চলতি পথের ছোট্ট ঘটনা

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



Picsart_24-05-04_00-45-22-578.png


আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি গল্প । আসলে এটাকে গল্প বললে ভুল হবে এটা একজনের জীবনের ঘটে যাওয়া কিছু সময়ের সাময়িক একটি ঘটনা । মানুষের জীবনে সব সময় তো অহরহ ঘটনা ঘটে থাকে সেসব কিছুই তো আর মনে রাখার মতো থাকে না । কিছু কিছু ঘটনা আছে যেটা মন থেকে চাইলেও সহজে সরানো যায় না আবার সহজে ভোলাও যায় না । সত্যি মাঝে মাঝে সেসব ঘটনার কথা মনে পড়লে হাসবো না কাঁদবো সেটাই বুঝতে পারি না । আজকাল রাস্তাঘাটে চলতে গেলে অনেক সাবধানে চলাফেরা করতে হয় । যেকোনো সময় বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । এইতো সেদিন ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলাম যাওয়ার পথে রিকশায় বসে শুনতে পেলাম যে এইমাত্র নাকি এখান থেকে একজন মহিলার ছিনতাই হয়েছে । তার গলার চেইন হাতের আংটি টাকা পয়সা যা ছিল সব কিছুই নাকি লোকটা নিয়ে গিয়েছে এবং সেই মহিলা নাকি নিজের হাতে সবকিছু খুলে লোকটাকে দিয়েছে । এরকম ঘটনা ঘটতে থাকলে মানুষ কি আর আগায় । কারণ যার ছিনতাই হচ্ছে সে তো নিজের থেকে সবকিছু খুলে দিয়ে দিচ্ছে মানুষজন বুঝবে কিভাবে এখানে কি ঘটনা ঘটছে । আজকাল এমন সব টেকনিক মানুষ ব্যবহার করে যার কারণে সবকিছু এখন ইজি হয়ে গিয়েছে ।


যাই হোক এখন আসল ঘটনায় আসি কদিন আগে আমার পাশের বাসার ভাবি আমাদের সাথে আমার ছেলের স্কুলে গিয়েছিলেন । ছেলে স্কুলে গিয়ে বসতে চায়না দেখে ভাবি বললেন যে আজকে আমি গিয়ে দেখি আমার সাথে গিয়ে বসে কিনা । তখন আমরা তিনজন মিলে স্কুলে গেলাম । স্কুল যদিও একেবারে বাসার কাছেই হেঁটে গেলে মাত্র পাঁচ ছয় মিনিট লাগে তারপরও ছেলে কিছুতেই হেঁটে যেতে চায় না যার কারণে এই ছোট্ট পথ রিকশায় যেতে হলো । আমরা স্কুলে ঢুকলাম ভাবি অনেক চেষ্টা করে ছেলেকে ক্লাসে বসাতে পারল না । তারপর আমাকে বাধ্য হয়ে ওর সাথে বসে থাকতে হলো । ভাবি কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন । বাসায় আসার পথে একটা ছেলের সাথে তার দেখা । ছেলেটা সাহায্যের জন্য তার কাছে এগিয়ে আসলো এবং ছেলেটা এমন অসহায় ভাবে তার কাছে সাহায্য চাইলো ভাবির মনটা সাথে সাথে নরম হয়ে গেল । আর ভাবি এমনিতেই অনেক ভালো মানুষ ।


ছেলেটা এসে ভাবির কাছে এক হাজার টাকা চাইলো ভাবী তখন তার ব্যাগ ঘেটে ৯০০ টাকা পেল ১০০ টাকা কম ছিল । সে একেবারে ৯০০ টাকায় ছেলেকে দিয়ে দিল । ছেলেটা তো সেই টাকা পেয়ে সাথে সাথে খুশি হয়ে গেল এবং সে সাথে সাথে আবার আরও একটা কিছু চেয়ে বসল । তখন সে ভাবিকে বুঝতে পারল যে এই মহিলার কাছে যা চাইবো তাই পাবো । তখন সে তার কাছে আবার আকুতি করে বলল যে আমার একটা ছোট ভাই আছে ওকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি ওর জন্য একটা ফ্যান লাগবে । ফ্যান কেনার জন্য আমাকে কিছু টাকা দিন । তখন তো ভাবি সেটা শুনেও দেয়ার জন্য রাজি হয়ে গেল । সে তার ফোন নাম্বার তাকে দিয়ে আসলো এবং বলল যে আমার কাছে তো এখন টাকা নেই যা ছিল আমি তোমাকে দিয়ে দিয়েছি এই ফোন নাম্বার দিয়ে দিলাম তুমি যোগাযোগ করে আমার বাসায় এসো ।


এই বলে ভাবি চলে এলো তারপর বাসায় এসে সে তার হাজব্যান্ড কে সবকিছু বলল । তার হাজবেন্ড শুনেই তাকে বকা দিচ্ছে যে তুমি এরকম একটা ছেলেকে সাথে সাথে 900 টাকা দিয়ে দিলে আবার ফোন নাম্বার দিয়ে বাসার ঠিকানা পর্যন্ত দিয়ে আসলে । এ ধরনের ছেলেগুলো রাস্তায় আজেবাজে জিনিস খেয়ে বেড়ায় আর মানুষের কাছে ধান্দা করে চলে তুমি আজ পর্যন্ত সেটাই বুঝতে পারলে না । তখন তারপর ভাবি বলল যে যা করে করুক কিন্তু আমি ওকে ফ্যান কিনার জন্য টাকা দিতে চেয়েছি ওকে আমি সেই টাকাটা দিব । তখন ভাই আর কি বলবে তখন সেও রাজি হল । সে মনে মনে ভেবে রেখেছি তিন হাজার টাকা হয়তোবা তাকে ফ্যান কেনার জন্য দিতে হবে । দুদিন যেতে না যেতেই ভাবির ফোনে সেই ছেলেটার ফোন আসলো । আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসাতে ভাই ফোন ধরল এবং ফোন ধরার সাথেই ছেলেটা বলল যে এই ফোন নাম্বারটা যার তাকে দেন । তখন ভাই বলল যে কেন আপনি কাকে চান । তখন ছেলেটি বলল যে আমি আপনার মেয়ে নাকি বউ সে যেই হোক সে আমাকে নাম্বারটা দিয়েছে ফোন দেয়ার জন্য । তখন ভাই বুঝতে পারল যে হয়তোবা সেই ছেলেটা ফোন দিয়েছে ।


তখন ভাই বলল যে তুমি টাকাটা নেয়ার জন্য আমার বিল্ডিংয়ের নিচে দাঁড়াও আমি আসছি । ছেলেটার কাছে জিজ্ঞাসা করল যে ফ্যান কেনার জন্য তুমি কত টাকা চাও ছেলেটা ১৮শো টাকা চাইলো ফ্যান কেনার জন্য । ভাই তো মনে মনে তিন হাজার টাকা ভেবেছিল কিন্তু ছেলেটা ১৮০০ টাকা চাইলো । পরে তাকে একটা নির্দিষ্ট টাইম দিল এবং সেই টাইমে এসে ফোন দিল পরে নিচে গিয়ে ভাই তাকে টাকাটা দিল । দেখে মনে হচ্ছে সে নেশা করে এসে দাঁড়িয়েছে তখন সে তাকে টাকাটা দিল এবং তাকে বলে দিয়ে আসলো যে খবরদার আর কোনদিন যেন এই নাম্বারে কোন কল না আসে । আসলে মানুষজন বোঝে যে কার কাছে চাইলে কেমন কি পাওয়া যাবে ।হয়তোবা ভাবির চেহারাটা দেখে তার কাছে মনে হয়েছিল উনার কাছে গেলে কিছু পাওয়া যাবে । আর ভাবি এমন একটা সহজ সরল মানুষ যে যা বলে তাতে সে বিশ্বাস করে বসে ।ছেলেটার টাকার প্রয়োজন আছে কিংবা নাই সেটা তো আর আমরা বুঝতে পারলাম না কিন্তু এ ধরনের ঘটনা কিন্তু আমাদের সাথে অহরহই ঘটে থাকে কেউ হয়তোবা এভাবে ফেঁসে যায় ।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ডিভাইস| samsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 4 months ago 

আসলে বর্তমান সময়ে ধান্দাবাজ মানুষের অভাব নেই। তবে অবশ্যই সহজ সরল হতে গেলে চলবে না কিছুটা জ্ঞানী হতে হবে এবং সচেতন হতে হবে। কারণ হুটহাট করে কেউ অসহায় মত সামনে উপস্থিত হলে তার কাছে ভালো সেজে লাভ নেই। কারণ বর্তমান ধান্দাবাজের সংখ্যা অনেক। মানুষকে সহায়তা করা যায় অবশ্য বুঝে শুনে করতে হবে। যাই হোক আমি মনে করি আপনার এই পোস্টটা যথেষ্ট জনসচেতন মূলক।

 4 months ago 

আজকাল রাস্তাঘাটে অনেক সাবধানে চলাফেরা করতে হয় কখন কোন ধান্দাবাজ লোকের সামনে পড়তে হয় সবসময় এই চিন্তা মাথায় থাকে ।

 4 months ago 

এই সমস্ত বিষয়গুলোকে কিন্তু খুব সজাগ দৃষ্টিতে বুঝতে হবে। কারণ মানুষ কত রকমের ধান্দাবাজ আছে তা আমাদের জানা নেই। কেউ হুট করে এসে কিছু বললে তার ওপর দয়া দেখাতে হবে এটা কিন্তু বোকামি। কারণ এখন নেশাখোর ধান্দাবাজি মানুষের শেষ নেই। মানুষ কিন্তু এভাবেই বিপদে পড়ে। টাকা দেওয়ার পূর্বে কিন্তু বোঝা উচিত ছিল।

 4 months ago 

অনেক মানুষ কিন্তু এই কাজটা করে থাকে পরে বিপদে পড়ে ।

 4 months ago 

আমাদের সমাজে এখন কে ভালো মানুষ আর কে খারাপ মানুষ সেটা বোঝাই ভীষণ দায় হয়ে গিয়েছে। ছেলেটা সত্যি বলছে নাকি নেশার জন্য টাকা চাইছে সেটা বোঝাও কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাই হোক ভাবি নরম মনের মানুষ অসহায় ভেবে টাকাটা দিয়েছেন ।এরকম উদার মনের মানুষ সমাজে যেমন রয়েছে তেমনি খারাপ মানুষেরও অভাব নেই।এখন মানুষকে বিশ্বাস করাও কঠিন হয়ে গিয়েছে। যাইহোক এ ধরনের অপরিচিত লোকদের নিজের মোবাইল নাম্বার বাসার ঠিকানা দেওয়াটা কিন্তু একদম বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। যাই হোক কোনো অঘটন ঘটেনি এটাই অনেক বড় বিষয়। বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

আসলে শেষ পর্যন্ত জানা যায়নি ছেলেটা ধান্দাবাজ ছিল নাকি তার প্রয়োজন ছিল । তবে ভাবি দিতে চেয়েছিল তাই দিয়ে দিয়েছে ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 57679.84
ETH 2442.12
USDT 1.00
SBD 2.34