আমার বাসায় নতুন অতিথি এসেছে,10%shy-fox
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজ আমি আপনাদের সামনে একটি ভিন্ন ধরনের পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি। আমার বাসায় নতুন অতিথি আসা নিয়ে আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করব। এ ধরনের অতিথি সচারচর মানুষের বাসায় সব সময় আসে না আর ভাগ্যক্রমে এরকম অতিথি আমার বাসায় চলে এসেছিল। আমি তো খুবই খুশি এরকম অতিথি পেয়ে। বেশ কিছুদিন আগে আমি আমাদের বাসাতে ফরিদপুরে গিয়েছিলাম। তখন আমি আর আমার বোন গিয়েছিলাম গিয়ে আমরা ৮ থেকে ১০ দিন ছিলাম। আর দশ দিন থাকার পরে আমার বোন আমাদেরকে রেখে আগেই চলে আসে। আমি ভেবেছিলাম আমি আরো সপ্তাহ ১০ দিন থেকে যাব। কিন্তু হঠাৎ করেই চলে আসতে হয়েছে।
আমি যখন ওখানে ছিলাম তখন আমার ছেলেটার শরীর হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যায়। তাই ওর বাবা সাথে ফোনে কথা বলার সময় ওর বাবা বাচ্চাটাকে খুশি করার জন্য একটা খবর দেয়, ওর বাবা ছেলেকে বলে বাবা জানো আমাদের বাসায় কি হয়েছে তখন আমিও শোনার জন্য অস্থির হয়ে গিয়েছি কি হয়েছে। তখন ওর বাবা বলল যে আমাদের বাসার বাগানে একটি গাছে টুনটুনি পাখিতে চারটা ডিম পেড়েছে। সেটা শুনে আমার কি যে ভালো লাগছে আমি বারবার ওকে বলছি যে তুমি ছবি তুলে রেখো আমাদের জন্য কারণ আমাদের আসতে আরো ৮-১০ দিন সময় লাগবে। তখন যদি আমরা এসে দেখতে না পারি তাহলে খুবই খারাপ লাগবে ।তখন ওর বাবা ফোন নিয়ে ক্যামেরা দিয়ে আমাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করে কিন্তু পাখিটার বাসাটা এতটাই ছোট যে তার ভেতর থেকে দেখাই যাচ্ছিল না ।আর আমি মনে মনে ভাবছি যে এতদিন পরে বাসায় গেলে হয়তো আর ডিম এবং বাচ্চা কোন কিছুই দেখতে পাবো না ।তখন ওর বাবাকে বললাম যে তুমি ছবি তুলে রেখো আমরা এসে দেখব।
পরের দিন আমার ছেলেটার জ্বর আরো বেশি হলো তখন বাধ্য হয়ে আমরা তারপরের দিন বাসায় চলে আসলাম।বিকালবেলা বাসায় এসে সন্ধ্যায় ছেলেটাকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে আসলাম তারপর একটু শান্তি। বাসায় এসে আগে পাখির ডিম গুলো দেখার জন্য বারান্দায় ছুটে গিয়েছিলাম দেখলাম যে চারটা ডিম এখন পর্যন্ত সুন্দরভাবে রয়েছে এবং বারান্দায় গ্রিলের উপর দাঁড়িয়ে পাখিটি খুব ডাকাডাকি করছে। কারণ ডিমের কাছে যাওয়াতে পাখিটি মনে হচ্ছে একটু বিরক্ত হয়েছে। ঐদিন আমি আর কোন ছবি তুলে রাখি নি কারণ ঐদিন একটু তারা ছিল বাইরে যাওয়ার আবার রাতও হয়ে গিয়েছিল তাই ছবি তুলিনি।
আমার ভাইও এসেছিল আমাদের সাথে ও সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আমাকে বলছে যে পাখিটির একটা ডিমের বাচ্চা ফুটেছে আমরা তাড়াতাড়ি করে বারান্দায় গিয়ে দৌড়ে গিয়ে দেখলাম যে একটা বাচ্চা ফুটেছে আর বাকি তিনটা ডিম এখনো রয়ে গেছে।
ছোট্ট একটি পাখির বাচ্চা দেখতে কি যে কিউট লাগছে সাথে সাথে দুই তিনটা ছবি তুলে রেখেছি। এ ধরনের জিনিস এর আগে আমি এত কাছ থেকে কখনো দেখিনি সে এক ভিন্ন ধরনের অনুভূতি যা আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না ।সত্যি মনে হচ্ছে যে আমার বাসায় আসলেই নতুন কোন অতিথি এসেছে কিন্তু অতিথিদেরকে আমি আপ্পায়ন করতে পারছি না ধরতেও পারছিনা শুধু দূর থেকে একটু দেখা ছাড়া, তারপরও খুবই ভালো লাগছে। আবার প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে আমি যখন বাচ্চাগুলো দেখতে যাই তখন দেখি যে পরের দিন আরো দুটো বাচ্চা ফুটে গিয়েছে তারপরে এভাবে আরও একটি বাচ্চা ফুটে গিয়েছেন মোট চারটা বাচ্চা একদিন একদিন পরপর ফুটে গিয়েছে।
আমি যখন প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদেরকে দেখতে যাই তখন দেখি ওর মা ওদেরকে নিয়ে বসে আছে ।ওদের মা আমাদেরকে দেখলে উড়ে চলে যায় আর পাখির ছানাগুলো আমাকে দেখে খাওয়ার জন্য হাঁ করে কি যে কিউট লাগে সে দৃশ্যগুলো আপনারা না দেখলে বুঝতেই পারবেন না।
এটা শুধু আমি দেখতে পারলাম জানিনা আপনারা কোনদিন দেখেছেন কিনা। তাই আপনাদের সাথে বাচ্চাগুলোর কিছুটা শেয়ার করলাম। দেখি পরবর্তীতে কি হয় তারপর না হয় অন্য অংশ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
একদিন রাত্রেবেলা আবার একটু উঁকি দিয়ে দেখি যে ওর মা ওদেরকে নিয়ে খুব সুন্দর করে বসে আছে এবং খুব কাছে থেকে গিয়ে দেখলাম কিন্তু ওর মা কোন কিছু করল না উড়েও গেল না শুধু তাকিয়ে রইল। ছবি তুলতে গিয়েছি ওর মা ক্যামেরার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন ছবি তোলার জন্য পোজ দিচ্ছে দেখে খুবই ভালো লাগলো ছবিটি। ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন যে ওর মার চোখদুটো দেখা যাচ্ছে সে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আর এটি হল সেই গাছ যেই গেছে ওরা বাসা বেধেছে ।গাছটা অনেকদিন ধরে ওরা বাসা বেঁধে আটকে রেখেছে গাছটা পরিষ্কার করতে পারছি না ময়লা হয়ে আছে, কিন্তু তারপরও ওরা ভালো থাকুক এটাই আশা রাখছি ।শেষ পর্যন্ত জানিনা কি হবে পাখির ছানাগুলোর। আপনাদের সামনে আমি পরবর্তী আপডেট নিয়ে অবশ্যই আসব ইনশাআল্লাহ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
ডাক্তার দেখানোর পর আপনার ছেলে অবশ্যই সুস্থ হয়ে গেছে। বাবু তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনা করছি।
না আপু আমি কোনদিন দেখিনি। পাখির বাচ্চাগুলো সত্যিই দেখতে অনেক কিউট। দেখলেই আদর করতে ইচ্ছা করে। আসলে পাখি এবং পাখির বাচ্চা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর আপনি অনেক সুন্দর করে ফটোগ্রাফি গুলো করেছেন। ছবিতে পাখির বাচ্চা গুলো দেখে নিজের চোখে একবার দেখতে ইচ্ছা করছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপু আল্লাহর রহমতে আমার ছেলেটা এখন সুস্থ আছে। আর ঠিকই বলেছেন আপু পাখির বাচ্চা গুলো এত কিউট ছিল যে দেখলেই আদর করতে ইচ্ছা করে ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
টুনটুনি অনেক লাজুক পাখি।এরা সাধারণত এরকম জায়গায় বাসা বানায় না।কিন্তু আপনারা খুব লাকি। পাখি টা আপনাদের বিশ্বাস করতে শুরু করেছে তাই এখন কাছে গেলেও কিছু বলে না।অনেক ভাল লাগল আপু পোস্ট টি পড়ে আর বাচ্চাগুলো কে দেখে।
আসলেই আমি অনেক লাকি আমার বাসায় পাখিরা বাচ্চা উঠিয়েছে ।আমার নিজের কাছেই ভালো লাগে আমি সারাদিন ঘুরে ঘুরে ওদেরকে দেখি কি যে কিউট লাগে অনেক মায়া লাগে দেখতে ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপু আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো । টুনটুনি পাখি আমার অনেক পছন্দের কিন্তু কাছ থেকে এভাবে কখনো দেখা হয়নি ।আপনি বেশ লাকি আপনার বাসায় টুনটুনি বাসা বেধেছে । পরবর্তী আপডেটগুলো অবশ্যই আপনি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন । সেই প্রত্যাশায় রইলাম । অসংখ্য ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ।
টুনটুনি পাখি আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে আমিও এর আগে কখনো এতো কাছ থেকে দেখিনি। আমি পরবর্তী আপডেটগুলো অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করব ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আমার তো ইচ্ছে করছে আপনার বাসায় গিয়ে টুনটুনি পাখির বাচ্চাগুলোকে দেখে আসি।ওরা যেভাবে হা করে আছে আমার তো বেশ আনন্দ হচ্ছে।আমি অনেক আগে এরকম বাচ্চা পাখি দেখেছিলাম,তখন ছোট পোকা খাইয়েছিলাম।আর আজকে এই পাখিগুলোকে দেখে ইচ্ছে হচ্ছে নিজ হাতে খাওয়াতে।সত্যিই আপনার আজকের পোস্ট পড়ে খুব আনন্দ পেলাম।খুব দূর্লভ একটি জিনিসের ফটোগ্রাফি নিয়ে আমাদের মাঝে ব্লগ শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
ঠিকই বলেছেন আপু পাখিগুলো যখন হা করে থাকে তখন মনে হয় যে ওদেরকে কিছু খাইয়ে দেই কিন্তু আমি শুনেছি যে ছোট পাখির বাচ্চার কাছে গেলে নাকি ওর মা খুব বিরক্ত হয় আর ওদের কাছে এসে না তাই আমি কাছে যাইনি।
আমি এটা অসংখ্য বার দেখেছি আপু। আমার বাড়ির গন্ধরাজ ফুল গাছে পেয়রা গাছে প্রায়ই টুনটুনি চড়ুই বাসা তৈরি করে ডিম পাড়ে। বেশ চমৎকার একটি দৃশ্য কিন্তু এটা আপু। আপনারা সবাই বেশ উচ্ছসিত ছিলেন দেখছি পাখি এবং ডিমগুলো নিয়ে।।
এ ধরনের দৃশ্য আমি জীবনে এই প্রথম দেখলাম এই জন্য আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আসলেই এটি একটি চমৎকার দৃশ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।