★হঠাৎ করে বাবার বাড়িতে আসা★10%shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



Picsart_22-10-08_22-30-54-128.jpg

আজ আমি আপনাদের সামনে আবার একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি। আজ আমি আপনাদেরকে আমার হঠাৎ করে বাবার বাড়িতে আসার গল্প শেয়ার করতে চলে এসেছি। এক মাসের মত হল আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে নিজের বাসায় এসেছি আর সহজে যাওয়ার খুব একটা ইচ্ছা ছিল না কোন কারণ ছাড়া। কিন্তু আজ বেশ ক'দিন ধরে আম্মার শরীরটা খারাপ হয়েছে তাই মনটা সব সময় কেমন যেন করে ভালো লাগে না কোন কিছুই, আর সারাদিন তো ফোনে যোগাযোগ আছেই। তারপরে আবার বাসায় আব্বু অসুস্থ আম্মাকে তার দেখাশোনা করতে হয় তাই দুজনেরই খারাপ অবস্থা সব সময় চলছে। এজন্য ইচ্ছা করছে যে একটু বাসা থেকে ঘুরে আসতে পারলে ভালো হতো কিন্তু যেতেও পারছিনা।

20221008_222506.jpg

D4F8200E-DF6A-4082-876E-9F44C642A671.png

20221008_222452.jpg

উপরের ছবি দুটো টোল দেওয়ার সময় বাস যখন থেমেছিল তখন তোলা হয়েছে।

দুপুরবেলা ভাত খেয়ে একটু রেস্ট নিব সেই মুহূর্তে বাসায় ফোন দিয়েছি আম্মার শরীরটা কেমন জানার জন্য, এদিকে আমার বোনও আমাদের বাসাতেই ছিল ওর কাছে ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই ওর কন্ঠটা শুনে বুকের ভিতর কেমন যেন কেঁপে উঠল, আম্মার কথা জিজ্ঞাসা করতেই ও বলল যে আম্মার শরীর ঠিকই আছে কিন্তু আব্বুর অবস্থা আজকে খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল বাথরুমে পরে গিয়েছে। এ কথা শোনার সাথে সাথেই আমার আর এক মিনিটও মনে হচ্ছে না এখানে আমি স্থির থাকি, সাথে সাথে আমার হাজব্যান্ড কে বললাম যে আব্বুর শরীর খুবই খারাপ আমাকে এখনই ফরিদপুর যেতে হবে। সে আমাকে বলল যে কেন কি হয়েছে তখন আমি বললাম যে বাথরুমে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গিয়েছে।সে বলল যে দেখো তুমি চিন্তা ভাবনা করে কি করবে, তখন বাজে সাড়ে চারটা আমি বললাম যে কোন চিন্তা ভাবনা করার কিছু নেই আমরা এখনই রওনা দিচ্ছি। সাথে সাথে আমি ব্যাগ গোছাতে চলে গেলাম তাড়াহুড়ো করে কোন রকমে ব্যাগটা গুছিয়ে নিলাম।

20221008_222624.jpg

এখন যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন একটি পদ্মা ব্রিজের উপর থেকে তুলেছি। অন্ধকারে পদ্মার পানি খুব একটা ভালো দেখা যাচ্ছে না তারপরও ছবিটি তুলে রেখেছি।

তারপর তাড়াতাড়ি বাসা থেকে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম সায়দাবাদের উদ্দেশ্যে। গতবার যখন ফরিদপুরে গিয়েছিলাম তখন গুলিস্তান থেকে গাড়িতে উঠেছিলাম বিআরটিসি বাসে। বিআরটিসি বাসটা আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগেনি তাই এবার গোল্ডেন লাইনে যাওয়ার জন্য সায়েদাবাদ এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিন্তু রাস্তায় এতটাই জ্যাম ছিল যে কি আর বলব। আমরা পৌনে ছয়টায় রওনা দিলাম কিন্তু সায়দাবাদে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সাতটা বেজে গেল। সেখানে গিয়ে টিকিট কাউন্টার ঢুকে ভালই লাগলো কারণ গোল্ডেন লাইন এর নতুন একটা কাউন্টার করেছে বড় একটা রুম ভেতরে এসি লাগানো বসার বিশাল ব্যবস্থা করেছে দেখে ভালই লাগলো। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলাম আমার হাজবেন্ড ভেতরে টিকিট কাটতে গেল সে কিছুক্ষণ পরে বাইরে এসে বলল যে সাতটা সোয়া সাতটার গাড়িতে কোন সিট নেই আটটার গাড়ি যাবে কিনা বলতে পারছিনা। ওইখান থেকে ফরিদপুরের আর কোন গাড়ি যায় না সেটা শুনে একেবারে মনটা খারাপ হয়ে গেল এবং কাউন্টার থেকে বলেছে ১৫ মিনিট পরে এসে খোঁজ নিতে গাড়ি যাবে কিনা, সেজন্য আমরা ভেতরে যেয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে সোয়া আটটার গাড়ির টিকিট আমরা পেয়ে গেলাম তখন একটু ভালো লাগলো। সেই মুহূর্তে আমি বাসায় ফোন করে জানালাম যে আমরা বাসা থেকে রওনা দিয়েছি টিকিট কেটে অপেক্ষা করছি। আম্মা বলল যে কেন এখন সাথে সাথে রওনা দেয়ার দরকার ছিল এখন তো একটু ভালো হয়েছে। আমি তারপরে বললাম যে আমার ভালো লাগছে না তাই আমরা আসছি পরে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর আটটার সময় আমাদের গাড়ি চলে আসলো।

20221008_222748.jpg

D4F8200E-DF6A-4082-876E-9F44C642A671.png

20221008_222733.jpg

D4F8200E-DF6A-4082-876E-9F44C642A671.png

20221008_222720.jpg

এখন যে ছবি দেখতে পাচ্ছেন এ তিনটি ছবি ভাঙা রাস্তার মোড় থেকে তুলেছি। অসম্ভব সুন্দর এই জায়গাটি কখনো নেমে দেখিনি সব সময় গাড়ি থেকেই দেখেছি। এবার একটু ভালো করে দেখেছি কিন্তু ছবিগুলো তেমন ভালো হয়নি।

আমরা আটটার গাড়িতে উঠে পড়লাম আর গাড়ি ছাড়তে ছাড়তে ৮:২০ বেজে গেল। গাড়িতে উঠলে এমনিতেই আমার বমি হয় এজন্য আমি আগে থেকেই বাসায় একটা বমির ওষুধ খেয়ে নিয়েছিলাম এবং কাউন্টারে বসে আরো একটি ওষুধ খেয়েছি কারণ একটাতে কাজ হচ্ছিল না । গাড়িতে উঠে বসার সাথে সাথে সবসময় আমার ঘুম চলে আসে কিন্তু আজকে কিছুতেই ঘুম আসলো না এজন্য পুরো রাস্তাটাই আমি জেগেই থাকলাম। ছেলেটা আমার কোলেই ছিল আমরা দুজনে জানালা দিয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলতে লাগলাম। যেহেতু আমি রাস্তায় ঘুমাইনি তাই রাস্তা দিয়ে আসার সময় বেশ কিছু ছবিও আমি কোন রকমে তুলেছি। গাড়িটা অনেক বেশি দ্রুত চলছিল এজন্য ছবিগুলো খুব একটা ভালো আসেনি, চলন্ত গাড়ি থেকে যতটুকু পেরেছি ছবিগুলো তুলে রেখেছি আপনাদের সাথে আমার গন্তব্যে পৌঁছানোর কিছু মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। এরপর আমরা রাত সাড়ে দশটায় গাড়ি থেকে নেমে একটা অটো ঠিক করে মিষ্টির দোকান থেকে কিছু মিষ্টি কিনে তারপর বাসায় আসলাম ।এসে যখন আব্বুকে দেখলাম সে শুয়ে আছে তারপর দেখে একটু শান্তি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

Sort:  
 2 years ago 

আসলে এখন প্রায় সবার ঘরেই কেউ না কেউ অসুস্থ শোনা যাচ্ছে। এই সময়টাই যেন বেশ খারাপ যাচ্ছিল। যদিও প্রথম দিকে লিখেছেন আপনার আম্মু কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। আপনার আপু ফোন করাতে আমি ভেবেছিলাম আপনার আম্মুর কিছু হয়েছে। পরে আপনার আব্বু বাথরুমে পড়ে গিয়েছে শুনে খুবই খারাপ লাগলো। যদিও পরে কিছুটা ভালো ছিল কিন্তু তারপরেও আসলে স্থির ভাবে বসে থাকা যায় না। নিজের চোখের সামনে দেখতে পারলে ভালই লাগবে। আপনি একদম ঠিক কাজ করেছেন সাথে সাথে চলে গিয়েছেন। যদিও প্রথমদিকে বাসের টিকেট পেতে কষ্ট হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছালেন এবং আপনার বাবাকে দেখলেন বেশ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন এখন চারদিকে সবাই খালি অসুস্থ হয় আর ভালো লাগেনা। ধন্যবাদ আপু কষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

কয়েকদিন ধরেই কেমন যেন সব হচ্ছে আপু,,, সবার বাড়িতে কেউ না কেউ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। কাছের মানুষ গুলোর এমন শরীর খারাপ হলে মন কতটা অস্থির হয়ে পরে সেটা শুধু সেই মানুষই বোঝে। যাই হোক শেষ মুহূর্তে বাসটা যে পেয়েছেন এটাই অনেক। আর ভালো ভাবে পৌঁছতে পেরেছেন। আংকেল অ্যান্টি কে ডক্টর দেখিয়ে সুস্থ করে বাড়ি ফিরবেন একদম কেমন। বাথরুমে পরে যাওয়ার কথা শুনে তো ভয়ই পেয়ে গেছিলাম। বড় কোন ক্ষতি হয় নি এটাই অনেক। সবাই যেন ভালো থাকে এই দোয়া করি।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া চারদিকে সবাই শুধু অসুস্থ হয় আর ভালো লাগে না।আম্মা মোটামুটি আছেন কিন্তু আব্বুর অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।এটা নিয়েই আমরা আছি দোয়া করবেন।

 2 years ago 

আমি ঢাকায় থাকলে হয়তো আমি আপনার সঙ্গে এড হতাম।কিন্তু দুর্ভাগ্য আমি রংপুরে ছিলাম জন্য যেতে পারলাম না। আব্বুর শরীরটা এখন একটু ভালো জেনে ভালো লাগছে। এবার জেগে জেগে খুব সুন্দর কিছু ছবি তুলেছেন দেখছি।গতবার তো ছবি তুলতে পারলেন না ঘুমের জন্য।

 2 years ago 

আপনি এখন আসেন আমরা তো আছি এখানে ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে চারদিকে যতই আলোর ঝলকানি থাকুক না কেন আনন্দ থাকুক না কেন মা বাবা অসুস্থতার কথা শুনলে কোন সন্তানের স্থির থাকতে পারে না। তবে এটা মিথ্যা নয় আমাদের সমাজে কিছু কিছু পশু আছে যারা মা-বাবাকে সহ্য করতে পারে না। তবে আপনার বাবার হঠাৎ বাথরুমে পড়ে গিয়ে অসুস্থতার কথা শুনে পাগলের মত ছুটে চলেছেন। মাঝে মাঝে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন খুবই দারুণ ছিল। আপনার মনের অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য, শুভেচ্ছা রইল

 2 years ago 

এটা ঠিক বলেছেন বাবা মা অসুস্থ হলে আসলেই কোন কিছু ভালো লাগে না। আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

বাবা মার শরীর খারাপের কথা শুনলে সত্যিই আর মন টেকে না। যতক্ষণ না দেখছি ততক্ষণ আর ভালো লাগে না। আমার তো কিছুদিন পরপরই বাবাকে না দেখলে মন কেমন করে। তাই প্রায় একমাস পর পরই আমি বাবা মার সাথে দেখা করতে চলে যাই।আপনার বাবাকে দেখতে গিয়ে খুব ভালো করেছেন।আপনাকে পেয়ে আর একটু স্বস্তি বোধ করবে।আপনার বাবার সুস্থতা কামনা করছি। ভালো থাকবেন আপু।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু বাবা-মা দূরে থাকলে মনটা অস্থির থাকে সব সময়। আপনি তো ভালো কাজ করেন প্রতি মাসে একবার করে যেয়ে দেখে আসেন। তবে আমার খুব একটা যাওয়া হয়না এবারই পর পর যাওয়া হল। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64182.74
ETH 2768.00
USDT 1.00
SBD 2.66