ঈদের আগে বেইলি রোডে এলোমেলো ঘোরাঘুরি

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।




আজকে আবার আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ শেয়ার করতে চলে এলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঈদের আগে বেইলিরোডে গিয়ে কিছু সময় কাটানো । বেইলি রোডে গিয়েছিলাম একটা কাজে সে কাজ তো আর হলো না এজন্য একটু ঘুরাফেরা করে তবেই বাসায় ফিরে চলে আসলাম । গতকালকে হাজবেন্ড একাই বেইলি রোডে গিয়েছিল হাঁটাহাঁটি করার জন্য । সে সেখান থেকে ফিরে এসে বলল যে বেইলিরোডে দেখলাম রাস্তার পাশ দিয়ে বসে মেয়েরা হাতে মেহেদি দিচ্ছে সেটা শুনে আমার মনে হল যে আমিও গিয়ে একটু দিয়ে আসবো । সাথে সাথে চলে গেলাম আমাদের নিচের দোকানে সেখান থেকে একটা মেহেদী কিনে নিলাম । যদিও ওরা মেহেদী নিজেদের টাই দেয় তারপরও আমি নিজের জন্য একটা কিনে রাখলাম যদি নিতে না পারি তবে নিজেরটাই কোনরকমে নিয়ে রাখব ।

IMG-20240409-WA0004.jpg


গতকালকে যেহেতু রাত হয়ে গিয়েছিল সেজন্য আর মেহেদী পড়তে যাওয়া হয়নি । আমি যেহেতু মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ পড়ি সে কারণে বাসায় আসতে আসতে আমার দেরি হয়ে যায় যার কারণে রাতের বেলা আর কোথাও যাওয়া হয় না । তারপরও গতকালকে বের হয়েছিলাম মৌচাক মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করার জন্য । সেখান থেকে কেনাকাটা করে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল যার কারণে আর যাইনি । কিন্তু আজকে আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে নামাজ পড়ে এসে তারপরে একটু বেইলিরোডে যাবো ঘোরাফেরা করবো ।আর যদি সুযোগ পাই হাতে একটু মেহেদী পরে আসবো । গিয়ে দেখলাম রাস্তায় পাশ দিয়ে লাইন ধরে ধরে মেয়েরা চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে রয়েছে হাতে মেহেদি পড়ানোর জন্য । আর সেখানে এতটা পরিমাণে ভিড় জমেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।

IMG-20240409-WA0000.jpg


একেবারে লাইন ধরে রয়েছে এবং ওরা এক একটা হাতে মেহেদি পড়ানোর জন্য ৫০০ করে টাকা নিচ্ছে আর একটু বেশি ভারী ডিজাইন হলে টাকার পরিমাণটাও আরো বেশি । তারপরও সেখানে যেন লোকজনের ভিড় সরানো যাচ্ছে না ।চার পাশ দিয়ে একটু পরপর এক একটা টেবিল চেয়ার নিয়ে সবাই বসেছে । অনেক লোকজন বসেছে মেহেদী পড়ানোর জন্য যতই লোকজন থাকুক না কেন ভিড়ের পরিমাণটাও অতটাই বেশি । ঢাকা শহরে এমন কোন জায়গা নাই যে যেখানে ভিড় ছাড়া আপনি যেতে পারবেন কোথাও কোনো কিছু দেখলে মানুষজন যেন একেবারে ঝড়ের মত এসে নেমে পড়ে । আমরা কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সেখান থেকে চলে আসলাম । ওই ভিড়ের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয় ।

IMG-20240409-WA0006.jpg

IMG-20240409-WA0005.jpg


এরপর আরো একটু হাটাহাটি করলাম । সামনের দিকে এগিয়ে যেতে দেখলাম যে একটা লোক সিরামিকের কিছু জিনিস বিক্রি করছে । এখানে ভালো ভালো জিনিস ওরা ভ্যানে করে বিক্রি করে । মাঝে মাঝে কিছু কিছু জিনিস দেখলেই পছন্দ হয়ে যায় সেখান থেকে নিতে ইচ্ছা করে । আমি ওগুলো দেখে একটু দাঁড়ালাম এবং সেখান থেকে দুটো মগ কিনলাম ও দুটো বাটি কিনলাম । এই জিনিসগুলো দেখলেই কেন জানি না আমার কিনতে ইচ্ছা করে । কিন্তু সব সময় তো আর কেন হয় না । আজকে দেখলাম যে লোকটা ভালো ভালো জিনিস নিয়ে বসেছে সে কারণে আজকে দাঁড়িয়ে জিনিসগুলো কিনে নিলাম ।

IMG-20240409-WA0001.jpg

IMG-20240409-WA0003.jpg


তারপর আরো কিছুদূর হাঁটতে চলে গেলাম সেখান থেকে ফিরে আসার পথে আবার দেখলাম যে একটা লোক মহিলাদের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই সেখানে বিক্রি করছে এবং সেখান থেকে দুই একটা ছবিও তুলে নিলাম । তারপর সেখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম একটা কফি শপে । সেখান থেকে ভেবেছিলাম কিছু একটা খাব । সেখানে প্রায় ১০-১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু লোকজনের ভিড় এতটা যে সিরিয়ালই পাওয়া যাচ্ছে না । একেবারে লাইন ধরে লোকজন দাঁড়িয়ে আছে । আর এই দোকানটা আমাদের বেইলিরোডে খুবই ফেমাস যার কারণে এখানের জুস ফালুদা কফি সবাই খাওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে । কতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর আর ধৈর্য কুলালো না বাসায় এসে বসে বসে আইসক্রিম খেয়ে নিলাম । ঈদের আগে এরকম এলোমেলো উল্টাপাল্টা ঘোরাঘুরি করতে এবং সবকিছু দেখতে আমার কাছে ভালই লাগে । যতক্ষণ পর্যন্ত ঈদ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের ভিড় যেন সব জায়গায় লেগেই থাকবে আর সেটাই দেখার জন্যই বের হওয়া ।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসOppo

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 5 months ago 

মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ শেষ করে বেইলি রোডে দারুন সময় উপভোগ করেছেন। আসলে রাতের বেলা শহরে ঘোরাফেরা করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। একটা ঠান্ডা পরিবেশ শান্ত সৃষ্ট যেটা সত্যিই উপভোগ্য হয়ে থাকে। আপনার কাটানো মুহূর্ত খুবই সুন্দর ছিল। আমাদের সাথে সেই সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

বেইলিরোডে সব সময় যেতেই ভালো লাগে তবে ঈদের সময়টা বেশি ভালো লাগে ।

 5 months ago 

মেহেদি ডিজাইন করে দিয়ে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে এ বিষয়টা আজকেই প্রথম জানলাম। আবার একটু ভারী ডিজাইন করলে সেক্ষেত্রে টাকার অ্যামাউন্ট বৃদ্ধি পায়। আপনার পোস্টের মাধ্যমে মজার বিষয়টি জানতে পারলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

৫০০ টাকা তো কমই নিয়েছে অন্যান্য জায়গায় আরো বেশি নেয় ।

 5 months ago 

অনেক তথ্য বহন করেছে আপনার আজকের এই পোস্টে। একদম অনেক বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। বিশেষ করে মেহেদি লাগানোর বিষয়টা জেনে অবাক হলাম। তবে যাই হোক পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সুযোগ হয়েছে, আবার জিনিসগুলো বেশ ভালো। সব মিলিয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপু।

 5 months ago 

আমাদের এদিকে সবসময় এরকম করে মেহেদি লাগায় ভালো লাগে। টাকা যতই নিক না কেন সুন্দরভাবে ওরা ডিজাইন টা করে দেয় সেটাই ভালো লাগে ।

 5 months ago 

আমি ইতিমধ্যে বেইলি রোডের কথা ফেসবুকে অনেকবার শুনেছি, কিন্তু কখনো এভাবে দেখা হয়নি। তবে আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে বেইলি রোডের সাথে পরিচিত হতে পারলাম। মেহেদী লাগানোর সিরিয়াল দেখে আমি তো অবাক হয়ে গেলাম। শুধু মাত্র মেহেদী লাগানোর জন্য এতো পরিমাণ ভীড় এর আগে কোনদিন দেখিনি। আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে নতুন নতুন কিছু দেখতে পারলাম।

 5 months ago 

ঢাকা শহরে বেইলি রোড অনেক নামকরা যদি কখনো সময় হয় তাহলে একবার ঘুরে যাবেন ।

 5 months ago 

ঈদের আগেই আপনি দেখছি বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছেন বেইলি রোডে। ঈদের আগের মুহূর্তে কিন্তু অনেক মানুষের ভিড় থাকে প্রত্যেকটা জায়গায়। তবে রাস্তার পাশে মেহেদি দেওয়ার বিষয়টা আমার কাছে একটু বেশি অন্যরকম লেগেছে। মেয়েগুলো দেখছি চেয়ার টেবিল নিয়ে রাস্তার পাশেই বসেছিল মেহেদী লাগানোর জন্য। যদিও আপনি হাতে মেহেদি লাগানোর জন্য গিয়েছিলেন, কিন্তু ভিড়ের কারণে দিতে পারেন নি শুনে খারাপ লাগলো। তবে যাই হোক ঘোরাঘুরি টা ভালোভাবে করেছিলেন। আর সিরামিকের জিনিস তো দেখছি রাস্তার পাশে বিক্রি করছে। ভালোই করেছেন ওখান থেকে কিছু কিনে।

 5 months ago 

আমাদের এদিকে এটা সব সময় হয়ে থাকে আপু। ঈদের সময় ওরা সবসময় এভাবে লাইন ধরে বসে বসে মেহেদি দেয় সেটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে । আবার আমাদের বাসায় এসেও লিফলেট দিয়ে যায় কোথায় কোথায় দেয়া হবে ।

 5 months ago 

ঘুরাঘুরি করার মজাটাই এমনিতে আলাদা হয়। আর আপনি দেখছি খুব ভালো ঘুরাঘুরি করেছেন। রাতের বেলায় আশেপাশে এরকম ভাবে ঘুরাঘুরি করতে অনেক ভালো লাগে আমার কাছে। ঢাকাতে মনে হয় রাস্তার পাশে মেয়েরা মেহেদি লাগানোর জন্য বসে। তবে এক হাতে মেহেদি লাগানোর দাম তো দেখছি অনেক বেশি। আমি তো মনে করি এরকম ভাবে মেহেদি লাগানোর থেকে গ্রামে যখন সবাই একসাথে বসে মেহেদি লাগায়, একে অপরকে লাগিয়ে দেয়, সেই আনন্দটাই সব থেকে বেশি হয়।

 5 months ago 

এটাতো কমই চেয়েছে অন্যান্য জায়গায় আরো বেশি ছিল এবং ওরা খুব সুন্দরভাবে ডিজাইনটের দেয় এজন্য টাকাটাও একটু বেশি নেয় ।

 5 months ago 

বাহ রাস্তার ধারে বসে বসে মেয়েদের মেহেদি দেওয়ার ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। এভাবে কখনো দেখা হয়নি। আপনার পোস্টের মাধ্যমে নতুন কিছু জানতে পারলাম ।তবে রাস্তার পাশে বসে বসে মেহেদি দিচ্ছে তারও আবার এত দাম জেনে বেশ অবাক হলাম। যাই হোক বেশ ভালো ছিল ব্যাপারটা । সব মিলিয়ে বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছেন বোঝা যাচ্ছে।ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60327.79
ETH 2348.25
USDT 1.00
SBD 2.53