★নবাবী ক্রিম সেমাই রেসিপি★
আজ আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি রেসিপি নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি । রেসিপি পোস্টগুলো করতে আমার কাছে সবসময় অনেক ভাল লাগে এজন্য আমি রেসিপি পোস্টগুলো অন্য পোস্টের তুলনায় একটি বেশি করি । আজকে আমি আপনাদের সামনে শেয়ার করব নবাবী ক্রিম লাচ্ছা সেমাই । ঈদের সময় তো সবসময়ই সেমাই রান্না করা হয়ে থাকে সব সময় তো দুধ সেমাই রান্না করা হয় । দুধ সেমাই রান্না করলে বেশিরভাগ সময় সেটা আমাকে শেষ করতে হয় কারণ আমার হাজব্যান্ড মিষ্টি জাতীয় জিনিস খুব একটা পছন্দ করেনা । আবার কেউ আসলেও খুব একটা খায় না এজন্য সেটা আমাকে শেষ করতে হয় । এজন্য আমি এবার ইচ্ছা করে দুধ সেমাই রান্না করিনি । ভাবলাম যে একটু ভিন্ন করে সেমাই রান্না করি । আর এভাবে করে লাচ্ছা সেমাই রান্না করলে খুবই মজা লাগে খেতে । বিশেষ করে ভিতরে ক্রিমটা খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে এবং এটা আমি আমার নিজের হাতে বানানো কাস্টার্ড পাউডার দিয়েই তৈরি করেছি । সেটা খেতে আসলেই অনেক সুস্বাদু হয়েছিল ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
লাচ্ছা সেমাই
চিনি
কাস্টার্ড পাউডার
কনডেন্সড মিল্ক
লিকুইড মিল্ক
পাইডার মিল্ক
ঘি
কার্যপ্রণালী
প্রথমে আমি হাফ কাপ পরিমাণ চিনি নিয়েছি এবং চিনিটাকে আমি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে গুড়ো করে নেব, যাতে সেমাই এর ভেতরে দেয়ার সাথে সাথে চিনিগুলো একেবারে মিশে যায় । তারপর চিনিগুলো গুঁড়ো করা হয়ে গেলে এক সাইডে রেখে দিয়েছি । এরপর চুলায় একটি করাই বসিয়ে তার ভেতরে ঘি দিয়ে দিয়েছি এবং ঘি এর ভিতরে দুই প্যাকেট পরিমাণ সেমাই ঢেলে দিয়েছি এবং সেমাইটা ঘি এর সাথে নেড়েচেড়ে মেশাতে মেশাতে তার ভিতরে চিনির গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছি । এরপর আরো ভালো মতো মিশিয়ে তার ভেতরে তিন টেবিল চামচ পরিমাণ গুড়া দুধ দিয়ে দিয়েছি ।
এরপর গুঁড়ো দুধ দিয়ে সেমাই গুলোকে বেশ খানিকটা সময় সবকিছু মিলিয়ে ভালোমতো ভেজে নিয়েছি । যখন সেমাইয়ের কালার টা চেঞ্জ হয়ে গিয়ে সেমাই গুলো একেবারে মুচমুচে হয়ে যাবে তখন বুঝতে হবে যে আমার ভাজা হয়ে গিয়েছে । তখন একটা ছড়ানো বাটি নিয়েছি এবং সেই বাটির ভিতর ঢেলে নিয়ে একেবারে সুন্দর ভাবে পুরো বাটি ভরে সেমাই গুলো বিছিয়ে দিয়েছি । সাথে ছোট্ট একটি বাটিতেও কিছু সেমাই পাতলা করে বিছিয়ে দিয়েছি । এখানে আমি দুই রকম ভাবে সেমাই টা সাজাবো একটার ভিতরে ক্রিম বেশি হবে এবং একটার ভিতরে ক্রিম স্বাভাবিক থাকবে ।
এরপর চুলায় আরেকটি করাই বসিয়ে তার ভেতরে এক লিটার পরিমাণ দুধ জ্বাল করে হাফ লিটার করে নিয়েছি এবং দুধটা ঠান্ডা করে নিয়েছি । তারপর তার ভেতরে হাফ কাপ পাউডার মিল্ক, তিন টেবিল চামচ কাস্টার্ড পাউডার ও হাফ কৌটা কনডেন্সড মিল্ক ঢেলে দিয়েছি । এখন পর্যন্ত আমি চুলার জ্বালটা ধরাইনি ।
এরপর সব কিছু দিয়ে নেড়েচেড়ে ভালো মতো মিশিয়ে নিয়ে চুলার জ্বাল ধরিয়ে দিয়েছি । অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই নাড়তে নাতে দেখা যাবে যে দুধটা ঘন হতে শুরু করেছে । এখানে অনবরত নাড়তে হবে কারণ নাড়া থামলে দলা পাকিয়ে যেতে পারে । এজন্য অনবরত নাড়তে নাড়তে যখন প্রায় ঘন হয়ে আসবে তখন বুঝতে হবে যে রান্নাটা প্রায় হয়ে এসেছে । এটা একটু পাতলা থাকলেই চুলাটা বন্ধ করতে হবে তা না হলে ঠান্ডা হলে আরো ঘন হয়ে যাবে ।
এরপর ক্রিমটা একটু গরম গরম থাকতে সেমাইয়ের উপরে ঢেলে নিয়েছি । বড় বাটির ভেতরে আমি একেবারে বেশি পরিমাণে ক্রিম ঢেলে দিয়ে পুরো সেমাইটাকে ঢেকে দিয়েছি এবং ছোট বাটিতে প্রথমে এক লেয়ার পর্যন্ত দিয়েছি । পরে আবার একটু সেমাই বিছিয়ে আরো এক লেয়ার পর্যন্ত ক্রিম দিয়ে দিয়েছি । ক্রিম এর উপরে আবার হালকা হাতে সময়গুলো বিছিয়ে দিয়েছি এবং ছোট বাটিতে কয়েকটা লেয়ার পর্যন্ত আমি সেমাই ও ক্রিম দিয়েছি । বড় বাটির ওপরে সেমাই উপরে থাকবে এবং ছোট বাটিতে ক্রিম উপরে থাকবে এবং পাশ দিয়ে হালকা হালকা করে আমি সেমাই গুলো বিছিয়ে দিয়েছি ।
উপরের ছবিতে দেখতেই পারছেন আমার দুটো বাটিতে সেমাই সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করা হয়ে গিয়েছে । এরপর বাটিগুলো ঢাকনা দিয়ে ঢেকে সুন্দরভাবে ফ্রিজে ঠান্ডা হতে দিতে হবে । এই সেমাইগুলো ঠান্ডা ঠান্ডা খেতে বেশি ভালো লাগে ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
আপু আপনি খুব সুন্দর একটি মজার রেসিপি শেয়ার করেছেন। ক্রিম ই এই সেমাই কখনো খাওয়া হয়নি। তাই আপনার রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজা হয়েছে। ক্রিম টা আপনি নিজেই তৈরি করেছেন শুনে আরো বেশি ভালো লাগলো আপু। আমি অবশ্য বাসায় একবার এই সেমাইটি ট্রাই করবো। আপনার বাটিটাও খুব সুন্দর আপু 😊।
এই সেমাই এর প্রধান আকর্ষণ হলো ক্রিম । ক্রিমটা নিজে তৈরি করে সুন্দরভাবে দিলে খেতে খুবই ভালো লাগে । অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য । আর বাটিটা আসলেই অনেক সুন্দর সামনাসামনিও ।
আপনার সেমাই রেসিপি দেখে তো আমার জিভে জল চলে এসেছে। এই ধরনের সেমাই কখনো খাওয়া হয়নি।নবাবী ক্রিম সেমাই রেসিপি। সেমাই এর প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য।
এ সেমাই গুলো খেতে খুবই মজা একবার তৈরি করে দেখবেন ভালো লাগবে । ধন্যবাদ।
আপনি খুবই লোভনীয় একটা খাবার তৈরি করেছেন, যা দেখে আমার তো খুব খেতে ইচ্ছে করতেছে। নবাবী ক্রিম সেমাই রেসিপি আগে কখনো খাওয়া হয়নি আমার। তবে আপনার রেসিপি পোষ্টের মাধ্যমে দেখে ইচ্ছে করছে খেয়ে নিতে। দেখে বুঝতে পারতেছি অনেক মজা করে খাওয়া হয়েছিল নবাবী ক্রিম সেমাই রেসিপি টা। উপস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের মাঝে এত সুন্দর ভাবে তুলে ধরলেন দেখে খুব ভালোই লাগলো।
খুবই মজা হয়েছিল তৈরি করে একবার খেয়ে দেখতে পারেন ভালই লাগবে । ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য ।
আপু এই ঈদে আমিও নবাবি সেমাই করেছি।সবাই খুব মজা করে খেয়েছে।তবে আমি চিকন সেমাইটা দিয়ে করেছি।রেসিপি আমিও শেয়ার করবো।আপনি লাচ্ছা সেমাই দিয়ে করেছেন।খুব মজার হয়েছে খেতে বেশ বুঝতে পারছি।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মজার এই সেমাই রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আমি চিকন সেমাই দিয়ে কখনো করিনি সেটা দিয়ে করলেও মনে হয় মজাই হয় । আপনার রেসিপিটি দেখার অপেক্ষায় রইলাম আপু ।
বাহ্ চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন তো। আসলে মাঝে মাঝে এমন করে লাচ্ছা সেমাই রান্না করে খেলে কিন্তু খারাপ হয় না। ক্রিম দিয়ে আর কাসটার্ড পাউডার দিয়ে এভাবে কখনও সেমাই রান্না করে খাওয়া হয়নি। আমার কাছে কিন্তু রেসিপিটি বেশ ইউনিক মনে হচেছ। ধন্যবাদ এত সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
অনন্যা সেমাই থেকে এ সেমাই রান্না করা অনেকটাই ঝামেলা এজন্য খুব একটা করা হয় না । ঈদ আসলে কিংবা ওকেশনালি করা হয় ।
নতুন কিছু শিখতে পারলাম আপু আপনার আজকের এই রেসিপি তৈরির মধ্য দিয়ে। যেখানে আপনি লাচ্ছা সেমাই আর বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে দারুন ভাবে তৈরি করে দেখিয়েছেন আজকের রেসিপি। রেসিপি তৈরি করার প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করেছেন, তাই ব্লগটাও হয়েছে অসাধারণ।
লাচ্ছা সেমাই আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগে না তবে এভাবে করে করলে খুব ভালো লাগে খেতে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
নবাবী ক্রিম সেমাই রেসিপি দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে আপু। সেমাই আমার খুব পছন্দ। বিকেলের নাস্তায় সেমাই খেতে দারুণ লাগে আমার। আপনার রন্ধন প্রক্রিয়া এককথায় দুর্দান্ত লেগেছে আমার কাছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব ইয়াম্মি লেগেছে। রেসিপির উপস্থাপনা এবং পরিবেশনাও চমৎকার হয়েছে। ধাপে ধাপে এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
রেসিপিটা দেখে লোভ সামলাতে পারছি না। আপনার রেসিপিটা দেখতে অনেক লোভনীয় হয়েছে। রেসিপি কালারটাও কিন্তু খুব সুন্দর এসেছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।