আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার ভাইয়ের বিড়াল গুলো নিয়ে কিছু কথা ও তাদের ফটো সেশন । গতবার যখন শীতের সময় ফরিদপুরে গিয়েছিলাম তখন এই বিড়াল গুলো দেখলাম বেশ বড় হয়ে গিয়েছে । সেই ছোটবেলায় যখন জন্ম নিয়েছিল তার কিছুদিন পরে এই বিড়াল গুলো দেখেছি । তখন বিড়ালগুলো অনেক কিউট ছিল এবং দেখলে আদর করতে ইচ্ছা করত । আমার আবার দূর থেকে দেখতেই ভালো লাগে যতই কিউট হোক না কেন বিড়াল কাছে আসলে কেমন যেন ভয়ও লাগে আবার গা ঘিন ঘিন করে । কিন্তু বাসায় যখন যাই তখন এই বিড়াল দুটোর অত্যাচার একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে যেতে হয় ।সারাক্ষণ কাছাকাছি এসে ঘেষাঘষি করে কোলে উঠে বসে থাকে । আবার শীতের সময় হলে লেপের নিচ থেকে বের হতে চায় না ।ভাই আবার আদর দিয়ে দিয়ে বিড়াল গুলোকে মাথায় উঠিয়ে রেখেছে । দেখা গেল সবাই বসে আছে দৌড় দিয়ে এসে ভাইয়ের কোলে উঠে বসে থাকে এবং সে তার কম্বলের নিচে এমনভাবে বিড়ালটাকে রাখে বোঝার উপায় নাই যে ওর সাথে কিছু রয়েছে ।

সে আবার কম্পিউটারে যখন কাজ করে তখন বিড়ালগুলোকে কোলে করেই কাজ করে । বিড়াল আসলে এমন একটি পোষা প্রাণী যে এদেরকে কে বেশি আদর করে ওরা সেটা বুঝতে পারে । আমরা যখন দেখলে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি এজন্য আমাদের কাছে খুব একটা ঘেষতে চায় না । যে আদর করে তার কাছে যায় । বাসায় যেমন আম্মা রয়েছে আম্মার কাছে যায় খাবারের জন্য কখন খাবার দিবে। যতক্ষণ না দেয় ততক্ষণ মিউ মিউ করতেই থাকে । আবার আমাদের যদি কোথাও কোন দাওয়াত থাকে তখন তাদেরকে বাসায় রেখে যেতে হয় তখন বাসাও তেমন খাবারের আয়োজন থাকে না ।আমরা যেখানে যাই দাওয়াত খেতে সেখান থেকে ওদের জন্য আবার খাবার নিয়ে আসি । এই কাজটা করে আমার আম্মা । আম্মা যদিও বিড়াল গুলোকে দূরে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু তারপরও মনে মনে কিন্তু তাদেরকে ভালোইবাসে । তারা না খেয়ে থাকবে দেখে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসে প্যাকেট করে ।

ভাই নিজে যা খাবে তার অর্ধেক অংশ বিড়ালকে দিবে । আবার দেখুন গলায় বেল্ট পরিয়ে রেখেছে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে বেল্টগুলো কিনেছে । আমরা বাইরে গিয়েছি এসে শুনি যে একটা বিড়াল হারিয়ে গিয়েছে খুঁজে পাচ্ছেনা । আমার ভাই চারিদিকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে আর অন্যদিকে তার আরেকটা যে জোড়া রয়েছে সেটা সারা বাড়ি চিৎকার করে মাথায় করে নিচ্ছে । আর চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করছে । ওরা একেবারে ছোটবেলা থেকে দুজন দুজনকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। দুজন দেখা গেল যে একটা সময় বল খেলে আবার দুজনে একসাথে শুয়ে থাকে মারামারি করে এটা দেখতেও কিন্তু ভালো লাগে । এরপর অনেক খোঁজাখুঁজির পরে একটাকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল তা না হলে যে আমার ভাই আর ওর ছোট সঙ্গীর যে কি হতো ।

অতিরিক্ত শীতে হলে ওরা ছাদে চলে যায় রোদে গিয়ে রোদের ভিতর টানটান হয়ে শুয়ে থাকে সে দৃশ্যটা দেখতেও ভালো লাগে । ওরা রোদের ভিতর এপাস-উপাস উল্টেপাল্টে শুয়ে থাকে সেটা আমরা খুব মনোযোগ সহকারে দেখেছি এবং কিছু ছবি তোলারও চেষ্টা করেছি । ওরা মনে হয় ছবি তোলাও বোঝে । আমি যখন ছবি তোলার জন্য ফোনটা ওদের দিকে রেডি করেছি দেখুন কত সুন্দর করে ফোনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে । প্রথমে একটা বুঝেছে পরে দ্বিতীয়টা সুন্দরভাবে তাকিয়ে ছবিটা তোলা শেষ করল ।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো বেশ কিছুদিন হয়ে গেল এর একটা বিড়াল নাই হয়ে গিয়েছে । হঠাৎ করে একদিন একটা অসুস্থ হয়ে পড়ল এবং কেমন যে ছটফট করতে লাগলো । আমার ভাই সাথে সাথে ওকে নিয়ে হসপিটালে দৌড়ালো । সেখানে গিয়ে ওকে অনেক চিকিৎসা দিল অনেক রাত পর্যন্ত স্যালাইন পুষ করেছে যত সময় বেড়ালকে নিয়ে হসপিটালে থাকতে হয়েছে সে সেটা করেছে । কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাসায় নিয়ে আসলো কিন্তু ভোরের দিকে বিড়ালটা ছটফট করতে করতে চোখের সামনেই মারা গেল । সেই বিড়ালটা যখন মারা গেল তখন আমার ভাইয়ের যে কি কান্না সেটা আপনারা না দেখলে বুঝতেই পারবেন না । আর ওর সঙ্গী বিড়ালটাও তো দুঃখে একেবারে কেমন যেন হয়ে গিয়েছে সারাদিন শুধু মিউ মিউ করে ডাকতে থাকে । বেশ কয়েকদিন এরকম মনমরা ছিল এখন আবার ঠিক হয়েছে । এখন একটা বিড়াল রয়েছে বাসার ভিতরে বিড়াল গুলো দেখতে ভালো লাগে কিন্তু যখন জ্বালাতন করে তখন মনে হয় কি বাসা থেকে তাড়িয়ে দেই । এগুলোর মায়া একবার পড়ে গেলে এগুলো ছাড়া থাকাও বেশ কষ্টকর । আমার ছেলেটাও বিড়াল গুলোকে খুব ভালোবাসে মাঝে মাঝে বলে যে মামার মত আমিও বিড়াল পুষবো । কিন্তু বিড়াল পোষা আমার একদমই পছন্দ না ।