পেজে গিয়ে দেখলাম যে তারা নাকি অনলাইনে কোন টিকিট বুকিং নিচ্ছে না। সরাসরি গিয়ে টিকিট কাটতে হবে। কি আর করার যেতে হলে তো সরাসরি গিয়ে টিকিট কাটতেই হবে। যে গরম পড়েছে রাস্তায় বের হওয়ার কথা চিন্তাই করা যাচ্ছে না। তারপরও হাজবেন্ড বললো যে আমি গিয়ে কেটে নিয়ে আসি। এদিকে ছেলেও বায়না ধরেছে তার বাবার সাথে যাবে। ওকে বারবার বলছি এত গরমের ভিতর যাওয়ার দরকার নাই কিন্তু সে যাবে। তারপর চিন্তা করলাম ওরা দুজন যেহেতু গরমের ভিতরে একা একা যাবে তাহলে আমি বসে থেকে কি করব আমিও যেতে চাইলাম।
তারপর দুপুর বেলা গোসল নামাজ পড়ে ছেলেটাকে খাইয়ে দিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম সাড়ে তিনটার দিকে। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে মনে করেছিলাম রাস্তায় না জানি কতটা রোদ হবে কিন্তু রিকশাওয়ালা গাছওয়ালা রাস্তা দিয়ে গিয়েছে যার কারণে গাছের নিচে থাকার কারণে খুব একটা রোদ পোহাতে হয়নি। অতটা খারাপ লাগেনি এবং রাস্তাটা একদমই ফাঁকা ছিল এই গরমের ভিতর দুপুর টাইমে রাস্তায় খুব একটা লোকজন প্রয়োজন ছাড়া বের হয় না । এজন্য রাস্তা ফাঁকা থাকার কারণে অল্প সময়ের ভিতর চলে যেতে পেরেছি। কাউন্টারে গিয়ে দেখলাম যে তেমন একটা ভিড় নেই এবং আমরা পাঁচ দিন পরের টিকিট কেটেছি এবং আমাদের মত অনেকে আছে যারা আগে থেকে কেটে রেখেছে। যার কারণে যেই সিটটা আমরা চেয়েছি সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে সাড়ে তিনটার টিকিট আমরা কেটেছি মনে হচ্ছে ইফতারিটা রাস্তায় করতে হবে। যাক ভিন্ন ধরনের একটা অভিজ্ঞতা হবে ভালই লাগবে। তারপর টিকিট কেটে আবার আমরা সেই রিকশাতেই ফিরে আসলাম। এখন সবকিছু প্যাকিং করে আল্লাহর রহমতে ভালই ভালই পৌঁছে গেলেই হয়।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
এবার মায়ের সাথে ঈদ করবেন জেনে আমার খুব ভাল লাগছে।আসলে বাবাকে ছাড়া এবার ঈদ করবেন মায়ের মনটা ভীষণ রকমের খারাপ থাকবে।আপনারা গেলে হয়ত কিছুটা স্বস্তি পাবে।তারপরেও সেই মানুষটির প্রিয় কোন খাবার রান্না করতে গেলে মনটা ঠিকই কষ্টে কেঁদে উঠবে।এ সময় মায়ের পাশে থাকা খুব জরুরি। অনেক ধন্যবাদ আপু। জেনে খুব ভাল লাগলো আপনি যাচ্ছেন।
আমিও সেটাই মনে করি যে নিজের বাড়ির তে ঈদ করার মাঝে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে সব সময়। আত্মীয়-স্বজন নিজেদের বাসায় বেড়াতে আসবে এটাই এক অন্যরকম আনন্দ। এটা জেনে ভালো লাগলো যে আপনার কেনাকাটা শেষ হয়ে গিয়েছে যদিও এখন অনেকেরই কেনাকাটা শেষ হয়নি সবাই শুধু কিনেই যাচ্ছে এই কেনাকাটা শেষ কোথায় হাহাহা। যাইহোক পরিবারের সাথে নিয়ে একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করুন, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার গ্রামীন সিমের এই এড এর গানটি যত শুনছি ততই ভালো লাগছে কেননা আর কদিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরব।।
আপনি তো দেখছি বাড়ি ফেরার জন্য খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন টিকিট কাটা শেষ।।
শুভ হোক আপনাদের ঈদ যাত্রা।।
বাবাকে ছাড়া প্রথম ঈদ হয়তো খুবই কষ্টে কাটবে। তবে এই সময় মা এবং ভাইয়ের পাশে যদি আপনারা থাকেন তাহলে তাদের ভালো লাগবে। প্রতিবার যেহেতু ভাইয়ার বাসায় ঈদ করা হয় এবার মা এবং ভাইয়ের সাথে সবাই মিলে ঈদ করলে তাদের ভালো লাগবে। হয়তো ভেতরের কষ্টটা একটু হলেও কমবে।
আপু বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুুতি সম্পূর্ণ করে ফেললেন। কিনা কাটা শপিং সবই শেষ। গাড়িরে টিকেট ও সংগ্রহ হয়ে গেছে। সুস্থভাবে বাড়ি গিয়ে সবার সাথে ঈদ করুন। সেই কামনা করি। ধন্যবাদ আপু।
এবারে ঈদ আপনি নিজের বাড়িতে ঈদ পালন করবেন জেনে ভালো লাগলো। তবে এই প্রথমবার বাবাকে ছাড়া ঈদ পালন করবেন যেন খারাপ লাগলো। যাই হোক এগুলো যেহেতু চিরন্তন সত্য তাই আমাদেরকে সবকিছু মেনে নিতেই হবে। দোয়া করি যেন আপনারা সুস্থ ভাবে নিজের বাড়িতে যেতে পারেন এবং ভালোভাবে ঈদের সময় গুলো কাটাতে পারেন ধন্যবাদ।
আসলে স্বপ্ন ছুটে যায় বাড়ির পিছে মঈদের সকলে বাড়িতে আসে আর এই অনুভূতিটা অনেক আনন্দের। পরিবারের সবাইকে সাথে ঈদের আনন্দটা পালন করুন এটাই দোয়া রইল
জার্নি শুভ হোক। আপনজনদের সাথে যেন আনন্দ-ভানো মুহূর্তের মধ্য দিয়ে ঈদের দিনগুলো অতিবাহিত করতে পারেন সেই দোয়া রইল। একমাস দীর্ঘ সাধনার পর মানুষজন নিজের বাসায় ফিরবে আপনজনদের সাথে ঈদ করবে এটাই সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। আর এই ভালোলাগা প্রত্যেকের জীবনে বয়ে আসুক। সুস্থ সুন্দর হোক আপনার পথ চলা।