★সন্ধ্যার পর রাস্তায় হাঁটাহাঁটি ও কিছু ফটোগ্রাফি★

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।




আজ আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব সন্ধ্যার পরে রাস্তায় হাঁটতে বেড়ানোর কিছু মুহূর্ত। এবার আমি আমার ছেলেকে স্কুলে দিয়েছি প্রতিদিনই ওকে নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। এতদিনে একটু বেলা করে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আমার কিন্তু ছেলেকে স্কুলে দেওয়ার কারণে প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে হয় এবং ওকে স্কুলে নিয়ে যেতে হয়। স্কুল ছুটি হয়ে বাসায় আসতে আসতে দেড়টা বেজে যায়। দুপুরে কাজবার সেরে গোসল খাওয়া-দাওয়া করে বিকেলে একটু শুয়ে থাকতে থাকতে তারপর সন্ধ্যা হয়ে যায় । সন্ধ্যার পরে আবার ওকে নিয়ে পড়াতে বসতে হয় এজন্য খুব একটা বাইরে বের হওয়াই হচ্ছিল না। আজকে হঠাৎ করে সন্ধ্যার পরে মনে হল যে একটু বাইরে থেকে হেঁটে আসি এবং অনেকদিন থেকে খুব ইচ্ছা করছে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এক কাপ চা খাই। দেখলাম যে ছেলের বাবা রেডি হয়ে নিচে যাচ্ছে হাঁটার জন্য। তখন আমি বললাম যে আমিও যাব সাথে ব্যাস ওভাবেই রেডি হয়ে আমিও চলে গেলাম।


আমরা হাঁটতে হাঁটতে চলে গিয়েছিলাম বেইলিরোডে। ওখানে গিয়েছিলাম মেইনলি কিছু গাছ দেখার উদ্দেশ্যে।বেইলি রোড পার হয়ে আরো অনেকটা দূরে চলে গেলাম। ওখানে গিয়েছিলাম কিছু গাছ দেখতে ওখানে ভালো ভালো কিছু ফুলের গাছ রয়েছে। তবে আমি যে গাছগুলো খুঁজি সেগুলো কখনোই পাওয়া যায় না। কিন্তু আজকে তো গাছের দোকানগুলোতে গিয়ে একেবারে হতাশ হলাম। কারণ এখন গাছের দোকানগুলোতে তেমন ভালো কোন গাছই নেই। গাছগুলো কেমন শুকনা শুকনো হয়ে আছে। এখনকার আবহাওয়াটা এমন গাছের পাতাগুলো ঝরে যাচ্ছে আর গাছগুলো কেমন যেন হয়ে আছে। তাই কোন গাছই আমার তেমন পছন্দ হলো না। তারপরও আমরা ওই এলাকায় যত গাছের জায়গা আছে সবগুলোতে ঘুরলাম। সবগুলোরই করুন অবস্থা গাছগুলো প্রায় একেবারে মরার দশা। এরপর আমরা আর গাছ না নিয়ে আবার হাঁটতে হাঁটতে সেখান থেকে ফেরত চলে আসলাম।


যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে এক কাপ চা আমি খেয়ে নিয়েছি। সকালবেলা যখন স্কুলে যায় তখন দেখি যে এই চায়ের দোকানে বড় একটা ডেকচিতে করে দুধ জাল দিচ্ছে, তখন দেখছি ডেকচিটা একেবারে ভরা থাকে আবার সন্ধ্যার পরে যখন দেখি তখন দেখি যে দুধ জ্বাল দিতে দিতে শেষ হয়ে একেবারে নিচে চলে আসে। তখন ওই দুধটা দিয়ে চা খেতে এত টেস্টি লাগে তা বলে বোঝানো যাবে না। আমি এই দোকানের চা প্রায় খেয়ে থাকি এক কাপ চা ২০ টাকা করে নেয়। খেতে খুবই মজা খুব ভালো লাগে। কিন্তু চায়ের দোকানে এতটাই ভিড় ছিল যে সেখানে আর ছবি তোলা হয়নি কোনরকমে এক সাইডে দাঁড়িয়ে চা টা খেয়ে চলে এসেছি। আসার পথে আমি আমাদের বিল্ডিং এর নিচে রাস্তার পাশ দিয়ে অনেক দোকানপাট বসে এখান থেকে নরমালি আমরা কাঁচাবাজার গুলো করে থাকি। সেই দোকানগুলো দেখলাম আজও বসেছে আমি সেখান থেকে বেশ কিছু ছবি তুলে নিয়েছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

20230131_231715.jpg


উপরের ছবিগুলোতে দেখতে পাচ্ছেন খুব সুন্দর কিছু বড়ই এর ছবি। প্রতিদিনই এভাবে ভ্যান ভরে ওরা বড়ই বিক্রি করে। এখানটাতে তখন বড়ইগুলো দেখতে কত সুন্দর লাগে যখন কিনে নিয়ে আসি তখন খাওয়ার সময় বোঝা যায় যে কেমন। কিছু কিছু বড় এতই খারাপ থাকে যে কস লাগে এজন্য আর কিনি না।

20230131_231849.jpg


ভ্যান ভর্তি এভাবে বিভিন্ন রংবেরঙের শাক নিয়ে ওরা বসে। আমি প্রায় বলতে গেলে দুই একদিন পরপরই শাক কিনি ।আজ দুমুঠো শাক কিনতে গিয়েছি, আমি নরমালি সবুজ শাকটা বেশি খাই। সবুজ শাকটা ওরা এক মুঠো বিশ টাকা করে নিলো আর লাল শাকের দাম ১০ টাকা। জানি না সবুজ শাকের ভিতরে পার্থক্য কি। আমার কাছে ভালো লাগে তাই আমি খাই কিন্তু ওরা দামে ১০ টাকা আর ২০ টাকা রেখেছে।

20230131_231834.jpg

20230131_231817.jpg

20230131_231641.jpg


এখানে আরো দেখতে পাচ্ছেন ফুলকপি তারপরে আরো নানা ধরনের সবজি রয়েছে। আমরা নরমালি এসব জায়গা থেকে সবজিগুলো কিনে থাকি। আর আলু ও পেঁয়াজও রাস্তার পাশ থেকে কিনলে নিজের মত করে দেখে শুনে ভালো মতো আনা যায়। এজন্য আমি বেশিরভাগ সময় এখান থেকে আলু ও পেঁয়াজ নিয়ে থাকি এবং অন্যান্য সবজিও কিনে থাকি। বেশ ফ্রেশ সবজি পাওয়া যায় এখানে। বিশেষ করে এই শীতের সময় সবজিগুলো অনেক ভালো পাওয়া যায় । আর ফুলকপির দাম আমার কাছে মনে হল এবার একটু বেশি ছিল সব সময় চল্লিশ টাকা করেই কিনেছি এক একটা।

20230131_231629.jpg

20230131_231617.jpg


একেবারে আমার আমার বিল্ডিং থেকে নেমে সিঁড়ির সামনে এই ডিমওয়ালা প্রতিদিনই বসে। এখান থেকে আমি মাঝে মাঝে রাস্তায় নেমে একটা ডিম খাই। আমার কাছে এভাবে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ডিম খেতে খুব ভালো লাগে। গরম ডিম ওরা ছিলে ভেতরে একটু বিট লবণ ছিটিয়ে দেয় সত্যিই অন্যরকম টেস্ট লাগে, যেটা বাসার ডিমে আমি পাই না। তারপরে এই ফুচকা ওলাও দেখলাম ডিমওয়ালার পাশে বসেছে। এখান থেকে যদিও কখনো ফুচকা খাওয়া হয়নি লোকটাকে নতুন দেখলাম এখানে।

20230131_231750.jpg


এই ভাজা জিনিসগুলোর দোকানটাও আমাদের বাসার আশেপাশেই রয়েছে। এখান থেকে আমি প্রায় সময় ভাজাপোড়া কিনে খাই। গরম গরম ওরা একেবারে করাই এর ভেতর থেকে উঠিয়ে দেয় খেতে ভালো লাগে খুব।

20230131_231729.jpg


ওই ভাজা আলার পাশেই এই খেলনা এবং অন্যান্য জিনিস নিয়ে এই লোকটি বসে। এই করোনাকালীন সময়ে এই লোকটির কাছ থেকে অনেক ম্যাস্ক আমি কিনেছি। এই লোকটির কাছে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস পাওয়া যায় যা হুট করে যখন দরকার হয় নিয়ে নেওয়া যায়।

20230131_195938.jpg


নিচের এই ছবিটা আমাদের এলাকার মসজিদের ছবি। অনেকদিন হয়ে গিয়েছে এই মসজিদের কাজ চলছে এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি মাঝখানে মনে হয় বন্ধ ছিল। মসজিদটি দশ তালা পর্যন্ত করছে। সামনে দিয়ে আসার সময় একটা ছবি তুলে নিলাম । লোকজন নামাজ পড়তে আসছে এজন্য ভালো করে ছবিটি তুলতে পারিনি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

Sort:  
 last year 

সন্ধ্যাবেলা ভাইয়ের সাথে ভালই ঘুরাঘুরি করলেন। আসলে বাচ্চাদের পড়ালেখার কারণে অনেক সময় ঘুরাঘুরি করা যায় না। সন্ধ্যাবেলা বিশেষ করে চা খাওয়ার জন্যই বাহির হলেন।বেইলিরোডে গিয়েছিলে গাছ দেখার জন্য। তবে সেখান থেকে এসে খুব মজা করে চা খেলেন। বাসায় আসার সময় বিভিন্ন ধরনের সবজি ও অন্যান্য জিনিসের ফটোগ্রাফি করেছেন। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

রাস্তায় হাঁটতে বের হয়ে আশপাশের কিছু আলোকচিত্র আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যার মধ্যে শীতের সবজি গুলো আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। যদিও সবশেষে যে ফাস্টফুড এর ছবি তুলেছেন সেটা দেখে একটু লোভ হয়েছে তবে এখন ফাস্ট ফুড খাওয়া থেকে একটু এড়িয়ে চলি।

 last year 

আপনি আজ আমাদের মাঝে অনেকগুলো অনুভূতি শেয়ার করেছেন। আপনার শেয়ার করা অনুভূতি গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর কিছু অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপু আপনি অনেক ব্যস্ততার মাঝেও সন্ধ্যাবেলা একটু ঘুরতে বের হলেন। মূলত ভাইয়ের সাথে চা খাওয়ার জন্যই বের হলেন। তবে বেইলিরোডে গিয়েছিলে গাছ দেখার জন্য। কিন্তু শুকনো কাজ দেখে চলে আসলেন এবং একটি চা দোকানে চা খেলেন। বাসায় আসার পথে খুব সুন্দর করে অনেক ধরনের সবজি ও ভিন্ন ভিন্ন কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। আসলে তাজা সবজিগুলো খেতে অনেক ভালোই লাগে। আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 last year 

বাজারে ঘোরাঘুরি মুহূর্তে খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আপনার আজকের এই পোষ্টের মধ্যে সবজি বাজারের কিছু দৃশ্য ফুটে তুলেছেন। যেখানে শীতকালের অনেক শাকসবজি সমাহার ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে দারুন একটি পোস্ট সাজেশন নানান বর্ণনার মাধ্যমে সেখানে চা খাওয়া থেকে শুরু করে আরো অনেক কিছু। খুবই ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।

 last year 

ঠিক বলছে আপু বাচ্চাদেরকে স্কুলে দিলে আর ঘুমের সুখ হয় না অনেক বেলা করে ওঠা সেই মানুষটি ও সকাল সকাল উঠতে অভ্যস্ত হয়ে যায়।আপনি যে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে বিকেল বেলায় চা খান শুনে তো এখন খেতে ইচ্ছে করতেছে।এই সিজনে গাছ তেমন ভালো থাকবে না এখন পাতা ঝরে যাবে।টংএ দাড়িয়ে ওদের ডিম খেতে অন্য রকমের স্বাদ লাগে বিশেষ করে ফুচকা আরো অনেক ভালো লাগে খেতে।আপনি অনেক গুলো অনুভূতি শেয়ার করেছেন প্রত্যেকটা অনুভূতি আমার অনেক ভালো লেগেছে।

 last year 

সন্ধ্যাবেলায় এভাবেই হাঁটতে গিয়েছেন এবং রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে চা খেয়েছেন এরকম মুহূর্ত বিবাহিত করলেন সত্যি খুবই ভালো লাগলো পড়ে। রাস্তার ধারে চায়ের দোকানে এভাবে চা খাওয়ার আনন্দটা সত্যি খুবই অন্যরকম হয়ে থাকে। আপনাদের ওখানে তো দেখছি সবজি দোকান রয়েছে বিভিন্ন রকম আমার কাছে বড়ই এর ফটোগ্রাফি দেখে খুবই খেতে ইচ্ছে করছে।। কিছু কিছু বড়ই কস হলেও যে বড়ই গুলো ভালো সেগুলো খেতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। যেহেতু আপনি সবসময় ব্যস্ত থাকেন মাঝেমধ্যে এভাবে হাঁটতে গেলে বেশ ভালোই লাগে।

 last year 

আমিও মাঝেমধ্যে এভাবে রাস্তার ধারে গিয়ে চা খাই। সকালে আপনার বাবুকে নিয়ে স্কুলে যান, খাবার দাওয়ার তৈরি করতে এবং খাওয়া-দাওয়া করতে, গোসল করতে করতে বিকেল হয়ে যায়। এরপর একটু ঘুমান তারপরে সন্ধ্যাবেলায় আবার বাবুকে পড়ার জন্য বসেন সত্যি পুরো দিনে অনেক ক্লান্ত হয়ে যান। মাঝেমধ্যে এভাবে বাইরে হাটতে বা ঘুরতে বের হবেন দেখবেন ভালো লাগবে। শরীরের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখেও ভীষণ ভালো লাগলো।

 last year 

আপু আপনার সন্ধ্যার পর রাস্তায় হাটাহাটি করে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন। বেশ ভালো লাগে কিন্তু সন্ধ্যায় অথবা বিকেলে হাটাহাটি করতে। বাসার আশেপাশে যদি এমন বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট থাকে তাহলে কিন্তু ভালোই হয়। গাছ কেনার জন্য সকালবেলা যাওয়াই বেটার আপু তখন তাজা তাজা চারাগাছ পাওয়া যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66254.46
ETH 3319.59
USDT 1.00
SBD 2.69