ঢাকার নামকরা হাজী বিরিয়ানী খেয়ে আসলাম
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঢাকার নাজিরা বাজারের ঐতিহ্যবাহী হাজী বিরিয়ানী খাওয়ার অভিজ্ঞতা । বহু আগে থেকেই হাজী বিরিয়ানী নাম শুনে আসছি তবে কখনও খাওয়া হয়নি । এর আগে একবার যদিও ভেবেছিলাম যাব তখন আর যাওয়া হয়নি । ঢাকার হাজি বিরিয়ানী নাম সব জায়গায় বিখ্যাত । মানুষজন অনেক বিরিয়ানীর দোকানের সামনে দেখা যায় যে হাজী বিরিয়ানী নাম দিয়ে রাখে অথচ খাওয়ার পর দেখা যায় যে সেটা এমনি নরমাল বিরিয়ানী । অথচ হাজি বিরিয়ানীর নামে চালিয়ে দিতে চায় । এর আগে একটা গল্প শুনেছি সিলেটের একটা দোকানে ওরা লিখে রেখেছে ঢাকার হাজির বিরিয়ানী তখন যে খেতে গিয়েছে সে জিজ্ঞাসা করল এখানে কি ঢাকা থেকে হাজী বিরিয়ানির লোকজন এসে রান্না করে দিয়ে যায় নাকি । তখন সেই লোকটা একটু আমতা আমতা করে বলেছিল না এটা ঢাকার হাজী বিরিয়ানীর মতোই বিরিয়ানী এজন্য আমরা নাম দিয়েছি । ঢাকার হাজী বিরিয়ানী এই নামে অনেকেই বিরিয়ানী বিক্রি করে থাকে সবকিছু মিলিয়ে এই বিরিয়ানী খাওয়ার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল ।
বেশ কিছুদিন আগে আমার দুই বোন আমার বাসায় এসেছিল ওদের সাথে অনেক ঘোরাফেরা করেছি । একদিন সরওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলাম বিকেল বেলা । ঘুরতে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল । সেখানে দেখলাম যে মেলার কাজ কাম চলছে তাই একটু সময় নিয়ে সেখানে ঘোরাফেরা করে অনেকটা সময় থেকেছিলাম । তারপর হঠাৎ করে আমার খালাতো ভাই বলল যে চল আমরা হাজী বিরিয়ানী খেয়ে আসি । আমার আবার খাওয়ার কথা শুনলে সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত ভালো লাগেনা ।ওর এক কথাতেই আমি রাজি হয়ে গেলাম এবং আমি আমার হাজব্যান্ডকে বললাম সেও রাজি হল । এরপর সবাই মিলে রওনা দিলাম বিরিয়ানী খাওয়ার উদ্দেশ্যে । আমাদের এখান থেকে ওখানে যেতে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে হবে তারপরও আমরা সবাই মিলে কয়েকটি রিকশা নিয়ে রওনা দিয়ে দিলাম ।যেতে যেতে একটা সময় আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম ।
অলিগলি পার হয়ে আমরা একেবারে দোকানের সামনে গিয়ে থামলাম । প্রথমে তো আমি দোকান টা দেখে বিশ্বাসই করতে পারিনি যে এত নাম ডাক ওয়ালা দোকানের এতটুকু জায়গা দেখে । কারণ আমি ভেবেছিলাম বড় কোন রেস্টুরেন্ট হবে হয়তো । কিন্তু ছোট্ট একটা দোকান কয়েকটা টেবিল চেয়ার রেখে দিয়েছে । ছোট্ট দোকান হলে কি হবে সেখানে লোকজনের জন্য কিছু দেখাই যাচ্ছে না এতটা পরিমাণে ভিড় । দোকানের লোকজন ডেকচিতে ভরে শুধু বিরিয়ানী দিয়েই যাচ্ছে দিয়েই যাচ্ছে । দূর থেকে দেখলাম যে ছোট্ট একটা প্লেটে করে ওরা বিরিয়ানী দিচ্ছে এবং সেটা দেখে মনে মনে একটু দুঃখ পেলাম । একটা প্লেটে ওরা একেবারে অল্প পরিমাণে বিরিয়ানী দিচ্ছে এবং দাম রাখছে ২৪০ টাকা করে । তারপর আমরা দূর থেকে দাঁড়িয়ে শুধু দেখছি এবং ভিড়ের জন্য দোকানের ভিতর ঢুকতেই পারছি না ।
এরপর আমার খালাতো ভাই বলল যে এর পাশে আরও একটা দোকান রয়েছে সেখানে গেলে হয়তো বিরিয়ানী খাওয়া যাবে প্রায় একই টেস্ট । ওরা সেখানে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখল যে সেখানে সিট খালি রয়েছে । কিন্তু আমাদের কথা হল এত কষ্ট করে এত দূর যখন এসেছি তখন অন্যটা খেয়ে শুধু শুধু নাম করব কেন । কষ্ট করে হলেও হাজী বিরিয়ানী খেয়ে যাব । তারপর আমরা আরো বেশ খানিকটা সময় বাইরে অপেক্ষা করলাম । আমার খালাতো ভাই ও আমার হাজবেন্ড ওরা গিয়ে ভিতরে টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলো । হোটেলের লোকজন এই বুদ্ধিটা ওদেরকে দিয়েছে আপনারা যদি টেবিল পেতে চান তাহলে একজনের খাওয়ার আগে তাদের টেবিলের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন । একেবারে বিয়ে বাড়ির মত সিস্টেম একদল উঠবে আর একদল বসবে । এরপর ওরা দুজন দু টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত দুটো টেবিল খালি হলে আমরা সেখানে গিয়ে ঝটপট বসে পড়লাম ।
আমরা খাবার অর্ডার করলাম প্রথমে দূর থেকে ভেবেছিলাম অল্প খাবারই হবে সেই হিসেবে আমরা খাবার একটু বেশি অর্ডার দিলাম। কিন্তু যখন আমরা খেতে শুরু করলাম তখন দেখলাম যে খাবার মোটামুটি অনেক বেশিই ছিল একটা প্লেট একজনের হয়ে গিয়েছে এবং খাবারটা অনেক মজাই ছিল ।হাজী বিরিয়ানী এই মজার কারণে হয়তোবা লোকজন দূর-দূরান্ত থেকে কষ্ট করে হলেও খেতে আসে । আমরা সাথে বোরহানিও নিয়েছিলাম সাথে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচও ছিল ।সবকিছু মিলিয়ে খাবারটা আসলে অনেক মজার ছিল । সবাই মিলে অনেক দূর পর্যন্ত গিয়ে ঐতিহ্যবাহী হাজী বিরিয়ানী খেয়েছি ভালো মজাও পেয়েছি ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
পরিবারের সদস্যদের সাথে ঢাকার বিখ্যাত হাজির বিরিয়ানি খেয়ে এসেছেন এটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো আপু। আসলে ঢাকায় থাকা হয় আর যদি হাজির বিরিয়ানি না খাওয়া হয় তাহলে যেন একটা কমতি থেকেই যাই। বিখ্যাত এই বিরিয়ানি খেতে আমিও একদিন গিয়েছিলাম।
ঠিকই বলেছেন এজন্য কষ্ট করে করে হলেও দূরে গিয়ে খেয়ে আসলাম ।
হাজী বিরিয়ানী আমি দুইবার খেয়েছি। আপু সত্যি হাজী বিরিয়ানী যদিও একটু দাম বেশি নেয় তবে খেতে অনেক বেশি মজা লাগে। দোকানে অনেক ভির ছিলো। অবশেষে ছিট পেয়েছেন এবং খেতে পেরেছেন জেনে খুশি হলাম। আপনার অনুভূতি গুলো এক কথায় অসাধারণ ছিলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
আসলেই অনেক টেস্টি ছিল সবাই মিলে গিয়েছিলাম এবং খেতেও ভালো লেগেছিল ।
হাজী বিরিয়ানির অনেক নাম শুনেছি তবে বিরিয়ানির টেস্ট কেমন জানি না তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম সেখানকার বিরিয়ানি খেতে গেলেও ছোটখাটো একটা যুদ্ধ করতে হয় হা হা হা। হ্যাঁ যেহেতু দুই বোন গিয়েছেন হাজী বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য তাই যদি একটু দাঁড়িয়ে থেকেও সেই হাজী বিরিয়ানিটা খাওয়া যায় তাহলে দাঁড়িয়ে থাকাই ভালো অন্যটা কেন খাবেন। তবে সব মিলিয়ে যে শেষ পর্যন্ত টেবিলে জায়গা পেয়েছিলেন সেটা জেনে ভালো লাগলো।
অবশ্যই একবার ট্রাই করে দেখবেন খেতে ভালই লাগে ।
আমাদের এখানেও প্রচুর হাজী বিরিয়ানির দোকান রয়েছে, তবে অরজিনাল হাজী বিরিয়ানির দোকান খুঁজে পাওয়া অনেক মুশকিল আপু। যাইহোক, আপনারা যে নামকরা দোকানে গেছিলেন, সেটা অবশ্যই আরেকটু বড় করে করা উচিত ছিল। আর এত কম জায়গায় ভিড় হবে, এটাই তো স্বাভাবিক আপু। তবে শেষ পর্যন্ত যে আপনারা বিরিয়ানি খেতে পেরেছেন এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু ছিল বলছেন, তার মানে কষ্ট করা সার্থক হয়েছিল আপনাদের।
অরিজিনাল হাজী বিরিয়ানি তো ঢাকাতেই রয়েছে পুরান ঢাকায় এজন্য তো গিয়ে খেয়ে আসলাম ।
আচ্ছা আপু, অরিজিনাল হাজী বিরিয়ানি খেতে পারলে তো ভালো কথা।
আপু আমরা সেদিন সবাই মিলে দীর্ঘদিনের নাম করা ঐতিহ্যবাহী হাজির বিরিয়ানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম ।তবে বিরিয়ানিটা খেতে কিন্তু বেশ ভালই ছিল। যদিও ভিড়ের কারণে বেশ কষ্ট পেতে হয়েছিল ।যাইহোক অবশেষে আমাদের ইচ্ছেটা পূরণ হয়েছিল। বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে সেই অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
আসলে সেদিন ভিড়ের ভিতর কষ্ট করে যেয়ে খাওয়ার পরে কিন্তু ভাল লেগেছিল সময়টা ভালো কেটেছিল ।