ছেলের জন্মদিনের আনন্দ

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।




আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ছেলের জন্মদিনের কিছু আনন্দ । বেশ কয়েকদিন আগে ছেলের জন্মদিনের অগ্রিম আনন্দ নিয়ে একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব জন্মদিনের আনন্দ । ছেলেটার জন্মদিন উপলক্ষে বেশ কিছুদিন ধরেই একটা উত্তেজনা কাজ করছিল যদিও আমরা জন্মদিনের পার্টি তেমন করে করব না । নিজেরা নিজেরাই অনুষ্ঠানটা সব সময় করার চেষ্টা করি । এই ধরেন আমার বোন আর আমার হাসবেন্ডের বোন ওরাই আসে আর পাশের বাসার ফ্যামিলি । এই তিন পরিবার মিলে আমরা করার চেষ্টা করি । এবার আমার বোনদের কাউকেই ডাকা হয়নি শুধু পাশের বাসায় ফ্যামিলিদেরকে নিয়েই আমরা অনুষ্ঠানটা শেষ করেছি ।

20240318_221054.jpg


জন্মদিন আমরা করতে না চাইলে কি হবে ছেলের জন্যতো কিছু কেনাকাটা থাকেই । তারপরে আবার পাশের বাসার ওনারা কিছুতেই ছাড়তে চান না । যার কারণে ঠিক করেছি বাসায় কোন ঝামেলা না করে সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করব । আমরা বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম বেইলিরোড এর কাচ্চিভাইতে গিয়ে কাচ্চি খাব । কিন্তু বেশ কয়েকদিন আগে বেইলি রোডে আগুন লাগার কারণে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ও সাথে আরও বেশ কয়েকটা রেস্টুরেন্ট পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে । যার কারণে এখন রেস্টুরেন্টের নাম শুনলে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয় । আমি তো ।বেইলিরোডে কোন রেস্টুরেন্টে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না কিন্তু তারপরও যেহেতু পাশের বাসায় ফ্যামিলিদের কে আমরা বলে রেখেছি যে আমরা রেস্টুরেন্টে যেয়ে খাওয়া দাওয়া করব এ কারণে তো আমাদেরকে যেতেই হবে কোথাও না কোথাও ।দায়িত্বটা ওদের উপর দিয়ে দিয়েছি ওরা ঠিক করুক কোথায় যাওয়া যায় ।

received_1188187685893256.jpeg


বেইলি রোডে রেস্টুরেন্টের নাম শুনলেই ভয় লাগে এজন্য বেইলিরোডের কোন রেস্টুরেন্টে যাব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।পরে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেল ঠিক করলাম যে খিলগাঁও একটা দোতলার উপরে সুন্দর একটা রেস্টুরেন্ট করেছে চারপাশ দিয়ে খোলামেলা সেখানে যাব এবং সেখানের খাবারটাও ভালো মানের । যথারীতি আমরা ৩-৪ দিন আগে সে রেস্টুরেন্টে ফোন দিয়ে খোঁজ নিলাম তারা বলল যে এখন পর্যন্ত খোলা আছে তবে বন্ধ করার নোটিশ এসেছে জানিনা শেষ পর্যন্ত খোলা রাখতে পারব কিনা । যদি ওই দিন খোলা থাকে তাহলে আপনারা আসতে পারবেন ।

received_415741247616845.jpeg


দেখতে দেখতে জন্মদিনের দিন চলে এলো আমরা ঐদিন ফোন করে জানতে পারলাম যে রেস্টুরেন্টটা খোলা রয়েছে এবং আমরা সেখানে সবাই মিলে চলে গেলাম । সেখানে যাওয়ার পর দেখলাম যে সেটা দোতলা না তিন তলার ছাদের উপর ছিল এবং রেস্টুরেন্টটা চারপাশ দিয়ে বেশ খোলামেলা এবং ভালোই বেশ কিছু লোকজন রয়েছে । আমরা সেখানে গিয়ে বসলাম । কিন্তু সেখানে বসার পরে ওরা বলল যে এখানে শুধু স্যান্ডউইচ বার্গার এ জাতীয় খাবার গুলো রয়েছে । ভারী কোন খাবার এখানে নেই আমরা যেহেতু রাতের খাবার খাবো যার কারণে আমরা সেখান থেকে চলে এলাম । কারণ আমরা রাতের বেলা ভারী খাবার খাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম হালকা-পাতলা খাবার খাওয়ার জন্য নয় । সেখান থেকে বের হয়ে তারই অপজিট পাশে আরও একটা রেস্টুরেন্ট ছিল । এটা যদিও চারতলার উপরে ছিল সেখানে আল্লাহর নাম নিয়ে আমরা চলে গেলাম । প্রথমে ভিতরের দিকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পরে ভেতরে না গিয়ে বারান্দার সাইডে বসলাম এবং সে বারান্দার সাইডটা খোলাই ছিল যার কারণে সেখানে বসে একটু ভালো লাগছিল আটকা জায়গার থেকে ।

Polish_20240318_221234754.jpg


আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার অর্ডার করলাম । যে যা পছন্দ করে সেই মোতাবেক খাবার আমরা খেলাম । পিজ্জা, সুপ ,চিকেন ফ্রাই ,অন্থন মাশরুমফ্রাই ,রাইস সাথে আরো টুকিটাকি অনেকগুলো আইটেম ছিল । সবাই মিলে গল্প গুজব করতে করতে খাবার গুলো শেষ করলাম । মাঝে মাঝে যদিও ভয় লাগছিল রেস্টুরেন্টের ঘটনার কথা মনে পড়ে । এর ভিতর হঠাৎ করে দেখলাম যে প্রথমে আমরা যে রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম সেই রেস্টুরেন্টটা পুরোটা অন্ধকার হয়ে গিয়েছে ।হয়তোবা কোন যান্ত্রিক গোল যোগের কারণে লাইট গুলো অফ হয়ে গিয়েছে এবং বেশ খানিকটা সময় পরে ওরা লাইটগুলো দিয়েছিল । সেটা দেখে আমাদের একটু ভয় লেগেছিল ভাগ্যিস আমরা ওখানে ছিলাম না তা না হলে একটু বেশি ভয় পেয়ে পেতাম ।


সবশেষে আমরা খাওয়া দাওয়া করে সেখান থেকে বের হয়ে বাসায় এসে আবার কেক কাটলাম । কেক কেটে সবাই মিলে কেক কোলড্রিংস খেয়ে আরো বেশ খানিকটা সময় আড্ডা দিয়ে আমরা আমাদের সময়টা পার করলাম । যেহেতু বেশি লোকজন ছিল না এজন্য গিফটও তেমন ছিল না । আমি কিছু গিফট দিয়েছিলাম ওর খালামনি গিফটের জন্য টাকা দিয়েছিল এবং পাশের বাসা থেকে যে গিফট গুলো দিয়েছিল সবকিছু মিলিয়ে ছেলেটা অনেক বেশি খুশি হয়েছিল । গিফট গুলো সে নিজের হাতের সাজিয়ে সাজিয়ে রাখছিল এবং সবসময় সেগুলো নিয়ে খেলছিল ভালোই কেটেছিল সেদিন সেই সময়টা । আপনারা সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন যেন সবাই মিলে এই দিনটি বছর বছর স্মরণ করতে পারি ।

20240318_220219.jpg

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 4 months ago 

প্রথমেই আপনার ছেলেকে জানাই তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা৷ একইসাথে তার জন্মদিন পালনে যেন কোন ধরনের ঝামেলা না হয় তাহলে আপনারা বাসায় অনুষ্ঠান না করে রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিলেন। আপনারা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাইয়ে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ তবে আগুন লেগে যাওয়ার ফলে এখন তার নাম শুনলেই আপনাদের অনেকটা আতঙ্ক চলে আসে৷ তবে পাশের বাসার ওদেরকে আপনারা বলে রেখেছিলেন যে বাইরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করবেন৷ তাই ওনাদেরকে দায়িত্ব দিলেন যা একেবারে বুদ্ধিমানের একটি ব্যাপার৷ ধন্যবাদ এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷

 4 months ago 

বাসায় রান্না করে ঝামেলা করতে ইচ্ছা করে না এজন্য আমরা বেশিভাগ সময় রেস্টুরেন্টে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করে থাকি ।

 4 months ago 

ছেলের জন্মদিনের অত্যন্ত আনন্দঘন মুহূর্তে কথাগুলো আপনি চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার ছেলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও দোয়া রইল। আমি প্রত্যাশা করি এরকম আনন্দের দিন যেন আপনার ছেলের জীবনে বারবার ফিরে আসে।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ।

 4 months ago 

আপনার ছেলের জন্মদিনের আনন্দটা আমাদের মাঝে সুন্দর করে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে, ভালোভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। নিশ্চয়ই খুবই ভালো সময় কাটিয়েছিলেন সবাই মিলে। আর দেখছি আপনার ছেলে অনেক গিফট পেয়েছিল নিজের জন্মদিনে। আর সবাই সবার পছন্দমত খাবার খেয়েছিল, বিষয়টা বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। নিশ্চয়ই সবাই মিলে মজা করে খাবারগুলো খেয়েছিলেন। আপনার ছেলের জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইল। দোয়া করি যেন অনেক বড় হয়। আর ভালো কিছু করতে পারে জীবনে।

 4 months ago 

সেতো জন্মদিনের আগে থেকেই গিফট পেতে শুরু করেছে আর গিফটগুলো পেয়ে সে আসলেই অনেক খুশি হয়েছে ।ধন্যবাদ আপু আপনাকে ।

 4 months ago 

আপু আপনার ছেলের জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল। আর তার প্রতি রইল অনেক অনেক ভালোবাসা। ছোট্ট বাবুটা তাহলে এখন আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। তার জন্মদিনে সবাই মিলে ভালো সময় অতিবাহিত করেছিলেন জেনে ভালো লেগেছে। রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করেছেন দেখে ভালো লেগেছে। আর আপনার ছেলের জন্মদিনের এত সব গিফট দেখেও ভালো লাগলো। তার জন্য দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো আপু।

 4 months ago 

আসলেই ভাইয়া বাচ্চারা যে কখন দেখতে দেখতে বড় হয়ে যায় বোঝাই যায়না । ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামত দেওয়ার জন্য ।

 4 months ago 

রেস্টুরেন্টে আগুন লাগার পর থেকে যে পরিমাণ ভয় পেয়েছিলেন তাতে করে তো আপনার রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা ছিল না। যাই হোক তারপরে অন্য একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছেন এবং ছেলের জন্মদিন বেশ ভালোভাবে উদযাপন করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো ।ফানা দেখছি ভীষণ খুশি কেক হাতে নিয়ে।অনেকগুলো গিফট হয়েছে। বেশ ভালো লাগলো দেখে ।অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64741.88
ETH 3457.21
USDT 1.00
SBD 2.55