"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ০৮ , কাটা গলানো আস্ত ভাপা ইলিশ রেসিপি ,10% beneficiary to @shy-fox
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন ও সুস্থ আছেন ।আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজ আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে শেয়ার করো তোমার জানা সেরা রেসিপি- ""আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-৮ এ অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই যিনি এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন@moh.arif এবং সকল এডমিন, মডারেটর ও ফাউন্ডার @rme দাদাকে। এখানে আমি ইলিশ মাছ নিয়ে আমার সেরা রেসিপিটা শেয়ার করতে এসেছি। ইলিশ মাছ আমার সবচেয়ে প্রিয় মাছ ও আমাদের জাতীয় মাছ ।পৃথিবীর সমস্ত সুস্বাদু মাছের মধ্যে ইলিশ মাছ এমন একটি মাছ সেটা যেভাবেই রান্না করা হোক সেটা খুবই সুস্বাদু হয় ।এমনকি এই মাছ যদি হাফও রান্না করা হয় তাহলেও অনেক টেস্টি হয় ।ইলিশ মাছ পৃথিবীর অন্যান্য কিছু দেশেও পাওয়া যায় কিন্তু পদ্মার ইলিশের মত টেস্ট আর কোন ইলিশে পাওয়া যায় না। যখনই ইলিশ মাছের সেরা রেসিপি শেয়ার করতে বলা হয়েছে তখনই আমি খুশি হয়ে গেছি কারণ প্রিয় মাছ নিয়ে যেকোনো রেসিপি তৈরি করতে কার না ভালো লাগে। যদিও আমাদের এখানে এখন ইলিশ মাছ তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছেনা ইলিশ ধরা এখন নিষেধ, তারপরও আমার মাছ ছিল বিধায় আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারছি। আজ আমি শেয়ার করব কাটা গলানো ভাপা ইলিশ রেসিপি। কাটার জন্য অনেকে ইলিশ মাছটা খেতে পারে না। এই পদ্ধতিতে রান্না করলে ছোট-বড় সকলেই নির্দ্বিধায় খেয়ে ফেলতে পারবে এখানে কাটা বাছার কোন ঝামেলা নেই । আশা করি আমার আজকের রেসিপিটি সকলের কাছে ভালো লাগবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে রান্নাটা শুরু করি।
রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও পরিমাণ নিচে দেওয়া হলো
উপকরণ | পরিমান |
---|---|
ইলিশ মাছ | ১টি |
কাটা পেঁয়াজ | ২কাপ |
পেঁয়াজ বাটা | ১কাপ |
আদা বাটা | ১চা চামচ |
লবন | স্বাদ মতো |
তেল | পরিমাণ মত |
কাঁচামরিচ | ১০টি |
লাল মরিচের গুঁড়া | ১চা চামচ |
ভিনেগার | হাফ কাপের একটু বেশি |
চিনি | ১চা চামচ |
জিরার গুঁড়া | ১চা চামচ |
প্রস্তুত প্রণালী:
১ম ধাপঃ
প্রথমে মাছগুলো কেটে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছি ।এখানে আমি মাছগুলো তিন টুকরা করে কেটে নিয়েছি ।
২য় ধাপঃ
তারপর একটি কাঁটাচামচ দিয়ে হালকা হাতে মাছগুলোকে এভাবে ফুটো ফুটো করে নিয়েছি। হালকা হাতে আস্তে আস্তে মাছগুলোকে ফুটো করতে হবে যাতে মাছগুলো নরম না হয়ে যায়।। মাছ গুলোর ভিতর ভালোভাবে মসলা ঢোকার জন্য মাছ গুলো ফুটো করে নিয়েছি।
৩য় ধাপঃ
৪র্থ ধাপঃ
৫ম ধাপঃ
৬ষ্ঠ ধাপঃ
৭ম ধাপঃ
এ পর্যায়ে আমি একে একে কাঁচামরিচ বাটা, পেঁয়াজ বাটা ,আদা বাটা, ভিনেগার, লাল মরিচের গুঁড়া, লবণ ও জিরার গুঁড়া দিয়ে দিয়েছি। এখানে আমি কাঁচা মরিচ বেটে ব্যবহার করব সুন্দর একটা ফ্লেভার এর জন্য।
৮ম ধাপঃ
সবকিছু দিয়ে হাত দিয়ে হালকা হাতে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছি। মাছ গুলোর সাথে এপাশ-ওপাশ করে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছি।
৯ম ধাপঃ
১০ম ধাপঃ
তারপর মাছের ভিতর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিয়ে দিতে হবে ।এমনভাবে পানি দিতে হবে যাতে মাছগুলো ডুবে থাকে।
১১তম ধাপঃ
এবার আমি মাছ গুলোকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে সাত আট ঘণ্টার জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিব।
১২তম ধাপঃ
ফ্রিজ থেকে বের করার পর আমার মাছগুলো দেখতে এমন হয়েছে।
১৩তম ধাপঃ
তারপর আমি মাছগুলোকে পানি থেকে উঠিয়ে একটা ট্রেতে নিয়ে নিয়েছি।
১৪তম ধাপঃ
তারপর যে অবশিষ্ট পানিটা থাকবে সে পানিটা এক সাইডে রেখে দিতে হবে ।পরবর্তীতে এটা আমি ব্যবহার করবো।
১৫তম ধাপঃ
১৬তম ধাপঃ
১৭তম ধাপঃ
১৮তম ধাপঃ
এ পর্যায়ে চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে তাতে প্রয়োজনমতো তেল দিয়ে তেল গরম হয়ে গেলে তার ভিতরে কাটা পেঁয়াজ দিয়ে লাল লাল করে ভেজে আমি বেরেস্তা করে নিয়ে একটা বাটিতে তুলে রেখেছি।
১৯তম ধাপঃ
২০তম ধাপঃ
২১তম ধাপঃ
এ পর্যায়ে আমি চুলায় একটা প্রেসার কুকার বসিয়ে তার ভিতরে প্রয়োজনমতো তেল দিয়ে তেল গরম করে কিছু কাটা পেঁয়াজ দিয়ে বাদামি করে ভেজে তার ভিতরে মসলা দেওয়া পানিটা দিয়ে দিয়েছি।
২২তম ধাপঃ
২৩তম ধাপঃ
এ পর্যায়ে চুলাটা হাই হিটে দিয়ে পানিটা বলক দিয়ে কমিয়ে আনতে হবে ।পানিটা কমে মসলার উপরে তেল ভেসে উঠলে বুঝতে হবে আমার মসলা কষানো হয়ে গেছে।
২৪তম ধাপঃ
তারপর ওই মসলার ভিতরে আরও একটু পানি দিয়ে দিতে হবে।
২৫তম ধাপঃ
পানিটা একটা বলক আসলে তার ভিতরে মাছের টুকরোগুলো দিয়ে দিতে হবে।
২৬তম ধাপঃ
মাছের টুকরোগুলো দিয়ে তার ভিতরে আরো বেশকিছু পানি দিয়ে দিতে হবে। এমন পরিমাণ পানি দিতে হবে যেন মাছগুলো পুড়ে না যায় সুন্দর ভাবে সিদ্ধ হতে পারে।
২৭তম ধাপঃ
এ পর্যায়ে আমি প্রেসার কুকারের ঢাকনা ঢেকে দিয়েছি আড়াই থেকে তিন ঘন্টার জন্য। প্রথমে পাঁচ মিনিট হাই হিটে দিয়ে চুলার জ্বাল কমিয়ে একটা সিটি বাজলে চুলার জ্বাল একেবারে ডিম করে দিয়ে রেখে দিতে হবে ।মাঝখানে এক ঘন্টা পর আমি প্রেসার কুকারের ঢাকনা খুলে দেখবো আমার মাছগুলো ঠিক আছে কিনা।
২৮তম ধাপঃ
তিন ঘন্টা পর ঢাকনা খোলার পর আমার মাছ গুলো দেখতে এমন হয়েছে।
২৯তম ধাপঃ
তারপর আমি মাছগুলো হালকা হাতে একটা ট্রেতে তুলে নিয়েছি।
৩০তম ধাপঃ
৩১তম ধাপঃ
৩২তম ধাপঃ
মাছ তুলে নেওয়ার পর যে পানিটা থাকবে সে পানিটা আরো কিছু সময় জাল করে কমিয়ে আনতে হবে। পানিটা কমে আসলে তার ভিতর বেরেস্তা দিয়ে দিতে হবে ।এখানে আমি বেরেস্তা গুলো এক চামচ চিনি দিয়ে মাখিয়ে রেখেছিলাম।
৩৩তম ধাপঃ
৩৪তম ধাপঃ
বেরেস্তা দিয়ে আরও কিছু সময় জাল করে কয়টা কাঁচামরিচ দিয়ে দিতে হবে ।এখানে আমি কাঁচা মরিচ দিব ঝাল এর জন্য নয় ফ্লেভার এর জন্য।
৩৫তম ধাপঃ
তারপর আরো কিছু সময় জাল করে পানিটা একেবারে কমিয়ে নিয়েছি।
৩৬তম ধাপঃ
পানিটা শুকিয়ে মসলার উপরে তেল ভেসে উঠলে বুঝতে হবে আমার রান্না হয়ে গেছে। এখান থেকে আমি কিছু মসলা নিয়ে মাছের উপর দিয়ে দিয়েছি ।তারপর কিছু কাটা পেঁয়াজ দিয়ে মাছগুলোকে একটু ডেকোরেশন করে নিয়েছি। ব্যাস আমার কাটা গলানো ভাপে রান্না আস্ত ইলিশ রেডি। এখন শুধু অপেক্ষা খেয়ে নেওয়ার।
আশা করছি আমার এই রেসিপিটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | অপ্পো এফ1 |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলা আমার মাতৃভূমি।বাংলাতে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতে ভালোবেশি।
আপু আপনি এত কষ্ট করছেন , আপনাকে প্রান ঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। রান্নার প্রতিটি ধাপ গুছিয়ে করেছেন। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি সেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
ওয়াও আপু!!
এভাবে রান্না করলে তো একদম কোনো কাঁটাই থাকবেনা। কাঁটা ছাড়া ইলিশ খাওয়ার অনেকদিনের স্বাদ আমার।
জাস্ট চরম হয়েছে আইডিয়াটা আপু।
কাটা ছাড়া ইলিশ মাছ খেতে ভালো লাগে শুধু নিয়ে খাওয়া কাটা বাছার কোন ঝামেলা নেই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।
আপনার ভাপা গলানো ইলিশ রেসিপি অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। এই ধরনের রেসিপি আগে কখনো খাওয়া হয়নি।আমার ইউনিক রেসিপি মনে হয়েছে। আপনার ইলিশ মাছের রেসিপি উপস্থাপন অনেক চমৎকার। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু, এই রান্নাটি প্রথম দেখেছি আমার প্রিয় ইলিশ মাছের। আমার খুবই পছন্দের ইলিশ মাছ।আপনি ইলিশ মাছ যেভাবে রান্না করেছেন আমি কখনো এইভাবে খাইনি।তবে আপনার এই রেসিপিটি দেখে শিখে নিলাম কিভাবে কাটা গলানো ইলিশ রেসিপি তৈরি করতে হয়।কাটা গলানো ইলিশ রেসিপি প্রতিটি ধাপ আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।রেসিপিটি দেখতেও খুব লোভনীয় লাগছে।ধন্যবাদ আপু কামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মতামত দেয়ার জন্য ।আপনার কাছে ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো।
এই প্রথম একটা পোস্ট পেলাম প্রতিযোগিতার তাই খুব এক্সাইটেড হয়ে দেখলাম। খুব ভালো পোস্ট করেছেন আপনি আপু। সব গুলা ছবি খুব ক্লিয়ার ছিল। খেতেও আশা করি ভালোই ছিল। অনেক অনেক দোয়া রইল।
হ্যাঁ খেতে অনেক মজা হয়েছে খাওয়ার সময় কোন কাটাই পায়নি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
বাহ আপু!! দারুণ তো ব্যাপারটা। এভাবে কাটা ফেলে দিয়ে ইলিশ কখনো খাওয়া হয়নি। তবে আপনি অনেক ভালো রান্না করেন। আপনার রেসিপিটাও মজা হয়েছে বোধহয় অনেক। শুভেচ্ছা নিবেন।
কাটা ফেলে দেইনি কাটা আছে কাটা গলিয়ে ফেলেছি ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কাটা গলানো আস্ত ভাপা ইলিশ রেসিপি একটি ইউনিক রেসিপি এর আগে কখনো দেখিনি,আপনি অনেক সুন্দর ভাবে তৈরি করেছেন দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
ধন্যবাদ আপনাকে।
বাপরে বাপ এ কি রেসিপি দেখালে গো, আমি তো পাগল হয়ে গিয়েছি। এত সুন্দর রেসিপি তো কখনো দেখিও নি, খাওয়াও হয়নি। এখন মনে হচ্ছে একটু খেয়ে দেখতে পারতাম ! সব ইলিশ কিন্তু শেষ করে ফেলো না, ফ্রিজে একটি রেখে দিও, আমরা আসলে আমাদেরকে বানিয়ে খাওয়াবে।ধন্যবাদ তোমার এই চমৎকার রেসিপির জন্য,শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্য দেওয়ার জন্য।
কাঁটা গলানো আস্ত ভাপা ইলিশ সত্যি আপু ইউনিক রেসিপি ছিল। এইরকম রেসিপি না আগে কখনো দেখেছি না খেয়েছি। এক কথায় অসাধারণ ছিল রেসিপি টা। এবং আপনার উপস্থাপনা টাও অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপনার এতো সুন্দর একটি রেসিপির জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর করে একটি মতামত দেওয়ার জন্য।
সুস্বাগত।
প্রথম কনটেস্ট অংশ গ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার ইলিশের রেসিপিটা ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপনাকে।